১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

-

প্রায় বছরখানেক আগে জন বোল্টনকে যখন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয় তখন এই কলামে জন বোল্টনের ‘ইরান যুদ্ধ’ শীর্ষক কলামে লিখেছিলাম। এখন দেখা যাচ্ছে, বোল্টন যেন একটা যুদ্ধ বাধিয়েই ছাড়বেন। বোল্টনকে ডেমোক্র্যাটরা ‘ধান্ধাবাজ’ বলে ডাকেন। ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ‘আবিষ্কারক’ এই বোল্টন। ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শাউল মোফাজ স্বীকার করেন যে, বোল্টন তাকে ইরানে হামলা চালাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। বোল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তিনি নিয়মিত নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প থেকে ‘বকশিশ’ নেন। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট খবর দিয়েছে যে, ইরানের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন মুজাহেদীনে খালকের কাছ থেকেও বোল্টন নিয়মিত অর্থ গ্রহণ করে থাকেন। এই দল ইরানের সরকারবিরোধী। ইরানিরা এই দলকে ‘মুনাফেকিনে খালক’ বলে ডাকে।

দি গার্ডিয়ানে বোল্টন লিখেছেন, ‘ইরানের পরমাণু খায়েশের বিরুদ্ধে একটিই কাজ; তা হলো ইসরাইল, আমেরিকা বা উভয়ের যৌথভাবে সামরিক হামলার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া।’ ইরানের মুজাহেদীনে খালকের সাথে বোল্টনের পুরনো সখ্যের বিষয় উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। বোল্টন জাতিসঙ্ঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত থাকাকালে ২০১২ সালে এই গোষ্ঠীর নাম আমেরিকার ‘সন্ত্রাসী তালিকা’ থেকে বাদ দিতে পেরেছিলেন। এই গোষ্ঠী নিজের প্রতি সমর্থন লাভের জন্য কোনো কোনো মার্কিন কর্মকর্তাকে বিপুল অঙ্কের অর্থ দেয় বলেও জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। মুজাহেদীনে খালক আজও দৃশ্যত মার্কসবাদ লেনিনবাদ অনুসরণ করে। অথচ ভেনিজুয়েলায় সমাজতন্ত্রী মাদুরোকে বোল্টন সমর্থন দিচ্ছেন না। তিনি মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে আমেরিকা ও ইসরাইলের স্বার্থ এবং নিজের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছেন।

জন বোল্টন এবার পুতিনকে ‘মনরো ডকট্রিন’ স্মরণ করিয়ে দিলেন। বোল্টনের বন্দুকের নল এখন ভেনিজুয়েলার পরিবর্তে ইরানের দিকে। তার পরামর্শে বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস আবরাহাম লিঙ্কন’ মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা হয়েছে। বোল্টন বলেছেন আমেরিকার সেনা কিংবা মিত্র কোনো দেশের সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করা হলে আমেরিকা ইরানে নির্ভুল হামলা চালাবে।

পরমাণু চুক্তি থেকে ইরানের সরে আসার জন্য ট্রাম্পের চেয়ে বোল্টনের বেশি আগ্রহ। ইসরাইল চায় আমেরিকা সরাসরি আক্রমণ করুক এবং সে ‘সেকেন্ড ডিফেন্স লাইন’ হিসেবে কাজ করবে। এ অবস্থায় আর যুদ্ধ বাধেনি ইরানের সাথে।

২০০৫, ২০০৭, ২০০৮ এবং ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল ইরান আক্রমণ করার ক্ষেত্র তৈরি করতে চেয়েছে। সুদীর্ঘ সময়ে বোল্টন যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই ইরানে আক্রমণ চালানোর ফন্দিফিকির করেছেন। তিনি যখনই ফক্স নিউজে কোনো ইন্টারভিউ দিতেন, তখন ইরান প্রসঙ্গটি উঠলে ইরানে বোমা ফেলার কথা বলতেন। ২০০২ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত জর্জ বুশের সময় বোল্টন ইরান বিষয়ক পলিসিমেকার হিসেবে কাজ করেছেন। যুদ্ধের জন্য একটি ছুতা তৈরির কাজ তখন থেকেই তিনি শুরু করেছিলেন। এতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে ইসরাইল। বোল্টন বলেন, ইরান গোপনে পরমাণু বোমা তৈরি করছে।

২০০৩ সালে ইসরাইলে গোপন সফরকালে বোল্টন মত দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরাক আক্রমণ করবে- এতে কোনো সন্দেহ নেই। সাদ্দামের পাট চুকানোর পর ইরান ও সিরিয়াতেও আমেরিকার আক্রমণের হাত প্রসারিত করবে। যুক্তরাষ্ট্র এখন সে ছকেই হাঁটছে। কিন্তু ইরানের ওপর আমেরিকা আক্রমণ চালাবে কী অভিযোগে? সেটিও আসছে। পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গেলেই ইরান নিজের নিরাপত্তার জন্য ওয়েপন গ্রেড ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালু করতে পারে। এই ছুতা ধরে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল ইরানের ওপর হামলা চালানোর ইস্যু পেয়ে যাবে। কিন্তু ইরান সেটা না করায় বোল্টন অন্য পথ ধরেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একই সুরে বাঁশি বাজাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, আমেরিকার স্বার্থে যেকোনো আঘাত- তা শিয়া মিলিশিয়া, হাউছি বা হিজবুল্লাহ যারাই করুক, সরাসরি ইরানকে দায়ী করা হবে।

পম্পেও ইরানকে ‘হিংস্র পুলিশি স্টেট’ ও ‘স্বৈরাচারী ধর্মীয় সরকার’ বলে অভিহিত করেছেন। ট্রাম্প নির্বাচনের পরপরই টুইট বার্তায় লিখেছিলেন, ‘ইরান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসের রাষ্ট্রীয় মদদগার’। অর্থাৎ হোম ওয়ার্ক অনেক আগেই করা।

২০১৫ সালে পম্পেও কংগ্রেসম্যান ছিলেন। তখনকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, তিনি ‘ইসলামী দেশের’ দিকে ঝুঁকছেন এবং ‘পশ্চিমের খ্রিষ্টানদের’ সাথে বিরোধে জড়াচ্ছেন। ইরানের সরকার বদলের জন্য আমেরিকায় একটি ফাউন্ডেশন কাজ করে, ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্র্যাসিস (এফডিডি)। পম্পেও এই সংস্থার এক হিতৈষী; এ জন্য মিডিয়া পম্পেওকে ‘ইসরাইলের মানুষ’ হিসেবে তুলে ধরে। স্মরণ করা যেতে পারে, ইরানকে কোণঠাসা করার জন্য বহু আগেই পম্পেও ১২ দফা পেশ করেছিলেন।

সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ধারা ছিল : পরমাণু সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা, প্লুটোনিয়াম রিপ্রসেসিং-এর জন্য কখনো চেষ্টা না করা, একই সাথে হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টরের কাজ বন্ধ করা, ইসলামিক জিহাদ, হিজবুল্লাহ ও হামাসকে ইরানের সহায়তা দেয়া বন্ধ করা, ইরাক সরকারের সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করা এবং শিয়া মিলিশিয়াদের নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা, হাউছিদের সহায়তা দেয়া বন্ধ করা এবং ইয়েমেনে শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ, সিরিয়ায় ইরানি কমান্ডের অধীনে অবস্থানরত সব ইরানি সেনা ফিরিয়ে নেয়া, বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাথে সম্পর্কযুক্ত আল-কুদস ফোর্সকে সহায়তা দেয়া বন্ধ করা। এখন একই বিষয়গুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বোল্টন উচ্চারণ করছেন। সবই সেই ‘হোমওয়ার্কের পাতা’ থেকে নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে যুদ্ধজাহাজ পাঠানো ছাড়াও, কাতারে বি-৫২ বোমারু মোতায়েন করা হয়েছে আমেরিকার ঘাঁটিতে। ইরানকে ঘিরে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হচ্ছে। তবে অনেক আগেই আমেরিকার সেনাঘাঁটিগুলোতে এই মিসাইল সিস্টেম মোতায়েন করা ছিল, এখন রিইনফোর্সমেন্ট করা হচ্ছে।


তাহলে বিষয়টি দাঁড়াল, বোল্টন-পম্পেওর রণহুঙ্কার যেকোনো সময় চরম ঘণ্টা বাজাতে পারে। লেবাননে হিজবুল্লাহর কোনো হামলা, ইয়েমেনে হাউছির হামলা, ইরানি মিলিশিয়াদের ইসরাইল, সৌদি আরব, আমিরাত, ইরাকে আমেরিকার সেনাছাউনিতে, সিরিয়া বা কোনো উপসাগরীয় দেশে হামলা হলে ইরানকে দায়ী করা হবে এবং সরাসরি ইরানে আঘাত করা হবে। ইরান লেবানন, গাজা, ইয়েমেন, সিরিয়ায় বহু আগে থেকে যুদ্ধ করে আসছে। কারো কারো ধারণা ছিল ইরান ওইসব ফ্রন্টে পরাজিত হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল আঁতাতই পরাজিত হয়েছে। তাই ইরানকে পরাজিত করার জন্য এখন এত হুঙ্কার। অনেকেই মনে করছেন, একটি যুদ্ধ ছাড়া যেন অন্য কোনো পথ নেই। ইরানে যুদ্ধের ব্যয়ভার বহনের জন্য সৌদি আরব, আমিরাত ও বাহরাইন দৃশ্যত প্রস্তুত হয়েই আছে। ইতোমধ্যে সৌদি আরব ও আমিরাত কয়েক মিলিয়ন ডলারের আধুনিক অস্ত্র সংগ্রহ করে গুদামজাত করেছে।

ট্রাম্প কি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন? তিনি কি আরো একটি যুদ্ধ চান? ‘বি টিম’কে তিনি কি উপেক্ষা করতে পারবেন? ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, ট্রাম্প না চাইলেও বি-টিম তাকে যুদ্ধ করার জন্য চাপ দিচ্ছে। ইরানের মতে, এই বি-টিম হলেন বোল্টন, নেতানিয়াহু, বিন সালমান ও বিন জায়েদ। ট্রাম্পের আমলেই সিরিয়া যুদ্ধে আমেরিকার ফিরে আসা ছাড়াও ইয়েমেন ও আফগানিস্তানে হামলা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। উত্তর কোরিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে তিনি বলেছেন, এতে বিশ্বস্ততা নষ্ট হবে না। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘ইরান চুক্তির মূল্যবোধ থেকে বেরিয়ে গেছে।’ তিনি ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধের পর অবরোধ দিচ্ছেন। এই অবরোধ ইরানকে কঠিন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। যে আটটি দেশকে ইরানি তেল কেনার সাময়িক অনুমতি দেয়া হয়েছিল, সেগুলোও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

অবরোধ দেয়ার পর বেলজিয়ামের অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো ইরানি ব্যাংকগুলোকে সিস্টেমে ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে। ‘সুইফট’ বেলজিয়াম অবস্থিত এবং বিশ্বব্যাংক এটি পরিচালনা করে থাকে। ইরানি ব্যাংকের ক্ষেত্রে ‘সুইফট’ নিয়ম ভঙ্গ করলে সাজা পেতে হবে মর্মে আমেরিকার ট্রেজারি সেক্রেটারি সতর্ক করে দিয়েছেন। সুইফট (ঝডওঋঞ) আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের মেরুদণ্ড। দ্রুত ও নিরাপদ তহবিল স্থানান্তর বা লেনদেনের জন্য সুইফট কোড একটি প্লাটফর্ম। বিশ্বের ২০০ দেশে ১১ হাজার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সুইফট কাজ করে থাকে। সুইফট বন্ধ করে দিলে ইরান আন্তর্জাতিক কোনো লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করতে পারবে না। ফলে ইরানের বাণিজ্য চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভিন্ন পন্থায় লেনদেন সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক। কয়টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক নিয়ম মানবে, তা ভিন্ন বিষয়।

যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, তেল রফতানি বন্ধ হলে ইরান অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগবে। ইতোমধ্যেই ইরানের জিডিপি নিচে নেমে গেছে। ট্রাম্প ইরানের গার্ড বাহিনীকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দিয়েছেন। সে দেশের পুরো সেনাবাহিনী এখন মার্কিন দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী। টিলারসন পঁই পঁই করে নিষেধ করেছিলেন এই ঘোষণা না দেয়ার জন্য। সে জন্য তাকে পদ ছাড়তে হয়েছে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেয়া হয়নি। টিলারসনমুক্ত ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে সব ক’টি পদক্ষেপ নিয়ে মাঠ সরগরম রেখেছে। ইরানও যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসের মদদগার এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিয়োজিত মার্কিন সেনাদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করেছে। কিন্তু ইরান তো সুপার পাওয়ার নয়। তেলের ব্যাপারে ইরান বলেছে, যদি ইরান তেল রফতানি করতে না পারে তবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে।

বিশ্বের ৩০ শতাংশ তেল এ প্রণালী দিয়ে চলাচল করে। তাই হরমুজ বন্ধ করা মানে, বিশ্বে তেল সরবরাহের ওপর একটা বড় ধরনের আঘাত। এরই মধ্যে পারস্য উপসাগরে আরব আমিরাতের উপকূলের কাছে সাতটি তেলের ট্যাংকার ‘অন্তর্ঘাতমূলক হামলার শিকার’ হয়েছে। এ হামলায় দুটি সৌদি নৌযানের বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনাকে তেহরানের ওপর সামরিক হামলার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারে সৌদি আরব ও আমিরাতের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ইরান এটাই মনে করে। ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে দশক ধরে। ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কম্পিউটারগুলো ৫৮.৮৫% ইনফেকটেড। স্টুক্সনেট, ডুকো, ফ্লেম, স্টারস- এসব কম্পিউটার ওয়ার্ম ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের বিশেষজ্ঞরা একটির পর একটি ছেড়ে দিয়ে সব কম্পিউটারাইজড সিস্টেম বিকল করতে চান। ইরানিরা এর বিরুদ্ধে দিনরাত যুদ্ধ করে চলছে।

১৯৭৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সময় আরব বিশ্ব তেলের ওপর অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা দিলে আমেরিকা বিপদগ্রস্ত হয়। নিক্সন ইমপিচমেন্টের দোরগোড়ায় দাঁড়ান। ফ্লোরিডায় যাওয়ার জন্য গাড়ির পরিবর্তে ট্রেনে যেতে হয়েছিল তখন। কিন্তু এখন তেলের সঙ্কট হলে যুক্তরাষ্ট্রকে কম দামে তেল দিতে অনেকেই বসে আছে। এদিকে, ওপেক, আরব বিশ্ব, ওআইসির কোনো বড় ভূমিকা নেই। ট্রাম্প আরেকটি যুদ্ধ না চাইলেও বোল্টন তার ঘাড়ে বসে আছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুঃখ করে বলেছেন, ‘৭ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করার পরও সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। এখন আমেরিকা আরো অনিরাপদ।’

আমেরিকা হঠাৎ করেই ইরানের বিরুদ্ধে তার সব তুরুপের তাস টেবিলে ছুড়ে দিয়েছে যাতে ইরান অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়, জনগণের সেবাগুলো পৌঁছে দিতে হয় ব্যর্থ। যাতে জনরোষ গণবিক্ষোভে পরিণত হয়। বোল্টন এই কঠিন কাজের আঞ্জাম দিচ্ছেন। তিনি ইরানে নয়া সরকার তথা, আমেরিকাপন্থী প্রশাসন সৃষ্টির জন্য পরিশ্রম করছেন এবং ইরানের সরকারবিরোধী সহিংস সংগঠন মুজাহেদীনে খালকের সাথে প্রকাশ্যেই কাজ করছেন। অথচ বোল্টন বলে বেড়ান যে, ‘সরকার পরিবর্তন আমেরিকার কোনো পলিসি হতে পারে না’! এসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন প্রচণ্ড বোমাবর্ষণের অর্থাৎ সম্মুখযুদ্ধের প্রস্তুতি সাঙ্গ করছেন তারা। 

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement
সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার

সকল