২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৩৫ক ধারা এবং অরুণ জেটলির মতলবি বিতর্ক

- ফাইল ছবি

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা এবং মোদি সরকারের পূর্ববর্তী মেয়াদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি কিছু দিন আগে তার লিখিত এক ব্লগের মাধ্যমে এবং পরবর্তী সময়ে এক টুইট বার্তার মাধ্যমে ভারতীয় সংবিধানের ৩৫ক ধারা (অৎঃরপষব ৩৫অ) সম্পর্কে যে বক্তব্য তুলে ধরেছেন, তা নিয়ে আবারো দেশটিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। তার টুইট বার্তাটি ছিল এরূপ :

“ঈযড়শিরফধৎ অৎঁহ ঔধরঃষবু@ধৎঁহলধরঃষবু
অৎঃরপষব ৩৫অ ংঁৎৎবঢ়ঃরঃরড়ঁংষু রহংবৎঃবফ নু চঃ. ঘবযৎঁ’ং মড়াঃ. রহ ঃযব ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ রহ ১৯৫৪ ারফব চৎবংরফবহঃরধষ ড়ৎফবৎ রং ৎবংঢ়ড়হংরনষব ভড়ৎ ফরংপৎরসরহধঃরড়হ নু ঃযব ঔ্ক মড়াঃ. নবঃবিবহ ঃড়ি পধঃবমড়ৎরবং ড়ভ পরঃরুবহং ড়হ ঃযব নধংরং ড়ভ ফবপষধৎরহম ংড়সব ধং ঢ়বৎসধহবহঃ ৎবংরফবহঃং যিরষব ষবধারহম ড়ঁঃ ঃযব ড়ঃযবৎং.”

তার এই টুইট বার্তার মধ্যে তিনি বলতে চেয়েছেন, ১৯৫৪ সালে পণ্ডিত জওয়াহেরলাল নেহরুর সরকার চুপিসারে গুপ্তভাবে ৩৫ক ধারাটি ভারতীয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে। আর এ ধারাটি দায়ী হচ্ছে জম্মু ও কাশ্মির সরকারের দুই ধরনের নাগরিকের ওপর বৈষম্য সৃষ্টির জন্য। এর ভিত্তিতে জম্মু ও কাশ্মিরের এক শ্রেণীর নাগরিকদের করা হয়েছে স্থায়ী নাগরিক, আর অন্যদের তাদের থেকে বাইরে রাখা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তার দাবি হচ্ছে, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের উচিত অবিলম্বে বসে ভারতীয় সংবিধান থেকে এই ৩৫ক ধারা বাতিল ঘোষণা করা।

অরুণ জেটলির ব্লগ ও টুইট বিশ্লেষণ করলে যে বিষয়গুলো সামনে আসে, তা হচ্ছেÑ ১. তিনি নেহরু সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ভারতীয় সংবিধানের গোপনে চুপিসারে এ ধারাটি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। বলা বাহুল্য, অরুণ জেটলি এই ব্লগ ও টুইট প্রকাশ করেছেন সদ্যসমাপ্ত ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনের আগে, এর অন্যান্য নানা কারণের মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে, বিজেপি চেয়েছিল নেহরুবিরোধী জিকির তুলে কিছু ভোট নিজেদের পক্ষে টানা। ২. যেহেতু এমন একটি সম্ভাবনা রয়েছে, এ বিষয়টি নিয়ে এখন যেকোনো সময় সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হতে পারে, তাই এ ধরনের অভিমত প্রকাশ করে আদালতকে প্রভাবিত করার প্রয়াসও এর মধ্যে থাকতে পারে। এ কথা নিশ্চিত, এ ধারাটি সংবিধান থেকে বাতিল করা হলে জম্মু ও কাশ্মিরের নাগরিকেরা দীর্ঘ দিন ভোগ করে আসা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে এবং পরিণামে যেকোনো ভারতীয় নাগরিকদের জন্য জম্মু ও কাশ্মিরে ভূমি ও অন্যান্য স্থায়ী সম্পদ কেনার পথ উন্মুক্ত হয়ে যাবে। আর এভাবেই পরিবর্তন হয়ে যাবে এই রাজ্যের ডেমোগ্রাফি বা জনসাংখ্যিক কাঠামো। আর বিজেপি শুরু থেকে সেই চেষ্টাই চালিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে বিজেপি চায়, কাশ্মিরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম চরিত্র সংখ্যালঘিষ্ঠ চরিত্রে নামিয়ে আনতে।
শুরুতেই বিষয়বস্তুর স্পষ্টতার জন্য আমাদের জেনে নেয়া দরকার, কী আছে ভারতীয় সংবিধানের এই ৩৫ক ধারায়। এ ধারাটি হচ্ছে নিম্নরূপ : "Saving of laws with respect to permanent residents and their rights."— Not withstanding anything contained in this Constitution, no existing law in force in the State of Jammu and Kashmir, and no law hereafter enacted by the Legislature of the State :
(a) defining the classes of persons who are, or shall be, permanent residents of the State of Jammu and Kashmir; or
(b) conferring on such permanent residents any special rights and privileges or imposing upon other persons any restrictions as respects—
(i) employment under the State Government;
(ii) acquisition of immovable property in the State;
(iii) settlement in the State; or
(iv) right to scholarships and such other forms of aid as the State Government may provide,
shall be void on the ground that it is inconsistent with or takes away or abridges any rights conferred on the other citizens of India by any provision of this part."
এই ধারার মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের লেজিসলেচারকে অনুমতি দেয়া হয়েছে রাজ্যের ‘স্থায়ী নাগরিক’-এর সংজ্ঞা নির্ধারণের। আর এ ধারাটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে পরিস্থিতিগত তথা সিচুয়েশনারি প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডারের মাধ্যমে, যেটি অভিহিত ঞযব ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ (অঢ়ঢ়ষরপধঃরড়হ ঃড় ঔধসসঁ ধহফ কধংযসরৎ) ঙৎফবৎ, ১৯৫৪ নামে। ভারতের প্রেসিডেন্ট তার ওপর ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর ধারায় অর্পিত ক্ষমতা বলে এবং জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য সরকারের সাথে ঐকমত্য হয়ে তিনি এ আদেশ জারি করেন ১৯৫৪ সালের ১৪ মে।

শুরুতেই বলা দরকার, ভারতীয় সংবিধানের ৩৫ক ধারা কাশ্মিরের জনগণকে নতুন করে কোনো অধিকার দেয়নি। এই ধারার মাধ্যমে শুধু বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে, যাতে কোনো ভারতীয় যেন এ রাজ্যের ভেতরে এ রাজ্যের লোকদের কোনো ভূমি বা স্থায়ী সম্পদ অধিকার অর্জন কিংবা কর্মসংস্থানকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করতে না পারে। এসব অধিকার তাদেরকে দেয়া হয়েছিল সেই ১৯২৭ সালে, যখন কাশ্মিরের মহারাজা তার প্রজ্ঞাবলে একটি আইন পাস করে তার প্রজাদের, অর্থাৎ কাশ্মিরের জনগণকে এসব অধিকার অনুমোদন দিয়েছিলেন। লক্ষণীয়, তারা এই অধিকার তখন লাভ করে, যখন আজকের ভারতের ও ভারতীয় সংবিধানের অস্তিত্ব ছিল না। এমনকি জম্মু ও কাশ্মিরের সংবিধানও তখন ছিল না। কাশ্মিরিরা তাদের সংবিধান পায় ১৯৫৬ সালে। আর আলোচ্য ৩৫ক ধারার মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মিরের রাজ্য ক্ষমতা পায় এর স্থায়ী নাগরিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা অনুমোদন করতে। সেই সাথে এর মাধ্যমে প্রতিষিদ্ধ করা হয়, এই জম্মুও কাশ্মির রাজ্যে কোনো অনাবাসী ভূমি অথবা স্থায়ী সম্পদ কিনতে পারবে না এবং চাকরি বা অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

নজর দেয়া যাক, অরুণ জেটলির উত্থাপিত বিষয়গুলোর ওপর। তিনি প্রথমত বলেছেন, গোপনে চুপিসারে ৩৫ক ধারাটি ভারতীয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চান, এ ধারাটি সংবিধানে সংযোজন করা হয়েছে রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে, ভারতীয় সংবিধান পরিবর্তনের সাংবিধানিক ধারা ৩৬৮ অনুসরণ করে নয়। এতে পার্লামেন্ট সদস্যদের বিস্তারিত আলোচনার কোনো সুযোগ ছিল না। নেহরু সরকারও তাতে আলোচনায় অংশ নেয়নি। আর এটাই হচ্ছে বৈষম্যমূলক। অভিযোগগুলো একে একে বিবেচনা করা যাক।

তার দাবি মতে, এই আলোচ্য ধারাটি পার্লামেন্টে কোনো আলোচনা ছাড়াই গুপ্তভাবে ভারতীয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ধারাটি সংবিধানে সংযোজনের পর ১৯৫৪ সালে নেহরু তার লোকসভায় দেয়া বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই নাগরিকত্বের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেখানে পূর্ণ নাগরিকত্ব তথা ফুল সিটিজেনশিপ প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু কাশ্মিরে আমাদের বন্ধুরা দু-একটি বিষয়ের ওপর জোর তাগিদ দিয়েছে। অতীতের দীর্ঘ দিন থেকে, মহারাজার সময় থেকে, সেখানে আইন ছিল বাইরের লোকদের জন্য অনেক কিছু নিষিদ্ধ করে। অর্থাৎ কাশ্মিরের বাইরের কেউ সেখানে জমি কিনতে পারত না। আমি উল্লেখ করতে চাই, পুরনো দিনে মহারাজা ভীত ছিলেন বিপুলসংখ্যক ইংরেজ কাশ্মিরে এসে বসবাস শুরু করবে। কারণ, এখানকার আবহাওয়া ছিল খুবই মুগ্ধকর। তাই ইংরেজ এখানে এসে ভূমি ও সম্পদ অর্জন করতে পারে। অতএব, যদিও ব্রিটিশ শাসনামলে মহারাজার বেশির ভাগ অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল, তবু মহারাজা কঠোর ছিলেন এ দাবির প্রতি, যাতে বাইরের কেউ এখানে এসে ভূমি ও স্থায়ী সম্পদ অর্জন করতে না পারে এবং তাদের এই অধিকার অব্যাহত থাকে।

এবং এই রাজ্যে মহারাজা প্রজাসংক্রান্ত নোটিশে চার শ্রেণীর প্রজা সংজ্ঞায়িত করেন : প্রথম শ্রেণীর প্রজা, দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রজা, তৃতীয় শ্রেণীর প্রজা এবং চতুর্থ শ্রেণীর প্রজা। কেউ এই চার শ্রেণীর প্রজার কোনোটিতে না পড়লে কোনো ভূমি বা স্থায়ী সম্পদের মালিক হতে পারবে না। অতএব, কাশ্মিরের বর্তমান (তৎকালীন) সরকার খুবই আগ্রহী এই অধিকার সংরক্ষণের ব্যাপারে। কারণ, আমিও মনে করি তাদের এই আশঙ্কা যথার্থ। কেননা, যাদের পয়সা আছে তারা প্রচুর পয়সা দিয়ে কাশ্মিরের মনোমুগ্ধকর স্থানগুলো কিনে নেবে। এখন এরা মহারাজার আইন একটু উদার করতে চায়, তা সত্ত্বেও এরা চায় বাইরের লোকেরা যাতে কাশ্মিরে কোনো ভূমি কিনতে না পারে। তবে আমি এ বিষয়ে একমত যে- আমাদের সংবিধানের ১৯ ধারার ৫ উপধারা মতে আমি মনে করি, এটি অনুমোদনযোগ্য বিদ্যমান কিংবা পরবর্তী আইনি বিধানের মাধ্যমে।’

নেহরু এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে পার্লামেন্টে আরো তিনটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। সরকারি ও বিরোধীদলীয় সদস্যদের প্রশ্নের মুখে নেহরু সে সময় এসব বিবৃতি দিয়েছিলেন। স্থানাভাবে সেগুলো সরাসরি উল্লেখ করা গেল না। অরুণ জেটলি পার্লামেন্টের রেকর্ড অনুসন্ধান করলে এ সম্পর্কে বাস্তব সত্যটুকু জানতে পারবেন। তখন তিনি বুঝতে পারতেন চুপিসারে কিংবা গুপ্তভাবে এ ধারাটি সংবিধানে সংযোজিত করার তার অভিযোগটি যথার্থ নয় এবং ভিত্তিহীন।

এখানে একটি প্রশ্ন উঠেছে- কোন বিষয়টি নেহরুকে বাধা দিয়েছিল, যে কারণে তিনি সংবিধানের ৩৬৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী আলোচ্য ৩৫ক ধারাটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত না করে তিনি ১৯৫৪ সালে তা সংবিধানে সংযোজন করেছিলেন রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশ বলে। সে প্রশ্নটি নিয়েই এখন চলছে প্রবল দ্বন্দ্ব। এই প্রশ্নের জবাব রয়েছে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিখ্যাত জুরি এম সি শীতলভেদের অভিমতের মধ্যে। তার কাছে এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল এ ব্যাপারে তার অভিমত বা মন্তব্য চেয়ে। তার জোরালো ও সুষ্ঠু উপদেশ ছিল : যেহেতু ৩৭০ ধারা ইতোমধ্যেই সংবিধানে অস্তিত্বশীল, এটা সম্ভব কিংবা প্রত্যাশিত নয় ৩৫ক ধারা সংবিধানে ৩৬৮ ধারার পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। কিন্তু একমাত্র ৩৭০ ধারার অধীনে রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমেই তা সংবিধানে সংযোজন সম্ভব। দুর্ভাগ্য, এই অভিমত সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটি হারিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ এ ফাইলটি রাখা ছিল ইউনিয়ন স্বরাষ্ট্র/আইন মন্ত্রণালয়ের সেফ ভল্টে। এই সরকারের আমলের এমনটি ঘটা একটি নিয়মিত প্রপঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এবার আসা যাক সেই বিষয়ে, যেখানে মি. জেটলি প্রশ্ন তুলেছেন নারী ও রাজ্যবহির্ভূত প্রজাদের বৈষম্য নিয়ে। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। বিবেচ্য যখন নারী, তখন ৩৫ক ধারা হচ্ছে জেন্ডার নিউট্রাল। এবং এ ধারায় নারী-পুরুষ বৈষম্যের কোনো বিষয় নেই। এ ধারায় নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়নি। এতে এটাও স্পষ্ট করা হয়েছে, রাজ্যের একজন মহিলা প্রজা রাজ্যের বাইরের কাউকে বিয়ে করার কারণে রাজ্যে তার বিদ্যমান মর্যাদা ও সম্পদের অধিকার হারাবে না। জম্মু ও কাশ্মিরের হাইকোর্টের ফুল বেঞ্চের এমন আদেশ রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য বনাম ডা: সোহিলা সোহেন্সি মামলা ও রায়ে এমন সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোনো চ্যালেঞ্জ ছাড়াই এটি এখন একটি আইনের মর্যাদা লাভ করেছে।

পাকিস্তানি শরণার্থীসদৃশ রাজ্যবহির্ভূত প্রজাসম্পর্কিত আরেকটি ধারায় সাফাই কর্মচারীরা (বাল্মিকিরা) প্রত্যাশা করে রাজ্যের নাগরিকত্ব মর্যাদা পেতে। এখানে বাচনলাল কালগোত্রা বনাম জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য মামলায় এ সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের সংশ্লিষ্ট অংশটুকু উদৃত করাই যথেষ্ট হবে। এই মামলার প্রধান বিরোধ ছিল পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা অভিবাসী শরণার্থী, যিনি পাকিস্তান থেকে কাশ্মিরে আসেন ১৯৪৭ সালে, তিনি কাশ্মিরে স্থায়ী নাগরিক নন, যা বর্ণিত আছে জম্মু ও কাশ্মিরের সংবিধানের ৬ নম্বর সেকশনে। এর অর্থ হচ্ছে, এরা রাজ্যসভার নির্বাচনে অংশ নেয়ার যোগ্য নন কিংবা যোগ্য নন রাজ্যের কোনো চাকরিতে সরাসরি নিয়োগ পেতে। কিংবা তিনি কিনতে পারবেন না এ রাজ্যে কোনো ভূমি ইত্যাদি ইত্যাদি।

এই মামলার বাদির আরজি ছিল, তিনি ৩৫ক ধারার ও জম্মু ও কাশ্মিরের সংবিধানের ৬ নম্বর সেকশনের আওতায় এসব অধিকার অর্জনের দাবি রাখেন এবং রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অধিকারও রাখেন। আলোচ্য ৩৫ক ধারা বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে এই আরজি খারিজ করে দেয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট মনে করে, জম্মু ও কাশ্মিরের সংবিধানের স্বাতন্ত্র্য অবস্থান দেখে আদালত কোনো ধরনের ছাড় এই আবেদনকারীকে দিতে পারেন না। আদালত এর অভিমতে আরো বলেন, আমরা যেটুকু বলতে পারি- এটি জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের বিধানসভাই একমাত্র পারে এই রাজ্যের বিভিন্ন আইন বদল করে পাকিস্তানি শরণার্থীর স্বার্থ রক্ষা করতে।

ওপরের এই সিদ্ধান্ত থেকে এটুকু স্পষ্ট, ৩৫ক ধারার ওপর অরুণ জেটলির এই আক্রমণ অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিমূলক। আর তিনি এ কাজটি করেছেন ভারতীয় জনগণকে সহজে এ ধারাটি সম্পর্কে বিভ্রান্ত করার জন্য। এর পেছনে কাজ করছে বিজেপির কাশ্মির সম্পর্কিত হিন্দুত্ববাদী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের অসৎ উদ্দেশ্য। বিজেপি মনে করে, এ ধারাটি বাতিল হলে ভারতীয় সংবিধানের কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদার অবসান ঘটবে। তখন ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে হিন্দুদের কাশ্মিরে নিয়ে গিয়ে সে রাজ্যের স্থায়ী নাগরিক করে সেখানকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ওপর আঘাত করা সহজ হবে। প্রকৃতপক্ষে ভারতের ইউনিয়ন সরকারের কোনো অধিকার নেই ৩৫ক ধারায় দেয়া কাশ্মিরের এই বিশেষ মর্যাদা ছিনিয়ে নেয়ার। এই ধারা বাতিলের অধিকারও নেই ভারতের ইউনিয়ন সরকারের। যদি নরেন্দ্র মোদির নয়া সরকার তা করে, তা হবে অবৈধ ও অনৈতিক।


আরো সংবাদ



premium cement
ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে খুলনা বিভাগ ও ৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ ‘১ টাকার কাজ ১০০ টাকায়, ৯৯ যায় মুজিব কোটে’ রাত পোহাতেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায়

সকল