১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বোল্টনের পতন ও পররাষ্ট্রনীতিতে মোড়

বোল্টনের পতন ও পররাষ্ট্রনীতিতে মোড় - ছবি : সংগ্রহ

ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোল্টনের পতনে ভেনিজুয়েলায় খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। মার্কিন প্রশাসনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘অন্যতম স্তম্ভ’, ভেনেজুয়েলার মাদুরো নিজেই আনন্দ মিছিল করছেন এবং ইরানও খুশি। কিন্তু কেন? গত বছরের এপ্রিল থেকে জন বোল্টন হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে কাজ শুরু করেন। তার নিয়োগের সময়ই, ২০১৮ এর মার্চে এই কলামে ‘জন বোল্টনের ইরান যুদ্ধ’ নামে লিখেছিলাম। নিয়োগের সময় ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ বলেছিলেন, ‘জন বোল্টনের নেয়া পরিকল্পনা আমেরিকার জন্য বড় ধরনের একটি ব্যর্থতা বয়ে নিয়ে আসবে এবং এ ধরনের তৎপরতা আন্তর্জাতিক সমাজে আমেরিকাকে আরো এক ঘরে করবে।’ তিনি বলেছেন, ‘ইরান যাতে কিছুতেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি না চালাতে পারে, বোল্টন দশ বছর আগেও সে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে, তেহরানকে সেই কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে পারেনি।’ বোল্টন এত বেশি ফন্দিবাজ যে, ট্রাম্পের সাথেও কাজ করতে পারলেন না। বোল্টনের ইরানবিরোধী প্রচেষ্টার জন্য আমেরিকানরা তাকে, ‘ইরান-বাজপাখি’ বলে ডাকে। আমেরিকা ফার্স্ট-এর ফর্মুলাদাতাও বোল্টন। তিনি মনে করেন, বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে প্রমাণ করতে হবে, আমেরিকাই সেরা। ট্রাম্প বলতেন, ‘এমন কোনো যুদ্ধ নেই যা বোল্টনের পছন্দ নয়।’

বোল্টন প্রতিনিয়ত ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা করে কেন্দ্রগুলো নির্মূল করতে চেয়েছেন, আফগানিস্তান, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া- প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের সাথে দ্বিমত ও বাগি¦তণ্ডা করেছেন। একপর্যায়ে বোল্টনকে সাথে না আনার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে অনুরোধ করে উত্তর কোরিয়া। ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রূহানির সাথে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করলে বোল্টন তার তীব্র বিরোধিতা করেন এবং ইরানের তেল রফতানি শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার জন্য পরামর্শ দিলে ট্রাম্প সে দিকেই পা বাড়ান। এর ফলেই হরমুজ প্রণালীর যুদ্ধে জড়িয়ে ব্রিটেনের ত্রাহি অবস্থা, ‘গ্রেস ওয়ান’ হাতছাড়া, জিব্রালটারের সাথে বিরোধ। এসব ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের অনেক কর্মকর্তা বোল্টনকে ‘ডা: নো’ বলেন। ট্রাম্প কোনো পূর্ব শর্ত ছাড়াই বসতে চান, কিন্তু রূহানি অবরোধ উঠিয়ে নেয়ার পূর্বশর্ত দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ‘বোল্টনের বিদায় একটি সমস্যা দূর করেছে।’ ট্রাম্প বলেন, ‘I informed John Bolton last night that his services are no longer needed at the White House.’

বোল্টনের পরামর্শেই ট্রাম্প পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসেন। এদিকে ইরান চুক্তির শৃঙ্খল মুক্ত হয়ে ‘ওয়েপন গ্রেড ইউরেনিয়াম’ সমৃদ্ধকরণে হাত দেয়। এজন্য ট্রাম্প বোল্টনকে দোষারোপ করেন। ট্রাম্প মনে করেন, ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে; সেটিও নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ প্রণয়নে বোল্টনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ফিলিস্তিন বিষয়ক এ চুক্তি নিয়ে আরব বিশ্বে এখনই হই চই পড়েছে। বোল্টন আফগানিস্তানের তালেবানের সাথে শান্তি চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। তালেবান নেতাদের ক্যাম্প ডেভিডে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে আমন্ত্রণ জানান, বোল্টন তারও প্রতিবাদ করেছিলেন। উত্তর কোরিয়া প্রশ্নেও ট্রাম্পের সাথে বোল্টনের ছিল তীব্র মতবিরোধ। উ: কোরিয়ার কিমের সাথে শীর্ষ বৈঠক ডাকায়, বোল্টন ঘোরতর আপত্তি জানান।

তার এই কঠোর অবস্থানের কারণে ট্রাম্প সন্দেহ করতেন, বোল্টন চান না উত্তর কোরিয়ার সাথে শান্তিচুক্তি হোক। ভেনিজুয়েলার ক্ষেত্রে বোল্টন ট্রাম্পকে যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তার উল্টোটা ঘটেছে। ভেনিজুয়েলায় ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন বিদেশ নীতি। বোল্টনকে দায়ী করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘সে আমাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে।’ বিশ্বের বড় বড় ইস্যুতে বোল্টনের পরামর্শে ট্রাম্প প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের আলোচনাকারী ডিভিড মিলার বলেন, ‘সে শুধু প্রেসিডেন্টকে অসংখ্যবার বলতে পারে না, না, না।’ বোল্টন রিপাবলিকান নেতাদের কাছে ‘রাজনৈতিক ধান্ধাবাজ’ হিসাবে পরিচিত। ইরাকে যা খুঁজে পাওয়া যায়নি সেই ‘ওয়েপন অব মাস ডেসট্রাকশন’ বা গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ‘আবিষ্কারক’ হলেন এই বোল্টন। তিনি তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট বুশ ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ারকে এই মিথ্যার আশ্রয় নিতে প্রলুব্ধ করেছিলেন।

ইরাক যুদ্ধের জন্য টনি ব্লেয়ারকে যুদ্ধপরাধী হিসাবে যেকোনো সময় বিচারের কাঠগড়ায় উঠতে হতে পারে। জর্জ বুশ দৃশ্যত নিরাপদ আছেন।

আগেই বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার জন্য ট্রাম্পের চেয়ে বোল্টনের আগ্রহ ছিল বেশি। ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শাউল মোফাজ স্বীকার করেছেন, বোল্টন তাকে ইরানে হামলা চালাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। ইরানের বিরুদ্ধে একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য বোল্টন ট্রাম্প প্রশাসনকে প্রস্তুত করতে পেরেছিলেন। কূটনৈতিক আলোচনার পরিবর্তে সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে সমাধান করাই বোল্টনের পছন্দ। এক দশক ধরে তিনি ইরানের ওপর বোমা ফেলার ওকালতি করছেন এবং উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু বোমা মেরে শেষ করার পক্ষেও মত দিয়েছিলেন। লোকটি রক্ষণশীল ও গোঁড়া জাতীয়তাবাদী। পশ্চিমা মৌলবাদীর সব উপাদান তার শিরায় প্রবাহিত। বোল্টন ইসরাইলে অহরহ ভ্রমণ করেন। তিনি নেতানিয়াহুর দোসর এবং মোসাদের সাথেও রয়েছে তার সখ্য। তাই বোল্টনের বিদায় নেতানিয়াহুর জন্যও একটি সতর্কবার্তা।

বোল্টন যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই ইরানে আক্রমণ চালানোর ফন্দি-ফিকির করেছেন। তিনি যখনি ফক্স নিউজে কোনো ইন্টারভিউ দিতেন তখন ইরান প্রসঙ্গ উঠলে সেদেশে বোমা মারার কথা বলতেন। ২০০২ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত প্রে: বুশের সময় বোল্টন ইরানবিষয়ক পলিসিমেকার হিসেবে কাজ করেছিলেন। যুদ্ধের জন্য একটি ছুতো তৈরির কাজ তখন থেকেই তিনি শুরু করেছিলেন। বোল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তিনি নিয়মিত নেতনিয়াহু ও ট্রাম্প থেকে ‘বকশিশ’ নিতেন। ওয়াশিংটন পোস্ট খবর দিয়েছে, ইরানের মুজাহেদিনে খালক নামের সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছ থেকেও বোল্টন নিয়মিত অর্থ নেন। আবার মুজাহেদিনকে টাকা দেয়ার জন্য ট্রেজারি শাখা থেকেও বিপুল অর্থ নিতেন। মুজাহেদিনে খালকের দেয়া ফটোগ্রাফ ব্যবহার করে ‘বোমা তৈরির কারখানা’ বলে তিনি ওয়ার অফিসকে তথ্য দিয়েছিলেন। পরে সেটি ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। তিনি জাতিসঙ্ঘে রাষ্ট্রদূত থাকাকালে মুজাহেদিনে খালকের নাম সন্ত্রাসীরে তালিকা থেকে বাদ দিতে পেরেছিলেন। তদুপরি, মোসাদের কাছ থেকে নিয়মিত ইরানবিরোধী তথ্য ও পরমর্শ সংগ্রহ করতেন। তিনি যুক্তি দেখিয়ে আসছেন যে, ইরান গোপনে পরমাণু বোমা তৈরি করছে। ২০০৩ সালে ইসরাইলে গোপন সফর কালে বোল্টন মত দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরাক আক্রমণ করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গেলেই ইরান নিজের নিরাপত্তার জন্য ওয়েপন গ্রেড ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিটি চালু করবে। এই ছুতো ধরে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল ইরানের ওপর হামলা চালানোর ইস্যু পেয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত সেই ছকেই কাজ করা হচ্ছে।

আমেরিকায় শীর্ষ পর্যায়ে যারা মুসলমান কর্মকর্তা হিসেবে সরকারিভাবে নিয়োজিত রয়েছেন তাদের জন্য বোল্টনের ফর্মুলা হচ্ছে, ‘এদের কাছ থেকে শপথ নিতে হবে এই মর্মে যে, তারা অনুগত থাকবে আমেরিকার প্রতি, ইসলামের প্রতি নয়।’ বোল্টন ইসলামবিরোধী ‘হেট’ গ্রুপের অনুষ্ঠানে যান এবং সেখানে ইসলামবিরোধী বক্তৃতা দেন, পত্রিকায় নিবন্ধ লিখেন। আমেরিকার মুসলমানদের জন্য তার আরো পরামর্শ হলো ‘তারা জাতীয় পরিচয়পত্র ধারণ করে চলাফেরা করবেন।’

দি গার্ডিয়ানে বোল্টন লিখেছিলেন, ‘ইরানের পরমাণু খায়েশের বিরুদ্ধে একটি মাত্র কাজ, তা হলো- ইসরাইল, আমেরিকা বা উভয়ের যৌথ সামরিক হামলার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া।’ ইরানিরা মনে করে, ট্রাম্প নির্বাচনের আগে কোনো যুদ্ধে যাবেন না। আর নির্বাচনে যদি ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় আসেন তবে চুক্তির বিষয়টি পুনঃউত্থাপিত হতে পারে। তাই ইরানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের সহকর্মীরা এই বিষয়ে সজাগ যে, ২০০৩ এর ইরাক যুদ্ধে যত সহযোগী ছিল, ইরান যুদ্ধে তেমন নাও হতে পারে। আর ইরান অনেক দিক দিয়ে বিপজ্জনক। আক্রান্ত হলেই ইরান ছোবল মারবে, এটা নিশ্চিত। তা ছাড়া রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়ার সাথে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি রয়েছে। ঘটনা বিভিন্ন দিকে মোড় নিয়ে লক্ষ্যচ্যুত হতে পারে। ইরাকের য্দ্ধু ছিল এক মহাবিপর্যয়, ইরান যুদ্ধেও এমনই বিরাট বিপর্যয় হবে। পার্থক্য তবে ইরাকের যুদ্ধ আঞ্চলিক কিন্তু ইরান যুদ্ধ বৈশ্বিক, সঙ্কটে সৃষ্টি করবে। ইলান গোল্ডেনবার্গ ইরান যুদ্ধের ভয়াবহ অবস্থা প্রসঙ্গ বলেছেন, ‘ইরান আফগানিস্তান, ইরাক, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনে ‘প্রক্সি ফোর্স’ দিয়ে যুদ্ধ করার শক্তি রাখে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের স্বার্থের ওপর আঘাত করতে পারে।’ ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, সৌদিআরব ও আমিরাতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত করতে সক্ষম।

যুদ্ধজাহাজ বিধ্বংসী ‘ইলেকট্রনিক ফিশ’ও মিসাইল হরমুজ প্রণালীতে শত্রুদের লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে, ফলে এক লাফে বিশ্বে তেলের দাম বেড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। এতে প্রথমেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান সাইবার ও অন্তর্ঘাতমূলক আক্রমণ এবং ওয়ার্ম প্রয়োগের মাধ্যমে সৌদি তেল উৎপাদনের একটি বড় অংশ নষ্ট করে দিতে পারে। ইরাকের গণবিধ্বংসী অস্ত্র না থাকলেও ইরানের তা আছে। দেখা যাচ্ছে, বোল্টনের থিওরি ‘উল্টো হয়ে বসে আছে’।

বোল্টনের অপসারণের পর যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম ১ শতাংশ নেমে গেছে। ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, যে, ‘ইরানে বোমা পড়ার’ চাইতে যুক্তরাষ্ট্রে ‘তেলের দাম পড়বে।’ ব্যবসায়ীরা মনে করছেন অবরোধের মাত্রা কমবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে আঘাত ও যুদ্ধের ঝুঁকিও কমে যাবে।

বোল্টন সাদ্দামের বিরুদ্ধে আলকায়েদা সন্ত্রাসীদের যোগসূত্র বের করেছিলেন, এখন ইরানের বিরুদ্ধেও আলকায়দার সংশ্লিষ্টতা বের করছেন। এই পরামর্শে উপসাগরীয় অঞ্চলে অতিরিক্ত দুই হাজার ৫০০ সৈন্য প্রেরিত হয়েছিল। এ অবস্থায় ‘৯/১১’ এর মতো ঘটনা ঘটলে ইরানের বিরুদ্ধে ‘মোক্ষম ব্যবস্থা’ নেয়া যাবে। কিন্তু তার আগেই বোল্টনের পতন হলো। একইভাবে, তিনি তালেবানদের সাথে ইরানের সখ্যর কথাও মিডিয়ায় প্রচার করেছেন। অথচ ১৯৯৮ সালে তালেবানরা ২০ জন ইরানি কূটনীতিককে হত্যা করেছিল। বোল্টন সম্ভবত শিয়া-সুন্নির বিষয়টি গুলিয়ে ফেলেছেন।

বোল্টনের পতনের পর ট্রাম্প ইরানের নেতৃত্বের মাধে আলোচনা করতে চান। ট্রাম্প বলেছেন, ‘জাতিসঙ্ঘের আসন্ন অধিবেশনে ইরানের প্রেসিডেন্টের সাথে সম্মেলনের আয়োজন করার ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।’ তিনি মনে করেন, ‘ইরানও আলোচনা করতে চায়।’ বোল্টনের পতনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, তুরস্ক, সৌদি আরব ও ভারতের নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ফ্রান্সের প্রস্তারের ১৫ বিলিয়নের ক্রেডিট লাইন ট্রাম্প প্রস্তুত রেখেছেন যদি পরমাণু চুক্তির ধারাগুলো মেনে চলে। পরমাণু চুক্তি থেকে সরে এসে ট্রাম্প কী রকম বেকায়দায়- এই উদাহরণ থেকেই বোঝা যায়। ডেইলি বিস্ট মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রকে হয় ফ্রান্সের ফর্মুলা গ্রহণ করতে হবে নতুবা আরো অবরোধ দিতে হবে। ট্রাম্প ইতোমধ্যে ইরানি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অবরোধ দিয়েছেন। সাথে সাথে রাশিয়া ইরান থেকে তেল ক্রয়ে সুইফট কোড বিহীন অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা করেছে। এদিকে সৌদি আরামকো’র শোধনাগারে ইয়েমেনের হুতিরা ড্রোন ও মিসাইল হামলা করে সৌদি তেলের উৎপাদন অর্ধেকে নামিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উপসাগরীয় এলাকা। বোল্টন ফক্স নিউজের কনট্রিবিউটর ছিলেন। সিএনএনও কাজ করেছেন। তিনি সেখানেই ফিরে গেছেন। ট্রাম্প যদি বোল্টনের বিরুদ্ধে বেশি কিছু বলেন তবে তার মতপার্থক্য ও ট্রাম্পের অপ্রকাশিত কথাবার্তা নিয়ে নিয়মিত ফক্স নিউজে নিজকে ‘ডিফেন্ড’ এবং প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে মতামত প্রকাশ করার কথা বলেছেন বোল্টন। আসন্ন নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের জন্য বোল্টন মাথাব্যথার আরেক কারণ।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব, বাংলাদেশ
সরকার ও গ্রন্থকার

 


আরো সংবাদ



premium cement