২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জবলেস গ্রোথ ঠেকানোর পদক্ষেপ নেই বাজেটে

জবলেস গ্রোথ ঠেকানোর পদক্ষেপ নেই বাজেটে - ছবি : নয়া দিগন্ত

বেকারত্ব বাংলাদেশের একটি জটিল সমস্যা। এ সমস্যা ধীরে ধীরে সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ছে। অতি সম্প্রতি আমরা যে অভাবনীয় ধরনের কোটা আন্দোলন হতে দেখলাম, তারও শেকড় কিন্তু এই বেকারত্ব বা কর্মহীনতার মধ্যে প্রোথিত। সামাজিক অস্থিতিশীলতার পেছনেও রয়েছে এর প্রভাব। দেশে বেকারত্ব বেড়েই চলেছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। দেশের সার্বিক বেকার সমস্যা স্থবির অবস্থায় দাঁড়িয়ে। প্রতি বছর বাড়ছে দেশের জনসংখ্যা, সেই সাথে বাড়ছে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও।

সরকারি পরিসংখ্যান মতে, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধি হার ছিল ৬.৬ শতাংশ। আর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ২০১৩ যেখানে বেকারদের সংখ্যা ছিল ছয় কোটি সাত লাখ, সেখানে একই সময়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে মাত্র ২৮ লাখ। এর অপর অর্থ, বাংলাদেশে প্রতিবছর ০.৯ শতাংশ হারে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে উল্লিখিত পাঁচ বছরে যে হারে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঘটছে তার আট ভাগের এক ভাগ হারে সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। এতে সহজেই অনুমেয়, বাংলাদেশে এক দিকে বাড়ছে প্রবৃদ্ধির হার, অপর দিকে বাড়ছে বেকারত্ব- এই যে এক পরিস্থিতি, এরই নাম ‘কর্মসংস্থানহীন-প্রবৃদ্ধি’ তথা ‘জবলেস গ্রোথ’। এই কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের এক প্রপঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোজা কথায়, যখন কর্মসংস্থানহীন অবস্থায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এগিয়ে চলে, তখনই একে বলা হয় জবলেস গ্রোথ বা কর্মসংস্থানহীন-প্রবৃদ্ধি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা কোনো দেশেরই স্বাভাবিক সমাজ উন্নয়নে কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিকতা হচ্ছে- যে হারে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ঘটবে, সমান তালে বাড়বে কর্মসংস্থান সৃষ্টির হারও। কিন্তু বাংলাদেশ সেই স্বাভাবিকতার বাইরে।

বাংলাদেশের এই জবলেস গ্রোথ পরিস্থিতি বোঝার জন্য আমাদের মনোযোগ দিতে হবে পরিসংখ্যানের দিকে। ‘লেবার ফোর্স সার্ভে’ অনুসারে গত পাঁচ বছরে কৃষিখাতে কর্মসংস্থান কমেছে ১৫ লাখ। এ সময় অর্থনীতি ও সেবখাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ৩৯ লাখ। এর মধ্যে শিল্পখাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে তিন লাখ। উল্লিখিত এই পাঁচ বছর সময়ে কৃষিখাতে কর্মসংস্থান কমেছে ১.১ শতাংশ হারে, যেখানে উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হার ছিল ৩.২ শতাংশ। এ সময় শিল্পখাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ০.৫ শতাংশ হারে, যদিও উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হার ছিল ৯.৮ শতাংশ। অপর দিকে সেবাখাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে মোটামুটি ৪ শতাংশ হারে, যেখানে উদপাদনের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের মতো।

কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে একটি উদ্বেগজনক ব্যাপার হচ্ছে- ম্যানুফেকচারিং তথা বৃহদাকার উৎপাদন খাতে ২০১৩ সালে যেখানে মোট কর্মস্থান ছিল ৯৫ লাখ ৩০ হাজার জনের, সেখানে ওই পাঁচ বছরে কর্মসংস্থান কমেছে সাত লাখ ৭০ হাজার। এ ক্ষেত্রে প্রতি বছর কর্মসংস্থান কমেছে ১.৬ শতাংশ হারে, যেখানে এ সময়ে এ খাতে উৎপাদন প্রবৃদ্ধির জোরালো প্রবৃদ্ধিহার ছিল ১০.৪ শতাশ। তা ছাড়া দেখা গেছে, এই সময়ে এ খাতে পুরুষদের কর্মসংস্থান বেড়েছে এক লাখ ৭০ হাজার (৫৭ লাখ ৩০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ লাখে) কিন্তু মহিলাদের কর্মসংস্থান কমেছে ৯ লাখ ২০ হাজার (৩৭ লাখ ৮০ হাজার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৬০ হাজারে)। এর অর্থ বৃহদাকার শিল্প উৎপাদন খাতে মহিলাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি রীতিমতো ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এভাবে প্রতিটি খাতের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যাবে বাংলাদেশ এখন জবলেস গ্রোথের ফাঁদে আটকে আছে। ফলে কর্মসংস্থানহীনতা বা বেকারত্ব এক জটিল ব্যাধিতে রূপ নিচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) রিপোর্ট মতে, বাংলাদেশের যুব জনগোষ্ঠীর সংখ্যা পাঁচ কোটি ২০ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। আশা করা হচ্ছে, আগামী ১০ বছর সময়ে প্রতি বছর ২২ লাখ বাংলাদেশী কর্মোপযোগীর বয়সে উপনীত হবে। যে হারে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ঘটছে; কর্মসংস্থান সৃষ্টি সে হারে চলছে না, ফলে বেকার সমস্যা বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আইএলও বলছে, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের এক-তৃতীয়াংশই যুবশ্রেণীর। এই যুব জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশই বেকার। আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের এক কোটি যুবক চাকরির বাজারে প্রবেশ করবে, যাদের মাত্র ৪০ শতাংশ চাকরি পাবে। তখন বেকারত্ব পরিস্থিতি কেমন হবে, তা সহজেই অনুমেয়।

ওপরের পরিসংখ্যান থেকে আমরা বেকারত্বের ও জবলেস গ্রোথের যে চিত্র পেলাম, তাতে সহজেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছা যায়- এই কয় বছরের বাজেটে আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছি। এবারের বাজেটেও আসলে সেই কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি অর্জনের ওপরই জোর দেয়া হয়েছে। আমরা জানি- বিনিয়োগ, বিশেষত উৎপাদনমুখী খাতের বিনিয়োগ কর্মসংস্থান সৃষ্টির চাহিদা মিটিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অপরিহার্য এক বিষয়। কিন্তু বাজেটে এর প্রতিফলন নেই। আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টিকে মাথায় না নিয়ে প্রতি বছর জনতুষ্টিমূলক বিশাল অঙ্কের বাজেট প্রণয়ন করে চলেছি। ফলে আমাদের জিডিপির প্রবদ্ধি হার ৭ শতাংশের ওপরে চলে গেলেও সে হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারছি না। দুই কোটিরও বেশি মানুষ এ দেশে বেকার। যাদের মধ্যে যুবক আর তরুণের সংখ্যাই বেশি। এদের কাজের বাইরে রেখে কী করে সুষম উন্নয়ন সম্ভব। এখন দেশে যে উন্নয়নের জারিজুরি শোনানো হচ্ছে, তা একটি শ্রেণিবিশেষের উন্নয়ন বৈ আর কিছু নয়। অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালি ভোটারের মুখের দিকে চেয়ে যে নির্বাচনী বাজেট তাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিনিয়োগ উপেক্ষিতই থাকে।

এ দিকে আঙ্কটাডের প্রতিবেদন মতে, গত বছর দেশী বিনিয়োগও কমেছে ১ শতাংশের মতো। আমাদের আত্মঘাতী বিষাক্ত রাজনৈতিক পরিবেশে দেশী বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের এই বছরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটা হাত গুটিয়ে বসে আছেন। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এর পরিবর্তে এরা অবৈধভাবে তাদের অর্থ বিদেশে স্থানান্তর করছেন। উদাহরণ টেনে বলা যায়Ñ ‘গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি’র এক রিপোর্ট মতে, ২০০৫-১৪ সময়ে ছয় হাজার ১৬৩ কোটি ইউএস ডলার বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অবৈধভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি স্থানান্তর হয়েছে ২০১৩ সালে, ৯৬৬ কোটি ডলার। বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে নিশ্চয়ই এরা নিজের দেশেই এই অর্থ বিনিয়োগ করত। রাজনৈতিক অনিশ্চিত পরিস্থিতির এর একটি কারণ, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে আশঙ্কা আছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

আসলে সামাজিক খাতে বাজেট বরাদ্দ বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান হারে কমে যাচ্ছে। যেমন- ২০১০ সালে শিক্ষাখাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল বাজেটের ১৪.৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ বছরের বাজেটে এসে তা কমে দাঁড়ায় ১২.৬ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে তা আরো কমিয়ে আনা হয়েছে ১১.৪১ শতাংশে। একইভাবে স্বাস্থ্যখাতের বাজেট বরাদ্দও এবার আগের ৫.৩৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৫ শতাংশ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে আমাদের বাজেট বরাদ্দ আন্তর্জাতিক মানের অনেক নিচে। সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে জিডিপির ৬ শতাংশ ও মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয় শিক্ষাখাতে। আমাদের দেশে এই হার দু’টি ২.০৯ ও ১১.২ শতাংশ। একইভাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ জিডিপির ৫ শতাংশ, বাংলাদেশে যা জিডিপির মাত্র ০.৯২ শতাংশ। প্রশ্ন হচ্ছে, সামাজিক ও সেবাখাতে এ ধরনের নি¤œহারের বাজেট বরাদ্দ দিয়ে অর্থমন্ত্রী কোন বার্তাটি জনগণের কাছে পৌঁছাতে চান, তা দেশের সাধারণ মানুষ জানে না।

আসলে এই জবলেস গ্রোথ দেশে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করে, তা দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিরই উদ্যোগ-আয়োজন ছাড়া আর কিছু নয়। কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি নিয়ে উন্নয়নের জারিজুরি গেয়ে বর্তমান সরকারের পুরো সময়টাতেই আসলে জনগণের মধ্যে অর্থনৈতক বৈষম্য সৃষ্টির কাজটিই অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ইকোনমিক ডিসপ্যারিটি তথা অর্থনৈতিক বৈষম্য সম্পর্কে অর্থনীতিতে এরহর পড়বভভরপরবহঃ নামে একটি পদপাচ্য আছে। এটি এরহর ৎধঃরড় বা এরহর রহফবী নামেও পরিচিত। এর মাধ্যমে একটি দেশের নাগরিকদের মধ্যে আয় বা সম্পদ বণ্টনের পরিসংখ্যানগত চিত্র তুলে ধরা হয়। মোট কথা এই সূচকের সাহায্যে একটি দেশের ধনী-গরিবের পার্থক্য পরিমাপ করা হয়। এটি সর্বাধিক ব্যবহৃত বৈষম্য পরিমাপের অর্থনৈতিক সূচক হিসেবে বিবেচিত। দেখা গেছে, বাংলাদেশে ২০১০ সালে এই জিআইএনআই কোএফিশিয়েন্ট ছিল ০.৪৮৫। ২০১৬ সালে তা নেমে আসে ০.৪৮৩-তে। এ থেকে বোঝা যায়, বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ধনী-গরিবের অর্থনৈতিক ও সুযোগের ক্ষেত্রে বৈষম্য ক্রমেই বাড়ছে। এ কারণে ২০১০ সালে দেশের সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ধনীর সম্পদ সর্বনি¤œ ৫ শতাংশ গরিবের সম্পদের তুলনায় ছিল ৩১ গুণ। ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১ গুণ। দুর্ভাগ্য আমাদের, প্রস্তাবিত বাজেটে এই ধারা পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেই। যারা এবার বাজেট সমালোচনা করতে গিয়ে গরিব মারার বাজেট বলে আখ্যায়িত করেছেন, তাদের ওপর অর্থমন্ত্রীকে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে তার চিরাচরিত বিশেষ ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে। কিন্তু তথ্য পরিসংখ্যান সমালোচকদের পক্ষেই কথা বলে।

গরিব মানুষের ভাগ্য বদলের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার জন্য বিনিয়োগ করার মতো অর্থ আমাদের অর্থমন্ত্রীর হাতে না থাকলেও আর্থিক খাতের লুটেরা শ্রেণীর জন্য নানা সুযোগ সৃষ্টির জন্য তহবিলের অভাব হয় না অর্থমন্ত্রীর। এদের জন্য আমাদের অর্থমন্ত্রী বাজেটে যেসব সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছেন, তা দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য আরো বাড়িয়ে তুলবে। ব্যাংক খাতের লুটেরাদের আরো সুযোগ-সুবিধা এই লুটের সংস্কৃতিকেই তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এ জন্য জাতীয় সংসদে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সমালোচনার তোপের মুখে পড়েন অর্থমন্ত্রী। বর্তমান অর্থমন্ত্রীর আমলে সরকারদলীয় সমর্থকদের পৃষ্ঠপোষকতা করার অংশ হিসেবে সরকারি ব্যাংকের গভর্নিং কমিটিতে ঢোকানো হয়েছে। ব্যাংক খাতের বড় বড় অনিয়ম আর লুটপাটের সাথে এদের নামই বেশি শোনা যায় গণমাধ্যমে। চলতি বছরের শুরুতে একই পরিবারের চার সদস্যকে একটি ব্যাংকে একটানা ৯ বছর পরিচালনা পর্ষদে থাকার আইনি বৈধতা দিয়েছে এ সরকার। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী বেসরকারি ব্যাংকে সরকারি তহবিলে আমানতের ৫০ শতাংশ রাখার সুযোগ সৃষ্টি করছেন। এবারের বাজেটে সরকারি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য অর্থমন্ত্রী ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন। এভাবে বছরের পর বছর জনগণের করের টাকায় প্রবলেম ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি অর্থমন্ত্রী বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে মিটিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও বিশেষত সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির অবসান হচ্ছে না। এখনো দেশের ১০টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ২৩ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাতটি হচ্ছে সরকারি ব্যাংক। হালনাগাদ উপাত্ত মতে- এই মূলধন ঘাটতির পরিমাণ নি¤œরূপ: বাংলাদেশ কৃষিব্যাংক সাত হাজার ৯৩০ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক ছয় হাজার ৭৫৩ কোটি, বেসিক ব্যাংক তিন হাজার ১০৭ কোটি, আইসিবি ব্যাংক ১৫১৪ কোটি, জনতা ব্যাংক ১৪৪৫ কোটি, রূপালী ব্যাংক ৮৭৯ কোটি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৮২৯ কোটি, অগ্রণী ব্যাংক ৩৩৭ কোটি, ফার্মারস ব্যাংক ৩০২ কোটি টাকা এবং বিসিবিএল ব্যাংক ২৬৬ কোটি টাকা। এ ধরনের ব্যাংকগুলোকে সরকার ২০০৯ সাল থেকে পুনঃমূলধনায়ন করেছে ১৪ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা।

জাতীয় সংসদে ১২ বার বাজেট পেশের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হয়েও এই প্রবীণ অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রণয়নের সময় তার অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োগ করতে পারছেন বলে মনে হয় না। করলে আমরা বেরিয়ে আসতে পারতাম জবলেস গ্রোথ প্রপঞ্চ থেকে। সেই সাথে এ দেশের জনগণ মুক্ত হতে পারত ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে। সে ধরনের কোনো বার্তা নেই এবারের বাজেটে।


আরো সংবাদ



premium cement