১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দূষণের মাঝে বসবাস

-

একসময়ের শ্যামল-সবুজ বাংলার যে দিকেই তাকানো যেত চোখে পড়ত শুধু সবুজের সমারোহ। সবুজ ফসলের মাঠ আর গাছ-গাছালি আমাদের মন ভরিয়ে দিত। মানুষ বুক ভরে বিশুদ্ধ বায়ু সেবনের সহজ সুযোগ পেত দেশজুড়ে। ছিল অসংখ্য নদ-নদী আর খালবিল, যেগুলোর বুকে ছিল স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ সুপেয় পানি। এই পানিই দেশের বেশির ভাগ মানুষের বিশুদ্ধ খাবার পানির চাহিদা মেটাত। এই বিশুদ্ধ বায়ু আর পানি ব্যবহার করেই দেশের মানুষ সুস্থ দেহে জীবন কাটাতে পারত। কিন্তু এখন রোগ-শোক যেন আমাদের নিত্যসাথী হয়ে উঠেছে। কারণ সেই বিশুদ্ধ বায়ু আর পানির সবই আজ দূষিত হয়ে পড়েছে, আমাদেরই অমানবিক আচরণের ফলে। এখন তা শহরেই হোক আর গামেই, এমন কোনো পরিবার নেই, যার কানো না কোনো সদস্য রোগে ভুগছে না।

এর বড় কারণ পরিবেশ-প্রতিবেশের বিপর্যয়। তা ছাড়া এর নানা কারণের মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে কল-কারখানার দূষিত বিষাক্ত বর্জ্য। আমাদের আশপাশে এখন ফসলের জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে নানা ধরনের কল-কারখানা। আর এসব কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে যেখানে-সেখানে। আর এর প্রভাবে বিষাক্ত হচ্ছে আমাদের বায়ুমণ্ডলের বায়ু। দূষিত হচ্ছে আশপাশের নদী আর খালবিলের পানি। সে দূষিত বায়ু সেবন করে ও দূষিত পানি পান করে আমরা শিকার হচ্ছি নানা ধরনের রোগ-শোকের।

যদিও সরকারের সংশ্লিষ্ট একটি আলাদা অধিদফতর রয়েছে এসব বিষয় দেখা শোনার। কিন্তু তারা বর্জ্য নিষ্কাশনে সঠিক উপায় অবলম্বনে কল-কারখানার মালিকদের আইন ও নিয়মকানুন অনুযায়ী বাধ্য করতে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। ফলে যেখানে-সেখানে বর্জ্য নিষ্কাশন চলছে অনেকটা অবাধে। এ ক্ষেত্রে সরকারের ও কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এন্তার। অভিযোগের পর অভিযোগ উঠলেও এর সমাধান হচ্ছে না। ফলে দেশের সাধারণ মানুষকে অব্যাহতভাবে ভুগতে হচ্ছে। সময়ের সাথে সে ভোগান্তি ক্রমেই দুঃসহ হয়ে উঠছে। যেন দেখার কেউ নেই। সারা দেশে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তা কয়েকটি উদাহরণ থেকে স্পষ্ট হবে।

অতি সম্প্রতি একটি প্রথম শ্রেণীর জাতীয় দৈনিকের খবরে জানা যায়- ধলেশ্বরী নদীতে কল-কারখানার যে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে, তার প্রভাবে ওই নদীর মাছ মরতে শুরু করছে। সিমেন্ট ফ্যাক্টরির ছাই, ডাইং, পিন্টিংসহ বিভিন্ন কাপড়ের কলের রাসায়নিক মেশানো তরল বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হয়ে পড়ছে মুন্সীগঞ্জের শহরঘেঁষা ধলেশ্বরী নদী। এরই মধ্যে ধলেশ্বরীর পানি কালো রূপ ধারণ করেছে। এ অবস্থায় পরিবেশ দূষণের প্রতিবাদে ও ধলেশ্বরী নদীকে বাঁচাতে মুন্সীগঞ্জে এর প্রতিকার চেয়ে একাধিকবার মানববন্ধন এবং সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। এর পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছে পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুর ও চরমুক্তারপুরে স্থাপিত বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান রাসায়নিক মেশানো বিষাক্ত তরল বর্জ্য অব্যাহতভাবে নদীতে ফেলছে। ফলে নদীর দুই তীরের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

দৈনিকটির প্রতিনিধি সরেজমিন ধলেশ্বরী নদীর তীর পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছেন- শহরের উপকণ্ঠে মুক্তারপুর এলাকায় গড়ে ওঠা টেক্সটাইল, ডায়িং, মিল ও সিমেন্ট কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নিষ্কাশনের পরিবেশবান্ধব কোনো ব্যবস্থা নেই। কল-কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের প্ল্যান্ট না থাকায় সরাসরি এই বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া সিমেন্ট কারখানাগুলোর ছাই উড়ে সরাসরি নদীতে গিয়ে মিশছে। সিমেন্ট কারখানাগুলো খোলামেলাভাবে ক্লিঙ্কার ও ছাই জাহাজে লোড-আনলোড করছে।

সিমেন্টের এই ছাই শহরঘেঁষা ধলেশ্বরী তীরের হাটলক্ষীগঞ্জ, নয়াগাঁও, মিরসরাই, মুক্তারপুর, চরমুক্তারপুরসহ আশপাশের এলাকায় দূষণ সৃষ্টি করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পশ্চিম ও পূর্ব মুক্তারপুর, নয়াগাঁও, মিরসরাই, ফিরিঙ্গিবাজার ও শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুরা ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়াসহ শ্বাস-প্রশ্বাস ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া গাছপালা ও ফসলাদিরও ক্ষতি হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ধলেশ্বরী তীরের বড় বড় কিছু গাছ মরে গেছে।

এ দিকে একই দিনে একটি প্রভাবশালী জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে টঙ্গীর জলাধারের ভয়াবহ দূষণ সম্পর্কে আরো উদ্বেগজনক খবর জানিয়েছে। খবরটিতে জানানো হয়- একসময় টঙ্গী এলাকার তুরাগ খালের পানি ছিল খুবই স্বচ্ছ। স্থানীয়রা তখন এই পানি পান করত। এখন সেখানকার পানি কালো রঙ ধারণ করেছে। আর এই কালো পানির গন্ধ এতই খারাপ যে, এই খালের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আগে তারা এই তুরাগে ও পাশের চানকিরটেক বিলে মাছ ধরতেন। কিন্তু সেখানে আজ একটি ব্যাঙও চোখে পড়ে না। এই এলাকায় নানা ধরনের কল-কারখানা গড়ে উঠতে শুরু করার পর এসবের বিষাক্ত বর্জ্যরে কারণে এই জলাধারের পানি কালো হতে শুরু করে। সেই সাথে শুরু হয় জনভোগান্তিও। স্থানীয়রা আরো জানান, তারা এই দূষিত জলাধার নিয়েই তুরাগ তীরে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা এই ভোগান্তি নিয়েই সেখানে বসবাসে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, তবে আত্মীয়স্বজনরা এই পুঁতিগন্ধময় দূষিত পানি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না।

উল্লিখিত ইংরেজি দৈনিকটির প্রতিনিধি গাজীপুর ও টঙ্গী সরেজমিন সফর করে জানিয়েছেন- সেখানে তিনি দেখতে পেয়েছেন, তৈরী পোশাক কাখানার ওয়াশিং প্ল্যান্ট ও গাজীপুর এলাকার টেক্সটাইল ইউনিটসহ সেখানকার বাংলাদেশ কুটিরশিল্প করপোরেশনের কল-কারখানা থেকে বিষাক্ত তরল বর্জ্য নিষ্কাশন করা হচ্ছে বিভিন্ন খালে ও জলাধারে। কোনো ধরনের শোধন না করেই এসব বিষাক্ত তরল বর্জ্য টঙ্গীর কল-কারখানা ও ড্রেন থেকে তুরাগ নদে ফেলা হচ্ছে, যা তুরাগ তীরে বসবাসরত মানুষের জীবনকে কার্যত বিষিয়ে তুলছে। এই পরিবেশ দূষণের শিকারে পরিণত হচ্ছে গাজীপুরা, বড়বাড়ী, কুনিয়া, বাঘাইলকুর, শুকন্ডি, নিমতলী, এরশাদনগর, বনমাই, দত্তপাড়া, হারবাইত, বাইগেরটেক, হায়দরাবাদ ও মজুখানের লোকজন। গাজীপুরা গ্রাম থেকে শুরু করে এই খাল দূষিত বর্জ্য বড়চক বিল হয়ে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে তুরাগ নদে। তুরাগ তীরের এসব গ্রামের লোকদের অনেকেরই রয়েছে নিজস্ব জমি, কিন্তু এরা এসব জমি বিক্রি করতে পারছেন না। এসব জমিতে ফসলও করা যায় না। কারণ ফসলে দূষিত বর্জ্য দূষণ সৃষ্টি করে।

তা ছাড়া এখনো যেসব জমিতে ফসল ফলানো হয় সেগুলোর ফলনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। আগে এখানে ধানের ভালো ফলন হতো। কিন্তু এখন ধানে চিটা বেশি হয়। ফলে এখানকার ফসলি জমি ক্রমেই ব্যবহার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই দূষণ প্রক্রিয়ার শুরু দুই দশক আগে। কিন্তু পরিবেশ অধিদফতর এ ব্যাপারে নানা পদক্ষেপ নিয়েও এই দূষণ ঠেকাতে পারেনি। পরিবেশ অধিদফতরের সূত্র মতে, গাজীপুর জেলায় সাড়ে ছয় হাজার শিল্প ইউনিট স্থাপন করা হলেও, এর মধ্যে মাত্র ৪৯০টি থেকে তরল বর্জ্য নিষ্কাশিত হয়। এর মধ্যে ৪৫০টি স্থাপন করেছে এফ্লুয়েন্টট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তথা ইটিপি। তা হলে প্রশ্ন হচ্ছে, মাত্র এই কয়টি কারখানার বর্জ্য কী করে টঙ্গী ও গাজীপুর এলকায় এত ভয়াবহ ধরনের দূষণ সৃষ্টি করেতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দরকার। শুধু টঙ্গী ও গাজীপুর এলাকাই নয়, ঢাকার জলাধারগুলো দূষিত হতে শুরু করেছে। ঢাকার বাইরে থেকেও দূষণের নানা খবর আসছে।

গত শুক্রবার উল্লিখিত জাতীয় ইংরেজি দৈনিকটি হবিগঞ্জের শিল্পবর্জ্য যেখানে-সেখানে নিষ্কাশনের খবর জানিয়েছে। খবর অনুসারে, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাফা) হবিগঞ্জের নদী-খাল ও জলাধারে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে। সম্প্রতি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বঙ্গডোবা এলাকা পরিদর্শনের সময় বাফার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল এই দাবি জানান। তার নেতৃত্বে বাফার একটি প্রতিনিধিদল এ এলাকা পরিদর্শনের সময় দেখতে পান, বিভিন্ন কল-কারখানার বর্জ্য পার্শ্ববর্তী খালে ও নদীতে ফেলা হচ্ছে। এই দূষণ এলাকাটিতে চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই, কিন্তু বাস্তবে মনে হয় এর কোনো প্রতিকার নেই। সরকারেরও এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।

এভাবে সারা দেশেই চলছে খালবিল-নদীনালায় অবাধে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলার মহোৎসব। আর এর জন্য ভোগান্তি যা হচ্ছে, তা সাধারণ মানুষের জন্যই। কিন্তু এর সার্বিক ভয়াবহ যে প্রভাব আমাদের জাতীয় জীবনে পড়ছে, তা নিয়ে কোনো ভাবনা-চিন্তা সরকারি মহলের আছে বলে মনে হয় না। অথচ এই দূষণ রোধের বিষয়টি দেখভাল ও প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য রয়েছে সরকারের একটি পূর্ণাঙ্গ অধিদফতর। আছে নানা স্থানীয় প্রশাসন। এদের চোখের সামনে দিয়েই এসব অবাধ বর্জ্য নিষ্কাশন চলছে। বাস্তব পরিস্থিতি দাবি করে এ ব্যাপারে সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার, যাতে এই উদ্বেগজনক সমস্যাটির অবসান ঘটে। না হলে অচিরেই সমস্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

এ দিকে ‘জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশন’ গতকাল এর বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এ রিপোর্টে কমিশন সুপারিশ করেছে, নদী দূষণকারীদের শুধু জরিমানা করলেই চলবে না, তাদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করতে হবে। এই সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ‘জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশন আইন ২০১১-এর সংশোধনীর খরসরায়। নদী দখলকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু নদী দূষণকারীরা শুধু জরিমানা দিয়েই পার পেয়ে যায়। এরাই বেশির ভাগ কল-কারখানার মালিক, তাই এদেরও নদীদূষণের জন্য কারাদণ্ড দেয়া উচিত বলে কমিশন দাবি করেছে। দাবিটি যথার্থ। নদী দূষণকারীদের ব্যাপারে কঠোর না হলে চলমান দূষণপ্রবণতা থেকে দেশকে রক্ষা করা যাবে না।

প্রয়োজন জাতীয় পর্যায়ে কিছু নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয়ার। যেমন সম্প্রতি দেশের সর্বোচ্চ উচ্চ আদালত একটি ভালো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকায় আর কোনো ইজারা নয়। আদালতের সিদ্ধান্তটিকে স্বাগত জানাতেই হয়। কিন্তু পরক্ষণেই মনে সংশয় জাগে, সিদ্ধান্তটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসবে তো? না স্বার্থান্বেষী মহলের চাপের মুখে নতি স্বীকার করে সরকার এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গড়িমসি করবে? কারণ, অতীতে অনেক ক্ষেত্রেই সরকার উচ্চ আদালতের অনেক রায় বাস্তবায়নে চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এর পরও আমরা আশাবাদী হয়ে তাগিদ রাখতে চাই, পরিবেশ দূষণের মতো ভয়াবহ সমস্যা সংশ্লিষ্ট এই রায়টি বাস্তবায়নে সরকার আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসবে।

মনে রাখতে হবে, পরিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) রক্ষায় কঠোর নির্দেশনা দিয়ে এই রায়টি দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওই রায়ে প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা ভবিষ্যতে কোনো ধরনের ইজারা না দিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালত যথার্থই বলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আগামী দিনগুলোতে সরকারের এমন নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত। এই রায়ে কক্সবাজারের ঝিলংজা মৌজার কোনো জমি ভষ্যিতে ইজারা না দিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিলের পর এই মৌজার যেসব ভূমি ইজারা দেয়া হয়েছে, তা বাতিল বলে গণ্য হবে। একই সাথে ইজারা ভূমিতে গড়ে ওঠা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ জন্য এসব স্থাপনার মালিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

লিজ গ্রহীতার আইনজীবীর দাবি ছিল, ১৯৯৯ সালের পর ঝিলংজা মৌজায় বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল গড়ে উঠেছে। এখানে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক আসেন। এসব স্থাপনা এখন গুঁড়িয়ে দেয়া হলে পর্যটন শিল্পে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। আর ক্ষতিপূরণ দিয়ে স্থাপনা ভেঙে ফেলার কাজটিও সরকারের জন্য ব্যয়সাপেক্ষ। আমরা মনে করি, এটি একটি খোঁড়া যুক্তি বৈ কিছই নয়। যেখানে পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রশ্নটি বিবেচ্য, সেখানে আর্থিক ক্ষতি এর ওপর বিবেচ্য হতে পারে না।

যেকোনো মূল্যে আমাদের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা করতে হবে। তা ছাড়া ইসিএ ঘোষণার পর ঝিলংজা মৌজায় ভূমি লিজ দিয়েছে যেসব কর্মকর্তা, তারা নিশ্চয়ই কাজটি ঠিক করেনি। আদালতের রায়ের সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকারের উদ্যোগে এ ধরনের আরো নীতিমালা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে ধনুকভাঙা পণ করতে হবে। কারণ পরিবেশ প্রশ্নে আর কোনো আপস নয়। সারা দেশে অবিলম্বে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়া স্থানগুলোতে চিহ্নিত করে, এগুলো রক্ষায় দ্রুত জরুরি কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। বাস্তবায়নেও থাকতে হবে সরকারের শতভাগ আন্তরিকতা।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল