২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘ঘর-ওয়াপসি’ আন্দোলনের রকম-সকম

‘ঘর-ওয়াপসি’ আন্দোলনের রকম-সকম - ছবি : সংগ্রহ

ঘর-ওয়াপসির বাংলা হলো ‘ঘরে ফিরে আসা’। ঘর সংস্কৃতজাত ও ওয়াপসি ফারসি শব্দ। ঘর ওয়াপসি একটি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কর্মের সংমিশ্রণ। মূলত বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএসের ধর্মান্তকরণ কর্মসূচি। বিভিন্ন সময়ে যারা হিন্দু ধর্ম থেকে অন্যান্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, তাদের হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে আনার কর্মসূচি হলো ঘর-ওয়াপসি। একই সাথে অহিন্দুদের হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত করাও এই কর্মসূচির অংশ। ২০১৪ সালে এই কর্মসূচি ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনকে উত্তপ্ত করে তোলে। তখন বিজেপির অন্যতম নেতা যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেন, এই কর্মসূচি চলতেই থাকবে যতক্ষণ না ভারতে অন্য ধর্মে দীক্ষিত হওয়া বেআইনি ঘোষিত হবে। অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সভাপতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, এই কর্মসূচি ভারতের সমাজব্যবস্থা ও ধর্মীয় অবস্থানে নেতিবাচক ভূমিকার সৃষ্টি করবে। মোটকথা, ঘর-ওয়াপসি কর্মসূচি সমগ্র ভারতে সমালোচনামুখর ধর্মীয়-রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পরিণত হয়।


এই কর্মসূচিকে অনেকে খ্রিষ্টানবিরোধী অভিযান হিসেবে প্রচার করেছেন; বিশেষ করে যখন উড়িষ্যা ও গুজরাটে বিরোধী আন্দোলন দানা বাঁধে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস কেরালা, গোয়াসহ বিভিন্ন রাজ্যে ঘর-ওয়াপসি সভার আয়োজন করেছে। তেলেঙ্গানার এক অনুষ্ঠানেই ১২০০ জন হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে ‘মানজি’ পরিবারের লোকজন ধর্মান্তরিত হন। তারা ধর্মান্তরের আগে শিক্ষা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার দাবি জানান এবং এ মর্মে প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (আন্তর্জাতিক) সভাপতি তোগাড়িয়া বলেন, ‘যেভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে সেভাবেই ‘ঘর-ওয়াপসি’ কার্যক্রম চলতে থাকবে।’
ভারতের বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদে ২০ জন মানুষ ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ‘ঘর-ওয়াপসি’ করা মুসলিমদের আর্য সমাজ এবং আরএসএসের এক নেতার আয়োজনে বিশেষ পূজার পরে হিন্দু ধর্মে ফেরানো হয়েছে। আরএসএস নেতাদের দাবি, এসব লোকের পরিবার ২৫-৩০ বছর আগে হিন্দু ছিল। এবার তারা নাকি পুনরায় হিন্দু ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


সংশ্লিষ্ট হিন্দু সংগঠনগুলোর দাবি, সনাতন হিন্দু ধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যারা মুসলিম অথবা খ্রিষ্টান হয়েছেন তাদের হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনার একটি প্রক্রিয়া হলো ঘর-ওয়াপসি। ২০১৫ সালে ঘর-ওয়াপসি খুব বেগবান হয়ে ওঠে। ভারতের বিভিন্ন স্থানে শত শত লোক হিন্দু ধর্মে ফিরে আসে। কোনো কোনো স্থানে পুলিশ ঘর-ওয়াপসি লোকজনের ওপর চড়াও হয় জোর জবরদস্তি করার কারণে।


বিজেপি নেতা মুরালিধরন বলেছেন, ধর্মান্তকরণ ও পুনঃধর্মান্তকরণ সংবিধানে অনুমোদিত। তিনি জানান, সংবিধানে যা রয়েছে তা হলোÑ জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণ নিষিদ্ধ। যারা ধর্মান্তরিত হয়েছেন তারা কোনো অভিযোগ করছেন না; অন্যরা এ নিয়ে হইচই করছে। শাবানা আনোয়ার হিন্দি ও মালায়লাম ভাষায় মিশ্রণে চমৎকারভাবে কথা বলেন। তিনি পালাক্কাড মিউনিসিপ্যালিটিতে বিজেপি প্রার্থী হয়ে লড়েছেন। তিনি বলেন, যারা ২০০২ গুজরাট হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন, তারা জানুক যে, মোদির ভারতে মুসলমানদের অনেক উন্নতি হয়েছে। তিনি জানান, তার পিতা-মাতা, ভাই এবং নিকট আত্মীয় সবাই বিজেপি সমর্থন করেন। বিজেপির হয়ে দাঁড়ানো আমার জন্য ‘রাজনৈতিক ঘর-ওয়াপসি’।

নিকট অতীতে হিন্দু জাতীয়তাবাদ ভারতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। বিজেপি হলো, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) রাজনৈতিক শাখা। আরএসএস ভারতকে একচ্ছত্র হিন্দু জাতিতে রূপান্তরে অঙ্গীকারবদ্ধ। অপর দিকে, মুসলমানরা ভারতের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। তথাপি মুসলমানদের ওপর ক্রমবর্ধমান হারে প্রকাশ্য হামলা হচ্ছে। উত্তর ভারতের বিভিন্ন স্থানে গরু রক্ষার নামে লুট, হামলা ও খুন হয়েছে। ভারতের আদালত এমন অনেককে মৃত্যুদণ্ডাদেশও দিয়েছেন। মুসলমানরা পাইকারিহারে নিগৃহীত হলে রাজনীতির অঙ্গনে ও মিডিয়ায় এর সমালোচনায় পরিস্থিতি অনেক উন্নতি হয়েছে। সম্প্রতি মুসলমান হত্যার জন্য হাইকোর্ট কয়েকজনকে ফাঁসির আদেশও দিয়েছেন। তবে ধর্মান্তর করার বিরোধিতার নামে খ্রিষ্টানদের ওপর হামলা তেমন গুরুত্ব বহন করে না। সংখ্যালঘু খ্রিষ্টানরা যেন আস্তে আস্তে গুটিয়ে গেছেন।


মহারাষ্ট্রের নববর্ষ উৎসব ‘গুদি পদবা’য় ধ্বনি উঠেছে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার। বিজেপি জাতীয়তাবাদের নামে হিন্দুত্বকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। বিজেপি-আরএসএস বহু দিন ধরেই জাতীয় প্রতীকগুলোকে হিন্দু সাম্প্রদায়িকায়ন করছে। একযুগ ধরে এসব সংগঠন ভারতের জাতীয় পতাকাকে হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। বিজেপি-আরএসএস ভারতের অঞ্চল ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বিলীন করে সব কিছুকে হিন্দুত্বের তুলি দিয়ে রাঙাতে চায়। এমনকি, আদিবাসীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। ভারতে বিভিন্ন সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও হিন্দুত্ব এবং জাতীয়তাবাদ ও হিন্দুত্বকে এক করে দেখানো হচ্ছে। ফলে জন্ম নিচ্ছে জাতীয়তাবাদী হিন্দুত্ব যা হিন্দু জাতীয়তাবাদের নামে এক ধরনের উগ্রতা। মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে এটা করা হচ্ছে বলে সমালোচকরা বলছেন। ভারতের বৃহত্তর হিন্দু জনগোষ্ঠী এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন নয়।


ইরানি চলচ্চিত্রে মিউজিকের সূত্র ধরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিশ্বখ্যাত সুরকার এ আর রহমানকে হিন্দু ধর্ম গ্রহণের আহ্বান জানায়। মুম্বাইয়ের প্রধান মুফতি মোহাম্মদ আখতার রেজা একাডেমির মাধ্যমে সাড়া জাগানো ইরানি চলচ্চিত্র Muhammad : The Messenger of God এর পরিচালক, ৫৬ বছর বয়সী মাজিদ মাজিদী ও ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানের বিরুদ্ধে এক ফতোয়া দেন যে, তারা ভুল করেছে, তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ফতোয়ায় আরো বলা হয়, তাদের নতুন করে কালেমা পড়তে হবে। ব্যস, আর যায় কোথায়? বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সুরেন্দ্র জৈন এ আর রহমানকে বলেন, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসো। এটাই ঘর-ওয়াপসির উপয্ক্তু সময়। হিন্দু সমাজ তার সন্তানের জন্য অপেক্ষা করে আছে।’


হায়দরাবাদের এমপি আসাদুল্লাহ ওয়াইসির বিরুদ্ধেও উগ্রবাদীরা লেগেছে। তারা বলছে, ওয়াইসির বক্তব্য সেকুলার ভারতের বিরুদ্ধে। ঈদে মিলাদুন্নবী সা:-এর এক অনুষ্ঠানে আসাদুল্লাহ বলেন, ‘মানুষের প্রকৃত ঘর হলো ইসলাম।’ তিনি এক বক্তৃতায় বলেছেন, প্রত্যেক মানব শিশু মুসলমান হয়ে জন্ম নেয়। তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদি, খ্রিষ্টান বা প্রকৃতি পূজারী বানায়। তাই প্রকৃত ঘর-ওয়াপসি হলো ইসলাম। মুসলমান হওয়ার জন্য কাউকে টাকা পয়সা খরচ করতে হয় না। এটা তার মনের ও বিশ্বাসের ব্যাপার। যারা এই ঘরে আসবে তারাই বিজয়ী হবে। তার বক্তব্যকে ‘ঘর-ওয়াপসি’ আন্দোলনের বিরুদ্ধে বলে দাঁড় করিয়ে যথেষ্ট হেনস্থা করা হয়েছে।


জামিয়াতে উলামায়ে হিন্দের প্রেসিডেন্ট মাওলানা ওসমান মনসুরপুরী সরকারকে অবিলম্বে ‘ঘর-ওয়াপসি’ ও ‘লাভ জিহাদ’ আন্দোলন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এতে ভারতের ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও সহাবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারতে সুফি ও ব্যবসায়ীরা কখনো ধর্মান্তকরণে জোর করেননি, তাহলে ভারতে মুসলমানরা সংখ্যালঘু হয়ে থাকত না।

‘ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে নরেন্দ্র মোদির সরকারের আমলে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার অবনতি ঘটেছে। ভারতে দলিত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার। ২০১৪ সালের পর দেশটিতে এই সম্প্রদায়গুলোর বিরুদ্ধে বিদ্বেষসূচক অপরাধ, সামাজিকভাবে একঘরে করা ও বলপূর্বক ধর্মান্তকরণ নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কংগ্রেস এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও দলিত সম্প্রদায় উভয়ই বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, সঙ্ঘ পরিবার ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দু জাতীয়তাবাদী গ্রুপগুলোর হাতে ধর্মান্তকরণের শিকার হয়েছে সংখ্যালঘুরা সহিংস হামলায় ও বলপূর্বকভাবে।


কমিশনের চেয়ারম্যান থমাস জে রিস মনে করেন, ধর্মীয়ভাবে বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক সমাজ রয়েছে ভারতে। দেশের সংবিধানে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে আইনগতভাবে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে। ধর্মভিত্তিক বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের দৌরাত্ম্য ও বাড়াবাড়ি সীমা এতটা অতিক্রম করেছে, যা মানবাধিকারের জন্য হুমকি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্যোগ না নিলে সংখ্যালঘুদের ভাগ্য নির্মমতার শেষসীমায় পৌঁছে যাবে। বিশিষ্ট লেখক ও কবি কেকি এন দারুওয়ালা যিনি ‘সাহিত্য একাডেমি অ্যাওয়ার্ড’ ফিরিয়ে দিয়েছেন, জানান যে, ‘সরকার ‘জাতীয়তাবাদ’কে ‘সাম্প্রদায়িকতার’ সাথে মিশিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, দুঃখজনকভাবে মুসলমানরাই এর শিকার।’


ধর্ম জাগরণ সমিতি ঘোষণা দিয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে ভারত হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এর নেতা রাজেশ্বর সিং আরো বলেছেন, মুসলমান ও খ্রিষ্টানরা ভারতে থাকতে চাইলে হিন্দু হিসেবেই থাকবে, নতুবা তাদের এ দেশে থাকার অধিকার নেই। জাগরণ সমিতির নেতা নন্দ কিশোর বাল্মিকী জোরপূর্বক ১০০ মুসলমানকে হিন্দুধর্মে দীক্ষিত করায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে মামলা নিয়েছে। সমিতির মুখপাত্র আরো জানায়, বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন জানিয়েছেন, তার পূর্ব পুরুষ হিন্দু ছিল। ঘর-ওয়াপসি আন্দোলন বিগত ৬০ বছর ধরে ভারতে চলছে। উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী আজম খান বলেন, আরএসএস তালেবানের মতো কাজ করছে। তারা যেন ভারতের সংবিধান চায় না। মানবতাকে শেষ করার জন্য তারা কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, ধর্ম জাগরণ সমিতি আরএসএসের একটি শাখা। লোকসভা নির্বাচনে তারা মোদি ও বিজেপিকে সহায়তা করেছিল। উত্তর প্রদেশ পুলিশ মাঝে মাঝে সংবাদ পেলে ঘর-ওয়াপসি কর্মসূচি বানচাল করে দেয়। গাজীপুর, বারানসী ও এলাহাবাদে এরূপ অনেক ঘটনা ঘটেছে।


কোনো জোরজবরদস্তি করে ধর্মান্তকরণ ভারতীয় সংস্কৃতি অনুমোদন করে না। বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতির মিলনে গড়ে উঠেছে বর্ণিল ভারতীয় সংস্কৃতি। মিলিয়ন মিলিয়ন হিন্দুর আবাসভূমি বলে ভারতকে ‘হিন্দুর দেশ’ বলা যায় না। আদিবাসীদের কথাও এই বিষয়ে ভেবে দেখার বিষয়। তারা কি হিন্দু? নিশ্চয় নয়। তাদের বিশ্বাস আছে তাদের ‘ঘরে’। ভারতকে ‘শান্তির ভূমি’ও বলা হয়ে থাকে। কারো কাম্য হতে পারে না এখানে আঘাত করা। গৌতম বুদ্ধকে ‘বিষ্ণুর অবতার’ বলা হয়। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, সেন রাজবংশ ভারতে বৌদ্ধদের কচুকাটা করেছিল। ফলে ভারত ছাড়া হতে হয়েছে বৌদ্ধদের। হিন্দু পণ্ডিতরা বলছেন, ‘বিষ্ণুবাদ’কে বাদ দিয়ে ‘শিবনীতি’ গ্রহণও এক ধরনের ধর্মান্তকরণ। কেননা এখানে অনেক প্রথা ও আচারকে বাদ দিয়ে নতুন নিয়মনীতিতে বিশ্বাস করতে হয়। ‘বিশ্বাসের স্তম্ভ’কে বাদ দিয়ে অন্য ‘বিশ্বাসমালা’ গ্রহণ করলেই ধর্মান্তকরণ ঘটছে। এটাও বুঝতে হবে। ডানপন্থী হিন্দুরা বেদ ও ‘ধর্মীয় আচারের’ মধ্যে বিভক্তি লাইন টেনেছেন। হিন্দুদের হাজার হাজার বছরের আচার অনুষ্ঠানে অনেক যোগ-বিয়োগ হয়ে গড়ে উঠেছে আজকের হিন্দুধর্মীয় সংস্কৃতি। কোন ঘরে মানুষ ফিরবে, তা নিয়ে মূল ধারার হিন্দুরাও বিভক্ত। শঙ্করাচারিয়া, রামকৃষ্ণের বড় বড় গুরুরা, নতুন যুগের যোগীÑতারা কিভাবে ঘর-ওয়াপসি ব্যাখ্যা করেছেন তা বোঝা যাচ্ছে না। অরাজনৈতিক হিন্দুরাও বিষয়টিকে আদৌ ভালো চোখে দেখছেন না।হ
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement