২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গা শিবিরে তুমব্রো খেলা

রোহিঙ্গা ক্যাম্প - ছবি : সংগ্রহ

এ কলামে ইতঃপূর্বে ‘রোহিঙ্গা শিবিরের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা’ প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সুখ-দুঃখের কথা, বাংলাদেশে আগমনের দুঃখময়গাথা, রিফিউজি ক্যাম্পে তাদের অবস্থান, রিলিফ সামগ্রী প্রদান, সরকারি বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা ও তাদের সন্তোষ এবং সরকারের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা এসব বিধৃত হয়েছিল ওই কলামে। সে সময়েও বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা তেমন কষ্ট ভোগ করেনি। সরকারের তরফ থেকে পর্যাপ্ত রিলিফ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছিল। সৌদি সরকারও তেল-ময়দা-চিনি থেকে শুরু করে অনেক সহায়তা দিয়েছিল।

কলামটি প্রকাশিত হওয়ার পর ফেসবুকে অনেক পাঠক অভিজ্ঞতার আরো বিবরণ এবং বিষয়গুলো বই আকারে ছাপানোর অনুরোধ করে পোস্ট দিয়েছেন। অনেকে টেলিফোনে ঝাড়ফুঁক করার জন্য আমার বাসায় রোগী নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। ওই কলামে লিখেছিলাম, কুরআনের আয়াত পড়ে ফুঁ দেয়ায় ১০ বছরের রোহিঙ্গা বালিকা ময়না রাতারাতি সুস্থ হয়ে গিয়েছিল। তাই পাঠকেরা এ বিষয়ে বিস্তর খোঁজখবর নিতে থাকেন। অনেকে ‘জিন তাড়ানোর’ জন্য আবেদন করেছেন।

রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু মেয়ে ময়না সুস্থ হওয়ার পর রাতারাতি খবর ছড়ায় যে, ক্যাম্পের অফিসার ও ম্যাজিস্ট্রেট বড় একজন ‘বৈদ্য’। অনেক রোহিঙ্গা গণ্যমান্য ব্যক্তি আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন, সালাম জানালেন। সাধারণ রোহিঙ্গারা খুব সমীহ করতে থাকে। এতে আমার লাভ হলো যে, ক্যাম্প পরিচালনা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা অনেক সহজ হয়ে যায়। যখন যা বলা হতো, রোহিঙ্গারা তার ব্যতিক্রম করত না। তারা আমাকে এক বড় ধরনের ‘আধ্যাত্মিক পুরুষ’ বলে মনে করতে থাকে। কয়েক দিন পর দেখা করতে এল জাদুকর কালামিয়া। আমার ক্যাম্পে অবস্থান করত। ৫০ হাজার শরণার্থীর প্রত্যেককে চিনে রাখা সহজ ব্যাপার ছিল না। তাই কালামিয়াকেও চিনতাম না।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প অফিসে কাজ করার সময় একদিন কালামিয়া আসে। কমান্ডার সেলিম সালাম দিয়ে জানায় ‘স্যার, কালা এসেছে, সে তো জাদুকর!’ হাতের কাজ সেরে তাকে আসতে বল্লাম। বসতে বললাম। ইতস্ততঃ করে বসে পড়ল।

কালামিয়া নামে যেমন, দেখতেও তেমন। কালো রঙের পাতলা গড়ন। তাকে ক্যাম্পের রঙ চা ও বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করলাম। সে আমার প্রশংসা করতে থাকে। ‘স্যার আঁই নিজে ময়নারে ফুঁ দিলাম। ভালা ন অয়’ (স্যার আমি নিজে ময়নাকে ফুঁ দিয়েছিলাম। ভালো হয়নি)। কালা আরো বলতে থাকে, অমুক অমুক ক্যাম্পের অমুক অমুক মওলানা ঝাড়ফুঁক করেছেন; বৈদ্যরা ওষুধ দিয়েছেন। তবু ময়না ভালো হয়নি। আপনার এক ফুঁ-তে রাতারাতি সে ভালো হয়ে গেল। আপনি বড় গুণী মানুষ। স্যার, আপনি বড় বৈদ্য। কিন্তু আপনাকে দেখে তো ঝাড়ফুঁক করেন বলে মনে হয় না।’

বললাম, ‘আমি ম্যাজিস্ট্রেট মানুষ। যারা ঝাড়ফুঁক করে পয়সা কামায়, তাদের ধরে জেলে ঢুকাই।’ কালা দাঁত দিয়ে জিভে কামড় দেয়। কালামিয়াকে ইতিহাসের গল্প বললাম, সম্রাট শাহজাহান যে দিন তাজমহলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, সেদিন তিনি দিল্লির তাবৎ ওলি-বুজর্গ-আলেমদের দাওয়াত দিয়েছিলেন।

তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন- আপনাদের মধ্যে যার একদিনও আসরের নামাজ কাজা হয়নি, তিনি এর ভিত্তি প্রস্তর রাখবেন। সেদিন আমন্ত্রিত কেউ এগিয়ে আসেননি। অগত্যা সম্রাট শাহজাহান নিজেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এ কথা শুনে মাথা নাড়ে আর মিষ্টি মিষ্টি হাসে। সেলিমকে দিয়ে এক জোড়া ভালো বিদেশী স্যান্ডেল ও একটি চাদর এনে ওকে দিয়েছিলাম। এসবই ক্যাম্পের রিলিফ সামগ্রী। কালা এসব পেয়ে দারুণ খুশি। আমি আস্তে বললাম, ‘আপনি তো বড় জাদুকর। একটি জাদু দেখান তো। সে বলল, আপনার সামনে জাদু দেখানো উচিত হবে না। আমাদের জাদু ভালো জিনিস নয়।’

তার সাথে কথা বলার সময় উদ্বাস্তু রোহিঙ্গারা অফিস ঘিরে ধরে। অনেকে বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল। আমি বল্লাম, আমার ক্যাম্পের রিফিউজিদের খেলা দেখান। আপনার খরচ বা সম্মানি আমরা দেবো।’ সে রাজি হলো।

ওই দিন কালা জানায়, কামরূপ কামাখ্যার ওস্তাদের কাছে জাদু শিখেছে। আসামের কামরূপে ফি বছর জাদুর খেলা ও মেলা হয়। অদ্ভুত সব জাদু প্রদর্শন করা হয়।’ বল্লাম কামরূপ মেলায় পদ্মপাতার ওপর হাতিকে নাচায় এবং মানুষকে গরু বানিয়ে খেলা দেখায়, এমন কথা শুনেছি। সে বলল, ‘জি স্যার, আঁইও ফারি’ (জি, আমিও পারি)। এটা শুনে আমি হতবাক। বললাম, তাহলে এই খেলা ক্যাম্পে একবার দেখান। কালা রাজি হলো। জাদুর খেলা ও মেলাকে বলা হয় ‘তুমব্রো’ খেলা। নামকরা জাদুকরেরা এখানে অংশ নিয়ে থাকেন।

ভারতের পূর্বাঞ্চল, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে তুমব্রো খেলা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের দেশের জাদুকরেরা অনেকে বলেন, খেলার মাঠ ও দর্শকদের জাদুকরেরা জাদুর মাধ্যমে মোহিত করে রাখে। জাদুর মায়াজালে সব দর্শক এখন মোহে আবিষ্ট থাকে। যা হোক, রোহিঙ্গা শিবিরে তুমব্রো খেলা দেখানোর সংবাদে সবাই উৎফুল্ল। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে কাক্সিক্ষত দিনটির জন্য। দলপতিদের এবং মাইকের মাধ্যমে সাধারণকে দিন তারিখ জানিয়ে দেয়া হয়। ২০ পরিবার মিলে একটি দল এবং তাদের একজন দলনেতা। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আমরা বয়স্ক অনেক ভালো দলনেতা পেয়েছিলাম। তাদের মাধ্যমে আমরা শিবির পরিচালনা করতাম। জরুরি প্রয়োজনে শিবিরের মাইক দিয়ে তাদের ডাকা হতো। এই পদ্ধতিতে প্রশাসনে অনেক সুবিধা ও সহযোগিতা পাওয়া যেত।

