২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দেখিয়ে দিলেন ডিসি সাহেবেরা

-

রংপুর-৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াতে ইসলামী রংপুর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক গোলাম রাব্বানীর দুর্দাশা ঘুচল না। আদালত আদেশ দিয়েছিলেন, গোলাম রাব্বানীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তা যাচাই-বাছাই করা হোক। এর আগে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় গোলাম রাব্বানীর পক্ষে তার আইনজীবী রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে গিয়েছিলেন মনোনয়নপত্র জমা দিতে। কিন্তু আইনজীবীকে চার ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখেও রিটার্নিং কর্মকর্তা সে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেননি। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তারা ডিসির ছোট রুমে গিয়ে নানা শলাপরামর্শ করে গোলাম রাব্বানীর আইনজীবীকে জানান, উপরের নির্দেশ আছে তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা যাবে না। এ নিয়ে গোলাম রাব্বানীর আইনজীবীরা অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত হাইকোর্টে আবেদন জানান মনোনয়নপত্র গ্রহণের জন্য। হাইকোর্ট মনোনয়নপত্রটি গ্রহণ করে যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা ডিসি সে নির্দেশ অমান্য করেছেন এমন দাবি করা যাবে না। কারণ তিনি গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্রটি গ্রহণ করেন এবং তাতে দু’টি মামলার তথ্য না থাকার অজুহাত দেখিয়ে মনোনয়নপত্রটি বাতিল করে দেন।

তা নিয়ে ডিসির কার্যালয়ে নানা নাটক হয়েছে। ডিসি তথা রিটার্নিং অফিসারের বক্তব্য ছিল মনোনয়নপত্রে দু’টি মামলার তথ্য নেই এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগপত্র গ্রহণের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের তথ্য নেই। ফলে গোলাম রাব্বানীর মনোনয়নপত্র বাতিল। কিন্তু তার আইনজীবীরা বলেছেন, ওই দু’টি মামলার পরিবর্তিত নম্বর এবং পদত্যাগপত্রের কপি সন্নিবেশিত থাকা সত্ত্বেও তাদের বক্তব্য না শুনে অবৈধভাবে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আইনজীবীরা জানান, এ নিয়ে তারা আপিল করবেন। এ বিষয়ে যখন গোলাম রাব্বানীর প্রস্তাবক সমর্থক ও আইনজীবীরা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে যান, তখন সেখানে বেশ কিছুসংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী হাজির হয়ে আইনজীবী ও উপস্থিত গোলাম রাব্বানীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। সাংবাদিকেরা এই হামলার দৃশ্য ধারণ করতে গেলে তাদের ক্যামেরা কেড়ে নেয়া হয়। এ সময় প্রার্থীর আইনজীবীরা ওই দু’টি অভিযোগের ব্যাপারে তথ্যপ্রমাণ দিতে চাইলে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আইনজীবীদের ওপর চড়াও হন এবং তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একুশে টেলিভিশন এবং দৈনিক সংবাদের রংপুর বিভাগের প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদল মোবাইলে সে দৃশ্য ধারণ করলে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ছবিগুলো ডিলিট করা হয়। এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা ডিসি এনামুল হাবিব জানান, হাইকোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে আমরা মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে যাচাই-বাছাই করি।

এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগের কাগজপত্র না আসায় এবং মনোনয়নপত্রে দু’টি মামলার তথ্য না থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। গোলাম রাব্বানীর আইনজীবী বায়েজিদ ওসমানী বলেন, শুরুতেই রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে আমরা কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি পরে শুনবেন বলে আমাদের থামিয়ে দেন। দু’টি মামলার তথ্য না থাকার বিষয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য দিতে চাইলেও তিনি তা শোনেননি। কিন্তু মনোনয়নপত্রে তার বিরুদ্ধে থাকা ১৬টি মিথ্যা মামলার সবগুলো তথ্য আমরা দিয়েছি। এর মধ্যে ১২ নম্বর ক্রমিকে থাকা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল মামলা নম্বর ১৪/১৮টিই হলো জিআর ৫৪৮/১৭ নম্বর মামলার তথ্য এবং ১৫ নম্বর ক্রমিকে থাকা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল মামলা নম্বর ২২/১৫ মামলাটিই হলো জিআর ৫৭০/১৩ নম্বর মামলা। নি¤œ আদালত থেকে ওই দু’টি মামলা স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার কারণে নম্বর পরিবর্তিত হয়েছে। বিষয়টি কোনো রকম যাচাই-বাছাই না করেই রিটার্নিং অফিসার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছেন।

আইনজীবী বায়েজিদ ওসমানী বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা তার প্রার্থীর উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগপত্র দেয়ার কথা স্বীকার করলেও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত না থাকার কারণে যা বলেছেন সেটি আইনানুগ নয়। কারণ, স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধি স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠালে তা সাথে সাথে গৃহীত বলে গণ্য হয়। এ ছাড়া তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল নম্বর ৩৪/২০১৩-এর আদেশ উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওই আদেশ অনুযায়ী কেউ পদত্যাগ না করলেও তার মনোনয়নপত্র গ্রহণযোগ্য হবে। এ বিষয়ে সংবাদপত্রেও ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। প্রবীণ আইনজীবী ড. শাহদীন মালিকও একই কথা বলেছেন। সে ক্ষেত্রে নিয়ম হলো নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি পূর্ববর্তী পদ থেকে পদত্যাগ করবেন, তার আগে তা প্রয়োজনীয় নয়। কিন্তু গোলাম রাব্বানীর মনোনয়ন ঠেকাতে আওয়ামী লীগের এত তোড়জোড় কেন সেটা খুব স্পষ্ট ছিল না।

সে দিন তার সমর্থক ও আইনজীবীরা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে যাবেন এবং মনোনয়নপত্র বৈধকরণে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করবেন, এটা তো জানাই ছিল। কিন্তু তা প্রতিরোধ করতে এত বিপুল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী কেন রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে হাজির হলেন এবং কেন সেখানে একটা সঙ্ঘাতমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি করলেন সেটি সহজেই বোধগম্য। রিটার্নিং কর্মকর্তার উচিত ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা এবং যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে দিকে খেয়াল রাখা। কিন্তু তিনি তা করার প্রয়োজন বোধ করেননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তারা যেকোনো কারণেই হোক নানা ধরনের খামখেয়ালির আশ্রয় নিয়েছেন এবং যেমন খুশি তেমনভাবে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন ও বাতিল করেছেন। এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো স্থানে একই যাত্রায় ভিন্ন ফল পাওয়া গেছে। ঋণখেলাপি হলে মনোনয়নপত্র বাতিল হবে সে কথা সকলেরই জানা। কিন্তু আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ভিন্ন চিত্র দেখেছি।

আওয়ামী লীগের আ স ম ফিরোজ একজন ঋণখেলাপি। নির্বাচনী শিডিউল ঘোষণার পর পত্রপত্রিকায় সংবাদ বেরিয়েছিল যে, আ স ম ফিরোজ এবার আর নির্বাচন করতে পারছেন না। কারণ তিনি ঋণ পুনঃতফসিল করেননি। এ খবর প্রকাশের পরই আ স ম ফিরোজ নিজের প্রভাব খাটিয়ে নবমবারের মতো ব্যাংকের ঋণ পুনঃতফসিল করান, যা আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। ঋণ তিনবারের বেশি পুনঃতফসিল করা যায় না এবং আ স ম ফিরোজের মনোনয়নপত্র এই পুনঃতফসিলের মাধ্যমে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে বিকল্পধারার নেতা ও আওয়ামী লীগের মহাজোটের সঙ্গী মেজর (অব:) মান্নান ও মাহী বি. চৌধুরীর ক্ষেত্রে। মেজর মান্নানও একজন ঋণখেলাপি। কিন্তু তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়নি। মাহী বি. চৌধুরীর একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোং লিমিটেড (বিআইএফসি) থেকে তার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এন্টারট্রেইনমেন্ট রিপাবলিকের নামে ২০০৮ সালে ৩৬ মাস মেয়াদে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নেন।

কিন্তু সে ঋণ তিনি সময় মতো পরিশোধ করেননি। ঋণ পরিশোধের সময় দেড় বছর বাকি থাকতেই ২০১০ সালের জুনে ঋণটি পুনঃতফসিলের জন্য বিআইএফসিতে আবেদন করেন। সে আবেদন মঞ্জুর করা হয়। ১৯১৪ সালের ডিসেম্বরে ঋণ আদায়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গ্রহীতাকে ৬৫ লাখ ১৪ হাজার ৫৬২ টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়। প্রায় তিন মাস পর ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ মাহী ৩০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। সেই সময়ে ঋণের বকেয়া ছিল ৭৯ লাখ ৯ হাজার ৩২০ টাকা। ২০১৭ সালের মার্চে মাহীকে বাকি টাকা পরিশোধের অনুরোধ করে ফের চিঠি পাঠায় বিআইএফসি। ওই চিঠির জবাবে মাহী বি. চৌধুরী একটি এনওসি’র কপি পাঠান। ওই এনওসি কিভাবে তিনি পেলেন তার কোনো রেকর্ড সংরক্ষিত না থাকায় সেই সময়ের এমডি ইনামুর রহমানকে শোকজ করা হয়। সাবেক এই ব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রতিষ্ঠানটির তরফ থেকে দুই দফা চিঠি দেয়া হলেও তিনি এখন পর্যন্ত তার কোনো জবাব দেননি। মাহী বি. চৌধুরীর ওই ঋণকে ‘মন্দ ও ক্ষতিজনক’ পর্যায়ে রেখেছে বিআইএফসি।

সর্বশেষ হিসাব জানিয়ে ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর বিআইএফসি মাহীর কাছে এক কোটি ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৩৪ টাকা পয়ষট্টি পয়সা পায় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে। রিটার্নিং অফিসার যখন তার মনোনয়নপত্র বাছাই করছিলেন, সে সময় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ঋণ আদায় না হওয়া সংক্রান্ত যুক্তি তুলে আনুষ্ঠানিক আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার সে অভিযোগ আমলে নেননি। জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার সায়লা ফারজানা মাহীর মনোনয়নপত্র চ্যালেঞ্জ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দাঁড়িয়ে আপত্তি করছিলেন। কিন্তু তারা ওই প্রার্থীকে কত টাকা ঋণ দিয়েছিলেন, কত পরিশোধ হয়েছে এবং কত টাকা পাওনা তাৎক্ষণিকভাবে তার কিছুই জনাতে পারেননি। ফলে মাহীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের খামখেয়ালি এভাবেই চলেছে। নৌকা মার্কা প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র তেমন খতিয়ে দেখতে দেখা যায়নি। নৌকা মার্কা প্রার্থী হলেই বৈধ, অন্য কোনো প্রার্থী হলেই অবৈধ। আর সে কারণে ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। যার মধ্যে ১৪১টি ধানের শীষ প্রার্থীদের, আওয়ামী লীগের মাত্র তিনটি। এর বিপরীত চিত্রও আছে। দুই হাজার ২০০ টাকা ল্যান্ড ফোন বিল বাতিল বলে একজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

যারা ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করেন তারা এর সেবা ও দুর্দশা সম্পর্কে জানেন। ল্যান্ড ফোনের বিল মাসের পর মাস আসে না। মাসের পর মাস ল্যান্ড ফোন খারাপ থাকে, খবর দিয়েও খুব একটা প্রতিকার পাওয়া যায় না। বিল এলেই কেবল একজন গ্রাহক তা পরিশোধ করতে পারে। তা ছাড়া ল্যান্ড ফোনের ব্যবহারও এখন অনেক কমে গেছে। ফলে বিল না এলে গ্রাহকের মনে থাকারই কথা নয় যে, কবে বিল এসেছিল, কবে বিল পরিশোধ করেছেন, ক’মাসের বিল বাকি রয়েছে। এটি অনুসন্ধান করে বিল জোগাড় করাও মহা ঝামেলার ব্যাপার। এমনিভাবে আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী নিহত এস এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া সম্প্রতি ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেছেন এবং মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড নিয়েছিলেন, যার বার্ষিক নবায়ন ফি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। সে ফি বকেয়া ছিল। তিনি বিদেশে ছিলেন তাই ব্যাংকের চিঠি সময়মতো তার হস্তগত হয়নি। ফলে তিনি ওই টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। কার্যত ওই ক্রেডিট কার্ড থেকে তিনি কোনো ঋণ নেননি। এটি নবায়ন ফি মাত্র।

কার্ড নবায়ন না করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় তা বাতিল করে দিতে পারেন। হয়তো তা বাতিল করে দিতও। কিন্তু একটি বেসরকারি ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড নবায়ন ফি জমা দেয়া হয়নি বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। এ রকম সব আজব কাণ্ড রিটার্নিং কর্মকর্তারা ঘটিয়েছে। তার কোনটা দৈব ঘটনা আর কোনটা ইচ্ছাকৃত বলা মুশকিল। ইতোমধ্যে ৫৪৩ জন ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছেন। গত বৃহস্পতিবার তার ১৬০টির শুনানি হয়েছে। সেখানে নির্বাচন কমিশনের আপিলে ৮০ জন তাদের মনোনয়নপত্র তথা প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন। ৭৬ জনের মনোনয়নপত্র অবৈধ রয়ে গেছে। এ থেকেও বোঝা যায় রিটার্নিং কর্মকর্তারা কতটা খামখেয়ালির আশ্রয় নিয়েছেন।

সে কারণে আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম প্রশাসন, পুলিশ এরা যখন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে এসেছে তখন নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে আওয়ামী লীগের এই সাজানো প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল ঘটানো। কক্সবাজারের ডিসিকে যদি চাঁদপুরে বদলি করা হতো তাহলে বদির ভয়ে তাকে তটস্থ থাকতে হতো না। তিনি তুলনামূলকভাবে স্বাধীন হিসেবে কাজ করতে পারতেন। কিন্তু কমিশন সরকারকে খুশি করার জন্য প্রথমেই ঘোষণা দিয়ে বসেছে যে, প্রশাসনে কোনো রদবদল করা হবে না। অর্থাৎ আওয়ামী জুতায় পা রেখেই হাঁটতে স্বচ্ছন্দ বোধ করছে ইসি। এই ইসি দিয়ে শেষ পর্যন্ত কেমন নির্বাচন হবে সেটা এখনই বলা মুশকিল।
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
rezwansiddiqui@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement