২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আত্মপক্ষ

ইউনেসকো কি এখনো প্রয়োজনীয়

ইউনেসকো কি এখনো প্রয়োজনীয় - সংগৃহীত

আমার বাংলায় ইউনেসকো নামটাই ব্যবহার করি। UNESCO পুরো কথায় হচ্ছে United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization। ইউনেসকো জাতিসঙ্ঘের (ইউএনও) একটি শাখা সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালের ৪ নভেম্বর। এর সদর দফতর ফ্রান্সের রাজধানী পারি শহরে। ফরাসি ভাষায় সংস্থাটির নাম হলো Organisation des Nations unies pour l’education, la science et la culture)।

প্রথম মহাযুদ্ধের পর বিশ্বশান্তি বজায় রাখার জন্য গঠন করা হয়েছিল জাতিপুঞ্জ বা League of Nations। এর একটি অঙ্গ সংস্থা ছিল International Committee on Intellectual Cooperation। যাকে সংক্ষেপে বলত আইসিআইসি। বাংলা করলে দাঁড়ায় বুদ্ধিজীবীদের সহযোগিতাসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কমিটি। ভাবা হয়েছিল বুদ্ধিজীবীদের মনন এই সংস্থার মাধ্যমে বিশ্বশান্তি রক্ষায় কার্যকর হবে; কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। বাংলা ভাষায় এখন ‘বুদ্ধিজীবী’ কথাটা খুবই প্রচলিত।

কিন্তু আগে এই শব্দটি ছিল না। এটা গঠিত হয় প্রথম মহাযুদ্ধের পরে। বুদ্ধিমান ব্যক্তি আর বুদ্ধিজীবী সমার্থক নয়। বুদ্ধিজীবী বলতে বোঝায়, যারা জ্ঞানবিজ্ঞান নিয়ে ভাবেন সাধারণভাবে সমাজ জীবনকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য, উন্নত সমাজ জীবনব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে। ধরে নেয়া হয় চিন্তার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মানব সমাজজীবনের নির্মিতি সম্ভব। আর সে কাজে সক্রিয় হতে হবে। সৃষ্টি করতে হবে তার অনুকূলে সম্বিত।

মাতৃভাষা দিবস

ইউনেসকো থেকে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৫২ সালে ছাত্রজনতার মিছিলের ওপর ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার জন্য পুলিশ গুলি চালায়। এতে শহীদ হন চার ব্যক্তি। তাই এই দিনটিকে ইউনেসকো থেকে ঘোষণা করা হয়েছে মাতৃভাষা দিবস। কিন্তু ১৯৫২ সালের আন্দোলন ছিল রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন; মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন নয়। দাবি ছিল সাবেক পাকিস্তানে উর্র্দুর সাথে বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া। মাতৃভাষা আন্দোলন আর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সমার্থক নয়। ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজি ছিল রাষ্ট্রভাষা।

কিন্তু এই সময়েই ঘটতে পেরেছিল বাংলা ভাষার অতি দ্রুত বিপুল উন্নতি। মাতৃভাষার উন্নতি কেবল সরকারি ভাষা হওয়ার কারণেই যে হয়, ইতিহাস তা বলে না। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি। ১৯৫৪ সালের ১৯ এপ্রিল সাবেক পাকিস্তানের গণপরিষদে উর্দু এবং বাংলা উভয়কেই মেনে নেয়া হয় পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে। অন্য দিক থেকে বলতে হয় এই উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৩৭ সালে প্রথম ভাষা নিয়ে আন্দোলনে গুলি চলে সে সময়ের মাদ্রাজ প্রদেশে।

১৯৩৭-এর বিধান অনুসারে যে নির্বাচন হয়, তাতে কংগ্রেস মাদ্রাজ আইন পরিষদে ক্ষমতা লাভ করে। তারা গঠন করে মাদ্রাজের প্রাদেশিক সরকার। এই প্রাদেশিক সরকার আইন করেছিল মাদ্রাজ প্রদেশের স্কুলগুলোতে হিন্দি শিক্ষা হতে হবে বাধ্যতামূূলক। কিন্তু মাদ্রাজবাসী তামিলরা সেটা মানতে রাজি হয়নি। তারা শুরু করেন আন্দোলন। মাদ্রাজ পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে দুই ব্যক্তি নিহত হন। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে ভাষাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন এটাই প্রথম।

কিন্তু ইউনেসকো থেকেছে এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ নীরব। কেন এই নীরবতা তা নিয়ে তোলা যায় প্রশ্ন। ভারতের সংবিধানে বলা হয়েছিল, ১৯৬৫ সালের পর থেকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করা হবে একমাত্র হিন্দি। কিন্তু তামিলভাষীরা এর বিপক্ষে আরম্ভ করেন প্রচণ্ড আন্দোলন। মাদ্রাজ পুলিশ গুলি চালায় প্রতিবাদ মিছিলের ওপর। ফলে মারা যান কমপক্ষে ৬০ জন মিছিলকারী।

প্রধানত তামিলভাষীদের আন্দোলনের জন্যই ভারতে হিন্দিকে এখনো রাষ্ট্রভাষা করা যায়নি। সেখানে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাস্তবে বিরাজ করছে ইংরেজি ভাষা। তামিলভাষীরা তাদের মাতৃভাষা তামিলের পরেই ইংরেজিতে ভাব বিনিময় করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে ভারতের অন্য ভাষাভাষীরা তামিলদের সমকক্ষ নন। তামিলরা তাদের প্রদেশের নাম বদলিয়ে ১৯৯৬ সালে করেছেন তামিলনাড়ু। তামিল ভাষায় ‘নাড়ু’ শব্দের অর্থ হলো দেশ। তামিলনাড়ুর বাংলা করলে দাঁড়ায়, তামিল-দেশ। জাতিসত্তার সমস্যা ভারতেও আছে।

কিন্তু এ সম্পর্কে ইউনেসকোর পক্ষ থেকে থাকা হয়েছে সম্পূর্ণ নীরব। আমরা জানি না একুশে ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবসরূপে বিশ্বের কয়টি রাষ্ট্রে পালন করা হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ভারতের আসাম প্রদেশে ১৯৬১ সালে ১৯ মে কাছার জেলায় লোকে বাংলাকে আসাম প্রদেশের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হোক বলে আন্দোলন শুরু করলে আন্দোলনরত ব্যক্তিদের ওপর আসাম পুলিশ গুলি চালায়। ফলে মারা যান ১১ ব্যক্তি।

কিন্তু ইউনেসকো থেকে এসব খবর রাখা হয় বলে মনে হয় না। তারা কেবলই গুরুত্ব দিয়েছেন সাবেক পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে। কেন তারা এটা করা সঙ্গত মনে করছেন আমরা তা উপলদ্ধি করতে অক্ষম। মনে হচ্ছে এ ক্ষেত্রে ইউনেসকো হতে পারেনি যথেষ্ট বস্তুনিষ্ঠ।

সুন্দরবন
ইউনেসকো সুন্দরবনকে বিশ্বের উত্তরাধিকার (World Heritage Site) হিসেবে ঘোষণা করে ১৯৯২ সালে। কিন্তু বাংলাদেশের সুন্দরবনকে সে কেবলই অভিহিত করে সুন্দরবন হিসেবে। পক্ষান্তরে ভারতের বঙ্গের মধ্যে অবস্থিত সুন্দরবনের অংশকে উল্লেখ করে সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান হিসেবে। কেন সুন্দরবনের বাংলাদেশের অংশকে কেবলই বলা হলো সুন্দরবন আর ভারতের সুন্দরবনের অংশকে বলা হলো সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, সেটা আমাদের উপলব্ধিতে আসে না।

ইউনেসকো বাংলাদেশে সুন্দরবনে বাঘ রক্ষা নিয়ে খুব তৎপর হয়ে উঠেছে। বাঘ (Panther Tiger) একসময় বাংলাদেশের সর্বত্রই পাওয়া যেত। কিন্তু এখন পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের ও ভারতের সুন্দরবনে। কিন্তু ভারতের সুন্দরবনে নয়, কেবল বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ বিলুপ্ত যাতে না হয়, সে জন্য ইউনেসকো চালাচ্ছে তৎপরতা। একসময় প্রতি বছর বাংলাদেশের বহু মানুষ ব্যাঘ্রভক্ষিত হয়েছে। হিন্দুরা বাঘের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করেছেন ব্যাঘ্র দেবতার পূজা।

কিন্তু এখন আমরা গৌরব করতে চাচ্ছি সুন্দরবনের বাঘ নিয়ে। সুন্দরবনের বাঘ ব্রিটিশ শাসনামলে বিশ্বজুড়ে রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামে খ্যাতি পেয়েছিল; আর এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাঘের মধ্যে তাকে গণ্য করা হয় সবচেয়ে শক্তিশালী ও হিংস্র বলে। এরা উচ্চতায় ৯২ থেকে ১২২ সেন্টিমিটারের উঁচু। আর লেজসহ দৈর্ঘ্যে হলো ৩০৫ থেকে ৩৬৬ সেন্টিমিটার। এ রকম আকারের ডোরাকাটা বাঘ নাকি পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না।

কিন্তু এ রকম বাঘ রক্ষা করে বাংলাদেশ কিভাবে উপকৃত হবে সেটা উপলব্ধি করা যাচ্ছে না। সুন্দরবন থেকে বাঘ আবার ছড়াতে পারে বাংলাদেশের অন্যত্র। আর মানুষ যেতে পারে এদের উদরে। আমার যদি ব্যবসাবাণিজ্যে উন্নতি করতে চাই, তবে দক্ষিণবঙ্গে একাধিক সমুদ্রবন্দর গড়তেই হবে। কিন্তু ইউনেসকো বলছে, এতে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের জলবায়ু। কিন্তু কিভাবে হবে, তা সে বলছে না। বাংলাদেশের জলবায়ু গ্রীষ্মপ্রধান মওসুমি জলবায়ু। এখানে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টি হওয়ার কারণ হলো দক্ষিণ-পশ্চিম মওসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে বসে আসার সময় প্রচুর জলীয়বাষ্প বহন করে আনে, যা জমে মেঘ হয়ে ঘটায় বৃষ্টিপাত।

সুন্দরবন না থাকলেই যে দক্ষিণ-পশ্চিম মওসুমি বায়ু জলীয়বাষ্প বহন করে আনবে না, এমন নয়। সুন্দরবন না থাকলেই বাংলাদেশের জলবায়ু আমূল বদলে যাবে, এমন ভাবার কোনো প্রাকৃতিক ভিত্তি নেই। একসময় বাংলাদেশের দক্ষিণে সুন্দরবন ছিল না। সুন্দরবনের উদ্ভব হতে আরম্ভ করেছে খ্রিষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দী থেকে।

এর আগে সুন্দরবনের কোনো অস্তিত্ব ছিল বলে মনে হয় না। মেজর জেমস রেনেল, যিনি ১৭৬১ সালে প্রথম সুন্দরবন অঞ্চল জরিপ করে মানচিত্র অঙ্কন করেন। তিনি বলেছেন, আগে ওই অঞ্চলে বনভূমি ছিল না। ছিল লোকালয়। কিন্তু পর্তুগিজ ও মগ জলদস্যুদের অত্যাচারে মানুষ ওই অঞ্চল পরিত্যাগ করে চলে যেতে শুরু করে। মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুরা ওই অঞ্চল থেকে কর্মক্ষম পুরুষ ও নারীকে ধরে নিয়ে গিয়ে বিদেশে দাসরূপে বিক্রি করত। এদের ভয়ে মানুষ চলে যেতে থাকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ অঞ্চলে।

ফলে সুন্দরবন অঞ্চল হয়ে পড়ে জনহীন। জনহীন অঞ্চলে গড়ে উঠতে থাকে গভীর বনভূমি। ইউনেসকো থেকে বলা হচ্ছে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার জলবায়ু হবে মানুষ বাসের প্রতিকূল। কিন্তু অতীতে সুন্দরবন ছিল না। আর এই অঞ্চলে ছিল বহু সমৃদ্ধ জনপদ। ইউনেসকো বিশেষজ্ঞরা মনে হয় এই ইতিহাস সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত নন। সমগ্র বাংলাদেশ ছিল অরণ্যভূমি। মানুষ এখানে বনভূমিতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে পরিষ্কার করে প্রতিষ্ঠা করেছে ফসলের ক্ষেত।

দর্শন দিবস
প্রতি বছর নভেম্বর মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবারে এখন ইউনেসকো থেকে পালিত হচ্ছে দর্শন দিবস। কিন্তু সভা করে দিবস পালন করে কি কোনো দর্শন গড়ে তোলা আদৌ সম্ভব? দর্শন বলতে ঠিক কী বুঝতে হবে ইউনেসকো থেকে তা বলা হয়নি। বলা হয়েছে, এমন দর্শন গড়তে হবে, যা হবে বিশ্বশান্তি রক্ষার অনুকূল। কিন্তু দর্শনের ক্ষেত্রে নানা মুনির নানা মত থাকতে দেখা যায়। যেমন বিখ্যাত ব্রিটিশ দার্শনিক হার্বার্ড স্পেন্সর (১৮২০-১৯০৩) বলেছেন, যুদ্ধ মানবজীবনে স্বাভাবিক।

প্রাণীজগতে কেবল সেই সব প্রাণী টিকে থাকে, যারা টিকে থাকার উপযোগী। অপটুরা টিকে থাকে না। জীবজগতের বিবর্তন ঘটছে। ঘটছে যোগ্যতমের জয়কে নির্ভর করে। মানুষের মধ্যে জাতিতে জাতিতে যুদ্ধ হচ্ছে। উন্নত জাতি যুদ্ধে জয়ী হবে। এভাবে একটি উন্নত জাতির জায়গায় ঘটতে পারবে আরো একটি উন্নত জাতির আবির্ভাব। দুই দু’টি বিশ্বযুদ্ধের পেছনে হার্বার্ড স্পেন্সর যোগ্যতমের জয়, এই দর্শন যুক্তি যোজন করেছেন। সব দার্শনিকই যে শান্তির পক্ষে কথা বলেছেন, এমন নয়।

এখন অনেক বৈজ্ঞানিক বলছেন, মানুষ এমন সব মারণ আয়ুধ আবিষ্কার করেছে যে, তাদের নিয়ে যুদ্ধ করলে সমগ্রভাবেই মানব প্রজাতির ঘটতে পারে বিলুপ্তি। সংগ্রাম সীমাহীন হতে পারে না জীবজীবনের জন্য। যেমন শুঁয়ো পোকারা যখন দ্রুত কোনো গাছের পাতা খেয়ে ফেলতে থাকে, তখন গাছের পাতা থাকে না। শুঁয়ো পোকারা দলে দলে মারা যেতে থাকে। সবল দুর্বলকে মেরে ফেলতে পারে। কিন্তু সেই সাথে খাদ্যের অভাবে অনাহারে মারা যেতে থাকে সবল।

স্পেন্সরের বক্তব্যকে তাই অনেক জীববিজ্ঞানী এখন বাস্তবতাসম্পন্ন মনে করেন না। কিন্তু বিজ্ঞানের কথা প্রচার না করে ইউনেসকো চাচ্ছে শান্তির সপক্ষে দর্শন গড়ে তুলতে। যেটা সম্ভব নয়। বিজ্ঞান আর দর্শনের মধ্যে পার্থক্য আছে আর ছিল। বিখ্যাত প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল (খ্রি. পূর্ব ৩৮৪-৩২২) মনে করতেন মেয়েদের মুখে দাঁতের সংখ্যা হলো পুরুষদের চেয়ে কম। এরিস্টটল জীবনে দু’বার বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তিনি কখনো তাদের মুখবিবরে কতগুলো দাঁত আছে, তা গুণে দেখার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেননি।

বিজ্ঞানের পদ্ধতিতে গণিত একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গুরুত্ব পালন করে থাকে বাস্তব পর্যবেক্ষণ। বিজ্ঞান দর্শনের মতো কেবলই চিন্তাভিত্তিক নয়। ইউনেসকোর পক্ষ থেকে কাকে বলব শিক্ষা, কাকে বলব বিজ্ঞান, কাকে বলব সংস্কৃতি; তার কোনো সংজ্ঞা দেয়া হয়নি। এখনো কোনো সংজ্ঞা দেয়া হচ্ছে না, দর্শন বলতে ঠিক কী ধরনের আমাদের জ্ঞানকে বোঝানো উচিত। এখানেই তার থাকছে একটা বড় রকমের দুর্বলতা।

অন্তরকলহ
অন্য রাষ্ট্রের সাথে কলহের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউনেসকো থেকে ১৯৮৪ সালে বের হয়ে যায়। তার সাথে বের হয়ে যায় গ্রেট ব্রিটেন। পরে ১৯৯৭ সালে গ্রেট ব্রিটেন ইউনেসকোতে আবার ফিরে আসে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরে এসে আবার যোগ দেয় ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে। কিন্তু সে এখন আবার ঘোষণা করেছে, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইউনেসকো পরিত্যাগ করবে। যে সংস্থাটির ভেতরে চলেছে এ রকম কলহ, তা বিশ্বকে তার চিন্তার মাধ্যমে পরিচালিত করতে পারবে, এ রকম ধারণা করা যায় না।


লেখক : প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট


আরো সংবাদ



premium cement