নির্ধারিত দিন। কয়েকটি জাদুর খেলা দেখানোর সিদ্ধান্ত হলো। ঢালু পাহাড়ের ধারে খেলার ময়দান লোকে লোকারণ্য। বিকেলে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও রোহিঙ্গারা দুপুর থেকে সেখানে উপস্থিত হতে থাকে। কালামিয়া জাদু জানলেও অশিক্ষিত। স্কুলে লেখাপড়া করেনি। ‘গুরুর’ কাছে দীক্ষা নিয়ে জাদুমন্ত্র শিখেছে। তাকে দেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ মনে হয়েছে। বার্মা চুরুট খায়, মুখে দুর্গন্ধ। জামায় সোনালি রঙের বোতাম। আমাদের দেশে সোনালি বোতামের শার্টের চল না থাকলেও মিয়ানমারের লোকজন দামি লুঙ্গি ও শার্টে সোনালি বা পাথর বসানো বোতাম ব্যবহার করে থাকে। কালাও সেরকম শার্ট পরেছে। বনেদি রোহিঙ্গারাও এ রকম শার্ট পরিধান করে।

যা হোক, কালামিয়া মাঠে নেমে মাটি নিয়ে কী যেন পড়ে ফুঁ দিয়ে বিস্কুট তৈরি করে দেখায়। কিছু কাগজ নিয়ে বাংলাদেশী টাকা বানিয়ে দেখাল। এ রকম ম্যাজিক আমাদের দেশের ফুটপাথেও মাঝে মধ্যে দেখা যায়। এসব দেখেই রোহিঙ্গারা আনন্দে আত্মহারা। শিবিরে এমনিতে কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল না। সরকার খাবার, পানীয় জল, বাসস্থান ও স্বাস্থ্য সমস্যা বেশ ভালোভাবেই সুরাহা করেছিল। রোহিঙ্গাদের এসব বিষয়ে প্রশংসা করতে দেখেছি। তদুপরি হঠাৎ এ জাতীয় বিনোদনের ব্যবস্থা করায় সবাই খুশি।

কালামিয়াকে তুমব্রো খেলা দেখাতে খবর পাঠালাম। হাতে কিছু মাটি নিয়ে সে বিড়বিড় করে কিছু পড়ল, ফুঁ দিয়ে ধুলাবালু দর্শকদের দিকে ছুড়ে দিলো। ১৮-১৯ বছরের দু’টি ছেলেকে ইশারায় ডাকলেও তারা মাঠে যেতে চাইল না। কালামিয়া ওদের কাছে গিয়ে মাথায় হাত দেয়ার সাথে সাথে তারা দুজন চুপ হয়ে মাঠে গেল। হঠাৎ এ পরিবর্তন দেখে মনে হলো, তারা মন্ত্রপূত হয়েছে। জাদুকর তাদের পরনের লুঙ্গি শক্ত করে পরে মালকোঁচা মারতে বললেন। ছেলে দু’টি তাই করে।

তিনি দুইজনকে মাঝখানে রেখে ঘুরে এসে মাথায় হাত রাখতেই ছেলে দু’টি মাটিতে হাত রেখে গরুর মতো রণ হুঙ্কার দিতে লাগল। আমরা অবাক হয়ে দেখতে পেলাম, ছেলে দু’টি গরুর মতো ফোঁস ফোঁস করছে। গরু বা ষাঁড় যেভাবে লড়াইয়ের সময় পা দিয়ে মাটি ছোড়ে ছেলে দু’টিও সামনের হাত দিয়ে তেমনি মাটি ছুড়ছে। তারপর লড়াই করার জন্য একে অন্যের ঘাড়ে জোরে মাথা ঠেকিয়ে গরুর মতো ঠেলছে। জাদুকর মাথায় হাত না দিলে তাদের মাথা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। একজন আরেক জনকে পাল্টাপাল্টি ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। হুবহু গরুর লড়াই। দর্শকেরা হাসাহাসি করছিল।

মনে হলো, এতক্ষণে ওদের হাঁটুর চামড়া থেতলে গেছে। ক্যাম্পের ডাক্তার নিয়ে মাঠে গেলাম। কালামিয়াকে বললাম খেলা বন্ধ করতে। সে মন্ত্র পড়ে ফুঁ দিতেই ছেলে দুটো উঠে দাঁড়ায়। সাথে সাথে লজ্জা ফিরে এলো। দেখলাম তাদের হাঁটু দিয়ে রক্ত ঝরছে। কালাকে বললাম, খেলা বন্ধ করে দিন। সে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল, আমি আপনাকে মন্ত্রপূত করিনি। খেলাতো সবে শুরু করেছি। বললাম ‘কোনো সমস্যা হলে কেউ দায় নেবে না। কিছুটা তো দেখলাম।’ আপনাকে ধন্যবাদ। আমি ছেলে দু’টিকে রেডক্রিসেন্টের ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসা করলাম। কিছু উপহার দিলাম। ওরা সন্তুষ্ট চিত্তে তাঁবুতে ফিরে যায়।

কালা মিয়ার কথাটা এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু আরো কিছু ঘটনা ঘটেছিল। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজের কোনো শেষ নেই। কোনো রুটিন নেই; সারা দিন সর্বক্ষণ কাজ। যখন যা সামনে আসে তাই করতে হয়। অসহায় রোহিঙ্গারা ছুটে আসছে। কারো টাকা-পয়সা নেই, কেউ অসুস্থ, কেউ ধর্ষিতা, কেউ বা বাবা-মাকে খুঁজে পাচ্ছে না। সরকারি রিলিফ সরবরাহকারী ত্রাণ বিভাগ, রেডক্রিসেন্ট, স্বাস্থ্য ক্যাম্প, পুলিশ, আনসারসহ সবাই রাত দিন পরিশ্রম করছিল। কারো কাফনের কাপড় প্রদান, কারো নবজাতকের চিকিৎসা- এসবের ব্যবস্থা করতে হচ্ছিল। সবাই ঘুরঘুর করছিল ছেরাং (পরিচয়পত্র) হাতে।

‘লিডারদের’ ব্যবহার করে আমার সব কাজ সম্পন্ন করেছিলাম। বেলা ১১-১২টার দিকে রোহিঙ্গাদের ঝগড়া বিবাদের সালিস করা হতো। বিচিত্র অভিযোগের সালিস। সিদ্ধান্তের জন্য আমরা দলপতি মুরব্বিদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতাম। ছোটখাটো রিলিফ সামগ্রী চুরি, মারামারি, প্রেমের বিয়ে, এমনকি অন্য ক্যাম্পের বউ ভাগিয়ে নিয়ে আসা এমন ধরনের অভিযোগও আসত। আমার সময়ে প্রেমঘটিত তিনটি বিয়েও হয়েছে। বর-কনে আমারই ক্যাম্পের।

লিডার ও অফিসাররা বলত, স্যার, আপনাকেই ভোজ দিতে হবে। আর কী করা? টেকনাফ থেকে নিজের পয়সায় মিষ্টি এনে খাওয়াতে হয়েছে। এতে সবাই খুশি। এসব কথা মনে পড়লে মনটা ভারী হয়ে যায়। রোহিঙ্গা লিডাররা অনেক সময় ক্ষেপে গিয়ে সালিসে মারধর করে মাফ চাইয়ে নিয়ে নিষ্পত্তি করতেন। তারা বলতেন, ‘সরগারর খানা খাই তেল বাইজ্জ্যে দে না?’ (সরকারের খেয়ে দেয়ে গায়ে চর্বি হয়েছে নাকি?) পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরও সালিসে থাকতেন। তিনি জেল ও মামলার ভয় দেখাতেন। এতেই ওরা অনেকটা শান্ত থাকত। তবে আমরা কাউকে মামলা করে পুলিশে দিয়েছি- এমন ঘটনা ঘটেনি। এভাবে ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা হতো।

একদিন অভিযোগ এলো, কালার বিরুদ্ধে। সে মেয়ে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছে। অত্যন্ত গুরুতর অভিযাগ। তার নাকি আগে থেকেই আছে। মেয়ের বাবাকে বললাম চুপ থাকার জন্য। সে ইঙ্গিত বুঝতে পারে। পরদিন আনসার কমান্ডার সেলিমকে দিয়ে কালাকে ধরে আনা হলো। আমরা গাছতলায় চেয়ার পেতে কয়েকজন লিডারসহ বসলাম। চারিদিকে অনেক লোক। যারা কালামিয়ার জাদুর কথা জানে এবং তা দেখেছে, তারা টুঁ শব্দ করছে না। কালা নির্বিকার চুপচাপ।

তাকে বসতে বললাম, সে বসল না; দাঁড়িয়ে রইল। মুরুব্বি (রোহিঙ্গা নেতৃস্থানীয়) একজন বল্লেন, ‘কালা, তুঁই জাদু করি এ্যন কাম কেনে গইল্ল্যা?’ (জাদু করে তুমি এমন কাজ কেন করেছ?) কালামিয়া বলল, ‘জাদু ন গরি। ইবা আঁরে ভালবাসে।’ (জাদু করিনি। মেয়েটি আমাকে ভালোবাসে।) জিজ্ঞাস করলাম, কত দিন ধরে এই ভালোবাসা? সে বলল, ‘বার্মা অইতে।” (বার্মা থেকেই)। একজন রোহিঙ্গা মুরব্বি রেগে গিয়ে বললেন, ‘শালা! বউ পোয়া আছে তুই কিল্লাই এড়ে লেং মারর?’ (বউ ছেলে রয়েছে, তারপরও তুমি লীলা খেলা করছ কেন?) কালামিয়া বলল, ‘বিয়াগগুনত্তো বউ পোয়া আছে।’ (সবারই বৌ পোলা আছে।)

পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, ‘স্যার ঘটনা খারাপ। জাদুকরের কথায় বুঝা যায়, আরো অনেকের এই অ্যাফেয়ার রয়েছে।’ তিনি তাড়াতাড়ি বিচার শেষ করে দিতে বললেন; আবার না অন্য কারো ফ্যাঁকড়া বের হয়। সালিসে কালার সে বউকেও হাজির করা হয়েছিল। সে জানায়, বড় বউয়ের সাথে মিলে মিশে ঘর করতে কোনো অসুবিধা নেই। রোহিঙ্গাদের বলতে গেলে, বেশির ভাগের দু-তিনটি বউ। এক বউ কম। কালামিয়ার এই বউসহ দু’টি বউ হবে। আমরা তার বিয়ের আয়োজন করলাম। কমান্ডার সেলিম এমন বিয়ের ঘোর বিরোধী। সেলিম স্থানীয় ছেলে, স্বাস্থ্যবান ও দাপুটে। সে অপেক্ষা করছিল ‘ডাণ্ডা মারার’ অপেক্ষায়। বিয়ের ফায়সালা হওয়ায় সে থেমে গেলো। কাকে যেন বলল, ‘আঁরার সাবে ডরাইয়ে ফাললার।’ (আমাদের স্যার জাদুকে ভয় পেয়েছেন, বোধ হয়।)
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement
বদলে যেতে পারে এসএসসি পরীক্ষার নাম সীমান্তে বাংলাদেশীদের মৃত্যু কমেছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাস্তি কমিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনে উদ্বেগ টিআইবির যখন দলকে আর সহযোগিতা করতে পারবো না তখন অবসরে যাবো : মেসি ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল কাহনেম্যান আর নেই বিএনপি নেতাকর্মীদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ খণ্ডালেন ওবায়দুল কাদের আটকের পর নাশকতা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো ইউপি চেয়ারম্যানকে বদর যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন পণবন্দী জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝালকাঠিতে নিখোঁজের ২ দিন পর নদীতে মিলল ভ্যানচালকের লাশ

সকল