২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জেরুসালেম: লাশের ওপর জমকালো আনন্দানুষ্ঠান

-

গত সোমবার ১৪ মে, ২০১৮ তেলআবিব থেকে জেরুসালেমে ইসরাইলের রাজধানী স্থানান্তর ও একই সাথে ইসরাইলি রাষ্ট্রের ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে জমকালো অনুষ্ঠান হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাত ভোট দিয়েছে রাজধানী স্থানান্তরের পক্ষে এবং ১২৮ রাষ্ট্র এর বিপক্ষে। এর পরও ট্রাম্প মুসলিম সেন্টিমেন্টকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে দূতাবাস জেরুসালেমে করার ঘোষণা দিয়েছেন। কেননা যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করে এমন একটি দেশ! ইসরাইল এমন ঐতিহাসিক অর্জনকে ধরে রাখার জন্য নতুন ইসরাইলি মুদ্রা চালু করেছে। ধাতব মুদ্রায় দেয়া হয়েছে ট্রাম্পের চেহারা।

গাজার ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছে। কেননা জেরুসালেমে বিশেষ করে পূর্ব জেরুসালেমে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী করার বিষয়টি সবাই জানে। সে গাজা আবার নতুন করে রক্তাক্ত। জেরুসালেমের মতো গাজাও মুসলমানদের কাছে প্রিয়। কেননা, গাজাকে হাশেমের গাজা বলা হয়। তিনি নবী হজরত মোহাম্মদ সা:-এর পিতামহ ছিলেন। হাশেম বিন আবদুল মন্নাফ ষষ্ঠ শতাব্দীতে এই নগরে ব্যবসা করতে এসে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। গাজাকে ‘ঘাজাহ’ এবং হিবরুতে ‘আজা’ বলেও উচ্চারণ করা হয়। কেনানি আরবরা খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সালে এই শহরের পত্তন করে গাজা নামকরণ করেন। ইসরাইল ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের সময় পুরো গাজা ভূখণ্ড দখল করে নেয়।
ইসরাইলের এই আনন্দানুষ্ঠানে গাজা ও জেরুসালেমে ফিলিস্তিনিদের ওপর নেমে আসে মহাকালের দুর্যোগ। এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। শোক সংবাদ পাঠিয়েছেন অনেকে। এটা অবশ্য গত ৭০ বছর ধরেই চলে আসছে। ফিলিস্তিনিরা মরে আর বিক্ষোভ মিছিল ও শোক সংবাদ চলে অনেকদিন। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি কোনো ইহুদিকে, বরং জাতিসঙ্ঘে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইসরাইলিদের সন্ত্রাসী বলার কারণে ৩০টির মতো দেশ অধিবেশন ছেড়ে চলে যায়, আর যুক্তরাষ্ট্র সময়ে সময়ে বিভিন্ন ইসলামি দল, সংগঠন, সংস্থা ও দেশকে ‘সন্ত্রাসী’র তালিকায় উঠাচ্ছে, তালিকা নবায়ন করছে, নতুন নতুন নেতা ও দলকে তালিকাভুক্ত করছে। এতে মুসলিম দেশগুলো হাততালি না দিলেও অধিবেশন ছেড়ে গেছে এমন নজির নেই।

এবার এ পযর্ন্ত গাজায় মৃতের সংখ্যা ১০০ অতিক্রম করেনি, অতিক্রম করলেই বা কি? ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় সাত লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুহারা হয়েছে, ৫০০ বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়েছে। তখনো শোকপ্রস্তাব ও বিক্ষোভ হয়েছিল, এখনো হচ্ছে। এই সুদীর্ঘ সময়ে একটি সপ্তাহ পাওয়া যাবে না, যখন কোনো ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ-শিশু মৃত্যুবরণ করেনি ইসরাইলের হাতে। ৫১ লাখ মানুষকে এ পর্যন্ত ইহুদিরা হত্যা করেছে। গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারের প্রবক্তারা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি বা নেয়নি। জেনারেল মোশে দায়ান বলেছিলেন, ‘ইসরাইলকে নতুন নতুন বিপদ সৃষ্টি করতে হবে, এর জন্য দরকার ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভীতি-আতঙ্ক ছড়ানো এবং ওরা যখন প্রতিবাদ করবে, তখন তাদের শেষ করে দেয়া।’ এমন নীতি যারা মেনে চলেন, তাদের মাঝে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র খোঁজার কোনো অর্থ আছে কি?
নতুন আমেরিকান অ্যাম্বাসি অফিসের সামনে ডজনখানেক ফিলিস্তিনি প্রতিবাদ করেছে, তাদের হাতে কিছুই ছিল না। সবাইকে ব্যাটন চার্জ করা এবং গ্রেফতার করা হয়। ইসরাইলিরা চিৎকার করছিল, এদের ‘পুড়িয়ে দাও’, ‘গুলি করো’, ‘হত্যা করো’, ফিলিস্তিনিদের এতদিন মারত ইসরাইলি সেনারা, এরপর পুলিশ এই দায়িত্ব পালন করে, সেনারা কাভার দেয়। এখন অভিবাসী ইসরাইলিরা নির্যাতন করছে কভার দিচ্ছে ইসরাইলি পুলিশ।

গাজায় সাধারণ মানুষ হত্যার জন্য ইহুদিরাও ওয়াশিংটনে মিছিল করেছে। ইহুদি পুলিশের হাতে ফিলিস্তিনিদের পশুর মতো গুলি করে মারার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ। এতে কোনো দুঃখ নেই ইসরাইল-আমেরিকার কর্ণধারদের। ট্রাম্পের জামাতা কুশনার ও কন্যা ইভাঙ্কা সহাস্যমুখে যেন অভিসার সারছেন, এমন ছবিই মিডিয়াতে প্রচারিত হয়েছে। তখন একই সময়ে গাজায় ইসরাইলি পুলিশ ও বিশেষ বাহিনী মাত্র ৭৫ মাইল দূরে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ করে ‘চাঁদমারি’ খেলছিল। সাধারণ ইহুদিরা উল্লাস করছিল। গুলিতে মারা গেছে ৬২ জন, আহত তিন হাজার। এর মধ্যে লায়লা আনোয়ার নামে আট মাসের শিশুও রয়েছে। ২০ জনের মতো শিশু ও মহিলা। শিশুদের অনেকে মরেছে গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে। মার্চ ২০১৮ থেকে হিসাব করলে মৃতের সংখ্যা ১০১ জন। ইসরাইলি সেনারা এত বেশি গোলাগুলি চালিয়েছে যে, কোনো অ্যাম্বুলেন্স কাছে যেতে পারেনি। জেরুসালেমে রাজধানী স্থানান্তর আনন্দের না হয়ে রক্তাক্ত হওয়ার কারণে খোদ আমেরিকায় ইহুদি-আমেরিকানরা মিছিল-বিক্ষোভ করছে, আমেরিকার প্রেস ও মিডিয়াও সরগরম। ট্রাম্প এ অবস্থায় আইন জারি করেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনা করা যাবে না। এমন হলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ট্রাম্পের ইসরাইল প্রীতি আমেরিকাতে বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ হলো। কী অপূর্ব গণতন্ত্র!

এই আনন্দানুষ্ঠানে কুশনার ঘোষণা দেন, ‘আমি আজ খুবই গর্বিত এখানে, জেরুসালেমে উপস্থিত হতে পেরে, এই স্থানটি অনন্তকাল ইহুদিদের হৃদয়ে রয়েছে’। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা একসাথেই আছি, কেননা আমরা মুক্তি ও স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করি।’ আগে প্রস্তুত করা এই ভাষণে তিনি দুটি মিথ্যা বললেন। প্রথমত, মধ্যপ্রাচ্যে ইহুদিরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফসল, হৃদয়ঘটিত কোনো ব্যাপার নয়; দ্বিতীয়ত, যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, তারা অন্যের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে পারে না। আমেরিকা পাইকারি হারে মেরেছে রেড ইন্ডিয়ানদের আর ইসরাইল মারছে পাইকারি হারে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের, শিশু, অসুস্থ মানুষ, বয়স্ক ও মহিলাদের। রেড ইন্ডিয়ানদের কেউ ছিল না, কিন্তু মুসলমানদের রয়েছে আরো কোটি কোটি মুসলমান। কিন্তু তাতে কি? সৌদি আরবের প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ‘ইহুদিদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।’ ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘আমরা ইসরাইলের ম্যাপ মুছে দিতে চাই।’ আরব আমিরাত বলছে, ‘ইরানে বোমা মারা উচিত’।
কুশনার, যিনি রক্ত-মাংসে একজন ইহুদি ও নেতনিয়াহুর বন্ধু, তিনি অনুষ্ঠানে আরো বলেছেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল) একসাথে আছি, কেননা আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।’ যদিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পদ্ধতি গণতান্ত্রিক করার জন্য খোদ আমেরিকাতেই বিতর্ক রয়েছে। তবে ইসরাইলের নির্বাচন পদ্ধতি আমেরিকার চেয়েও উন্নত। গণতন্ত্রী কুশনারের বিশ্বস্ত আস্থাভাজন হলেন স্বৈরাচারী শাসক মিসরের আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি, গণতন্ত্রের বিকাশে ভিত আরব আমিরাতের প্রিন্স এবং গণতন্ত্রহীন রাজবংশ পরিচালিত সৌদি আরবের প্রিন্স যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এই তালিকায় আরো অনেক রাষ্ট্র রয়েছে।

কুশনার এমন এক অনুষ্ঠানে গিয়েছেন, যেটি নিয়ে ফিলিস্তিন বা মুসলিম বিশ্ব-ইসরাইলের বিরোধ চলছে। তিনি আবার ফিলিস্তিনি শান্তি প্রক্রিয়ার নতুন ফর্মুলাও দিয়েছেন। যে ফর্মুলার নায়ক করা হয়েছে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে। এই প্রক্রিয়ায় দ্রুত ঘটনা ঘটেছে মাহমুদ আব্বাসকে নিয়ে, লেবাননের হারিরিকে নিয়ে, কুয়েত নিয়ে। এসব ঘটনার পরিচালক কুশনার। কিন্তু তার উপস্থিতিতেই অনুষ্ঠান চলাকালেই গাজায় নিহত হয়েছে ডজন ডজন নিরপরাধ মানুষ। শোকে মাতম করে চলছে অসহায় আরব মায়েরা। তাদের বিষয়ে সামান্যতম উদ্বেগও নেই কুশনারের। ওই অনুষ্ঠানে কুশনারের দায়িত্ব অনেক। কেননা তিনি ট্রাম্পের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আতশবাজি ফুঠানো হয়। এই অনুষ্ঠানে ইসরাইলি ডিফেন্স মিনিস্টার লিবারম্যানের নির্দেশে গুলি করে মানুষ হত্যা করে ইহুদি চরিত্রের বীভৎসতাকে যেন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কিভাবে তিনি বলতে পারলেন, ‘গাজায় কোনো নিরপরাধ মানুষ নেই।’ বিক্ষুব্ধ মানুষ যাদের হাতে পাথরের টুকরা ছাড়া কিছু নেই, তাদের জন্য নামানো হয়েছে অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক! এই হলো কুশনার-নেতানিয়াহুর ‘মানবাধিকার’!

এই ঘটনায় তুরস্ক প্রতিবাদ জানিয়েছে সবচেয়ে বেশি। তুরস্ক ইসরাইলি দূতকে বহিষ্কার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের রাষ্ট্রদূতকে নিজ দেশে তলব করেছে। ইসরাইল-তুরস্ক সম্পর্কের অবনতি হয় মাভি মারমারা আক্রমণের পর থেকে। যদিও ইসরাইল ক্ষমা চাওয়ার পর ২০১৬ সালে পুনঃ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। সোমবারের ঘটনায় তুরস্ক এই দিনকে ‘ব্ল্যাক মানডে’ ঘোষণা করেছে এবং রমজানের প্রথম শুক্রবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ফতেহ উল্লাহ গুলেনকে ফেরত না দিলে তুরস্কে যুক্তরাষ্ট্রের ইনজারলিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে। তুরস্কের সাথে ইরান পাকিস্তানও সোচ্চার হয়েছে। পাকিস্তানের বিরোধী নেতা সিরাজুল হক বলেছেন, মুসলমানরা কঠোর না হলে মক্কা ও মদিনার মতো পবিত্র স্থানগুলোও ইহুদিদের দখলে যাবে। তুরস্ক বহু আগেই ‘ইসলামি আর্মি’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেটি তিনি আবার উপস্থাপন করলেন ওআইসির বিশেষ সম্মেলনে। আরব বা মুসলিম বিশ্বের এই দুর্দিনে সৌদি প্রিন্সের এগিয়ে যাওয়ার কথা। কয়েকদিন ধরে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। সম্ভবত তিনি এরূপ ঘটনা আঁচ করতে পেরেছিলেন, তাই ছুটি কাঠানোর জন্য সুদূর মিসরে গেছেন।

ইসরাইল স্বাধীনতা ঘোষণা করে ফিলিস্তিনে, আরব মুসলমানদের জমিতে। তখন যুক্তরাজ্যের ওকালতিতে জাতিসঙ্ঘ পার্টিশন প্ল্যান অব প্যালেস্টাইন, ১৮১-২ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এই অপরাধমূলক বিভক্তি করে। ১৯৪৮ সাল সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা করা হয়। তখনই লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুহারা হয়। ৭০ বছর ধরে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিতাড়ন ও ধ্বংস করে আসছে। জাতিসঙ্ঘ দুঃখ প্রকাশ করেছে, ইসরাইল বিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইসরাইল কিছুই শুনেনি, জাতিসঙ্ঘ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি বা নেয়নি। জাতিসঙ্ঘ ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞকে যেন অনুমোদন দিয়েছে। ২০ লাখ মানুষকে উন্মুক্ত নির্যাতন ক্যাম্পে রেখেছে, যার নাম গাজা। পাকিস্তানের বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, জাতিসঙ্ঘ এখন আমেরিকার গোলামে পরিণত হয়েছে। সংস্থাটি ইহুদিবাদীদের স্বার্থ নিশ্চিত করাকেই নিজের দায়িত্ব বলে মনে করছে। তুরস্কের এরদোগান বলেছেন, কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারায় জাতিসঙ্ঘ মূলত শেষ হয়ে গেছে, ভেঙে পড়েছে।
টাইমস অব ইসরাইলের সংবাদে প্রকাশ- গাজায় ইসরাইলি সেনাদের ফিলিস্তিনি হত্যার ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘ হিউম্যান রাইট কাউন্সিলের তদন্তে ইসরাইল কোনো ধরনের সহায়তা করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া এই তদন্তের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। ইতিহাসের পাতা খুঁজলে দেখা যাবে, ইতঃপূর্বে জাতিসঙ্ঘ যখন ইসরাইলবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আগেভাগেই ইসরাইল না করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এখন জাতিসঙ্ঘের আঙ্গুল চোষা ছাড়া আর কী উপায় আছে? ইসরাইল ইউএনএইচসিআরের সদস্য দেশ নয়। ইসরাইলি ডিফেন্স মিনিস্টার লিবারম্যান যুক্তরাষ্ট্রকে এটি ছেড়ে আসতে বলেছেন। নিক্কি হ্যালিও সংগঠনকে এক হাত দেখে নিয়েছেন।

রমজানের শুরুতে আরব আমিরাত ও কয়েকটি আরব দেশ গাজা ও আল-আকসাকেন্দ্রিক মুসল্লিদের জন্য ইফতারসামগ্রী ও রাতের খাবার পাঠিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা তা গ্রহণ করেনি। ফিলিস্তিনিরা তাদের ওয়েবসাইটে জানায় ‘আমরা ক্ষুধার্ত নই’। আমিরাত প্রতি বছর ইফতার পাঠায়। এবারই প্রথম এসব খাবার ফেরত দেয়া হচ্ছে। যেখানের মানুষ ৮০ শতাংশ খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল তারাই এমন কথা বলছেন। কত দুঃখবোধ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া তা ভেবে দেখার বিষয়। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমে জানা যায়, ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ তিন হাজার আহত গাজাবাসীকে চিকিৎসার জন্য দুই ট্রাক ওষুধ পাঠিয়েছে। গাজার হামাস ও সাধারণ জনগণ এই সেবা প্রত্যাখ্যান করেছে। ফিলিস্তিনিরা এসব দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ইহুদিদের নীতি ‘আগে গুলি করো, পরে চিকিৎসা দাও।’

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement