২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হে মহামহিম পৃষ্ঠপোষকগণ

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী - ফাইল ছবি

আমাদের স্কুলজীবনের প্রথম দিকে গুরুজনের কাছে নানা বিষয়ে পত্র লেখা শিক্ষা দেয়া হতো। সেসব চিঠি লেখা আমরা শুরু করতাম এভাবে, ‘পাক জনাবেষু, আমার শত কোটি ছালাম ও কদমবুচি গ্রহণ করিবেন। পর সমাচার এই যে, ... ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর বহুকাল গুজরিয়া গিয়েছে। ‘পাক জনাবেষু’র আমল শেষ হয়েছে। মাঝখানে এক জনাব এর আমল এসেছিল। এখন সেটি শুধু হাটবাজারে টোটকা ওষুধ বিক্রেতাদের মুখে খানিকটা রয়ে গেছে। বাকি সবটাই এখন ‘স্যার’-এর আমল। কোথাও কোথাও স্যার তার স্ত্রীলিঙ্গ হারিয়েছেন। পুরুষ হলেও স্যার, নারী হলেও স্যার। সুতরাং নয়ন বন্ডদের পৃষ্ঠপোষকদের স্যার না বলে উপায় কী!

জেমস বন্ড ০০৭ সিনেমার আমি নিজে একজন ভক্ত। হলে গিয়ে দেখেছি। এখনো সময় পেলে ইউটিউবে দেখি এবং চমৎকৃত হই। কী ব্যক্তিত্ব, কী তেজ, কী দুর্দান্ত সাহস জেমস বন্ডের। আর কিভাবে প্রতিপক্ষের সব সশস্ত্র ব্যক্তিকে পরাভূত করে কেবলই তিনি জয়ী হন। আর খুনখারাবি তো তার কাছে ‘হাতের ময়লা’। দমাদম তিনি প্রতিপক্ষকে নির্বিচার গুলি করে হত্যা করেন। তার কখনো কোনো বিচার হয় না। চোখের পলক না ফেলে সে সিরিজ দেখেছি। কিন্তু কখনো জেমস বন্ড হতে ইচ্ছা করেনি। মনে করেছি, ও কাজটা ওরই। বন্ড থাকুন বন্ডের জায়গায়, আমার লেখাপড়া ছাড়া গতি নেই। জেমস বন্ডের পরিচয় দেখার মধ্যেও একটা স্মার্টনেস আছে। হাত বাড়িয়ে দিয়ে তিনি সব সময় বলেন, ‘আই অ্যাম বন্ড, জেমস বন্ড।’

কোমলমতি সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে ‘নয়ন বন্ড’ জেমস বন্ডের সিনেমা দেখে এতটাই প্রভাবিত হয়েছিল যে, সে একেবারে নিজের নামটাই বদলে রেখেছিল ‘নয়ন বন্ড’। বরগুনা শহরের দেয়ালে দেয়ালে বড় বড় করে তারা লিখে রেখেছিল ‘০০৭’- জেমস বন্ডের মার্কা। তারা জানত, জেমস বন্ড যেমন, যা খুশি তাই করতে পারে, তারাও তা পারবে। খুন করলে, মাদক ব্যবসা করলে, কাউকে মারধর করলে এর কোনো বিচার হবে না। জেমস বন্ডের পেছনে থাকত রাষ্ট্র আর নয়ন বন্ডদের পেছনে আছে পৃষ্ঠপোষকেরা। তারা নয়ন বন্ডদের সব অপকর্মের সাজা থেকে তাদের রক্ষা করবে। রাষ্ট্রযন্ত্র, পুলিশ আর প্রশাসনকে প্রভাবিত করবে। করেও আসছিল সেটা। ফলে বরগুনায় মাত্র ২৩ বছর বয়সেই নয়ন বন্ডরা হয়ে উঠেছিল অপ্রতিরোধ্য। তারা গুণ্ডামি, মাস্তানি, ত্রাস, হানাহানি, মাদক কারবার, মাদক সেবন, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাÑ সব বিষয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আশ্চর্যের ঘটনা এই যে, এ ধরনের অপরাধ করলেও তারা কখনো কোনো জবাবদিহির মুখোমুখি হয়নি। তাদের পৃষ্ঠপোষক স্যারেরা সব সময় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। গোটা শহরের মানুষ তাদের অনাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন, কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারেননি প্রতিশোধের আশঙ্কায়।

২০১৭ সালে পুলিশের অভিযানে কলেজ রোডের বাসা থেকে বিপুল মাদকদ্রব্যসহ নয়নকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর পর থেকেই নয়নের নামটি সামনে আসে। দুই মাস পর ওই মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠে নয়ন। এরপর সে নিয়মিত মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে যায়। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি রিফাত ফরাজীকে নিয়ে ‘০০৭’ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করে। এই গ্রুপের বড় ভাই নয়ন এবং তার সহযোগী হিসেবে রিফাত ফরাজী ও তার ছোট ভাই রিশান ফরাজীর নেতৃত্বে গঠিত এ বাহিনীতে ৩০-৪০ জন সদস্য রয়েছে। প্রকাশ্যে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনার পর ০০৭ গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করতে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে ০০৭ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য এবং পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিয়োগ পাওয়া মো: সাগরকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নয়ন বন্ডের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বরগুনা থানায় আটটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দু’টি মাদক, একটি অস্ত্র আইনে ও পাঁচটি মারামারির মামলা। এসব মামলার প্রত্যেকটিতে পুলিশ নয়নের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। তবে থানায় মাত্র আটটি মামলা থাকলেও বাস্তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক। নয়ন বাহিনীর হাতে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার অনেকেই ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে বা থানায় মামলা করতে সাহস পায়নি। রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে নয়নের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীরা।

বছরখানেক আগে বাকিতে মালপত্র বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় বিকেবি সড়কের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নয়া মিয়ার পা ভেঙে দেয় নয়ন। কোনো রাজনৈতিক পদ-পদবি না থাকলেও সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে ছাত্রলীগের রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীদের সঙ্গে চলাফেরা করায় কাউকেই পরোয়া করছিল না নয়ন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নয়ন ও রিফাত ফরাজী এলাকায় মাদক কারবার, ছিনতাইয়ে সক্রিয় ছিল। বিশেষ করে বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে যারা পড়ছেন, তাদের বেশির ভাগই অন্যান্য জেলার বাসিন্দা। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মেস করে থাকেন।

নয়ন ও রিফাত বাহিনীর সদস্যরা এসব মেস থেকে প্রায়ই মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়। অনেক মেসে কৌশলে তাদের ভাড়া করা মেয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতে ০০৭ গ্রুপের সদস্যরা। নয়ন পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে আসছিল। পাইকারি মাদক কারবারি হিসেবে সে খুচরা কারবারিদের কাছে মাদক বিক্রির পর সে নিজে পুলিশে খবর দিত। নিজে মাদক বিক্রি করে জেনে নিত খুচরা কোন কারবারির কাছে মাদক রয়েছে। সেখানে গিয়ে পুলিশ অভিযান চালানোর নামে অনৈতিক বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ত। এভাবে খুচরা মাদক কারবারিদের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে পুলিশকে ঘুষ খাওয়ার পথ তৈরি করে দিত নয়ন বন্ড।

এখানে মুদ্রার অপর পিঠের চিত্রও একই রকম। ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তার সঙ্গে দ্বন্দ্ব আছে সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের। এলাকার লোকজন জানেন, শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথও মাদক কারবারের সাথে জড়িত। তার সাথে এই কারবার উপলক্ষে গভীর সখ্য রয়েছে নয়ন বন্ড গ্যাংয়ের। ফলে পুলিশও এই গ্যাংকে সমীহ করে চলে। এলাকার কেউ কেউ বলেছেন, নয়নের অপকর্মের জন্য তারা তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। কিন্তু দেখা গেছে, পরদিনই নয়ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। এ রকম পরিস্থিতিতে বরগুনার মানুষ ক্রমেই ভরসাহীন হয়ে পড়েছেন। এ দিকে, শম্ভুর ছেলে সুনাম বলেছেন, নয়নের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বরং কয়েকবার তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। এ দিকে দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, ফরাজীদের সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে, সেটা প্রমাণ করতে পারলে তিনি রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন।

এরকম একটা প্রেক্ষাপটে গত ২ জুলাই নয়ন বন্ড ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে। ক্রসফায়ার নিয়ে পুলিশের ভাষ্য বরাবরের মতোই, এতে নতুনত্ব কিছুই নেই। বলা হয়েছে, নয়ন ও তার সহযোগীরা সমবেত হয়েছিল। পুলিশ খোঁজ পেয়েছিল এবং সেখানে হাজির হয়েছিল। তারপর কথিত গোলাগুলি। শেষে নয়নের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার। এ কথা সত্য, রিফাত হত্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু মানুষ ওই হত্যাকারীদের ক্রসফায়ারে দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। নয়নের মৃত্যুর পর যেন এলাকাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তারা রুদ্ধশ্বাস অবস্থা থেকে মুক্তির পর মিষ্টিও বিতরণ করেছেন। অনেকে তাদের প্রচলিত আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়ার কথাও বলেছিলেন। তবে প্রথম পক্ষের আশাই ফলেছে। দ্বিতীয় পক্ষের কথা রাখলে দেখা যেত এর পেছনে পৃষ্ঠপোষকতাকারী মদদদাতা স্যারেরা কে কে আছেন। আবার এটাও সত্য, যাদের নাম বেরিয়ে আসত, তাদের নাম কি পুলিশ প্রকাশ করতে পারত? নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি বা সাগর-রুনি হত্যার মতো প্রতিবেদন দাখিল করা ৬৬ বারের মতো পিছিয়ে যেত? আর তত দিনে পার হয়ে যেত সাড়ে সাত বছর?

বরগুনায় নয়ন গ্যাংদের ব্যাপারে আতঙ্ক অনেক দিনের। না রাজনৈতিক নেতৃত্ব, না পুলিশ- কেউই এদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেনি। ফলে দানব হয়ে উঠছিল নয়ন বন্ড গ্যাং। তারই সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ ঘটল গত ২৬ জুন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এই গ্যাং সকালে রিফাত শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। তার জন্য করে নিশ্চিদ্র আয়োজন। রিফাত তার স্ত্রী মিন্নিকে নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে ফিরছিলেন। তখনই পথ আগলে দাঁড়ায় নয়ন গ্যাং। এক কথা দু’কথায় ঝগড়া বাধায়। তারপর গ্যাংয়ের একজন রিফাতকে জাপটে ধরে এবং নয়ন রাম দা দিয়ে তাকে কোপাতে থাকে। মিন্নি তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখন শত শত লোক আশপাশে জমে যান।

তবে রিফাতকে রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে আসেননি। কেউ কেউ পুরো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ভিডিও করেছেন। আশপাশে ছিল সিসি ক্যামেরা। সেসব ক্যামেরায়ও ছবি ধরা পড়ে। নয়ন গ্যাং সেখান থেকে পালানোর সব রাস্তার মুখে পাহারা বসায়, যাতে রিফাত পালাতে না পারে। এত মানুষ। কিন্তু ভয়ে বা প্রতিহিংসার ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। হত্যাকাণ্ডের পরও দীর্ঘক্ষণ এই গ্যাংয়ের সদস্যরা পালিয়ে যায়নি। তারা এলাকায় দাপটের সাথে অবস্থান করেছে। হাসপাতালের মর্গে জামাতাকে দেখতে গিয়েছিলেন মিন্নির বাবা। কিন্তু নয়নের লোকেরা লাঞ্ছিত করে সেখান থেকে তাকে তাড়িয়ে দেয়। এসব কারণেই পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

বিষয়টি হাইকোর্টে উপস্থাপন করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। এ বিষয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হয়। বিচারপতিরা বলেন, ‘রাস্তায় প্রকাশ্যে একজন মানুষকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে মারল। জনগণ এই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিডিও করল; কিন্তু কেউ বাধা দিলো না। দেশের জনগণ তো এমন ছিল না। আমরা জনগণের বিষয়ে কী আদেশ দেবো।’ এটা বলে প্রশ্ন তোলেন আদালত। পরে চৌঠা জুলাই রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অগ্রগতির শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, নয়ন বন্ড এক দিনে তৈরি হয় না। একা একা তৈরি হয় না। কেউ না কেউ তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে।

আদালত বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যা পছন্দ করি না। এতে পাবলিকের কাছে ভুল তথ্য যেতে পারে।’ নয়ন বন্ডের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা আদালতকে অবহিত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এর একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘আমরা বিচার বিভাগ কখনো নির্বাহী বিভাগের যেসব দায়িত্ব পালনের কথা, সেসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। এটা তাদের দায়িত্ব। তাদের রুটিন ওয়ার্ক। যদি সেখানে কোনো ব্যত্যয় ঘটে, শুধু তখন বিচার বিভাগ নির্দেশনা বা হস্তক্ষেপ করে থাকে। আমরা এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং বা বিচারবহির্ভূত হত্যা পছন্দ করি না। হয়তো প্রয়োজনের খাতিরে অনেক সময় জীবন বাঁচানোর তাগিদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা করে থাকে। তবে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে আরো সতর্ক হতে হবে। আইন যে সুযোগ সুবিধা দিয়েছে, তা যেন নিশ্চিত হয়।’

জনগণ জানে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানে, নয়ন বন্ডরা এক দিনে একা একা তৈরি হয় না। সমাজের পৃষ্ঠপোষক স্যারেরা তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নয়ন বন্ডদের তৈরি করেন। তাদের অর্থ, অস্ত্র ও প্রশ্রয় দিয়ে প্রতিপক্ষের মাথা ভাঙেন। খুনখারাবিতেও পিছপা হন না। কিন্তু যখন প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় তখন তাদের ক্রসফায়ারের মতো ঘটনায়ও চুপ করে থাকেন। কেউ কোনো দায়িত্ব গ্রহণ করেন না। এভাবে নয়ন বন্ডরা তৈরি হয়, এভাবে মিলিয়ে যায়। সমাজ এখন এতটাই কলুষিত হয়েছে যে, এ ঘটনাকে স্বাভাবিক বলে বিবেচনা করা হয়।

পেছনের পৃষ্ঠপোষকেরা তখন নতুন বাহিনী গড়ে তোলার কাজে লেগে যান। ক্রসফায়ারে নয়ন বন্ড নিহত হয়েছে। তার সহযোগীদের কেউ কেউ ধরাও পড়েছে। যারা ধরা পড়েছে, পৃষ্ঠপোষক ‘স্যার’দের প্রয়োজনে তারা হয়তো বাহিনীর অন্য সদস্যদের জেল থেকে ছাড়িয়ে আনবেন। তা যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তবে নতুন বাহিনী গড়বেন। এই স্যারদের ইচ্ছার যূপকাষ্ঠে বলি হয়ে যায় নয়ন, রিফাত, রিশানের মতো তরুণেরা। পৃষ্ঠপোষক স্যারেরা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অতএব, মহামহিম পৃষ্ঠপোষকগণ, আপনাদের হাজারো সালাম!

লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
rezwansiddiqui@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement