ভারত ভাঙনের পথ প্রশস্ত করা হচ্ছে
- প্রফেসর ড. এম এ মান্নান
- ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৭
‘পেটাবেন না, একেবারে গুলি করে মেরেই ফেলুন’ : সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে নির্মমতার অভিযোগ কাশ্মিরিদের ('Don't beat us, just shoot us': Kashmiris allege violent army crackdown) - এই শিরোনামে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গত ২৯ আগস্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ২০১৯, ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর সেখানে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, অধিকারকর্মীসহ প্রায় তিন হাজার জনকে আটক করা হয়। তাদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়। নির্যাতিত এক যুবক বিবিসিকে বলেন, ‘কাপড়চোপড় খুলে রড ও লাঠি দিয়ে আমাকে নির্মমভাবে পেটান তারা। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে নির্যাতন। আমি যখন চেতনা হারিয়ে ফেলি, তখন আমাকে জাগিয়ে তুলতে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়। নির্যাতনের যন্ত্রণা সইতে না পেরে তাদের বলেছিলাম, নির্যাতন না করে একেবারে গুলি করে মেরেই ফেলুন।’ আরো অনেকে এরকম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। এসব নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ করেছে বিবিসি। অবশ্য ভারতীয় সেনাবাহিনী নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছে।
এই প্রতিবেদন যেকোনো বিবেকবান ও শান্তিকামী মানুষের মতো আমাকেও চরম ব্যথিত করেছে। রাজনীতির সাথে আমার কোনো সংশ্রব নেই। রাজনীতির সাথে যুক্ত কারো বিরুদ্ধেও আমি কিছু বলছি না। কিন্তু জীবনের ৩৩টি বছর একটানা দেশের বাইরে কাটানোর সুবাদে আমি মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছি। জীবনে বহু দেশ দেখা, বহু জাতি ও সম্প্রদায়ের সাথে মেলামেশার সুযোগ আমার হয়েছে। শুধু জীবিকা উপার্জনের জন্যই চারটি দেশে আমি কাজ করেছি। পাপুয়া নিউগিনির মতো প্রাচীন ও আধুনিক সভ্যতার মিশেল একটি দেশে প্রায় পাঁচ বছর শিক্ষকতা করেছি। মানুষ যখন একটি গণ্ডির মধ্যে বিচরণ করে তখন তার দৃষ্টিভঙ্গী হয় একরকম।
আবার যখন যে ওই গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসে তখন তার দৃষ্টিভঙ্গিও প্রসারিত হয়। জীবনের শুরুতে যখন আমি বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছিলাম তখন পশ্চিম পাকিস্তান সম্পর্কে একরকম ধারণা ছিল। আবার যখন চাকরির সুবাদে সেখানে যাই তখন সেখানকার সাধারণ মানুষ সম্পর্কে ভিন্ন রকম ধারণা হয়। এরপর পড়াশোনার জন্য আমেরিকা যাওয়ার পর নতুন এক পরিবেশের মুখোমুখি হই। আমার ডক্টরাল কমিটিতে কোনো মুসলিম সদস্য ছিল না। কিন্তু তারা আমাকে এতটাই স্নেহ করতেন যে তাদের আমার দ্বিতীয় পিতা-মাতার মতো মনে হতো। ডক্টরেট করার সময় বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। ফলে আমি একরকম রাষ্ট্রহীন অবস্থায় পতিত হই। আমার ওই আমেরিকান শিক্ষকেরাই আমাকে সেই অবস্থা থেকে উদ্ধার পেতে সাহায্য করেছেন।
সেখান থেকে পাপুয়া নিউগিনির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সুযোগ পেয়ে চলে যাই। তখন এটি ছিল অস্ট্রেলিয়ান টেরিটরি। পরে দ্বীপদেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। তারপর সৌদি আরবে যাই। সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় ঘটে। বিভিন্ন সংস্কৃতির সাথে মেশার এই বিপুল অভিজ্ঞতা থেকে আমি জেনেছি যে, মানুষকে ভালোবাসতে শেখাটাই আসল কথা। মানুষকে ভালোবাসলে তার প্রতিদান তুমি পাবেই। আর এখানেই পশ্চিমা সভ্যতার ব্যর্থতা। সেখানে মানুষের প্রতি ভালোবাসা হারিয়ে গেছে এবং হারিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা সভ্যতা আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে- বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রশাসন, আরো কত কী! আমিও তাদের সমাজে পড়াশোনা করেছি। যার বদৌলতে তাদের সমাজকে ভেতর থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। তাদের শিক্ষাব্যবস্থা যে এই মুহূর্তে সেরা সেটা আমি অস্বীকার করব না। কিন্তু তাদের ব্যবস্থাগুলো তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের কাজেই লাগছে, আমাদের উদ্দেশ্য হাসিলের কাজে লাগছে না- এটা আমি বুঝতে পেরেছি।
আমি সবসময় পাশ্চাত্যের কথিত গণতন্ত্রের বিরোধিতা করে এসেছি। কারণ, তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও সবাই যার যা খুশি তাই করে যাচ্ছে- জাতিসঙ্ঘই হোক বা ভারতই হোক। মানবাধিকার, গণতন্ত্র এগুলোতো পশ্চিমা ধারণা। যে জাতিরাষ্ট্র আজকের বিশ্বে হানাহানির প্রধান কারণ, সেটাও পশ্চিমা ধারণা। গণতন্ত্রের ধারণায় কতটা অসঙ্গতি রয়েছে তার প্রমাণ আজকের ভারত। বিবিসির প্রতিবেদনেও পশ্চিমা গণতন্ত্রের অসঙ্গতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নরেন্দ্র মোদি গণতন্ত্রের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আবার তিনিই কাশ্মিরের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে দমানোর চেষ্টা করছেন, রাজ্যটির স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছেন। এক সংখ্যাগরিষ্ঠ আরেক সংখ্যাগরিষ্ঠের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে- এটাই পাশ্চাত্য গণতন্ত্র।
ভারতকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতীয় গণতন্ত্রের অসঙ্গতিও সেটাই। অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেনও বলেছেন যে, বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় কাশ্মিরের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হয়েছে। তাই তিনি এখন আর ভারতীয় হিসেবে গর্ববোধ করেন না (নয়া দিগন্ত, ২০-০৮-২০১৯)। ভারতের মোদি সরকারের সমর্থকেরা হয়তো এতে খুশি হয়েছেন এ কারণে যে, কাশ্মিরকে তারা কলোনিতে পরিণত করতে পেরেছে। কিন্তু পৃথিবীতে কোনো কলোনিই টিকে থাকেনি। বরং এতে ভারত ভেঙে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে। কাশ্মিরে যে অত্যাচার-নিপীড়ন হচ্ছে তাতে অঞ্চলটি আরেক আফগানিস্তানে পরিণত হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও রাষ্ট্রনায়কের চিন্তাধারার মধ্যে তফাৎ এখানেই।
কাশ্মিরে যা হচ্ছে সেটা রাজনীতিকদের কাজ, কোনো রাষ্ট্রনায়কের কাজ নয়। কাশ্মির ইস্যুটিকে জাতিসঙ্ঘে নিয়ে গিয়েছিলেন নেহরু, পাকিস্তান নয়। নিরাপত্তা পরিষদে সিদ্ধান্ত হয়েছিল কাশ্মিরে গণভোট হবে। সেই গণভোটের রায় বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। এর জন্য নিরাপত্তা পরিষদকেই দায়ী করতে হয়। অর্থাৎ ‘মনোপলি অব পাওয়ার’। এটা পশ্চিমা গণতন্ত্রের আরেকটি অসঙ্গতি। মাত্র পাঁচ জনের হাতে গোটা দুনিয়ার ক্ষমতা। গোটা দুনিয়ার মানুষ যদি একদিকে থাকে, আর নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ ক্ষমতাধরের একজন বিপক্ষে থাকে তাহলে সেটা হবে না। এটা কি মানবাধিকারের অসঙ্গতি নয়? মানবসভ্যতার অসঙ্গতি নয়? একে কি সভ্যতা বলে? এখন যে শাসন চলছে তা তো জঙ্গলের শাসনের চেয়েও খারাপ।
আমি যখন কর্মোপলক্ষে পাপুয়া নিউগিনিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন অনেকে আমাকে বলেছে ওখানেতো নরখাদকদের বাস। আমি বললাম, থাকুক, তাও দেখে আসি। আমি সেখানকার সবচয়ে বড় শহর ও রাজধানী পোর্ট মোরিসবিতে গেলাম। যাকে সংক্ষেপে পম সিটি বলা হয়। সেখানে বার্নস ফিলিপ নামে একটি হাই কোয়ালিটি ইন্টারন্যাশনাল সুপার মার্কেট আছে। সেখানে ধনেপাতা থেকে শুরু করে ফ্রিজ পর্যন্ত সবকিছু কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু সেখান থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে গেলে দেখা যেত মানুষ তখনো পাথরে পাথরে ঘষে আগুন জ্বালাচ্ছে। এমন বৈপরিত্য। সেখানে বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ হতো তীর-ধনুক, বর্শা দিয়ে। তিন মাস যুদ্ধের পর দেখা যেত দু’জন বা তিনজন মারা গেছে। আমরা তাদের অসভ্য বলি। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কী হয়েছে? প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কী হয়েছে? কোটি কোটি মানুষ মারা গেছে। আমরা সভ্য কারণ আমরা ‘এফিশিয়েন্ট কিলার’। আমরা একটি বন্দুক দিয়ে অনেক মানুষ মারতে পারি। একটি এটমবোমা ফেলে গোটা শহর নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারি। এই মাপকাঠিতে বিচার করলে আমরা নিজেদের চরম অসভ্য জাতি ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারি না।
কাশ্মিরে যে অত্যাচার চলছে তা বিশ্বের তাবৎ শান্তিকামী মানুষের গালে চপেটাঘাতের মতো। এই অত্যাচার আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়া উচিত। মোদির বক্তব্যকে গলাবাজি বা বক্তৃতাবাজি বলা যায়। তিনি হয়তো কাশ্মির দখল নিয়ে গলাবাজি করে সাধারণ কিছু মানুষের বাহবা কুড়াতে পারবেন কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটা এমন বিশাল বিপদ ডেকে আনবে, যা নিয়ন্ত্রণ করার সাধ্য কারো থাকবে না। প্রকাশ্যে যাই বলা হোক না কেন, প্রতিবেশী প্রতিটি দেশের সাথে ভারতের বিরোধ লেগেই আছে। বাংলাদেশের সাথে বিরোধ, নেপালের সাথে বিরোধ, শ্রীলঙ্কার সাথে বিরোধ, পাকিস্তানের সাথে বিরোধ, চীনের সাথে বিরোধ। প্রতিবেশীদের সাথে ভ্রাতৃসুলভ আচরণ, নিজের নাগরিকদের সাথে ন্যায্য ও সহমর্মিতার আচরণ করা ছাড়া ভারত টিকে থাকবে কিভাবে? রাজনৈতিক বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে মানবতাকে স্থান দিতে না পারলে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না।
আমি যখন নিউগিনির ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে যোগ দেই, তখন ছিলাম সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া প্রথম বাংলাদেশী। বিভাগীয় প্রধানদের একজন ছিলেন বৌদ্ধ, একজন খ্রিষ্টান, আমি মুসলমান। সেখানে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের অধ্যাপকরা ছিলেন। আমাদের মধ্যে মতবিনিময় হতো। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ। আমি বিশ্ববিদ্যালয় ফ্যাকাল্টিতে একমাত্র মুসলমান ছিলাম। আমরা সেখানে ঈদ উদযাপন করেছি। আমাদের ডিপার্টমেন্টের যিনি ডিন ছিলেন তিনি আবার ছিলেন শৌখিন নাবিক। এই শখের কারণে তার বিভিন্ন মুসলিম দেশে যাওয়া-আসা ছিল, সেখানকার সংস্কৃতি ও উৎসবের সাথে তিনি পরিচিত ছিলেন। তার উৎসাহ ঈদ উৎসব আয়োজনে আমাদের আরো বেশি অনুপ্রাণিত করে।
পাপুয়া নিউগিনিবাসীর কাছে এই উৎসব ছিল একেবারে নতুন। তাদের অনেকে জীবনে এমন উৎসবে অংশ নেয়া তো দূরের কথা, শোনেওনি। তাই ঈদ কাকে বলে তার বিবরণ দিয়ে দাওয়াত কার্ড ছাপানো হয়। সেখানে ফিজির কিছু ছাত্র ছিল, আর দু’জন মুসলমান ছাত্র বাইরে থেকে আমাদের ঈদ উৎসবে যোগ দিতে আসে। পোর্ট মরিসবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমার এক আত্মীয় এবং আরেক পাকিস্তানি বন্ধুকেও নেমন্তন্ন করা হয়। আমার বাসাতে ১০-১২ জনকে নিয়ে ঈদের নামাজও আমরা পড়েছি। আমাদের ঈদ উৎসবে অতিথির অভাব হয়নি। উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি ছিল না। ঈদ উৎসবে দাওয়াত পাওয়া বেশির ভাগ অতিথি খ্রিষ্ট ধর্মের। তারা ঈদের মানে বোঝেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা হিন্দু ছাত্র-শিক্ষক ছিলেন তাদের জানা ছিল মুসলমানদের সংস্কৃতি সম্পর্কে। ফলে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করেন তারাই। বিশাল আয়োজনে মাত্র ৮-১০ জন ছিল মুসলমান। বাকি সবাই অন্যান্য ধর্মের। আমার জীবনে এটাই ছিল সবেচেয়ে বড় ও স্মরণীয় ঈদ উৎসব।
আমি এই প্রসঙ্গের অবতারণা করেছি ক্রস-কালচার অনুভূতিটি বুঝানোর জন্য। যা আজ হারিয়ে যাচ্ছে। আজ যে যত সুদক্ষ হত্যাকারী তাকেই আমরা সভ্য বলছি। পশ্চিমারা এই সভ্যতা আমাদের দিয়েছে। এর জন্য দায়ী পশ্চিমাদের জাতিরাষ্ট্রের ধারণা। ভারত তো হাজার হাজার বছর ধরে আজকের মতো জাতিরাষ্ট্রের ধারণা ছাড়াই টিকে ছিল। ব্রিটিশরা আজকের ভারত তৈরি করে গেছে। তাদের আগে প্রায় আটশ’ বছর মুসলমানেরা এই উপমহাদেশ করেছে শাসন। তখন তো সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এমন দ্বন্দ্ব ছিল না। তখন মুসলিম শাসকরা চাইলে গোটা ভারতবর্ষের মানুষকে মুসলমান বানিয়ে ফেলতে পারতেন। ইসলাম প্রচার করেছেন সূফীরা, আওলিয়ারা। তারা নদীপথে এসে বিভিন্ন স্থানে আস্তানা গেড়ে মানুষকে ধর্মের পথে ডেকেছেন। তারা ধর্মীয় অনুশাসন নিজেরা পালন করে দেখিয়েছেন। তখন মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে।
শাসকদের মাধ্যমে দু-একটি নিপীড়নমূলক ঘটনা যে ঘটেনি তা নয়। কিন্তু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায় না। আটশ’ বছরের ইতিহাসে এ ধরনের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকতে পারে। কিন্তু মুসলিম শাসকেরা সব ধর্ম-বর্ণের লোকজনকে নিয়েই দেশ শাসন করেছেন। এ ক্ষেত্রে সম্রাট আকবর তো অনেকদূর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন। তার সেনাপতি ছিলেন হিন্দু। তিনি সব ধর্মকে নিয়েই কাজ করেছেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেও মুসলমানদের অবদান কম নয়। ভারতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিয়েছেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদের মতো ব্যক্তি। বেশ কয়েকজন মুসলিম ভারতের রাষ্ট্রপতিও হয়েছেন। দেশটির এই বৈচিত্র্যের মধ্যে মিলনের ধারণাটিকে এখন ধ্বংস করা হচ্ছে। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
শুধু স্লোগান দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নেয়া যায় না। সে কাজটি নরেন্দ্র মোদি করছেন। আর সে কারণে ভারতের অর্থনীতিতেও আজ ধস নেমেছে।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা। hmct2004@yahoo.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা