২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

আফগানিস্তানের জন্য শান্তি কত দূর?

- ফাইল ছবি

সব পক্ষই এখন আফগানিস্তানের শান্তি চাইছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটি থেকে মার্কিন সামরিক প্রত্যাহারের সবুজ সঙ্কেত একটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমঝোতার দরজা খুলে দিয়েছে। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে শান্তি প্রচেষ্টায় সাফল্য যে আঞ্চলিক শক্তি এবং দেশটির প্রতিবেশীদের ওপর অনেকখানি নির্ভর করবে সেটি নিশ্চিত করে বলা যায়। এই পক্ষগুলো সম্ভবত এখন যার যার স্বার্থে আন্তরিকভাবে যুদ্ধ বিধ্বস্ত এই দেশটিতে শান্তি কামনা করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও তালেবান উভয় সূত্র থেকে পাওয়া বক্তব্য অনুসারে, উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবে এমন একটি চুক্তি কাঠামোর রূপরেখা নিয়ে সমঝোতা করেছে। এই সমঝোতা অনুসারে, তালেবান গ্যারান্টি দেবে যে তারা ভবিষ্যতে যেকোনো সরকারকে সহযোগিতা করবে এবং মোটা দাগে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সাথে থাকবে। আলকায়েদাকে কোনোভাবেই আফগানিস্তানে স্থান করে নিতে দেবে না তালেবান।

গত সপ্তাহে কাতারে উভয়পক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনায় যে কিছু বাস্তব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে সেটি স্পষ্ট হয় মধ্যস্থতায় মূল ব্যক্তিত্ব খালিদজাদের টুইটারে প্রকাশ করা একটি সমঝোতাপত্রে। এই সপ্তাহে প্রকাশ করা এই টুইটারে উল্লেখ করা হয়, তালেবান প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য কাতারের দোহায় আফগান কর্মকর্তা এবং অন্য পর্যবেক্ষকদের সাথে যে আলোচনায় বসেছিল তাতে তারা চূড়ান্তভাবে একমত হয় যে, রাজনৈতিক সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই। আলোচনাকারীরা এই বিষয়েও একমত হয় যে, তারা নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে রাজি হবে এবং তারা বয়স্ক, অক্ষম এবং অসুস্থ বন্দীদের বিনা শর্তে মুক্তি দেবে। তাদের যৌথ বিবৃতিতে পক্ষগুলো কাতারের রাজধানী দোহায় ৭ জুলাই, ২০১৯-এ আন্তঃআফগান শান্তি সম্মেলনের আয়োজনের জন্য কাতার এবং জার্মান সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তারা বলেন, ‘আমরা জাতিসঙ্ঘ, আঞ্চলিক দেশ, বিশেষ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তঃআফগান শান্তি সম্মেলনের জন্য আলোচনা সহজতর করার জন্য সঙ্ঘাতের সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা আশা করছি যে, এই দলগুলো এমনভাবে তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে যাতে আমাদের দেশ ও জাতি উপকৃত হবে এবং এর ফলে প্রকৃত ও আকাক্সিক্ষত শান্তি অর্জিত হবে।’

যৌথ বিবৃতিতে আলোচনাকারীরা বলেন, ‘সংলাপ ও চুক্তির মাধ্যমে আমরা আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে এবং এর পথে বাধাগুলো মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো। আর এর মাধ্যমে একে অপরকে বুঝতে সমর্থ হবো।’

এই উপলব্ধি থেকে সব অংশগ্রহণকারী সংলাপের ধারাবাহিকতার ওপর জোর দেন। একই সাথে দোহা সম্মেলনের অংশগ্রহণকারীরা, টেকসই শান্তিতে পৌঁছানোর জন্য কতগুলো বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। অংশগ্রহণকারীরা সম্পূর্ণ একমত হন যে, আফগান জনগণের চাহিদা অনুযায়ী একটি টেকসই, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং সম্মানজনক শান্তি অর্জন করা সম্ভব হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমঝোতার মাধ্যমে।

সম্মত সমঝোতায় আরো বলা হয়েছে, ‘আফগানিস্তান হবে একটি ঐক্যবদ্ধ, ইসলামিক দেশ এবং দেশটির বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ইসলামিক সার্বভৌমত্ব, সামাজিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার, জাতীয় ঐক্য এবং আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সব আফগান অঙ্গীকারবদ্ধ।’

সমঝোতায় বলা হয়, ‘গত ৪০ বছরে, আফগান জনগণ তাদের ধর্ম, দেশ এবং সংস্কৃতি রক্ষা করেছে এবং তাদের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে। আফগানিস্তান আর অন্য দেশের যুদ্ধের সাক্ষী বা কারণ হবে না। আর এ ক্ষেত্রে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে একটি আন্তঃআফগান চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আঞ্চলিক এবং অভ্যন্তরীণ উপাদানগুলো এতে সহায়তা করবে।’

সমঝোতায় পক্ষগুলো উল্লেখ করেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশটি চলমান, দীর্ঘতর যুদ্ধের কারণে দৈনন্দিনভাবে নানা ধরনের ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে তাই এমন পদক্ষেপ নেয়া দরকার যাতে আমরা কার্যকর আন্তঃআফগান আলোচনার ব্যবস্থা করতে পারি। এ জন্য বিবদমান দলগুলো হুমকি, প্রতিশোধ এবং সঙ্ঘাতমূলক শব্দগুলো পরিহার করবে। তাদের সমাবেশের সময় নমনীয় পরিভাষা এবং শব্দ ব্যবহার করবে এবং দ্বন্দ্ব ও প্রতিশোধকে উসকে দেবে না।’

শান্তি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা দোহায় চলমান বর্তমান শান্তি আলোচনাকে জোরালোভাবে সমর্থন করে এ বিশ্বাস ব্যক্ত করেছে যে, আলোচনায় কার্যকর ও ইতিবাচক ফলাফল আফগানিস্তানের শান্তির জন্য ফলপ্রসূ হবে। আর শান্তির জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে দেশকে যুদ্ধ থেকে নিরাপদ রাখতে এবং এর পরিণতি, সহিংসতা এবং ধ্বংস কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেবে।
সম্মত সমঝোতায় সঙ্ঘাত নিরসনে কিছু পদক্ষেপ সব পক্ষ নেয়ার বিষয় বিবেচনা করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে : বয়স্ক, অক্ষম এবং অসুস্থ কয়েদিদের মুক্তি দেয়া। স্কুল, ধর্মীয় মাদরাসা, হাসপাতাল, বাজার, পানির বাঁধ এবং অন্যান্য কর্মস্থলের মতো পাবলিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আবাসিক এলাকার নিরাপত্তাও বিধান করা হবে। সেই সাথে জনগণের নাগরিক অধিকার, তাদের জীবন ও সম্পত্তির প্রতি শ্রদ্ধা ও সুরক্ষা, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি কমিয়ে আনা হবে। ইসলামী মূল্যবোধ ও কাঠামোর মধ্য থেকে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা হবে।

দোহা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা কিছু শর্তের ভিত্তিতে শান্তির জন্য একটি রোডম্যাপে সম্মত হন। যার মধ্যে রয়েছে : ব্যাপক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে একটি ইসলামী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। সব শর্ত নির্ধারণ ও তা পূরণের সাথে সাথে একযোগে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করা। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন এবং এর প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা। রাষ্ট্রের মৌলিক প্রতিষ্ঠান, প্রতিরক্ষা এবং আফগানিস্তানের অন্যান্য জাতীয় সংস্থার সংরক্ষণে সংস্কার আনা। অভিবাসীদের পুনর্মিলন এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষকে ফিরিয়ে আনা।

নতুন সহযোগিতা ও সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে দাতা দেশগুলো থেকে শান্তিচুক্তি-উত্তর সহায়তা গ্রহণ করা এবং শান্তিচুক্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে সমঝোতায়। একই সাথে আফগানিস্তানে প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশ থেকে শূন্য
হস্তক্ষেপ নিশ্চিত করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা মস্কোতে ২০১৯ সালের ৫ এবং ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আন্তঃআফগান সম্মেলনের প্রস্তাবকে সমর্থন এবং অনুমোদন করেন। আর ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তার জন্য অনুরোধ জানান।

আফগান পক্ষগুলোর মধ্যে এই সমঝোতায় স্পষ্ট যে, এবারের শান্তি প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ পক্ষগুলোর অংশগ্রহণ অথবা সম্মতি রয়েছে। মার্কিন সরকার তালেবানদের সাথে সরাসরি আলোচনা করছে এই কারণে যে, ওয়াশিংটন অবশেষে স্বীকার করেছে আফগান সঙ্কট নিরসনের কোনো ভালো সামরিক বিকল্প নেই। মার্কিন সরকার ও তালেবান আলোচনার কাঠামোর অধীনে বৃহত্তর চুক্তির অংশ হিসেবে শান্তি প্রক্রিয়াগুলো বাস্তবায়ন করা হবে বলে মনে হচ্ছে, যার মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি এবং আফগান সরকার ও তালেবানসহ আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত দেশীয় রাজনৈতিক সমঝোতার বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এটি নারী ও যুবকসহ আফগান সমাজের বিস্তৃত পরিসরে উপস্থাপনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। সঙ্ঘাতের অংশীদার প্রধান পক্ষগুলোর সেনা প্রত্যাহার, যুদ্ধবিরোধী পদক্ষেপ, রাজনৈতিক সমঝোতা এবং দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে একমত হবে যাতে বিদেশী সেনা প্রত্যাহারের পরে সরকারের পতন ঘটে অচলাবস্থা দেখা না দেয়।

আফগানিস্তানে কার্যকর শান্তির জন্য সঙ্ঘাতের মূল পক্ষগুলোর সাথে এই চুক্তি বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য অন্যান্য আঞ্চলিক কুশীলবদের পাশাপাশি বিশেষভাবে পাকিস্তানকে একমত হতে হবে। পাকিস্তান ক্ষমতায় থাকার সময় তালেবানকে সমর্থন করেছিল এবং তাদের নেতৃত্ব ও সরবরাহের ভিত্তি তৈরি করেছিল। মার্কিন বাহিনী দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার পর আফগানিস্তান থেকে তালেবানকে বহিষ্কার করে। একই সাথে পাকিস্তানের প্রভাবকেও বিদায় করার প্রক্রিয়া সক্রিয় করা হয়। পাকিস্তানের প্রভাব দূর করে আফগান সরকারকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে স্থলাভিষিক্ত করা হয় ভারতকে। পাকিস্তানের প্রতি বৈরী এই বৃহৎ প্রতিবেশী দু’দিকে সক্রিয় থাকা পাকিস্তানের নিরাপত্তার জন্য কোনোভাবেই মেনে নেয়ার বিষয় ছিল না। ফলে তালেবান তৎপরতার প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে পাকিস্তান ও তার মিত্রদের সহায়তা পাওয়া ছিল স্বাভাবিক। আফগানিস্তানের এই বাস্তবতাকে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন অস্বীকার করে আসে। ফলে কার্যকর আফগান শান্তি প্রক্রিয়া সেভাবে এগোয়নি। এখন সেই অবরুদ্ধতা থেকে শান্তি প্রক্রিয়া বেরিয়ে এসেছে বলে মনে হচ্ছে। পুরো শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা সক্রিয় রয়েছে।

এতদিন ওয়াশিংটন ও কাবুলকে পাঁচটি বিষয়ে সম্মত করতে তালেবানদের সামরিক কর্মকাণ্ডে পাকিস্তান নীরব সমর্থন করেছে বলে মনে করা হয়। প্রথমত, আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির অবসান ঘটানো, যা পাকিস্তানকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ইসলামাবাদ বিশ্বাস করে যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতী ক্রিয়াকলাপে ভারতীয় কভার সরবরাহ হয় আফগানিস্তান থেকে; পাকিস্তান সীমান্তের ডুরান্ড লাইনকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিসেবে চিহ্নিত করার বিষয়টি আফগানিস্তানের অস্বীকার করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগ ইসলামাবাদের। এছাড়া আফগানিস্তানের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার বাণিজ্যিক ও ট্রানজিট অ্যাক্সেস পাওয়া পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

যেকোনো সময় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান পারস্পরিক অ্যাক্সেসের অনুমতি দিয়ে এটি গ্রহণ করতে পারে, যাতে এখন পর্যন্ত কাবুল সম্মতি জানায়নি। এছাড়া আফগানিস্তানে ভারতীয় উপস্থিতি সীমিত করা ইসলামাবাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। অন্ততপক্ষে পাকিস্তানের সরাসরি সীমান্তে থাকা আফগান বাহিনীতে কোনো ভারতীয় সৈন্য না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় পাকিস্তান। পাকিস্তান মনে করে যে, ভারতীয় সাহায্য এবং গোয়েন্দা সহায়তায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অন্তর্ঘাতী কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়া পাকিস্তানের জন্য রয়েছে কাবুল নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ইস্যুটি। এই নদীর প্রবাহিত জলপথের ওপর বাঁধ নির্মাণ হলে তা পাকিস্তানে পানিপ্রবাহ ব্যাহত করবে এবং দেশটির জন্য গুরুতর পানি সঙ্কটের কারণ হবে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে চীনের মধ্যস্থতায় বেশ কিছু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বিশেষত চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্পটির বাস্তবায়ন আফগানিস্তানের সম্পৃক্ততার ওপর বেশ খানিকটা নির্ভর করে। এই অঞ্চলে অস্থিরতা বিরাজ করলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কঠিন হতে পারে। এর সাথে চীন পাকিস্তান দু’দেশেরই বড় অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। এমনিতে কয়েক দশকের অব্যাহত যুদ্ধ ও অভ্যন্তরীণ অন্তর্ঘাতী হামলা পাকিস্তানের অর্থনীতিকে দুর্বল করেছে। চীন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের পর বিদেশী দায় আরো বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় আইএমএফের দ্বারস্থ হতে হয়েছে দেশটিকে। যদিও চীন, সৌদি আরব ও কাতার ইসলামাবাদের আর্থিক সঙ্কট পূরণে সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে।

এ অবস্থায় আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা পাকিস্তানের জন্য নিরাপত্তা উদ্বেগ দূর করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সঙ্কট দূরীকরণেও সহায়ক হতে পারে। আফগানিস্তানে শান্তি এই অঞ্চলের অন্য প্রভাবশালী দেশ চীন রাশিয়া ও ইরানের জন্য ইতিবাচক হবে। এতে ভারতের স্বার্থের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা হলেও পূরণ করার চেষ্টা করতে পারে। বিশেষত, ভারতের বিনিয়োগের নিরাপত্তার বিষয়ে রাশিয়াও একটি ভূমিকা পালন করতে পারে।

আফগানিস্তানের যে জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাতে এখনই এই সঙ্কটের নিশ্চিতভাবে সমাধান হয়ে যাচ্ছে এমনটি মনে করার কারণ নেই। তবে দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটি বিশেষভাবে এ কারণে হয়েছে যে, এখানকার শান্তির সাথে শুধু আফগান পক্ষগুলোর স্বার্থই নয়, একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক প্রস্থান চীনের অবকাঠামো সংযোগ, রাশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্য ও নিরাপত্তা, পাকিস্তানের অর্র্থনৈতিক ও নিরাপত্তা উদ্বেগ নিরসন এবং ইরানের বৈরী শক্তির অবস্থান দুর্বল হওয়ার বিষয়টি যুক্ত। ফলে সব দিকের স্বার্থ একই বিন্দুতে মিলিত হওয়ার কারণে এখানে শেষ পর্যন্ত শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাটি অনেক বেশি জোরালো বলে মনে হচ্ছে। হ

mrkmmb@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ জামালপুরে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি মামলায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধ হতে পারে : জাতিসঙ্ঘ ‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী

সকল