২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংবিধান ও আদালত বনাম স্বাধীনতার চেতনা

সংবিধান ও আদালত বনাম স্বাধীনতার চেতনা - ছবি : নয়া দিগন্ত

বর্তমান সরকারের কথাবার্তায় এমন ধারণা জন্ম হওয়ার কথা যে, তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি একমাত্র সরকার এবং তাদের ভিন্ন সবাই ‘পাকিস্তানপন্থী রাজাকার’। এভাবেই ক্ষমতাসীনেরা জনগণের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইছেন উন্নয়নের স্লোগান তুলে। সরকার জনগণের কাছ থেকে কড়ায়গণ্ডায় কর আদায় করছে। জনগণ থেকে কর, খাজনা, ট্যাক্স বাবদ আদায়কৃত অর্থ পদ্মা নদীতে ফেলে দেয়ার জন্য নয়, বরং পদ্মা সেতু নির্মাণ করার জন্যই।

একটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন রাষ্ট্রের মূল উপাদানই হচ্ছে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, জন্মগত অধিকার যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সে রাষ্ট্রের লিখিত বা অলিখিত সংবিধানে। বহু কষ্টার্জিত এই স্বাধীনতার ফলে যে সংবিধান রচিত হলো তা কি সরকারের অযাচিত প্রভাবের কারণে জনগণকে বাঞ্ছিত সুরক্ষা দিতে পারছে? সংবিধানপ্রদত্ত মৌলিক অধিকার বা মানবাধিকার যখন সরকার কর্তৃক বিপন্ন হয় তখন আশ্রয়স্থল থাকে একমাত্র আদালত, মানুষ যাকে ‘শেষ ভরসা’ মনে করে। আদালত যখন নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে তখন সংবিধানের পাশে দাঁড়াবে কে? এমতাবস্থায় জনগণের অধিকার রক্ষায় যখন আইনগত প্রটেকশন পাওয়া যায় না তখনই সৃষ্টি হয় স্বৈরাচার। একটি রাষ্ট্র যখন স্বৈরাচারের কবলে পতিত হয়, তখন যিনি কর্তা তার কথাই আইন, তিনিই সংবিধান, তিনিই বিচার-আচার এবং তিনিই আস্থা-অনাস্থার মালিক হয়ে যান। তাই পৃথিবীর অন্যতম স্বৈরাচারী লুই বলতেন, আমিই রাষ্ট্র। অর্থাৎ আইনি শাসনের পরিবর্তে ব্যক্তির ইচ্ছা অনিচ্ছার প্রাধান্য।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন একজন নারীকে (মাসুদা ভাট্টি) ‘চরিত্রহীন’ বলেছেন বিধায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিয়ত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হচ্ছে। ধরে নেয়া যাক মইনুল মিসেস ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে একটি অপরাধ করেছেন। কিন্তু এর বিচার কোন পদ্ধতিতে হতে পারে তা নিশ্চয় আইনের কোথাও না কোথাও লিপিবদ্ধ রয়েছে। ‘সংবিধান’ বলতে বলতে সরকারের কেউ কেউ মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। তাদের জানা উচিত যে সংবিধানে এ সম্পর্কে কী লিপিবদ্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৩৫(২)তে বলা হয়েছে, ‘এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাইবে না।’ মইনুল হোসেন একজন নারীকে একবারই চরিত্রহীন বলেছেন। তার বিরুদ্ধে একই অপরাধের জন্য কয়টি মামলা আইনসম্মত হতে পারে? সংবিধানের ১১৬ক ধারামোতাবেক, ‘এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে বিচারকর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ এবং ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন।’ মামলাগুলোতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার বিষয়ে জনগণ কোনটা বিশ্বাস করবে? অনেকেরই সন্দেহ, ম্যাজিস্ট্রেটরা স্বাধীনভাবে বিচারিক সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন, নাকি সরকারের নির্দেশে ওয়ারেন্ট জারি হচ্ছে?

মাসুদা ভাট্টি ব্রিটিশ, পাকিস্তানি না বাংলাদেশী অথবা তিনি কোন মতাদর্শী তাও আমার বিবেচ্য নয়। তিনি একজন নারী- এটাই আমার মুখ্য বিষয়। কারণ প্রতিটি নারী একজন মায়ের জাতির প্রতিনিধি। নারী জাতি সৃষ্টি না হলে পৃথিবী সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলত; যদিও ক্ষেত্র বিশেষে পুরুষের মতো নারীরও ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, স্বেচ্ছাচারিতার কারণে শুধু পৃথিবীতে নয় বরং অনেক ব্যক্তি বা সাংসারিক জীবন ধ্বংস হয়েছে। তবে সব কিছুই ক্ষেত্রবিশেষে প্রযোজ্য। আমার মা যত দিন বেঁচে ছিলেন, তার পা ছুঁয়ে সালাম না করে ঘর থেকে বের হতাম না। আমার কষ্টার্জিত অর্থে গড়া প্রতিষ্ঠান যথা- বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চবিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া খন্দকার প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া খন্দকার সড়ক নামকরণ আমার মায়ের নামে করেছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নারী জাতি অনেক অনেক সম্মানের পাত্র। নিজ ভূমিকার দরুন কোনো নারী যদি বিতর্কিত হন, তা হলো ভিন্ন কথা।

হজরত মোহাম্মদ সা: একজন সাহাবির প্রশ্নের জবাবে মায়ের মর্যাদার তিনধাপ পরে পিতাকে স্থান দিয়েছেন। তবে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথির ভাষণে পুরুষ নির্যাতনের কথা যদিও উপহাস করে বলে থাকেন, তবুও নারীর কারণে পুরুষ কতটুকু নির্যাতিত তা ভুক্তভোগী ছাড়াও সমাজ ও জাতি অবহিত। এ বিষয়ে কথা না বাড়িয়ে বলতে চাই, তসলিমা নাসরিন (বিভিন্ন কারণে তিনিও বেশ বিতর্কিত) মাসুদা ভাট্টিকে ‘ভীষণ চরিত্রহীন’ বলেছেন। মইনুল হোসেন তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় বুদ্ধিজীবী, নারীসমাজ, সাংবাদিক, শিক্ষকমণ্ডলী রাস্তায় মানববন্ধন, ঝাড়ু মিছিল করেছেন, জেলায় জেলায় মামলা হচ্ছে।

কিন্তু তসলিমা নাসরিন একই নারীকে ‘ভীষণ চরিত্রহীন’ বললেন, তাতে কারো গায়ে বা মনে আঘাত লাগল না কেন? তসলিমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন তো দূরের কথা একটি বিবৃতি পর্যন্ত পত্রিকায় প্রকাশ পেল না। এতেই প্রতীয়মান যে, মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় দায়ের করা মামলা ও সংবিধানের ৩৫(২) ধারা লঙ্ঘন করে ইস্যুকৃত গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং তার কারাবরণ মূলত সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্যই। ঘটনাটি শোনার পর আমি ১৯-২০ অক্টোবর ২০১৮ দুই দিন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের সাথে টেলিফোনে কথা বলি। তিনি স্পষ্টভাবে আমাকে বলেছেন, ‘আমি (মইনুল হোসেন) নিজে টেলিফোন করে মাসুদা ভাট্টির কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’

এ কথা শোনার পর আমার ধারণা হয়েছিল, রাষ্ট্র বা সরকার এ ব্যাপারে প্রতিহিংসামূলক তৎপরতায় লিপ্ত হবে না। যদি হয় এটা একটা খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, যেমনটি শুনেছি যে, সাবের হোসেন চৌধুরীর প্লেট চুরির ঘটনা, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাসের বিতর্কিত টাওয়ার ভাঙার ঘটনা, এখন যেমন চলছে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপপ্রয়োগ করে গায়েবি মামলা প্রভৃতি। কিন্তু বাস্তবে তাই হলো। আগে শুনেছি, নারীকে পুরুষ বা পুরুষকে নারী বানানো ছাড়া ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সবই পারে। কিন্তু এখন দেখছি বাংলাদেশ সরকারও সবই পারে, সব ক্ষমতা যেহেতু তাদের হাতের মুঠোয়।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে চিনি দীর্ঘ দিন। তার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে থাকাকালে নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন জেলায় একই হোটেলে অবস্থান, দূরপাল্লার জাহাজে একসাথে ভ্রমণ, তার সাথে পিরোজপুর জেলায় তাদের পুরনো পৈতৃক বাড়িতে গমন, বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত অনেক সভায় তার বাসভবনে অংশগ্রহণ ও সাজু ভাবীর আপ্যায়ন প্রভৃতি। বহু দিন একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে মিটিং করার বিষয়ে আমার উপলব্ধি হয়েছে যে, মইনুল ভাইয়ের মেজাজ নিয়ে কথা থাকলেও সততা নিয়ে প্রশ্ন নেই। তার সাথে দীর্ঘ দিনের ওঠাবসায় স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিতে কখনো দেখিনি। তা ছাড়া মরহুম শেখ মুজিবের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে তার পিতা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং দৈনিক ইত্তেফাকের স্বাধিকার ও ছয় দফা আন্দোলনের ভূমিকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। সেই মইনুল হোসেনকে যদি জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি বলে সম্বোধন করা হয় এবং এতে তিনি রাগান্বিত না হয়ে যদি নীরব থাকতেন বা হাসিমুখে উড়িয়ে দিতেন তাহলে মিসেস ভাট্টির কথাকেই সমর্থন করা হতো।

মিসেস ভাট্টি মইনুল হোসেনকে জামায়াতের প্রতিনিধি বলে অবান্তর উক্তি করায় মামলা করার জন্য রাষ্ট্র বা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি কিন্তু এগিয়ে এলো না (!) ফলে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল কোনো চেতনা অক্ষুণœ রাখার জন্য নয়; বরং সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণেই সিরিজ মানহানি ও ডিজিটাল মামলা। সাংবাদিক নেতারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিলে স্বাক্ষর না করার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের একজন সিনিয়র ব্যক্তিত্ব মইনুল হোসেন যখন নিবর্তনমূলক ডিজিটাল আইনে সিরিজ মামলায় আক্রান্ত, তখন সাংবাদিক নেতারা মুখে কুলুপ মেরেছেন কেন? জনমনে এমন ধারণা যে, তাদের অনেকেও সরকারের অনুকূল ভূমিকা পালন করে অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। সাগর-রুনির মামলার ফয়সালা না করে ‘ঘরে ফিরবেন না’ বলে যারা ঘোষণা দিয়েছিলেন তাদের মুখেও রা নেই। কারণ কি এটাই যে, তারাও এখন সরকারের সুবিধাভোগী, জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলা একাডেমির মতো নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও সরকারি ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা করায়ত্ত করে রেখেছেন, যেখানে ভিন্ন মতাবলম্বীদের প্রবেশের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। মইনুল হোসেন ১৯৭৫ সালের এক দলীয় ব্যবস্থা ২৫ জানুয়ারি বাকশালকে সমর্থন না করে এক ‘অপরাধ’ করেছিলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি হয়ে কারাবরণ করছেন- এ কথা দিনের আলোর মতো সত্য। তবে যারা মনে করেন, দেশবাসী সবাই শুধু আঙুল চোষেণ, তাদের কথা ভিন্ন।

দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে। সংবিধান মতে, ম্যাজিস্ট্রেটরা বিচারকার্য সম্পাদনে স্বাধীন। সংবিধান আরো বলছে, একটি অপরাধের জন্য একজনকে একাধিকবার আইনে সোপর্দ করা যাবে না। তার পরও সংবিধান লঙ্ঘন করে একই অপরাধের জন্য মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে সিরিজ ওয়ারেন্ট কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রমাণ বহন করে? সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী হজ নিয়ে যে কটূক্তি করেছেন, তাকে সমর্থন করিনি এবং কোনো বিবেকমান মানুষ তা সমর্থন করতে পারে না। কিন্তু তার বিরুদ্ধে একই কারণে জেলায় জেলায় সিরিজ মোকদ্দমাও সমর্থন করিনি; এর বরং প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছি। যা হোক, বর্তমানে প্রতীয়মান হয় যে, সংবিধান, আদালতের স্বাধীনতা কিংবা স্বাধীনতার চেতনা রক্ষা মুখ্য বিষয় নয়, বরং ব্যক্তির ইচ্ছার বাস্তবায়নই হলো মুখ্য বিষয়, হোক তা স্তাবকতা বা আইনের লঙ্ঘন বা অন্য কিছু। কোন নীতিতে চলছে বাংলাদেশের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো? রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো (বিচার বিভাগসহ) নিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যখন গবেষণা করবে, তখন বর্তমানে চলমান অবস্থাকে তারা শ্রদ্ধার চোখে দেখবে কি? তারা সংবিধান ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে কী ধারণা পেতে পারে?

হাতের কাছে পেলেই পুলিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের পিটিয়েছে। যেমন আবদুল মতিন চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর প্রভৃতি। ম খা আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার আগে আমাদের সাথেই কারাগারে ছিলেন। তখন পুলিশি ব্যবস্থা সম্পর্কে তার যে অভিমত শুনেছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর শুনেছি উল্টো সুর। অনেক আইনমন্ত্রীর সাথে কারাবরণ করার ‘সৌভাগ্য’ হয়েছে। ১/১১ সরকারের সময় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন যে ভঙ্গিতে দুদক ও পুলিশি কর্মকাণ্ডের সাফাই গেয়েছেন, তার ব্যতিক্রম ঘটান না বর্তমান আইনমন্ত্রী অ্য্যাডভোকেট আনিসুল হক। কিন্তু তার ক্ষেত্রেও এমনি কোনো দিন পরবর্তী কোনো আইনমন্ত্রীর এমনিভাবে আদালত ও পুলিশের পক্ষে সাফাই গাইবেন কি না তাও ভবিষ্যৎ বলতে পারবে। স্মরণ রাখা দরকার, ইতিহাসে কাউকে ক্ষমা করে না, তবে ক্ষমতায় থাকার সময়ে কেউ তা বোঝেন না।
লেখক : কলামিস্ট ও আইনজীবী (অ্যাপিলেট ডিভিশন)
taimuralamkhandaker@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement