২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জাতীয়তাবাদী বিদ্বেষ

-

সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ও জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ছে। দেশটির বহুত্ববাদী (চষঁৎধষরংঃরপ) সমাজের বৈশিষ্ট্য ম্লান হতে চলেছে। ভারতের শিবসেনার মতো ধর্মান্ধ ও উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধরা শ্রীলঙ্কায় ‘বদুবালা সেনা’ ও ‘বুড্ডিস্ট ফোর্স’ নামে চরমপন্থী সংগঠন গড়ে তোলে। রাজনীতিক ও সিংহলি সন্ন্যাসীরা কায়েমি স্বার্থে পরিস্থিতির সুযোগ নিতে দ্বিধা করছেন না। বিশেষত নিরীহ মুসলমান সংখ্যালঘুদের ওপর দমনপীড়ন উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সে দেশের ২০ লাখ মুসলিম নারী, পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ উদ্বেগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। স্বতন্ত্র ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে মুসলিম জাতিগোষ্ঠী দেশের তৃতীয় বৃহৎ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। নারীদের হিজাব ও বোরকা নিয়েই বিদ্বেষ, ঘৃণা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে বেশি।

মুসলমানদের মালিকানাধীন দোকানপাটসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। মসজিদ ও মুসলিমদের বসতবাড়ি লক্ষ্য করে সিংহলি বৌদ্ধরা এলোপাতাড়ি পাথর ছুড়ে মারে। খাবারে জন্মনিরোধক ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে- নেতাদের এমন মিথ্যা অভিযোগে ২৫ জুন থেকে মুসলিম দাতব্য সংস্থা ‘জনপোষা ফাউন্ডেশন’-এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কলম্বোর ক্যান্সার হাসপাতাল ও কালুবোইলা হাসপাতালে ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সংস্থাটির তরফ থেকে প্রতিদিন দুই হাজার দরিদ্র রোগীকে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করা হতো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভয়ার্ত মুসলমানেরা তাদের বাস্তুভিটা ছেড়ে অন্যত্র পালাচ্ছেন।

খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপনকালে ২১ এপ্রিল কলম্বো ও তার আশপাশের তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলসহ আটটি স্থানে সিরিজ বোমা হামলাকে কেন্দ্র করে সে দেশে মুসলমানদের সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। এই হামলায় ৪২ বিদেশী নাগরিকসহ অন্তত ২৫৯ জন মানুষ প্রাণ হারান এবং পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হন। ইসলামিক স্টেট (ওঝ) হামলার দায় স্বীকার করেছে। এর পরপরই আইএসের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, রাইফেল হাতে জাহরান অন্য সাত তরুণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাকি সবাই ছিল মুখোশ পরা। তারা ভিডিওটিতে আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির প্রতি আনুগত্য জানায়। এই ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর হামলার সাথে জাহরানের সম্পৃক্ততার দাবি আরো জোরালো হয়। সে দেশের সরকার ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত (ঘঞঔ) নামে পরিচিত সংগঠনের শীর্ষ নেতা জাহরান হাশিম মোহাম্মদকে (৪০) হামলার মূল হোতা হিসেবে সন্দেহ করছে।

পুলিশের ধারণা, জাহরান নিজে কলম্বোর শাংরি-লা (ঝযধহমৎর খধ) হোটেলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে। হামলার বেশ কয়েক মাস আগে থেকে ছিল নিখোঁজ। জাহরানের মৃত্যু নিয়ে সৃষ্ট অস্পষ্টতা কাটাতে অপরাধ তদন্ত অধিদফতর আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ডিএনএ পরীক্ষা চালাবে। দৈনিক The Arab News-এর ভাষ্য অনুযায়ী, জাহরান এখন মালদ্বীপে। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে The Guardian জানায়, বোমা হামলাকারীরা সবাই শ্রীলঙ্কান এবং অনেকে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় পড়ালেখা করেছে। বোমা বিস্ফোরণের পরপরই জাহরান হাশিমের পরিবারের ১৮ জন সদস্য নিখোঁজ অথবা মারা গেছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জাহরানের গ্রামের বাড়ি কাথানকুদিতে অভিযান চালিয়ে তার বাবা, মা, দুই ভাই, স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করেছে (CNN, 28 April’19)।

ইতোমধ্যে উগ্র বৌদ্ধদের সাম্প্রদায়িক দাবির মুখে শ্রীলঙ্কায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ৯ জন মন্ত্রী এবং দু’জন গভর্নর পদত্যাগ করেছেন। সন্ন্যাসী-রাজনীতিবিদ সংগঠন সিংহলি জাতীয়তাবাদী জাথিকা হেলা উরুমায়া- জেএইচইউ-এর এমপি আথুরুলিয়া রথানা থেরো শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান কান্ডির দন্ত মন্দিরের বাইরে অনশন শুরু করেন। অনেক সন্ন্যাসী ও সচেতন লোক এই অনশনে যোগ দিয়ে জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা বাড়িয়ে দেন। এই এমপি মন্ত্রিসভার সদস্য রশিদ বাথিউদ্দিন, ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর আজাদ সালি ও ইস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর হিজবুল্লাহকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবি করেন। থেরো দাবি করেন, এ তিন মুসলিম রাজনীতিবিদ উগ্রবাদ বৃদ্ধির জন্য দায়ী এবং আত্মঘাতী বোমারুদের নেতা জাহরানে সাথে তাদের সম্পর্ক রয়েছে। ইস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর হিজবুল্লাহ সৌদি আরবের তহবিলে ‘শরিয়াহ বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করছেন- এমন একটি অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কান গোয়েন্দা সংস্থা গত এপ্রিলের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে অবহিত ছিল ১০ দিন আগে থেকেই। কিন্তু সেই তথ্য তারা কোনো মন্ত্রীকে জানাননি।’ গত ৪ এবং ২০ এপ্রিল দুই দফায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘সশস্ত্র হামলা হতে পারে’ এমন বার্তা শ্রীলঙ্কা সরকারকে দিয়েছিল; কিন্তু এই নৃৃশংসতা ঠেকাতে সতর্কতামূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ঔদাসীন্য ও ব্যর্থতার দায় সরকার এড়াতে পারে না। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানকে বরখাস্ত করে সরকার দায়িত্ব শেষ করেছে। প্রেসিডেন্ট বনাম প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার টানাপড়েনে সুশাসন বাধাগ্রস্ত হয় এবং সমন্বয়হীনতা চোখে পড়ার মতো। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানের প্রশ্ন আমলে নেয়া হয়নি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির হাতে। রাষ্ট্রপতির পক্ষ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষকে গোয়েন্দা তথ্যটি জানায়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রজিথা সেনারতেœ বলেন, ‘এটা দুনিয়ার একমাত্র দেশ, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দেয় না। সরকার আগাম ব্যবস্থা নিলে এই রক্তপাত এড়ানো যেত।’

মুসলিমবিদ্বেষী সহিংস ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধিত্বকারী OIC শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওআইসি খুব কাছ থেকে শ্রীলঙ্কায় মুসলমানদের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। দেশটিতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বেড়েছে যা অসহনীয়। এ অবস্থায় মুসলিম সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সন্ত্রাস কোনো ধর্ম বা সম্প্রদায় করে না, বরং চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’

দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলার কারণে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। শ্রীলঙ্কার মুসলিম সম্প্রদায় পাকিস্তান থেকে শ্রীলঙ্কায় চাল, আলু ও পোশাক আমদানি ও বাজারজাত করে থাকে। হ্রাস পেয়েছে রফতানিও। দোকান, সুপার স্টোর ও গোডাউনে হামলা চালানোর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পণ্যগুলো শ্রীলঙ্কার বিমানবন্দরে পড়ে আছে। বেশির ভাগ পণ্য, বিশেষ করে সবজি ও ফল বিমানবন্দরেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত স্থানীয় বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের হামলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের আনুমানিক ৫০ কোটি ডলারের মতো লোকসান হয়েছে। এ ছাড়া, পাকিস্তানি রফতানিকারকদের তিন কোটি ডলারের মতো অর্থ পরিশোধ করা বাকি রয়েছে (দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, ২০ মে ২০১৯)।

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার অর্থ পবিত্র দ্বীপ। সাবেক নাম সিলন। ১৯৭২ সালে এই নাম বদলে হয় শ্রীলঙ্কা। এটা ‘গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক’ রাষ্ট্র। সরকারব্যবস্থা সংসদীয় ও রাষ্ট্রপতিশাসিত পদ্ধতির সমন্বয়ে। শ্রী জয়াবর্ধনেপুরা কোট্টে এর প্রশাসনিক রাজধানী এবং কলম্বো প্রধান বাণিজ্যিক শহর। সাড়ে ৬৫ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশে প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যা। পুরো দেশ মোট ৯টি প্রদেশে বিভক্ত। সিংহলি বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। মূল জনগোষ্ঠীর তারা ৭০ শতাংশ। মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ১৩ শতাংশ হিন্দু, ১০ শতাংশ মুসলিম ও ৮ শতাংশ খ্রিষ্টান। এক সময় পর্তুগিজ এবং ডাচ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ছিল শ্রীলঙ্কা। এরপর শাসন করে ব্রিটিশরা। ১৫০ বছর ব্রিটিশ শাসনের পর ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা লাভ করেছে।

নৈসর্গিক সৌন্দর্য, নয়নাভিরাম সমুদ্রসৈকত, সবুজ উপত্যকা, পাহাড়ি বনভূমি, প্রাচীন স্থাপনা নিদর্শন, রুবি পাথরের প্রাচুর্য এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে শ্রীলঙ্কা পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ পর্যটক শ্রীলঙ্কা পরিভ্রমণে আসেন। এর মোট জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ পর্যটন খাত থেকেই আসে। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে বার্ষিক ১১ হাজার মার্কিন ডলারে। তবে রক্তাক্ত বোমা বিস্ফোরণ এবং হামলা-পরবর্তী সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ ও ভয়ার্ত পরিবেশ পর্যটন খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় তৈরি করেছে। এই ঘটনা শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দীর্ঘকাল নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সুনামি এবং অতীতে বিভিন্ন মেয়াদে গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশটির উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলি বৌদ্ধ এবং বৃহত্তম সংখ্যালঘু তামিল হিন্দুদের মধ্যে ২৬ বছর ধরে যুদ্ধ চলেছিল। ১৯৮৩ সালের ২৩ জুলাই থেকে লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম (খঞঞঊ) দ্বীপের উত্তর ও পূর্ব অংশ নিয়ে তামিল জাতিগোষ্ঠীর জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লড়াই চালায়। সরকারি বাহিনী বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি দখল করে নেয়ার পর ২০০৯ সালে এই সঙ্ঘাতের অবসান হয়। এই যুদ্ধে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

স্বাধীনতা-উত্তরকালে শ্রীলঙ্কায় ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্র জাতীয়তাবাদ প্রকাশিত হয়। রাজনীতিকেরা বিভেদের সুযোগ নিয়েছেন। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাস খুব সুখপ্রদ নয়। ২০১২ সালে কট্টর বৌদ্ধরা কান্ডি ও আশপাশের বেশ কিছু শহরের মুসলমানদের বাসা-বাড়ি, মসজিদ এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়। ২০১৩ সালের জুন মাসে ভিক্ষুদের নেতৃত্বে চরমপন্থী বৌদ্ধের একটি দল কলম্বোর শহরতলি দিয়ালায় অবস্থিত একটি মসজিদ লক্ষ্য করে পাথর ও পচা গোশত নিক্ষেপ করে। এ সময় তারা মসজিদ বন্ধ করে দেয়ার জন্য স্লোগান দিতে থাকে। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ডাম্বুলা গ্রামের একটি মসজিদে হামলা চালিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মসজিদ ভেঙে ফেলে। হামলাকারীদের দাবি, ১৯৬২ সালে অবৈধভাবে ওই মসজিদটি নির্মাণ করেছিল মুসলমানেরা। কট্টর বৌদ্ধরা হালাল খাবারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায় এবং কুরগালায় অবস্থিত দশম শতাব্দীর একটি প্রাচীন মসজিদ ধ্বংসের আহ্বান জানায়।

এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা সরকারের দায়িত্ব হলো সাম্প্রদায়িক ও উগ্র জাতীয়তাবাদী বিদ্বেষপরায়ণ শক্তিকে দমন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করা; ২০ লাখ মুসলমানকে আস্থায় নিয়ে তাদের আর্থসামাজিক ও ধর্মীয় নিরাপত্তা বিধান এবং তাদের সহযোগিতায় বিপথগামী তরুণদের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনা। এ ক্ষেত্রে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ও রাজনীতিকদের ভূমিকা ও নৈতিক দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সাম্প্রদায়িক সহাবস্থান ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পূর্বশর্ত। অন্যথায় শ্রীলঙ্কার প্রশাসন, অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক নিরাপত্তা ভেঙে পড়বে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি বেশি দিন অব্যবস্থাপনার ধকল সইতে পারবে না। এখনই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই আরো ভয়াবহ ক্ষতির মাশুল দিতে হবে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ওমরগণি এমইএস কলেজ, চট্টগ্রাম


আরো সংবাদ



premium cement