২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিএনপি যে কাজটি করেনি

- ফাইল ছবি

আমার কাছে কেনো জানি মনে হচ্ছে, বিএনপি নামের রাজনৈতিক দলটি তাদের এ যাবৎকালের ইতিহাসের সুন্দরতম সময় পার করছে। এই কথা শুনে যারা আমাকে পাগল অথবা নাবালক বলে গালি দিতে চাইবেন তাদের প্রতি অনুরোধ- প্লিজ! পুরো নিবন্ধটি না পড়ে আমার গলায় কোনো অহেতুক উপাধির মালা পরাবেন না। বর্তমান সময়টি কি- আসলে বিএনপির জন্য সুসময় নাকি দুঃসময় তা নির্ধারণ করার আগে আমি আপনাদের প্রকৃতির একটি অপার লীলাখেলা যা আমাদের জীবনে হররোজ দেখার সৌভাগ্য হয় তা নিয়ে একটু চিন্তাভাবনা করতে বলব। আপনারা যদি নদ-নদীর জোয়ার-ভাটার টান লক্ষ করে থাকেন, তবে দেখতে পাবেন ভাটা শেষ হয়ে হঠাৎ করে যখন জোয়ারের টান শুরু হয়ে যায় তখন কোথা থেকে যে প্রবল পানির স্রোত ভাটার টানকে উল্টো পথে ফিরিয়ে দেয় তা সাধারণ হাদারাম জনগণের মন-মস্তিষ্ক কল্পনা করতে পারে না। নদীতে যখন ভরা জোয়ার থাকে তখন রাজ্যের ময়লা-আবর্জনা ভাসতে থাকে। ভাটার টানে সব ময়লা আবর্জনা চলে যায় এবং নতুন জোয়ারের পানিতে তুলনামূলক ময়লা-আবর্জনা কম থাকে।

জোয়ার-ভাটার টানের সাথে বিএনপির সুন্দরতম সুসময়ের কি সম্পর্ক রয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে আজকের শিরোনাম নিয়ে কিছু বলা আবশ্যক। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ইদানীংকালে যে ভয়াবহ নৈতিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে, তার জন্য দেশের প্রধানতম রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির দায়দায়িত্ব নেহায়েত কম নয়। বিষয়টি যদি আরো একটু স্পষ্ট করে বলি তবে বলতে হয়, আজকের যুগের ব্যাংক ডাকাতদের দৌরাত্ম্য, নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া, রাষ্ট্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি, দলবাজি এবং সীমাহীন দুরাচার জনজীবনে নাভিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক ভ্রষ্টাচার, প্রতারণা, ছলচাতুরী, লোক ঠকানোর নিত্যনতুন অপকৌশল, জুলুম, হত্যাকাণ্ড, গুম, মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা, দশ মুখে অনবরত রাষ্ট্রীয় মিথ্যাচার এবং গণতন্ত্রের অন্তর্জ্বলী যাত্রা দেখে এ দেশের মাতৃগর্ভজাত শিশুরা পর্যন্ত বদদোয়া শুরু করে দিয়েছে। দেশের সাড়ে সতেরো কোটি মানুষের আহাজারি, মনোবেদনা, অপমান এবং স্বার্থহানির যে ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে তা কোনো কালে কোনো দেশে ঘটেছে কিনা জানা নেই।

পৃথিবীর সব ধর্মমতই মানুষের মনকে পবিত্রতম বলে ঘোষণা করেছেন। সব ধর্মেই মানুষের মনে আঘাত দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। কবি-সাহিত্যিকেরা মানুষের মনকে উপাসনালয় বা দেবালয়ের সাথে তুলনা করেছেন। মনোবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং জ্ঞানী-গুণী মহামানবেরা সবাই একবাক্যে মানুষের শরীরের তুলনায় মনের বেদনার সুতীব্র দহনের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে বহু কিতাব এবং দলিল দস্তাবেজ তৈরি করে রেখেছেন। ফলে পৃথিবীর জঘন্যতম অত্যাচারীরাও মানুষের মনে আঘাত দেয়ার আগে শতবার চিন্তাভাবনা করত। মধ্যযুগের ত্রাস চেঙ্গিস খান, হালাকু খান, তৈমুর লং কিংবা সাগর-মহাসাগর অথবা মরুভূমির কুখ্যাত দস্যুরা তাদের অপকর্ম করতে গিয়ে মানুষের মনে আঘাত দেয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করত। ফলে রাজনৈতিক কারণে, যুদ্ধবিগ্রহে বা দস্যুবৃত্তির দ্বারা অতীতকালে সর্বদা নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হতো। সাধারণ জনজীবনে কোনো জনপদে কয়েক কোটি মানুষ একসাথে মনোবেদনার কবলে পড়েছেন এমন নজির ইতিহাসে নেই।

বাংলাদেশের বর্তমানের রূঢ় বাস্তবতা হলো- সীমিত সংখ্যক সুবিধাভোগী, কিছু পাগল, নাবালক এবং অতিমানব ছাড়া সবারই মন খারাপ। মানুষ ছাড়াও এ দেশের প্রকৃতির অন্যসব জন্তু-জানোয়ার, গাছপালা, বৃক্ষ-লতার সাথে আলো-বাতাস, আগুন-পানিও বেসামাল হয়ে পড়েছে। সামাজিক সম্প্রীতি, পারিবারিক বন্ধন, জাতীয় অর্থনীতি, বাজারব্যবস্থা, উৎপাদন, বিনিয়োগ ও বিপণনে শুরু হয়েছে সীমাহীন বিশৃঙ্খলা। গত তিন মাসে উল্লিখিত খাতগুলোতে যে একের পর দুর্ঘটনা ঘটছে তার কার্যকারণের হিসাব মেলানো যাচ্ছে না। বাজারে প্রতিটি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ভোক্তা পর্যায়ে ভোগের স্পৃহা কমে যাওয়া এবং মানুষের অতিমাত্রায় নিয়তি নির্ভরতার প্রবণতা দেশকে আগামী দিনে কোথায় নিয়ে ঠেকাবে তা এই মুহূর্তে আন্দাজ করা যাচ্ছে না। মানুষের কম খাদ্যগ্রহণ এবং স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক আকর্ষণের মধ্যেও জাতীয় বিশাদ কতটা প্রবলভাবে দানা বেঁধেছে তা বোঝা যাবে ২০১৯ সালের বাংলাদেশে নবজাতদের জন্মহার গণনার পর।

সম্প্রতি অভিনব উপায়ে প্রথমে ভোট চুরি- এরপর ভোট ডাকাতি এবং সর্বশেষে ভোটের মাঠে পোড়ামাটি নীতি সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার প্রযুক্তি যেসব দুর্বৃত্ত গ্রহণ করেছে তাদের জাতি-পরিচয় সম্পর্কে বিএনপি যদি ১৯৯১ সালে সতর্ক হতো তবে বর্তমানের বিপর্যয় ঘটত না। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে যে জাল-জালিয়াতি ও চুরি-ডাকাতির ভোট ভোট খেলা হয়েছিল সেই খেলার কুুশিলবদেরকে যদি ১৯৯১ সালে বিএনপির গণতান্ত্রিক সরকার উপযুক্ত বিচার করত তবে বর্তমানের কুশিলবরা জন্মই নিত না। ১৯৯১ সালে বিএনপির যে ম্যান্ডেট ছিল তা দিয়ে তারা অনায়াশে বিগত দিনের বিতর্কিত ও তাঁবেদার নির্বাচন কমিশনারদের, ভোট জাল-জালিয়াতির সাথে জড়িত সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত, সুবিধাভোগী ও উচ্ছিষ্টভোগীদের সহজেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা যেত। কিন্তু বিএনপি সেই কাজ না করে তারা কেবল জাতীয় পার্টি ভাঙা, ব্যক্তি এরশাদকে নাজেহাল করা এবং এরশাদের একান্ত অনুগতদের প্রতি প্রতিশোধ নেয়ার মধ্যে নিজের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কবর রচনা করেছিল।

বর্তমানের আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়লাভের পরই অত্যন্ত সুকৌশলে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে। তারা রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর ও কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বড় পদে কর্মরত বড় কর্তাদের, যারা ২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তাঁবেদারি করেছিল তাদের হাতকড়া পরিয়ে গারদে ঢোকানোর ব্যবস্থা করে এবং ইতিমধ্যেই তাদের বেশির ভাগ লোকের বিচার নিষ্পন্ন হয়েছে এবং কেউ কেউ ফাঁসির আসামি হিসেবে জেলখানায় বসে তওবা-আসতাগফিরুল্লাহ পড়তে পড়তে ভবলীলা সাঙ্গ করার জন্য অপেক্ষা করে চলেছেন। বিষয়টি এতটা সুকৌশলে করা হয়েছে, যার কারণে প্রশাসনের মধ্যে থাকা বিএনপির তাঁবেদারেরা অতি মাত্রায় বিএনপিবিরোধী হয়ে এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছেন যার ফলে আওয়ামী লীগকে কষ্ট করে খুব বেশি নতুন তাঁবেদার সৃষ্টি করতে হয়নি।

২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি আমলের সুবিধাভোগী পুলিশ কর্তারাই এখন বিএনপির জন্য বড় সমস্যা। ১৯৯১ সালের বিএনপি সরকার যখন অবলীলায় এরশাদের দোসরদের বুকে টেনে নিয়েছিল, ঠিক তখনই কুখ্যাত ১/১১-র প্রেক্ষাপট রচনা হয়ে গিয়েছিল। এরপর সময়ের প্রয়োজনে এবং নিয়তির টানে একের পর এক ঘটনা ঘটে। বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি করে ফেলে। অথচ বিএনপি যদি ১৯৯১ সাল থেকে সতর্ক হতো তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিভীষিকাময় নির্বাচন কাহিনীর জন্মই হতো না। তারা ভোট চোর সৃষ্টির কারখানা হিসেবে এরশাদ জমানার নির্বাচন কমিশন এবং সেই কারখানার কারিগর হিসেবে অভিযুক্ত নির্বাচন কমিশনারদের বিচার করত এবং তাদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করত তবে অপকর্মের দোসর তাদের চ্যালা চামুন্ডা ও নিকটজনেরা মাঠে-পথে, গঞ্জে-বাজারে এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে গণপিটুনির শিকার হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য- আমরা তখন ’৮০-এর দশকের ভোট চোরদের কারিগর ও বংশবদদের নামও জানি না। এমনকি ২০১৪ সালে কারা একতরফা বিনা ভোটের আয়োজন করেছিল তাদের নামও ভুলতে বসেছি।

বিএনপি যদি ১৯৯১ সালে ইচ্ছে করত তবে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে যারা এমপি হয়ে রাষ্ট্রীয় ভাণ্ডার থেকে বেতন ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছিল তা কঠোরহস্তে ফেরত এনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারত। তারা ভোট-চুরির ফসলদের আইনের আওতায় এনে তাদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে অনাগত দিনে কেউ বিনা ভোটের মেম্বর, চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী হওয়ার দুঃসাহস দেখাত না। কোনো নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা যদি জেলে যেতেন, সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত হতেন এবং তাদের কুকর্মকালীন সময়ে রাষ্ট্রীয় ভাণ্ডার থেকে নেয়া বেতন-ভাতা ফেরতের পাশাপাশি ভুয়া নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচের দায়ভার যদি তাদের ওপর অর্পিত হতো তবে বর্তমান জমানার নির্বাচন সংক্রান্ত দুঃখ-বেদনা, অভাব-অভিযোগ ও অশ্লীলতার সৃষ্টি হতো না।

বর্তমানের ভোটচোরদের পাশাপাশি ব্যাংক চোর, শেয়ার মার্কেটের ডাকাত এবং সরকারি কাজকর্মের মাফিয়া ডনদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে সেগুলোর বীজও কিন্তু সৃষ্টি হয়েছিল এরশাদ জমানায়। আওয়ামী লীগ সরকার একজন নতুন গডফাদার সৃষ্টি করেনি গত দশ বছরে। তারা কেবল অতীতের বীজ থেকে গজানো চারা গাছগুলোকে বেড়ে উঠতে বাধা দেয়নি। বিএনপি যদি ইচ্ছে করত তবে ১৯৯১-১৯৯৬ সালের মধ্যেই আর্থিক খাতের বর্তমানের চিহ্নিত দুর্নীতির মহিরূহ যারা হয়তো সেই সময়ে একালের মতো বেপরোয়া হয়ে ওঠেনি তাদের সমূলে বিনাশ করতে পারত। কিন্তু বিএনপি সেটা না করে বরং পেছনের দরজা দিয়ে আকার ইঙ্গিতে মহলবিশেষকে প্রশ্রয় দিয়ে একেকটিকে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানব হওয়ার জন্য রাস্তা করে দিয়েছে যারা সময়ের বিবর্তনে রঙ পাল্টে ক্ষমতার সাথে মিশে গেছে- এবং নিজেদের লোভের জিহ্বা দিয়ে সৎ ও নিষ্ঠাবান বিএনপিন্থী ব্যবসায়ীদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, জায়গা জমি, মিল-কারখানার বিরাট অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, ২০০১ সালের নির্বাচনে নজিরবিহীন বিজয় ছিল উপরওয়ালার পক্ষ থেকে-বিএনপির জন্য একটি উপহার, যার মর্যাদা বিএনপি রাখতে পারেনি। যে ঐতিহাসিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা তারা তখন পেয়েছিল তা দিয়ে অনায়াসে তারা সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে নিজেদের রাজনীতি, আদর্শ ও গণদাবিগুলো প্রতিষ্ঠিত করতে পারত। কিন্তু তারা সেটা না করে বিজয়ের আনন্দে এমনতরো উল্লাস শুরু করেছিল যার দায় এখন সদলবলে পরিশোধ করতে হচ্ছে। বিএনপি যেভাবে ২০০১ সালে প্রকৃতির অনুদার কৃপা লাভ করেছিল ঠিক একইভাবে আওয়ামী লীগও ১/১১-পরবর্তী ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে সেই সুযোগ লাভ করে। বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগের পার্থক্য হলো তারা তাদের সুযোগগুলো কাগজে কলমে, ছলেবলে এবং কৌশলে শতভাগ কাজে লাগিয়েছে। অন্য দিকে, বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগের অন্তর্মিল হলো- বিএনপি যেভাবে প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিনকেন্দ্রিক মেরুদণ্ডহীন ও ঘৃণিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার যথাক্রমে বিচারপতি আজিজ ও বিচারপতি মাহফুজকেন্দ্রিক অপকর্মের লিপসা করেছিল তা যে বাস্তবে কত ভয়াবহ ও নির্মম হতে পারে তা হাতেকলমে এবং সরেজমিন চোখে আঙুল, গায়ে কুতুকুতু ও পশ্চাৎ দেশে সিল মেরে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে।

২০০১ সাল পূর্ববর্তী প্রশাসনে বিএনপির যেসব তাঁবেদার সরকারি কর্মকর্তা বিএনপিকে সাহায্য করেছিল পরবর্তীতে তাদের কতজন বিএনপি কর্তৃক পুরস্কৃত হয়েছে তা আমার জানা নেই। অথচ ১/১১-পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে যেসব সরকারি কর্মকর্তা গোপনে আওয়ামী লীগের তাঁবেদারি করেছে তাদের সবাইকে গত দশ বছর ধরে আওয়ামী লীগ অব্যাহতভাবে পুরস্কৃত করেই যাচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি, রাষ্ট্রদূত, ব্যাংক-বীমা-করপোরেশনের চেয়ারম্যানের পদ-পদবিসহ আর্থিকভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা পেয়ে অতীতের তাঁবেদারেরা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ তাঁবেদারদের জন্য আওয়ামী লীগকে যেভাবে নিজেদের অভয়ারণ্য বানিয়েছে তার এক সহস্রাংশও বিএনপি করতে পারেনি। উল্টো তাদের শাসনামলে অতীতের সাহায্যকারী বন্ধু অথবা তাঁবেদার কর্মকর্তারা এমনভাবে নাজেহাল হয়েছেন যা দেখে নতুন তাঁবেদাররা বিএনপিকে নিরাপদ মনে করেনি এবং এখনো করছে না। কাজেই বিএনপি যদি তাদের অতীতের দোষত্রুটি সংশোধন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সফলতার তুলনামূলক বাছবিচার না করে তবে তাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ আমাবস্যার মতোই ঘুটঘুটে আভাময় হবে।

আমরা আজকের আলোচনার একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এবার বিএনপির সুসময় ও জোয়ার ভাটার টানের সাথে বিএনপির সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলে নিবন্ধের ইতি টানব। বর্তমান কালের নির্মম বাস্তবতা হলো- বিএনপির আর হারানোর মতো কিছু নেই, নেই জনগণকে নতুন করে কিছু জানানোর বা বুঝানোর। জনগণকে বিএনপির ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ ও সরকারের মন্দ কর্মের ব্যাপারেও সচেতন করার দরকার নেই। প্রকৃতি তার আপন মহিমায় বাংলার প্রতিটি আবালবৃদ্ধবনিতা, নারী, শিশু থেকে শুরু করে বাকপ্রতিবন্ধী, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং বিকলাঙ্গ মানুষের মনে একটি হাহাকার, একটি ঘৃণা, কতিপয় আফসোস, কিছু আকাক্সক্ষা ও নির্ধারিত স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি জলরঙে স্থায়ীভাবে অঙ্কন করে দিয়েছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ দুই সপ্তাহের জাতীয় তাণ্ডব, অবিচার ও জুলুমের মাধ্যমে। প্রকৃতির অপার লীলায় বিএনপির রাজনীতির ভাটা প্রান্তসীমায় পৌঁছার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে জোয়ারের স্বাদ আস্বাদন করবে এবং সেই জোয়ারের জন্য কার্যত তাদের কিছুই করতে হবে না। কারণ প্রকৃতি তার আপন লীলায় চারদিক থেকে চক্রাকারে সব কিছুকে জালের মধ্যে ফেলে সব কিছুকে নিজের মর্জিমতো কেন্দ্রের দিকে এমনভাবে ধাবিত করে যার পরিণাম কোনো দিন কোনোকালে কেন্দ্রীয় চরিত্রের লোকজন এক মুহূর্ত পূর্বেও অনুধাবন করতে পারেনি এবং আগামী দিনেও পারবে না।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরো সংবাদ



premium cement
মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার

সকল