২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শারাপোভার উত্থান পতন ও বিদায়

শিরোপা হাতে মারিয়া শারাপোভা : ফাইল ছবি -

পারফরম্যান্সে তিনি সবার সেরা ছিলেন না, আবার তার চেয়ে বেশি গ্ল্যামার নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে অনেকে এসেছেন বিভিন্ন সময়ে; কিন্তু গ্ল্যামার আর পারফরম্যান্স একসাথে মিশে তাকে আলাদা করেছে অন্যদের চেয়ে। আর এ কারণেই মারিয়া শারাপোভা ক্যারিয়ারজুড়ে ছিলেন আলোচনায়। আলোচনায় থাকার কারণ আরো আছে। ১৭ বছর বয়সে গ্র্যান্ডস্লাম জিতে যেমন দুনিয়াকে চমকে দিয়েছেন; তেমনি নাম উঠেছে ডোপ পাপীদের তালিকায়ও।
বিদায় বেলায় আলোচনাটা কি কম হচ্ছে! ডোপ কেলেঙ্কারির পর ফিরে আগের সেই ছন্দটা ঠিক খুঁজে পাননি, চোটও ভুগিয়েছে অনেক। গত মাসে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে হয়েছে ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে। সেখানেও যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স; এই ছন্দহীন ক্যারিয়ারটা আর টানতে চাননি রুশ টেনিস সুন্দরী। চারটি গ্র্যান্ডস্ল্যামসহ ৩৬টি শিরোপা জেতা শারাপোভা ভোগ অ্যান্ড ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনে এক কলাম লিখে জানিয়ে দিয়েছেন বিদায়ের কথা।
বিস্ময়কর উত্থান : ১৯৮৭ সালের ১৯ এপ্রিল রাশিয়ায় জন্ম মারিয়া শারাপোভার। চেরনবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার কারণে শারোপোভা মায়ের গর্ভে আসার পর তার মাকে সাইবেরিয়ায় পাঠানো হয় নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে। সেখানেই জন্ম তার। ৯ বছর বয়সে পরিবারের সাথে রাশিয়া থেকে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ফ্লোরিডার স্থানীয় নিক বলেত্তিয়েরি টেনিস একাডেমিতে টেনিসে হাতেখড়ির পর পেশাদার খেলায় আসেন ২০০১ সালে। ২০০৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জেতেন উইম্বলডন। টেনিসের উন্মুক্ত যুগে মার্টিনা হিঙ্গিসের পর তিনিই সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে জিতেছেন উইম্বলডন। পরের বছর উঠে যান মেয়েদের র্যাংকিংয়ের এক নম্বরে। ২১ বছর বয়সেই নামের সাথে জুড়ে যায় তিনটি গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা জেতার গৌরব। ক্লে কোর্ট, গ্রাস কোর্ট, হার্ড কোর্টÑ সব জায়গাতেই খেলেছেন দাপটের সাথে।
যে কারণে স্পন্সরদের লাইন পড়ে যায় তার পেছনে। বিশ্ব-মিডিয়াও ছিল শারাপোভা বলতে পাগল। সব কিছু মিলে তাই অল্প দিনেই হয়ে উঠেছিলেন মহাতারকা। দু’হাতে আয় করতে থাকেন। বিখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসাবে টানা ১১ বছর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী নারী খেলোয়াড় হয়েছিলেন শারাপোভা। এই সময়ে আয় করেছেন প্রায় চার কোটি মার্কিন ডলার। অথচ তার বাবা যখন তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেনÑ সম্বল ছিল মাত্র ৭০০ ডলার।
মুদ্রার উল্টোপিঠ : কিন্তু কিছু দিন পরেই দেখতে হয় মুদ্রার উল্টোপিঠ। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ডোপ টেস্টে তার শরীরে নিষিদ্ধ ড্রাগের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যদিও শারাপোভা বলেছেন, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনেই তিনি ওই ওষুধ সেবন করেছেন। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক টেনিস সংস্থা তাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে। আপিলের পর তার নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনা হয় ১৫ মাসে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে আবার কোর্টে ফেরেন। অক্টোবরে জেতেন তিয়ানজিন ওপেন টেনিসের শিরোপা।
তবে ফেরার পর সময়টা সুখকর ছিল না। ইনজুরির পাশাপাশি ছিল অফ ফর্ম। ক্যারিয়ারের শেষ তিনটি গ্র্যান্ডস্ল্যামে (উইম্বলডন ২০১৯, ইউএস ওপেন ২০১৯ ও ২০২০ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে) প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেন ৩২ বছর বয়সী শারাপোভা।


আরো সংবাদ



premium cement