নারী পাচার
- শাহ্ আব্দুল হান্নান
- ২২ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:২০
বাংলাদেশ সরকার ও পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, তারা যেন নারী পাচার রোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেন এবং মংলাসহ যে ক’টি পতিতালয় বাংলাদেশে আছে, সবগুলো বন্ধ করে দেন। বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে, পতিতালয় উঠিয়ে দেয়া হবে। ভারত সরকারের উচিত ভারতীয় দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং পতিতালয় বন্ধ করা
গত জুলাই মাসে ডেইলি স্টারে প্রকাশ করা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে নারী পাচার বাড়ছে। আরো খবর দেয়া হয়েছে, ভারত থেকে ফেরত আসছেন পাচার হওয়া অনেক নারী। বাংলাদেশের দিল্লিস্থ দূতাবাস জানিয়েছে, ২০১৭ সালের প্রথম ছয় মাসে ১৪৬ জন পাচার হওয়া নারীকে তারা বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু এনজিও তাদের রক্ষার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে ইঘডখঅ (বাংলাদেশ উইমেন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন) এবং ভারতের জবংপঁব ঋড়ঁহফধঃরড়হ এ ক্ষেত্রে কাজ করছে। রেসকিউ ফাউন্ডেশনের পরিচালক দীনেশ তাঙ্ক জানিয়েছেন, ভারতের বোম্বে বা মুম্বাই শহরের পতিতালয়ের ৬০ শতাংশ নারীই বাংলাদেশের। কেউ -না-কেউ একজন কিশোরী বা নারীকে এ দেশের সীমান্তে নিয়ে যায়, সেখান থেকে আরেকজন দিল্লি নিয়ে যায়, সেখান থেকে নেয়া হয় বোম্বে। সেখানে কিশোরীকে বিক্রি করে দেয়া হয় দুই থেকে চার লাখ ভারতীয় রুপিতে। এটা হচ্ছে দীনেশ বাবুর দেয়া তথ্য।
বিএনডব্লিউএলএ-এর আশ্রয়কেন্দ্র আছে। সেখানে ইন্টারভিউ নেয়া এক মেয়ে সোহানা (আসল নাম নয়) বলেছে, সে ঢাকার তেজগাঁওয়ে একটি পার্লারে কাজ করত। একটি ছেলের সাথে তার ছিল পরিচয়। ছেলেটি তাকে বলেছিল, ভারতে সে আরো বেশি রোজগার করতে পারবে। ছেলেটি তাকে ভারতের গুজরাটের সুরাটে নিয়ে গিয়ে সেখানে তাকে একটি ফ্ল্যাটে রেখে চলে যায়। তারপর শুরু হয় তার এবং আরো কয়েকজন মেয়ের ওপর যৌন অত্যাচার। তাদের মদ খাইয়ে নাচতে বলা হয়। তারপর এমনকি, ১০ জনের মতো পুরুষ তাদের ওপর চড়াও হয়।
কিছু দিন পর অসহায় মেয়েটি কোনোভাবে পালিয়ে রেলস্টেশনে এসে কাঁদতে থাকে। তখন পুলিশ তাকে উদ্ধার এবং নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার ব্যবস্থা করে। একপর্যায়ে সে বাংলাদেশে ফিরে আসে।
আগে কিশোরী ও মহিলাদের কলকাতা নিয়ে যাওয়া হতো বেশি। এখন বোম্বেতে বেশি নেয়া হয়, যেমন আগেই বলেছি।
উল্লিখিত হৃদয়বিদারক ঘটনা জানার পর বিষয়টি ভারতে আমার পরিচিত ব্যক্তিদের নজরে আনি এবং তাদের অনুরোধ করলাম, যেন ভারত সরকারের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে খবরটি পাঠানো হয় (যা ইংরেজিতে ছিল)। আমার চিঠিতে এ কথাও ছিল, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারকে যৌথভাবে এ কাজ করতে হবে এবং পতিতালয়গুলো বন্ধ করে দিতে হবে। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও রিপোর্টটি পাঠিয়েছি এবং একই অনুরোধ করেছি। বাংলাদেশে পতিতালয় বেশি নেই। তবে মংলা পোর্টে অনেক মেয়ে আছে, যারা দালালদের নির্যাতনের শিকার।
এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার ও পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, তারা যেন নারী পাচার রোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেন এবং মংলাসহ যে ক’টি পতিতালয় বাংলাদেশে আছে, সবগুলো বন্ধ করে দেন। বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে, পতিতালয় উঠিয়ে দেয়া হবে। ভারত সরকারের উচিত ভারতীয় দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং পতিতালয় বন্ধ করা।
আরেকটি প্রসঙ্গ, রোহিঙ্গা শিশু ও নারীদের পাচার করার চেষ্টা চলছে। অপরাধীরা সব কাজই করতে পারে। না হলে এসব অসহায় রোহিঙ্গা নারী ও শিশুকে তারা পাচার করার চেষ্টা করত না। এ ব্যাপারেও আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক : সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা