২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মাবিয়ার অলিম্পিক আক্ষেপ কি ঘুচবে?

-

টানা দুই এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী ক্রীড়াবিদ। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা খেলোয়াড় হিসেবে একক ইভেন্টে এই অর্জন মাবিয়া আক্তার সীমান্তকে নিয়ে গেছে ভিন্ন উচ্চতায়। শুরুটা ২০১৬ সালের শিলং- গৌাহটি এসএ গেমসে। মহিলা ভারোত্তোলনে বাংলাদেশকে এনে দেন প্রথম স্বর্ণ। সে সাফল্য ধরে রাখেন গত ডিসেম্বরের কাঠমান্ডু পোখরা এসএ গেমসে। আবারো দেশের জাতীয়সঙ্গীত বাজান পদক প্রদান অনুষ্ঠানে। ২০১৬ সালে স্বর্ণপদক জয়ের পরও রিও অলিম্পিকে অংশ নেয়া হয়নি মাবিয়ারও। এবার কি টোকিও অলিম্পিকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ মিলবে তার?
২০১৬-এর রিও অলিম্পিকে অংশ নেয়াটা প্রায় ঠিক ছিল মাবিয়ার। ওয়াইল্ড কার্ড পেয়ে তার যাওয়ার কথা ছিল ব্রাজিলের বিখ্যাত এই পর্যটন শহরে; কিন্তু বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনে নির্বাচিত কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটিকে দায়িত্ব দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এতে ক্ষুব্ধ আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশন। ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ ভারোত্তোলন দল। তাই অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড হওয়া সত্ত্বেও রিও অলিম্পিকে অংশ নেয়া হয়নি মাবিয়ার। তার বিকল্প হিসেবে শ্রীলঙ্কার ভারোত্তোলককে সুযোগ দেয়া। জানান বাংলাদেশ ভারোত্তোলনের সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। এবার টোকিও অলিম্পিক গেমস ঘিরে হতাশায় পুড়তে হবে না তো মাবিয়াকে। এ ক্ষেত্রে আশার বাণী শোনলেন মহিউদ্দিন। ‘বলতে পারেন ৯০ শতাংশ নিশ্চিত মাবিয়ার টোকিও অলিম্পিকে যাওয়া।’ এই কথা বলার সময়ই ফেডারেশনে এলো চিঠি, যাতে মাবিয়ার জন্য টোকিও অলিম্পিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের প্রক্রিয়া সংক্রান্ত তথ্য।
মাবিয়ার মতোই রিও অলিম্পিকে অংশ নেয়া হয়নি মাহফুজা খাতুন শীলার। ২০১৬ সালের এসএ গেমসে বাংলাদেশকে সাঁতারে দুই স্বর্ণ উপহার দেন তিনি। তার এই সাফল্যও মহিলা হিসেবে প্রথম। এরপরও শীলার রিও অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে না পারার কারণ ঠিক এর আগের বিশ্বসাঁতারে না যাওয়া। সাঁতার ফেডারেশন পাঠায়নি তাকে। ফলে তার বদলে রিও যান সোনিয়া আক্তার। এবার মাবিয়া হতে পারবেন তো অলিম্পিয়ান? মহিউদ্দিনের দেয়া তথ্য, ‘বাংলাদেশের ভারোত্তোলকদের ভরসা একটাই, ওয়াইল্ড কার্ড। এ জন্য যে যে আসরে খেলতে হয় এবং পারফরম্যান্সের যে উন্নতি সবই ইতিবাচক মাবিয়ার। তাই ধরে নিতে পারেন এখন পর্যন্ত তার টোকিও যাওয়াটা ৯০ শতাংশ নিশ্চিত।’
টোকিও অলিম্পিকের আগে আরেকটি এশিয়ান ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেবেন মাবিয়া। তা ১৬-২৬ এপ্রিল উজবেকিস্তানের তাশখন্দে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে। মাবিয়া এবং তার কোচ ফারুক আহমদে সরকার যাবেন মধ্য এশিয়ান এই দেশে। টোকিও অলিম্পিকেও এ দুইজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই অংশ নেয়াটাকে বেশ ইতিবাচকভাবে দেখে আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশন। মহিউদ্দিনের মতে, ‘মাবিয়া বিগত সময়ে উজবেকিস্তান, থাইল্যান্ড, কাতারে অনুষ্ঠিত এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং উত্তর কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করেন। আন্তর্জাতিক বডি দেখেÑ কোন কোন খেলোয়াড় সব আসরে অংশ নিচ্ছে এবং তাদের পারফরম্যান্স। এই হিসাবেই এগিয়ে আছেন মাবিয়া।’ তিনি যোগ করেন, তারাই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে (আইওসি) জানাবে কে পাবে ওয়াইল্ড কার্ড।
মাবিয়াও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন অলিম্পিয়ান হওয়ার জন্য। জানান, ‘রিও অলিম্পিকে যেতে না পেরে খুব কষ্ট লেগেছিল। এখন অপেক্ষায় আছি টোকিও অলিম্পিকের ওয়াইল্ড কার্ডের জন্য।’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন মাবিয়াসহ আবদুল্লাহ হেল বাকী, আতকিয়া হাসান দিশা, হুমায়ারা আক্তার অন্তরা, রবিন মিয়া, ইতি খাতুন, বিউটি রায় এবং মেহনাজ আক্তার মনেরার জন্য ওয়াইল্ড কার্ড চেয়েছে আইওসির কাছে। মার্চ-এপ্রিলে চূাড়ন্ত হবে বিষয়টি।

 


আরো সংবাদ



premium cement