১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুমিনুল বিশ্বমানের অধিনায়ক Ñমুশফিক

-

মিস্টার ডিপেন্ডেবল উপাধিটা আগেই পাওয়া মুশফিকুর রহীমের। গতকাল সেটিকে আরো একবার আস্থার সাথে মনে করিয়ে দিলেন। দুই শ’ রান করার পর মনের গহিনে ৩০০ রানেরও একটা স্বপ্ন উঁকিঝুঁকি মারছিল; কিন্তু হঠাৎ করেই বার্তা এলো ইনিংস ঘোষণা করার। গতকাল ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সমেমলনে ২২ মিনিটের কথোপকথনে জানালেন অনেক কিছু।
স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। তবে জানিয়ে দিলেন তিন শ’ রানও করা সম্ভব। মুশফিক জানালেন, ‘চা-বিরতীর সময় জানতাম না ইনিংস ডিক্লেয়ার করতে হবে। রান করতে হবে সে ভাবনায়ই এগোচ্ছিলাম। দুই শ’ হওয়ার কিছু আগেই জানানো হলোÑ সাত-আট ওভার বাকি থাকতেই ডিক্লেয়ার করতে হবে। ভেবেছিলাম আগামীকাল (আজ) সকাল পর্যন্ত তিন শ’র টার্গেট হয়ে যাবে; কিন্তু সুযোগটা পেলাম না।’ মুমিনুলকে মূল্যায়ন করে বলেন, ‘ও সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান’।
‘আমি মনে করি টেস্টে নেতৃত্বের জন্য সে উপযুক্ত ব্যক্তি। ওর পার্সনালিটি বলেন, কিংবা যত ছোটোই হোক সে বিশ্বমানের। ও কিন্তু অনেক প্রেসারে ছিল। সেখান থেকে এসে এমন ইনিংস খেলা অসাধারণ। আমি ওর সাথে সব সময় যেকোনো ইনিংসে এনজয় করি। আমার আগের ডাবল সেঞ্চুরি ওর সাথে ছিল। তার সাথে অনেকক্ষণ ব্যাটিং করার সৌভাগ্য হয়েছে। আমার মনে হয়, সে চ্যাম্পিয়ন প্লেয়ার। এই ধরনের প্লেয়াররা তখনই কামব্যাক করে যখন সে চাপে থাকে। আমাদের সাপোর্ট পেলে ভবিষ্যতে সে আরো ভালো করবে।’ মিরপুর টেস্টে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তুলে নিয়েছেন তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। মুশফিক ছাড়া বাংলাদেশে আর কারো নেই দু’টি দ্বি-শতকের কৃতিত্ব। তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান করেছেন একটি করে ডাবল সেঞ্চুরি। স্বাভাবিকভাবেই ডাবল সেঞ্চুরির উদযাপনটাও খাপছাড়াই করেছেন। অমন উদযাপনের ব্যাখ্যা দিলেন মুশফিক, ‘আমার ছোট ছেলে (মায়ান) ডায়নোসরের খুব ভক্ত। তাই তাকে উদ্দেশ করে অমন ভঙ্গি করেছি।’
তামিমের সাথে বরাবরই একটা ভদ্রোচিত বিরোধ আছে। রেকর্ডে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন। বিশেষ করে তামিমকে টপকে কেমন লাগছে, ‘সত্যি বলতে আমি কিছু না জানলেও তামিম ঠিকই সব খবর রাখে। তবে আমরা একে অপরকে সব সময়ই উৎসাহ দিই। নিঃসন্দেহে তামিম সেরা ব্যাটসম্যান। গতকালই সে তের হাজার রান ছাড়াল। ওর সাথে সব সময় একটা প্রতিযোগিতা থাকে আমার। যেকোনো দলে এমন একটা প্রতিযোগিতা থাকলে সেটি দলের জন্যই ভালো। আমি মনে প্রাণে চাই, ও যেন হাই স্কোরার হয়। এটাও চাই যে, ওর চেয়ে এক রানও বেশি যেন করতে পারি (হাসি)।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬ উইকেটে ৫৬০ রান করে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় ৭ উইকেটে ৫২২ রান।
আর ২০১৩ সালের মার্চে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান ১০ উইকেটে ৬৩৮ রান। এ বিষয়ে মুশফিক বলেন, ‘আসলে এটি ডিক্লেয়ার দিয়ে কেউ করতে পারবে না। সময় অনুকূলে থাকলেই কেবল সম্ভব। ব্যাক্তিতগত সংগ্রহ বড় হলেই দলীয় সংগ্রহ বড় হবে। সে জন্য প্রতিটি ব্যাটসম্যানকেই সেরাটি দেয়ার জন্য লড়তে হবে। আমরা যেমন আগামীকাল সকালের সেশন পর্যন্ত সুযোগ পেলে ওরকমই কিছু একটা হতো।’
উইকেট নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘আমি মনে করি যে সবচেয়ে সহজ উইকেট ছিল। ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেটটা অনেক আদর্শ। ওদের খুব বেশি আহামরি থ্রেট বোলার ছিল না। সুইং, রিভার্স সুইং বা স্পিন করছিল এমন বোলার নেই। তাই একটু ইজি মনে হয়েছে।’ সেঞ্চুরি করার প্রেসার ছিল কি না, জানতে চাইলে মুশফিক বলেন, ‘একাদশে যখন খেলব কিভাবে বেশি অবদান রাখতে পারি, জয়ের জন্য সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর একটা টার্গেট ছিল উইকেট যেহেতু খুব ভালো আমাদের একটা টিম প্ল্যানিং ছিল টপ সিক্সের মধ্যে যেই সেট হবে, আমরা ১০০, ১৫০ কিংবা ২০০ এ রকম করতে পারি। মুমিনুল অনেক চেষ্টা করেছে, অনেক ভালো ব্যাটিং করেছে, শান্তও ভালো ব্যাটিং করেছে টপে। আমি সেট হয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করতে পেরেছি।’ কিপিং নিয়ে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান বলেন, ‘এইটা তো আরো প্রেসার (শুধু ব্যাটিং)। আগে তো দুইটা ছিল একটু হেল্প করা যেত। এটা তো একটা মাত্র সাইট (ব্যাটিং)। আমি তো বোলিংও পারি না। বাস্তবতা অবশ্যই মানতে হবে, আমার যে বয়স হচ্ছে এইটাও মানতে হবে। ফিল্ডিংয়ে থাকলে আমি রিল্যাক্স থাকতে পারি, এ জন্য ফোকাসটা আমি ব্যাটিংয়ে আরো বেশি দিতে পারি। প্রত্যেকটি ইনিংস আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ; কারণ এই সময়গুলো আমি আর ফিরে পাবো না। আশা করছি যতটুকু ভালো খেলা যায়। ১০০, ১৫০ কিংবা ২০০, নট-আউটও যেন থাকতে পারি। অনেকসময় আমি কিপিং করে ভালো ব্যাটিং করেছি। কিপিংয়ে উইকেটের পেছনে থেকে আমাকে অনেক কিছুতে সাহায্য করেছে, যেটা আমি এখনো ফিল করি; কিন্তু এখন আমাকে ইনফরমেশন নিতে হয় লিটন থেকে। ফিল্ডিংয়ে থাকলে আমি অনেক বেশি রেস্টে থাকতে পারি। তবে আমি কিপিংটা এখনো অনেক মিস করি।’ নিজের অনুশীলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলাররা অন্যদের ৫ বা ১০ ওভার বোলিং করে আর আমাকে ১৫ থেকে ২০ ওভার বোলিং করতে হয়। কারণ আমি একবার নেটে ঢুকলে আর বের হতে চাই না। আমি খুব ভাগ্যবান যে, আমি যখনই চাই তারা আমাকে বোলিং করে। আমি যদি আউট হয়ে যাই, তাহলে পরের দিন আমি আরো ভালো করতে চাই। তো এসব আমি ফিল করি আমার ক্ষেত্রে।’
নিজের সমালোচনা করে মুশফিক বলেন, ‘আমি যখন আমার ব্যাটিংয়ের রিপ্লে দেখি বা আমি হাইলাইটসগুলো দেখি তখন মনে হয় ইশ্ যদি তামিমের মতো ওই ড্রাইভটা খেলতে পারতাম। বা সাকিবের মতো যদি এই কাটটা খেলতে পারতাম। অনেক কিছুই মনে হয় তামিম পারে আমি কেন পারি না। আল্লাহ সবাইকে সব কিছু দেয় না। আমি সব সময় ইউটিলাইজেশনের চেষ্টা করি। ভুলগুলো থেকে যেন শিখতে পারি এই কাজটা করি।’

 


আরো সংবাদ



premium cement
বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হলেন বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম পাবনায় ১২ ট্রাক ভারতীয় চিনি জব্দ, আটক ২৩ শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত চকরিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩ গাজা মানবিক নরকে পরিণত হয়েছে : জাতিসঙ্ঘ প্রধান রাফা হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের ত্যাগ করা উচিত : চীন গাজা যুদ্ধে নতুন যে কৌশল অবলম্বন করল ইসরাইল হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতক শিশু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিসিডিপি গঠন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর

সকল