১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জাতীয় ঐক্য ও পুনঃনির্বাচনের দাবি

-

এবার নির্বাচনে একচেটিয়া ভোটে নৌকার ‘ঐতিহাসিক’ বিজয়কে দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল প্রত্যাখ্যান করেছে। মহাজোটের বাইরে এমন কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা দলের হদিস পাওয়া যাবে না, যারা এ বিজয়কে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জোট ও দল এবং সিভিল সোসাইটি নির্বাচনকে অস্বীকার করেছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান ও একক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অভাবনীয় সমীকরণের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে এই জোট গঠিত হয়েছে। তারা একটি জাতীয় আকাক্সক্ষা এবং গণজোয়ারের সূচনা করতে সক্ষম হন। বক্তৃতা বিবৃতি এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে রাজনৈতিক মহলে এই প্রত্যয়ের সৃষ্টি হয় যে, সত্যি সত্যি ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ‘ভোট বিপ্লব’ ঘটবে; কিন্তু সরকারের রাজনৈতিক ছলচাতুরী এবং ভোট প্রকৌশলের কাছে তারা পরাজিত হলেন। ভোট হওয়ার পরে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন।

তিনি বলেন, দেশের প্রায় সব আসন থেকে একই রকম ভোট ডাকাতির খবর এসেছে। ফলে বিভিন্ন দলের শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এ প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক; তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকের নির্বাচন জাতির সাথে একটি নিষ্ঠুর প্রহসন’। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সত্য ও ন্যায়ের কবর রচনা করেছে; সর্বোপরি নির্বাচনের কবর রচনা করেছে। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা অভিযোগ করেন, ‘আমাদের আশ^স্ত করা হয়েছিল, তফসিল ঘোষণার পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এবং নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হবে না; কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় ১৭ জন প্রার্থীসহ প্রায় ১৪ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক আহত হন। মিথ্যা ও ‘গায়েবি’ মামলা দিয়ে প্রায় ১১ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৮ জন প্রার্থীকে কারাগার থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে হয়েছে।

একই সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বরাবর লিখিত একটি চিঠিতে বিএনপি অভিযোগ করেছে, ২৫০টি আসনে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। ২৯ ডিসেম্বর রাতেই ২৯৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে কমপক্ষে ১৫০টি আসনের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ও প্রশাসনের সহায়তায় ৪০০-৫০০ ব্যালট পেপারে নৌকা মার্কায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। এরপর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপি পুনঃনির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি পেশ করেছে। ড. কামাল হোসেন বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে নির্বাচন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যত শিগগির সম্ভব আরেকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করার জন্য তাদের চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান। পুনঃনির্বাচনের দাবিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘মামাবাড়ির আবদার’ বলে নাকচ করে দিয়েছেন।

নির্বাচনের ব্যাপারে সব বিরোধী দল ও মতের একটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ঐকমত্য লক্ষ করা যাচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে সরকারের ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দলের বদনামধারী জাতীয় পার্টি তাদের আসনসংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে। জাপা প্রধান এরশাদ বহুমুখী চাপের মধ্যেও নির্বাচন যে সুষ্ঠু হয়নি তা বলার চেষ্টা করেছেন। একই সাথে সরকার ও বিরোধী দলে থাকার অদ্ভুত সমীকরণ বাতিল করে সম্ভবত এই প্রথমবারের মতো তিনি বিরোধী আসনে বসার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এটি নিয়ে আইনগত বিতর্ক আছে। এরশাদের নিজ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী আবার যে, ক্ষমতালোভীদের চাপে তিনি ভোল পাল্টাবেন না- এমন নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার ও বিরোধী দল- এই দুই জোটে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হলেও এই সমীকরণের বাইরে দু’টি রাজনৈতিক দল ও জোট স্বকীয় ভূমিকায় অবিচল থাকে। স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তির কথিত যুক্তি অনুযায়ী এই দু’টি বিপরীত মেরুর রাজনৈতিক দলের জোট অনুযায়ী অবস্থানই কাম্য ছিল। এর একটি হল সিপিবির নেতৃত্বে বাম গণতান্ত্রিক জোট। ভোটের আগে শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক সেখানে ধর্ণা দিয়েছিলেন; কিন্তু তারা তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ভুয়া ভোটের ভুয়া নির্বাচন’ বলে মন্তব্য করেছে। দলটি বলেছে, এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচনের পূর্বনির্ধারিত রায় জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। সিপিবি অভিযোগ করেছে, বেশির ভাগ কেন্দ্রে আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয়েছিল। নির্বাচন শুরু হওয়ার পর প্রতিপক্ষের এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে আগ্রহী ভোটারদের বিতাড়িত করে এবং প্রকাশ্যে সিল মেরে ভোট দেয়া হয়েছে। সিপিবির নেতারা বলেন, শাসক দল বিভিন্ন ধরনের প্রহসন ও কারচুপির বলয় আগেই তৈরি করে রেখেছিল। এর মাধ্যমে সরকার গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ন্যূনতম ভিত্তিকে পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচন ‘পাতানো’ বলে মন্তব্য করে ‘গণসংহতি আন্দোলন’ বলেছে, এই নির্বাচন তারা প্রত্যাখ্যান করছেন। এই নির্বাচন বাতিল করে, নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

গণসংহতি মন্তব্য করে যে, ২০১৪ সালের মতো ‘জনসম্মতিহীন এই নির্বাচনে গঠিত সরকারও দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও নিপীড়নের পথে দেশ শাসন অব্যাহত রাখবে। অপর দিকে চরমোনাই পীর সাহেবের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনও তাদের স্বকীয়তা, আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হয়েছে। তাদের কাছেও সরকারি দলের পক্ষ থেকে ক্ষমতার অংশীদার হওয়ার আহ্বান ছিল। বাজারে গুজব ছিল, গোপনে সরকারের সাথে তাদের সংযোগ রয়েছে। কিন্তু একাদশ সংসদীয় নির্বাচন ওই গুজবকে অসত্য প্রমাণ করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তাদের যে বক্তব্য, তা হলো- ইসলামী আন্দোলন নির্বাচনকে আন্দোলন হিসেবেই গ্রহণ করেছে। ক্ষমতা দখলের মাধ্যম হিসেবে নয়। যে বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি করেছে, তা হলো- নির্বাচন পরবর্তীকালে চরমোনাই পীর সাহেবের নির্বাচন সম্পর্কে কঠিন মন্তব্য এবং অবিলম্বে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার দাবি।

বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম ১ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর প্রহসনের নির্বাচনে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি। তাই এ নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং অনতিবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’ পীর সাহেব আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের সচেতন জনগণ এবং যারা দেশের পক্ষে, তাদের সাথেই আমাদের ঐক্য হবে। দাবিগুলো এক হলে ঐক্যফ্রন্টের সাথে আলোচনায় বসতে পারি।’ তিনি অভিযোগ করেন, যদি সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মীদের স্বাধীনভাবে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হতো তাহলে ভোট ডাকাতির হাজার হাজার চিত্র তারা ধারণ করতে পারতেন; কিন্তু সরকার তা আগেই বন্ধ করে রেখেছিল। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তিনি সুস্পষ্ট অভিযোগ করে বলেন, ‘ইসি নির্বাচন ইঞ্জিনিয়ারিং করতে কিছু কৌশল অবলম্বন করেছে, যার মধ্যে ছিল ইন্টারনেট বন্ধ, গণমাধ্যমের ছবি তুলতে বিধিনিষেধ আরোপ, টেন্ডার ভোট পদ্ধতি এবং তা গণনা না করা। নির্বাচনের নামে এ রকম প্রহসন ও তামাশা জাতি স্বাধীনতার গত ৪৭ বছরেও প্রত্যক্ষ করেনি।

প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ না করলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে তীব্র আন্দোলনের সূচনা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন ইসলামী আন্দোলনের আমির। জামায়াতে ইসলামীও ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচনের নামে সারা দেশে ক্ষমতাসীন দলের ভোট ডাকাতি, অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক। তিনি বলেন, ভোটের নামে সারা দেশে ভোট ডাকাতির যে মহোৎসব হয়েছে, তা জাতীয় জীবনে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এটি ছিল একটি সাজানো নির্বাচন। তিনি আশঙ্কা করেন, এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট আরো ঘনীভূত হবে। এভাবে জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, প্রতিবেদন ও মতামতে দেখা যায় এই নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং অনতিবিলম্বে আরেকটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জনমতের প্রতিফলন এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য অপরিহার্য। আমরা সবাই জানি, কী পরিপ্রেক্ষিতে, কিভাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং এটি কোনো অসম্ভব দাবি নয়।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া সরকার ১৯৯৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এ রকম একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অন্য কোনো সাংবিধানিক পথ খোলা না থাকায় ওই নির্বাচনের আয়োজন করতে হয়। ১৫ দিন পরই খালেদা জিয়া সরকার আরেকটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য পদত্যাগ করে। প্রথমবারের মতো সাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সুতরাং সত্যিকার অর্থে, সব মানুষের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে আরেকটি নির্বাচন সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে না।

এ দেশের জনগণ বিশ্বাস করে যে, তারাই দেশের মালিক ও মোক্তার। জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের শাসক-পোষক নির্ধারণ করে থাকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের সেই ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। একদিনের কথিত গণতন্ত্রও তাদের আর রইল না। সুতরাং ৩০ ডিসেম্বর তাদের ভোট দিতে না দেয়ার যে ক্ষোভ-দুঃখ তারা বুকে ধারণ করছে; যেকোনো সময় কোনো কারণে তার প্রকাশ ঘটতে পারে। নদীর স্বাভাবিক গতিকে যদি বাধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়, তা একসময় প্লাবন সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং সরকারের উচিত ‘সব ক’টি জানালা খুলে দেয়া’, যাতে অস্বাভাবিকতার অবসান ঘটে। এ পর্যন্ত যেসব দল ও ব্যক্তির উদ্ধৃতি ও মতামত আমরা দিয়েছি তাতে কোনো অস্বাভাবিক ও সন্ত্রাসের আহ্বান নেই। বরং আছে আরেকটি নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগাদা। জনগণের এই সদিচ্ছাকে সম্মান দেখানো উচিত সরকারি দলের। বিরোধী দল কিভাবে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের হারানো ভোটাধিকার ফেরত পেতে পারে তা নিয়ে তাদের চিন্তা করা উচিত। এর সহজ উপায় হতে পারে সংলাপ এবং কঠিন উপায় হতে পারে আন্দোলন।

এ ক্ষেত্রে চরমোনাই পীর সাহেব মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা প্রণিধানযোগ্য। তিনি ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে সব মত ও দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পরামর্শ দিয়েছেন। সমীকরণের নিয়মানুযায়ী, আমরা যদি বিগত ১০-১২ দিনের সমীক্ষা নিই তাহলে দেখব, প্রকাশিত মতামতের ন্যূনতম দাবি হচ্ছে : ক. পুনঃনির্বাচন খ. নতুন নির্বাচন কমিশন গ. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। এই তিনটি ন্যূনতম দাবির ভিত্তিতে সব রাজনৈতিক দল ও মতের ঐক্য অপরিহার্য। অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এবং স্বৈরাচারবিরোধী গণ-আন্দোলনে জোটগতভাবে অথবা পৃথক পৃথকভাবে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছে। জনগণ বিশ্বাস করে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ, আন্দোলন ও উদ্দেশ্যের বৈপরীত্য এবং নেতৃত্বের দ্বৈধতা সত্ত্বেও এ লক্ষ্য অর্জনে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা সব ভেদাভেদ ভুলে একত্র হতে পারবেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মাধমে যে প্রাথমিক ঐক্য অর্জিত হয়েছে তা শিগগিরই আরো সম্প্রসারিত হবে। রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণকে বুঝিয়ে দেয়ার এ আন্দোলনে জনগণ রাজনীতিকদের সঠিক নেতৃত্ব পেলে সফলতা অর্জিত হবে। এডমন্ড রসস্ট্যান্ড বলেছেন, ‘সফলতা কখনো অন্ধ হয় না। একমাত্র নিশ্চুপ লোকেরাই তাদের সফলতা দিয়ে তাক লাগিয়ে দিতে পারে।’
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement