২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জাতীয় যুক্তফ্রন্ট : আশা-ভরসার কথা

জাতীয় যুক্তফ্রন্ট : আশা-ভরসার কথা - ছবি : সংগৃহীত

অবশেষে বহুল প্রত্যাশিত এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের প্রকাশ ঘটেছে। কয়েক মাস ধরে প্রকাশ্যে এবং অপ্রকাশ্যে এই জোটের গঠনপ্রক্রিয়া এগিয়ে চলছিল। বাংলাদেশে যারা প্রকৃত অর্থেই জনগণের দাবি নিয়ে রাজনীতি করেন, গণতন্ত্রকে অস্থিমজ্জায় ধারণ করেন, তারা গোটা জাতির রাজনৈতিক দুর্যোগে এগিয়ে এলেন। এক দশক ধরে অস্বীকৃত গণতন্ত্র এবং বিপর্যস্ত নির্বাচনব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে অগ্রণী হয়েছেন তারা। বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনগণ রাজনীতি চর্চা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুদৃঢ় আস্থা রাখে। বৈশ্বিক একটি সমীক্ষায় সাম্প্রতিককালে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের মানুষ অতি মাত্রায় রাজনীতিপ্রবণ।’

বিস্ময়ের ব্যাপার, এই ‘অতিমাত্রিক’ রাজনীতিপ্রবণ জনগোষ্ঠী নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে বারবার। ইতিহাসের ছাত্র মাত্রই জানেন, ১৯৭০ সালে গণতন্ত্রকে অস্বীকার করার ফলেই তদানীন্তন পাকিস্তান রাষ্ট্রের পরিসমাপ্তি ঘটে। পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের অপচেষ্টা হলেও এবং বারবার সামরিক শাসন গণতন্ত্রকে ব্যাহত করলেও অবশেষে গণতন্ত্র বিজয় অর্জন করেছে। কিন্তু গণতন্ত্রবিরোধী সেই শক্তি নির্বাচনের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে আবার ক্ষমতাসীন হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার মাধ্যমে তথা জনগণের ভোটে তাদের কখনো ক্ষমতাসীন না হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই তারা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান বাতিল করে দেয়।

ইতঃপূর্বে এই গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি ‘১/১১’-এর মাধ্যমে সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতায় ডেকে এনেছিল। তাদের সাথে একধরনের প্যাকেজ ডিলের আওতায় ২০০৮ সালে তারা ক্ষমতায় আসে। এরপর ক্রমেই গণতন্ত্রকে ও গণমানুষের মৌলিক অধিকার সঙ্কুচিত করাই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার নীতি হয়ে দাঁড়ায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পরও যে স্বাভাবিক নির্বাচনব্যবস্থা তখনো টিকে ছিল, সেটি বজায় থাকলেও তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকা দুষ্কর হয়ে দাঁড়াত। বিশেষ করে, ২০১৩ সালে একসাথে পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ের পর তারা প্রচলিত নির্বাচনব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই শক্তি মুখে গণতন্ত্রের জয়গান গায়; আর কার্যত গণতন্ত্রের সর্বনাশ করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির প্রহসনী নির্বাচনে তারা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিল। ১৫৩টি আসনে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘জয়লাভ’ করে।

অপর সব আসনে ৫ শতাংশ ভোটার অথবা কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ব্যতিরেকেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যায়। এই সময়ে সৃষ্ট রাজনৈতিক আন্দোলন ও কূটনৈতিক চাপ মোকাবেলা করার জন্যও তারা কূটকৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে। তারা বলেছিল, ‘এটি নিছক নিয়ম রক্ষার সাংবিধানিক নির্বাচন। এবং শিগগিরই একটি অংশগ্রহণমূলক, তথা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ ১৯৯৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির সংবিধান রক্ষার নির্বাচনের পর সৎ রাজনীতিবিদ বেগম খালেদা জিয়া কথা রেখেছিলেন; কিন্তু এবার একপ্রকার প্রতারণার কাছে বিরোধীরা তথা বহির্বিশ্ব পরাজিত হলো। শুধু তাই নয়। স্থানীয় নির্বাচনে তাদের পরাজয় ঘটলেও ক্ষমতা হারানোর ভয় নেই, সেখানেও তারা মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। স্থানীয়পর্যায়ে দলীয়করণের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত তারা নির্বাচন কারচুপির নগ্ন নজির স্থাপন করে। এভাবে তারা ভিন্ন ধাঁচে প্রকারান্তরে বাকশাল কায়েম করেছিল। প্রকৃত বিচারে ১০ বছর ধরে যা চলে আসছে, তা বাকশালের চেয়েও খারাপ। তার কারণ, তখন কোনো রাজনৈতিক দল না থাকায় আইনগতভাবে রাজনীতি করে কেউ শাস্তি পাওয়ার পরিবেশ ছিল না। কিন্তু এখন আইনগতভাবে অধিকার ও নিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দল করার কারণে মানুষ খুন, জখম, হামলা ও মামলার সম্মুখীন হচ্ছে। গণতন্ত্রের দুটো অর্থ করা হয়, একটি হলো শাসনব্যবস্থা; যেমন- আমাদের সংসদীয় সরকারব্যবস্থা। আওয়ামী লীগ এর সর্বনাশ সাধন করেছে।

দ্বিতীয় অর্থ হলো- ব্যবহারিকভাবে মতামতের প্রকাশ; যেমন- সভা-সমিতি, মিটিং-মিছিল বা টকশোতে অংশগ্রহণ। ক্ষমতাসীন সরকার এই ব্যবহারিক গণতন্ত্রকেও শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে। যেমন- প্রধান রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশে যোগদানকারী লোকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। শুধু কথা বলার আয়োজন- টিভির টকশো সম্পর্কে শীর্ষ ব্যক্তিত্বের কটূক্তির কথা সবার মনে আছে। অর্থাৎ শাসনতান্ত্রিক ও ব্যবহারিক উভয় দিক থেকেই গণতন্ত্র তাদের হাতে বিধ্বস্ত। এ সরকার সবচেয়ে ক্ষতি করেছে নির্বাচনব্যবস্থার। এমনিতেই তৃতীয় বিশ্বের এমন নির্বাচন সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সমালোচনামুখর। কেউ বলেন, নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র, কেউ বা বলেন কপট গণতন্ত্র। এক দিনের ভোটের কারণে কেউ বা আমাদের মতো গণতন্ত্রকে বলেছেন ‘এক দিনের গণতন্ত্র’। গোটা জাতির দুর্ভাগ্য ক্ষমতাসীনেরা এই এক দিনের গণতন্ত্র পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে। কেননা তারা নিশ্চিত, জনগণের ভোটাধিকার থাকলে তারা কখনোই জয়লাভ করবে না।

এ অবস্থায় জনগণের হারানো ভোটাধিকার তথা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরুদ্ধার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক দলগুলো হৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট। প্রচলিত দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় প্রধান দায়িত্বটি অর্পিত হয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ওপর। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি সংসদে বিরোধী দল হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছিল। ২০১৪ সালে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরে সংসদে বিএনপি না থাকায় সরকারি দলের খালি মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ ঘটে যায়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এক হাস্যকর গৃহপালিত বিরোধী দলের আবির্ভাব ঘটাল। তারা একই সাথে মন্ত্রিত্ব এবং বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে আসছে।

পৃথিবীর সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে এটি একটি আজব ঘটনা। যা হোক, প্রকৃত বিরোধী দলকে ক্ষমতাসীনেরা রাজপথে নামতে দিতেও চায়নি। যখনই বিএনপি কোনো মিছিল, জনসভা বা আন্দোলনের চেষ্টা করেছে সরকার পুলিশ ও প্রশাসন ব্যবহার করে তা ভণ্ডুল করে দিয়েছে। সর্বদাই তারা ‘স্বাধীনতার চেতনা’র কথা বলে জনগণের মৌলিক স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলার ধুয়া তুলে কূটনীতিকদের বিভ্রান্ত করেছে। আওয়ামী লীগের সর্বাত্মক আক্রমণে সব বিরোধী শক্তি অকার্যকর হয়ে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় বিএনপি বাদে ছোটখাটো বাম-ডান দলগুলো আওয়ামী লীগের কথিত ধর্মনিরপেক্ষতার স্বরূপ অনুধাবনে কিছুটা সময় নেয়। পঞ্চদশ সংশোধনীতে একই সাথে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের অবস্থান এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের অবস্থান দলটির প্রতারণাকে প্রকাশ্য রূপ দিয়েছে। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতৃত্ব গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে। দেশের প্রবীণ দুই রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেন ও ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। দেশের প্রগতিশীল অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা ও সিভিল সোসাইটি তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়। ড. কামাল গোটা জাতির ঐক্য নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক ঐক্যপ্রক্রিয়া শুরু করেন। বি. চৌধুরী যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার আ স ম রবও এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সিভিল সোসাইটি তথা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন।

তারা অনুভব করেন, রাজনীতির মূল স্রোতের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। এই লক্ষ্যে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অর্থবহ আলোচনার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একত্রিত হয়েছে। এ মুহূর্তে বিকল্প ধারা নেতা, সাবেক প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের’ সাথে যুক্ত না হলেও অচিরেই তিনি এই ধারায় ফিরে আসবেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে। এর কারণ, তিনি বিপরীত কিছু করলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে। তার মতো পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদের পক্ষে বাঁকা পথে এগোনো অসম্ভব। উল্লেখ্য, এই সার্বিক ঐক্যপ্রক্রিয়ার আগে বিএনপি ও সমমনা ১৯টি দল বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি রচনা করেছে। এখন প্রবীণ নেতৃত্ব এবং প্রধান রাজনৈতিক দলের সমর্থনপুষ্ট একটি বড় রাজনৈতিক জোট আত্মপ্রকাশ করল। ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে প্রবীণ রাজনীতিক, সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যের ডাক কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, এটা জাতীয় স্বার্থে। কোটি কোটি মানুষের পক্ষ থেকে এই ডাক। গণতন্ত্রের স্বার্থে এই সম্মিলিত উদ্যোগ সফল করার জন্য তিনি জনগণের সমর্থন আশা করেন।

এ সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান মান্না ফ্রন্টের সাত দফা দাবি এবং ১১টি লক্ষ্য তুলে ধরেন। ঘোষিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ; জাতীয় সংসদ বাতিল; সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন প্রভৃতি। ঘোষণায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি এবং দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘোষিত ১১টি রাজনৈতিক লক্ষ্যের মূল কথা হচ্ছে, মহান মুক্তি সংগ্রামের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিদ্যমান স্বেচ্ছাচারী শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে সুশাসন এবং ন্যায়ভিত্তিক ও শোষণমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করা। এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতার অবসানকল্পে সংসদে ও সরকারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়নসহ প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ এবং ন্যায়পাল নিয়োগ করা।

নবগঠিত ঐক্যফ্রন্ট গণতন্ত্রবঞ্চিত জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। জনগণ বিশ্বাস করে, শীর্ষ নেতৃত্ব এবং সাধারণ মানুষের সমন্বয়ে অচিরেই একটি গণ-আন্দোলনের সূচনা হতে যাচ্ছে। শিগগিরই আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লক্ষ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে সমন্বিত ও সম্মিলিত কর্মসূচি প্রণয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অভিন্ন কর্মসূচির ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল এবং বিএনপি একটি শক্ত নির্বাচনী মোর্চায় একীভূত হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এই বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে প্রায় সব বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় অর্থবহ পরিবর্তনের পক্ষে রাজনৈতিক বিশ্বাস দৃঢ়তর হয়েছে। অন্যায়-অত্যাচার ও ভীতির রাজত্বে নাগরিকসাধারণ মুখ খুলতে না পারলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আবির্ভাবে মানুষ বুকে সাহস ফিরে পাচ্ছে। বিশেষ করে, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ যারা ১০ বছর ধরে বিভিন্ন নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তারা কার্যকর ঐক্য ও অ্যাকশনের স্বপ্ন দেখছে। মামলার মাধ্যমে যে লাখ লাখ নেতাকর্মীকে অকার্যকর ও আটক করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের, তারা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের মুক্তির পথ খুঁজছে।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আশা করেন, সূচিত আন্দোলন নেতাকর্মীদের ‘গায়েবি’ মামলা ও অন্যায়-অত্যাচার থেকে রক্ষা করবে। সবাই এই নীতিবাক্যটি জানে, ‘শক্তের ভক্ত ও নরমের যম’। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর যে আন্দোলনের কথা জাতীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, তা যদি নিয়মতান্ত্রিক পথে ব্যাপকতা লাভ করে, তাহলে সরকার সংলাপ বা রাজনৈতিক সমাধানে আসতে বাধ্য হবে। অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, তফসিল ঘোষিত হলে এখনকার মতো পুলিশের ‘খোলামেলা’ ভূমিকা সীমিত হয়ে আসবে। তত দিনে, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে ক্ষমতাসীনদের গরজ বাড়বে। নির্বাচনের পূর্বক্ষণে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং সরকারের পক্ষে দৃশ্যমান হলেও আইনানুগতা দেখানো স্বাভাবিক। এ দিকে, তত দিনে তাদের কথিত নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা ছোট ও দৈনন্দিন কার্যনির্ভর হয়ে উঠবে। সুতরাং আশা করা যায়, ‘অতীতের চেয়ে ভালো হবেরে ভবিষ্যৎ।’ সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন যেকোনো লোকই বোঝেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচনী প্রকৌশল ব্যবহার করে তারা দেশ জয় করেছে, এবার তা আদৌ সম্ভব নয়। জাতীয় যুক্তফ্রন্ট সফল গণ-আন্দোলনের সূচনা করলে তা গণবিপ্লবের সৃষ্টি করতে পারে। আর সেই জাগরণ সুনামির মতো ভাসিয়ে দিতে পারে ক্ষমতার তখতে তাউস।

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কী বলল যুক্তরাষ্ট্র? জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা বৃষ্টির জন্য রাজশাহীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে মৃত হাতি উদ্ধার প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের গুলির নিন্দা জামায়াতের রাজধানীতে তৃষ্ণার্তদের মাঝে শিবিরের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ রাজশাহীতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার হেরোইনসহ যুবক গ্রেফতার এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা গাজার বালিতে আটকে পড়েছে ইসরাইলি বাহিনী : হামাস মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন : যা বলছে আওয়ামী লীগ

সকল