২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শ্রীলঙ্কায় মুসলমানদের দুর্দশা

-

২০১৮ সালে মুসলমানদের ওপর শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধ উগ্রবাদীদের হামলা হয়েছিল। অনেকে এই আক্রমণকে ‘সেন্ট্রাল হিল হামলা’ বলেন। তখন মুসলমানদের সম্পদ, ঘরবাড়ি ও দোকানপাটের ওপর হামলা হয়েছিল। মুসলমান রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় কোনো সংস্থা, এমন কি সরকারের সিভিল সোসাইটি এই সহিংস আক্রমণ রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল। মুসলিম এমপিরা এসব ‘গায়ে না মেখে’ সরকারের জোটে ঢুকে পড়েন। প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সাথে অনেক মুসলমান সংসদ সদস্য পাকিস্তান সফরে সঙ্গী হয়েছিলেন। এদের মধ্যে হিজবুল্লাহ, ইসহাক রহিম, মাস্তান কাদের ও আলী জহির মাওলানা উল্লেখযোগ্য। মন্ত্রী ফাইজুর মোস্তফা জেনেভায় ইউএনএইচআরসি সেশনে যোগদান করলেও মুসলমানদের দুর্দশার বিষয়ে কিছ্ইু বলেননি। এ থেকে মনে করা যায়, শ্রীলঙ্কার মুসলমানেরা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। ব্যতিক্রমী এমপি মুজিবুর রহমান মুসলমানদের রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতার ইঙ্গিত করে পাকিস্তান সফরে যাননি। তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, ‘রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হলে ধর্মীয় নেতা ও সিভিল সোসাইটিও ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয় না।’ সর্বশেষ বোমা হামলায় সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয়েছে।

শ্রীলঙ্কায় কিছু মুসলমান আছে। অমুসলিমদের সমাজে বা স্থানে মুসলমান মহিলাদের কালো বোরকা, হিজাব, লাউড স্পিকারে আজান এসবের প্রতি অন্য ধর্মের লোকজন নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। মুসলমানদের এসব কাজ কোনটি ধর্মচর্চা, কোনটি সামাজিক আচার তা প্রচার করা ও মূল বিষয়গুলোর কারণ অমুসলমানদের জানিয়ে দেয়ার দায়িত্ব কেউ পালন করেনি। ফলে পারস্পরিক দূরত্ব বিস্তৃত হয়েছে। তামিল মুসলমানদের পত্রিকা দৈনিক নব মনি বোরকা ও হিজাব যে ফরজ, সে বিষয় তুলে ধরলেও ইসলাম প্রচারক শ্রেণী ও আলেমরা বিষয়টি ফলোআপ করার গুরুত্ব বোঝেননি এবং সম্প্রীতির বন্ধনের নিয়ামকগুলোকে শনাক্ত করতে পারেননি।

মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যে নানামুখী আক্রমণের পরিকল্পনা করেছে ইসরাইল, সেগুলো বিভিন্ন অ্যাজেন্ডার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও রাশিয়া কার্যকর করছে। দুঃখের বিষয়Ñ এগুলোর সাথে কিছু আরব স্বৈরশাসকও রয়েছেন, রয়েছে মুসলিমবিদ্বেষী সংগঠন আরএসএস। বিভিন্ন দেশে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর চালানো হচ্ছে পরিকল্পিত হামলা। শ্রীলঙ্কার মুসলমান, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা, ফিলিপাইনের মরো, চীনের উইঘুর, কাশ্মিরের মুসলমান, ভারতের হায়দ্রাবাদের মুসলমান, আসামের মুসলমান, রাশিয়ার চেচেনদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার মুসলমান নেতারা যদি এ বিষয়টি অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন, তবে তাদের দুর্দশা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
বোমা হামলার সূত্র ধরে সিংহলি বৌদ্ধরা নতুনভাবে মুসলমানদের ওপর বিভিন্নভাবে সহিংসতা ও অন্যায় করার জন্য আবার একপায়ে খাড়া হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহেন্দ্র রাজপাকসেও সুযোগ বুঝে অনশন করেছেন। গত বছরের মার্চের ঘটনায় দেখা গেছে, পুলিশ বুট জুতা না খুলেই মসজিদে ঢুকে নামাজরত অবস্থায় মুসলমানদের নির্যাতন করেছে। যেমনÑ হিজরাপুরা মসজিদে। এমনকি মসজিদ থেকে বৃদ্ধদের পর্যন্ত বের করে এনে রাস্তায় মারধর করা হয়েছে। ওই সব ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। এ সব কারণেও মুসলমানদের কেউ কেউ যে উগ্রবাদের দিকে ঝুঁঁকছে, সেসব কথা আর এখন কেউ বলছে না। নির্বাচন কমিশন চেয়ারম্যান মাহেন্দ্র দেশপ্রিয়া দাবি করেন, মুসলমানদের ওপর হামলায় বেশির ভাগ সিংহলি খুশি। মুসলমানদের ভোট নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। সিরিসেনার উত্তরণে এই ভোটব্যাংক অনেক সহায়তা করলেও সংখ্যাগুরু সিংহলিদের দলে ভেড়ানোর জন্য তিনি এখন তাদের পক্ষ নিচ্ছেন।

সন্ত্রাসে জড়িত ভিক্ষু নানাসারা বলেছিলেন, স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তি শ্রীলঙ্কার ১০ শতাংশ মুসলিমের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ নয় তারা। তবে, এই ভিক্ষু শ্রীলঙ্কায় হালাল খাবার সার্টিফিকেশন নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, সিংহলি জনগোষ্ঠীর বংশবৃদ্ধি কমানোর জন্য মুসলমানেরা ‘জঘন্য ষড়যন্ত্র’ করছে। তার অভিযোগ, মুসলিম টেক্সটাইল ও ফ্যাশন হাউজগুলোতে গোপনে ‘জন্মনিরোধ রাসায়নিক’ বিক্রি করা হচ্ছে এবং মুসলিম মালিকানাধীন খাবারের দোকানগুলোতে খাবারের মধ্যে জন্মনিরোধক রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে। তদন্তের পর কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন হিসেবে নাকচ করে দেয়, কিন্তু এই বক্তব্যের ভিত্তিতে গত বছর আমপারা ও কান্ডিতে দুটো মুসলিমবিদ্বেষী দাঙ্গা হয়েছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে পড়েছে।

খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীর কার্ডিনাল ম্যালকম রনজিৎ আবারো ঘোষণা দিয়েছেন, বোমা হামলার ঘটনায় মুসলমান সমাজের কী-ইবা করার আছে? বিপথগামী কিছু তরুণ বিদেশী চক্রের মাধ্যমে এই অপরাধে ব্যবহৃত হয়েছে, অথচ এ ঘটনাকে পুঁজি করে শত শত মুসলমান পুরুষ ও নারীকে বন্দী করা হয়েছে। সেনা ও পুলিশ সদস্যরা বুট ও স্নাইপার কুকুর নিয়ে মসজিদে ঢুকে পবিত্র রমজানেও তল্লাশি চালিয়েছে। এরূপ ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদও মুসলমানেরা আজ করতে পারছে না। উল্লেখ্য, বৌদ্ধদের প্যাগোডায় যত্রতত্র কুকুরের অবাধ বিচরণ আছে, কুকুর তাদের দৃষ্টিতে অপবিত্র প্রাণী নয়। অনেক মিডিয়া মুসলমানদের ‘সন্ত্রাসী’ অভিহিত করে তাদের ধর-মার এমন মনোভাব প্রচার করছে। পাদিভালাওয়ায় এক বৌদ্ধ ভিক্ষু মুসলমানের দোকান থেকে সিংহলিদের সরিয়ে দিয়ে বলেছে, দোকান বন্ধ করো। এখন আইন যেন উগ্র ভিক্ষুদের হাতে। এসব ঘটনা যদি মুসলমান তরুণদের কোনো সময় ‘বদলা’ নেয়ার খোরাকে পরিণত হয়, তা কি সমীচীন হবে, এটা কর্তৃপক্ষের অনুধাবন করা উচিত।

ভারতের ডা: জাকির নায়েক কি এই বোমা হামলার ঘটনার জন্য দায়ী? তিনি বিশ্বব্যাপী ইসলামের দাওয়াত দিয়ে বেড়াচ্ছেন। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়ে কথা বলেন। হাজার হাজার জ্ঞানী অমুসলমান তার কাছে এসে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে। শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের একটি প্রিয় চ্যানেল ‘ডায়লগ ও এসএলটি’। সেখানে প্রচারিত ‘পিস টিভি’ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, কোন পর্যায় থেকে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, এর উদ্দেশ্যই বা কী? এর পাশাপাশি গত ১২ মে ও ১৩ মে তিনটি স্থানে মুসলমানদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। রড, তরবারি, লাঠি, বর্শা নিয়ে নিরীহ মুসলমানদের ওপর আক্রমণ চালানো হলো। পুলিশ পৌঁছার আগেই সব তছনছ করে দেয়া হয়েছে। পুরুষরা পালিয়েছে আর নারী ও শিশুরা রাস্তায় বসে কেঁদেছে। সরকারের এ সবকিছুই জানার কথা। কিন্তু এটা প্রতিহত বা বন্ধ করার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ নেয়নি। বরং প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা একটি কনফারেন্সে যোগ দেয়ার জন্য চীন চলে গেলেন। তিনি নিজ দেশের মুসলমানদের হিংস্র উগ্রবাদীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি আবারো প্রমাণ করলেন, তার সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির কত তীব্র।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাম্প্রদায়িক বুদুবালা সেনার জেনারেল সেক্রেটারি গালাগোদা আত্থে নানাসেরা থেরোকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা করেছেন। অথচ তাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। মুক্তি দেয়ার পর বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাকে স্বাগত জানায়। ওই সময় মূলত মুসলমানদের বিরুদ্ধে হামলা চলছিল। সাম্প্রতিক বোমা হামলার পরবর্তী সময়ে উগ্র বৌদ্ধরা মুসলমানদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও অফিসে হামলা চালায়। বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সাক্ষীগোপালের মতো নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকে। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে একজন সহিংস ভিক্ষুকে সিরিসেনা ছেড়ে দিয়ে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাচ্ছেন। নির্বাচনে ভোট ব্যাংক ধরে রাখার জন্য তিনি এরূপ করছেন বলে মনে করা যায়। ‘ইস্টার সানডে ঘটনা’ প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে অভিযুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছেন বরখাস্ত হওয়া পুলিশ প্রধান। গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগে গুরুতর সমন্বয়হীনতার বিষয়ও প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায়। হামলার দায় স্বীকার করতে অস্বীকার করার পর গোয়েন্দা প্রধান জয়সুন্দরাকে বরখাস্ত করেছেন সিরিসেনা। সুন্দরা বলেছেন, নিরাপত্তা কমিটির সাথে নিয়মিত বৈঠক করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। নিরাপত্তা ত্রুটি সংক্রান্ত পার্লামেন্টের তদন্তে প্রেসিডেন্ট সহায়তা করবেন না বলে জানান। নানাসারাকে মুক্তি না দিলে উগ্র বৌদ্ধরা আরো হাঙ্গামা ও আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী ঘটনা ঘটাবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট চান না, নির্বাচনের আগে বৃহত্তম ভিক্ষু সংগঠনের লোকজন তার বিরুদ্ধে চলে যাক। তিনি মনে করেন, ‘সুযোগ কাজে লাগানো না গেলে’ সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে সুবিধা নেবেন এবং লোকজন তারই তরীতে ভিড়বে।

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েই শ্রীলঙ্কায় ‘মুসলিম উগ্রবাদী’দের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে কট্টরপন্থী বৌদ্ধ ভিক্ষু নানাসারা। মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা উসকে দেয়ার জন্য তাকে গ্রেফতার করে সাজা দেয়া হয়েছিল। এই ভিক্ষু কুরআনের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছিল। উসকানিতে মুসলমানদের ঘরে ও দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এক সাংবাদিকের স্ত্রীকেও হুমকি দেয়ায় তার সাজা হয়েছিল। আদালতের শুনানিতে বাধা দেয়ার কারণে আদালত অবমাননার দায়েও ওই ভিক্ষু সাজা ভোগ করেছে। মুসলিমবিরোধী এক মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার সময় নানাসারা পুলিশের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। মিয়ানমারের উগ্রবাদী ভিক্ষু মা বা থা শ্রীলঙ্কায় যেসব বৌদ্ধ ভিক্ষুর সাথে গোপন সলাপরামর্শ করেছে, নানাসারা এর একজন। বুদ্ধের অহিংসা পরম ধর্ম এখন পরম অর্ধম হয়ে গেছে যেন। ২০১৪ সালে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গার পেছনে নানাসারাকেই মূল পরিকল্পনাকারী মনে করা হয়। কারণ তার প্রকাশ্য বক্তৃতার কারণেই আলুথগামা এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল তখন। কিছু ব্যক্তি অবশ্য বিশ্বাস করেন, নানাসারা দাঙ্গা সৃষ্টি করেনি। বরং জনতার ক্ষোভ এবং কিছু উসকানির কারণে ওই দাঙ্গা বেধেছিল।

শ্রীলঙ্কায় আগামী ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাভায়া রাজাপাকসে, যিনি মাহেন্দ্র রাজাপাকসের ভাই, প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বেশির ভাগ ভোট লাভের জন্য সব পক্ষই মুসলমানবিদ্বেষকে পুঁজি করছে।

শ্রীলঙ্কায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ৯ জন মন্ত্রীর সবাই গত ১০ জুন ইস্তফা দিয়েছেন। একই সাথে, দুই মুসলিম গভর্নরও পদত্যাগ করেছেন। উগ্র বৌদ্ধদের দাবির মুখে তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বলে জানা যায়। মুসলমানেরা সঙ্ঘাত এড়াতে একটি মসজিদও ধ্বংস করেছে। পুলিশ রমজানজুড়ে তল্লাশি চালায়, এতে মুসলমানেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে; অন্য সম্প্রদায়গুলোর অবিশ্বাসও বেড়ে গেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত ন্যাশনাল তাওহিদ জামাতের সদস্যরা বিধ্বস্ত ওই মসজিদে বেশি যাতায়াত করার অভিযোগে কর্তৃপক্ষ মসজিদ সিলগালা করে দিলে স্থানীয় মুসলমানেরা মসজিদ ধ্বংস করে ফেলে। শ্রীলঙ্কা সরকার ২০০ আলেমকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে। কারণ ওরা বৈধভাবে এসে শ্রীলঙ্কায় থেকে যান। বোমা হামলার পর ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের বের করে দেয়া হয়। বলা হচ্ছে, এখন থেকে ধর্মীয় ব্যক্তিদের শ্রীলঙ্কায় আসার ক্ষেত্রে ভিসায় কড়াকড়ি বাড়বে।

হামলার ব্যাপারে পূর্বাহ্নে সব তথ্য হস্তগত হওয়ার পরও কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি? লঙ্কায় সিআইএ আর মোসাদের সংযোগের বিষয়টি কেউ ব্যাখ্যা করছে না। মিডিয়াও বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। অথচ বিশ্বব্যাপী এই খেলাই চলছে এখন। এ থেকে শ্রীলঙ্কার মুসলমান, ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত ও সরকার শিক্ষা না নিলে সামনে আরো খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে। কিন্তু তত দিনে কত নিরপরাধ মুসলমান কোরবানি হবে, কে জানে? শ্রীলঙ্কার মুসলমানেরা এখন অভিভাবকহীন; তাদের মাথার ওপর কোনো ছায়া নেই।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement