২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সাংবাদিকতা কঠিন হয়ে উঠছে

-

সাংবাদিকতা সব সময় একটি আলোচিত পেশা। সমাজের একদল মানুষ সব সময় ঘটমান বাস্তবতাকে সবার সামনে উপস্থাপন করছেন। ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে কোনো একটি ঘটনা পৌঁছানোর আগে একবার তাদের হাতে এর ‘ফিল্টারিং’ হয়। সেজন্য সাধারণ মানুষ কী জানবে, কতটুকু জানবে বা কতটুকু দেখবে সেটি অনেকটা নির্ভর করে সাংবাদিকদের দক্ষতা, যোগ্যতা, পেশাদারিত্ব এবং নিরপেক্ষ মননের ওপর। ঘটনার ‘কর্তা’র সাথে সাথে তাই সাংবাদিকরাও প্রাসঙ্গিক হয়ে আলোচনায় থাকছেন।

জানানোর কাজটি করতে গিয়ে সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত ক্ষমতাবানদের মুখোমুখি হচ্ছেন। অনেক কিছুই শক্তিশালীদের জন্য কাক্সিক্ষত, তাই সাংবাদিকরাও তাদের কাছে সমাদৃত হন। একজন ‘বিশিষ্ট ব্যক্তি’ হিসেবে সমাজের সামনে নিজেদের হাজির করানোর জন্য তারা সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন কিংবা একটি শুভ উদ্যোগকে ফলপ্রসূ করার জন্য তারা সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে থাকেন। তবে সময়ের সাথে সাথে ক্ষমতার বিকার ঘটেছে। ক্ষমতাবানরা এমন অনেক কিছুই করছেন, যেগুলো সাংবাদিকদের ‘খবর’ হিসেবে প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু ব্যাপারটি ক্ষমতাবানদের পছন্দ নয়। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের হত্যা করে হলেও নিজেদের দুষ্কর্ম প্রভাবশালীরা আড়াল করতে চান।

সাংবাদিকতাও ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। মূলত ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে সমাজের অভ্যন্তর থেকে শক্তি সঞ্চয় করার চেষ্টা করেন সাংবাদিকরা। স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গড়ে উঠেছে সংবাদিকদের যুথবদ্ধ সংস্থা। যুদ্ধাবস্থা ও চরম স্বৈরাচারের মোকাবেলায় এসব সংগঠনের শক্তি খুব একটা কাজ না করলেও তারা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাংবাদিকদের বৈশ্বিক সংস্থা ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’। এটি রিপোর্টার্স সান্স ফ্রন্টিয়ার (আরএসএফ) নামে অধিক পরিচিত। আরএসএফ জানাচ্ছে, ২০১৯ সালে কার্যক্ষেত্রে সাংবাদিকদের হত্যার ঘটনা অনেক কমেছে।

তাদের হিসাবে, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৯ জন সাংবাদিক কার্যক্ষেত্রে প্রাণ দিয়েছেন। এর আগের বছর ৮০ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। আগের বছরের তুলনায় সাংবাদিক হত্যা ৪৪ শতাংশ কমেছে। ১৬ বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে কম সাংবাদিক হত্যার বছর বলে জানা যায়। প্যারিসভিত্তিক এবং সাংবাদিকদের অধিকার সংরক্ষণে প্রয়াসী সংস্থাটিই আবার জানাচ্ছে, অবশ্য এমনটি ঘটেনি যে, পৃথিবী সাংবাদিকদের খবর সংগ্রহ ও প্রকাশ করার জন্য ‘স্বর্গরাজ্য’ হয়ে উঠছে; বরং পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরো প্রতিকূল এখন। সাংবাদিক খুনের পরিসংখ্যান মূলত যুদ্ধক্ষেত্রে বেশি কমেছে। সিরিয়া, আফগানিস্তান ও ইয়েমেনে গত বছরের তুলনায় অর্ধেক বা ১৭ জন সাংবাদিক এ বছর প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে সাংবাদিকতা নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা তাদের মৃত্যুহার কমিয়েছে বলে আরএসএফ মুখপাত্র জুলিয়ান মেথি মন্তব্য করেছেন।

অবাক বিষয় হচ্ছে, গণতান্ত্রিক বিশ্ব হয়ে উঠছে সাংবাদিকদের জন্য বৈরী। আমরা প্রখ্যাত আরব সাংবাদিক জামাল খাশোগির উদাহরণটি টানতে পারি। তাকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যা করা হয়। একটি দেশের দূতাবাসকে সবচেয়ে নিরাপদ এলাকা বলতে পারি। অনেকে জীবনের নিরাপত্তার জন্য দূতাবাসে আশ্রয় নেন। একটি দূতাবাস বধ্যভূমি হতে পারে- তা কারো ধারণায় আসতে পারে না। অথচ তাকে সেখানে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যা নিয়ে তুরস্ক ও সৌদি আরব আলাদাভাবে তদন্ত করেছে। সংবাদমাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের ক্লু ফাঁস হয়ে গেছে। এবার আমরা দেখলাম, বিচারে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়েছে। আরো তিনজনকে জেল দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রধান সন্দেহভাজনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আদালত চুপচাপ। ভিন্নমতের হওয়ার কারণে খাশোগিকে নির্লজ্জভাবে দূতাবাসে ডেকে এনে হত্যা করা হলো। এর বিচারে কিছু ব্যক্তিকে দণ্ড দিয়ে মূলত আইওয়াশ করা হয়েছে। মূল অপরাধী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জনমনে ধারণা রয়ে গেছে। এ ধরনের অবস্থায় বিশ্বে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাংবাদিকতার জন্য চরম বৈরী হয়ে উঠছে। প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর কাছে নিজেদের বাণিজ্যস্বার্থই প্রধান হয়ে রইল। অপর দিকে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পদদলিত হলো। সিআইএ’র গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সৌদি আরবের ‘শীর্ষ’ নেতৃত্বের এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার ইঙ্গিত রয়েছে।

২০১৯ সালে ৫৯ শতাংশ সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে পরিস্থিতি আপাতদৃষ্টিতে ‘একেবারেই শান্ত’- এমন দেশে। এগুলোতে যুদ্ধাবস্থা বা যুদ্ধের দামামা নেই। এর মধ্যে লাতিন আমেরিকার মেক্সিকোতে ১০ সাংবাদিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। আগের বছরও সে দেশে ১০ জন সাংবাদিক খুন হন। মনে হতে পারে, মাদকের স্বর্গরাজ্যে এটি ঘটতেই পারে। কিছু দেশ এমনও রয়েছে, যেখানে একজন সাংবাদিকও খুন হননি, কিন্তু সেখানে সাংবাদিকতা করা কম কঠিন নয়। আরএসএফ প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, মাঠে সাংবাদিকতা করা কঠিন হয়ে উঠছে। সদ্য বিগত বছর কারা অন্তরালে ছিলেন ৩৮৯ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি সাংবাদিক কারাবন্দী হয়েছেন। আটক হয়েছেন আরো ৫৭ জন সাংবাদিক। আরএসএফের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সাংবাদিকরা আরো বেশি করে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। ২০১৯ সালে আগের বছরের তুলনায় টার্গেট কিলিং বেড়েছে।

‘গণতান্ত্রিক’ শাসনের আড়ালে সাংবাদিক নিপীড়নের ব্যাপারটি এ মহান পেশার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। কারণ, গণতন্ত্র এবং সাংবাদিকতা একে অপরের পরিপূরক। একটি গণতান্ত্রিক সমাজ কোনোভাবেই সাংবাদিকতা ছাড়া পরিপূর্ণ হতে পারে না। রাশিয়ায় এখন নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের নেতৃত্বে রাশিয়ান সমাজকে দেখা যাচ্ছে এক অদ্ভুত গণতান্ত্রিক চর্চা করতে। সেখানে সাংবাদিকদের নানা অপকৌশলে দমানো হচ্ছে। সাংবাদিকদের দমনের কূটকৌশলের দিক দিয়ে মিসরের সামরিক গণতান্ত্রিক সরকারপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি আরো একধাপ এগিয়ে। চীনের নামটি সম্ভবত এদের আগেই উচ্চারিত হবে। দেশটি নিজেদের ‘জনগণতান্ত্রিক’ বলে দাবি করে থাকে। অবশ্য নিজেদের তারা প্রচলিত গণতন্ত্রের ধারার শাসক বলে পরিচয় দেন না। দেশটিতে সাংবাদিক নিপীড়নের হার সবচেয়ে বেশি। রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করার কারণে সেখানে শত শত সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বন্দী রয়েছেন অনেকে। আরএসএফের প্রতিবেদনে এসব দেশে সাংবাদিকদের করুণ অবস্থার চিত্র প্রকাশিত হয়েছে।

ব্যক্তি সাংবাদিককে নানাভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন করার পাশাপাশি পুরো মিডিয়া ‘হজম করে ফেলা’র নজির তৈরি হচ্ছে দেশে দেশে। এই যাত্রায় সম্ভবত ‘গণতান্ত্রিক’ দেশগুলো সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। গণতন্ত্রের মোড়কে চালিত স্বৈরাচারীরা মিডিয়ার ওপর একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে তথ্যের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছে। নতুন মিডিয়ার অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে এই শাসকরা নিজেদের পছন্দের মালিকদের বাছাই করছেন। একেবারে দলীয় লোকদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে এর মালিকানা। অন্য দিকে মিডিয়ার আয়রোজগারের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউজ। আমেরিকা সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত হলেও এটি মূলত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। গণতন্ত্রের করুণ অবস্থার কথা বলতে গিয়ে ফ্রিডম হাউজ মিডিয়ার করুণ অবস্থাও তুলে ধরছে। আমেরিকান সরকারে নিজেদেরই এখন গণতন্ত্রের ত্রাহি অবস্থা। তবে সম্ভবত এ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো বাগড়া দেননি কিংবা প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণে তিনি এখনো থাবা মারেননি। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী মানুষের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশের জনগণের বিষয়ে জানান দিচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মানুষের স্বাধীনতার অবস্থা করুণ। অর্থাৎ মিডিয়াকে চেপে ধরছে সরকার। দুনিয়ার বেশির ভাগ দেশের মিডিয়া বর্তমানে সরকারি খড়গের শিকার।

ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের কৌশলও একই। তথ্যের সব ক’টি দরজাকে নরেন্দ্র মোদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তারা চান, বার্তা শুধু তাদেরটিই মানুষের কাছে পৌঁছাবে। একটি গল্পই থাকবে সেখানে। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানা যায়, কাশ্মিরের দু’টি প্রধান সংবাদপত্রে ভারত সরকার বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করে দেয়। তাদের আয়ের ৫০ শতাংশই আসত সরকারি বিজ্ঞাপন থেকে। তাদের বিরুদ্ধে যখন এ ‘কামান দাগানো হচ্ছিল’, সেজন্য তাদের একটি কারণ দর্শানোরও প্রয়োজন মনে করেনি সরকার। সম্প্রতি সংবিধান থেকে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার আগেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

বাংলাদেশে দৃশ্যত মিডিয়ার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। একই সময়ে বিভিন্ন জরিপ বলছে, পাঠক ও দর্শকরা মিডিয়ার ওপর থেকে তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। টিভি স্টেশনগুলোর দর্শক ব্যাপক হারে কমে গেছে। এর মূল কারণ সবাই মিলে একই গান গাইছেন। এক কথা মানুষ কত আর শুনতে চাইবে? জনসাধারণ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চায়। অথচ টিভি খুললেই দেখতে পায় ক্ষমতাসীনদের গল্প। বর্তমান আমলে ব্যাঙের ছাতার মতো মিডিয়ার বিস্তার ঘটলেও মিডিয়ার গুণগত বিকাশ ঘটেনি। তাই মানুষ কাক্সিক্ষত সংবাদটি পাচ্ছে না। ফলে তারা টিভি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। বাংলাদেশের টিভি থেকে মুখ ফিরিয়ে তারা বিবিসি কিংবা আলজাজিরার মতো বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতি আস্থা রাখতে চেয়েছে। এমনকি ভারতীয় সস্তা চ্যানেলগুলো বাংলাদেশের চ্যানেলের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় এদেশে।

২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের একটি জমায়েতকে কেন্দ্র করে সরকার নির্বাহী আদেশে ইসলামিক টিভি ও দিগন্ত টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়। হেফাজতের বিতর্কিত জমায়েত নিয়ে সরকারের নিজেদের অবস্থান যা হোক না কেন, টিভি চ্যানেল বন্ধ করার কোনো যুক্তি এতে থাকতে পারে না। ওই সময় বাকি সব সংবাদমাধ্যম একচেটিয়া সরকারের পক্ষে গান গেয়েছে। রাতের অন্ধকারে প্রচণ্ড অভিযান চালিয়ে হেফাজতকে রাজধানী থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। সব সংবাদমাধ্যম সরকারের ভাষ্য প্রকাশ করায় ওই রাতে কী হয়েছিল, মানুষের সামনে স্পষ্ট হয়নি। ওই সময় দেশের বাকি সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে দু’টি টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়ার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ করা হয়নি।

তারও আগে সরকার আরেক নির্বাহী আদেশে দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়। সরকারের একগুঁয়ে অবস্থান পরে অন্য কিছু সংবাদমাধ্যমের ওপরও খড়গ হিসেবে নেমে এসেছে। বড় দু’টি সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে সরকার বিজ্ঞাপনের অস্ত্র ব্যবহার করছে। সংবাদমাধ্যমের বিভাজন সরকারের জন্য সুযোগ হিসেবে কাজ করে। একদলকে অপর দলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে সরকার তার ফায়দা হাসিল করে নেয়। ডিজিটাল যুগে আমরা বাংলাদেশে এমনটি হতে দেখছি।

গণতন্ত্রের পাইওনিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে নতুনভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোনো সংবাদ যদি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যায়, সেটাকে তিনি ভুয়া সংবাদ বা ফেক নিউজ বলছেন। আর এসব সাংবাদিক ও সংবাদ প্রতিষ্ঠানকে ‘জনগণের শত্রু’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট যিনি সংবাদমাধ্যমের পৃষ্ঠপোষকতা করবেন, তিনি নিচ্ছেন ভিলেনের রোল। এ অবস্থায় নতুন বছরে সাংবাদিকতা আরো চাপের মুখে পড়বে- এ ধারণাই করা যায়। কিংবা বলা যায়, অনাগত বছরগুলোতে সাংবাদিকতা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এর সাথে জড়িত গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎও।

সাংবাদিক হিসেবে নিজের নিরাপত্তা জোরদার করা এবং এর সাথে সাথে সংবাদ প্রতিষ্ঠানকে নিষ্কণ্টক রাখা কঠিন হয়ে উঠছে। এ জন্য সাংবাদিকদের নিজেদের মধ্যে বিরাজমান, বিভেদের দেয়াল তুলে নেয়া দরকার। রাজনৈতিক নেতৃত্বের মসৃণ বিকাশ বাংলাদেশে হয়নি। নিজ দেশের জনগণের প্রতি সমান দৃষ্টি রাখেন, এমন একজন বড়মাপের নেতা দেশে দেখা যায় না। বর্তমান নেতারা প্রধানত একটি পক্ষের হয়ে সামনে আসছেন। ফলে বাকিদের তারা সমান সুযোগ দিতে রাজি নন। তারপরও তারা যদি মনে করেন, গণতন্ত্র সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে সাংবাদিকতা ও সংবাদমাধ্যম সুরক্ষায় তাদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement