২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ক্রিকেট ছাড়া বাকি টিম ইভেন্টে ব্যর্থতা

-

কোচ ম্যানেজার আর কর্মকর্তা মিলে ৫৯৪ জনের বহর নিয়ে এবারের এসএ গেমসে অংশ নেয় বাংলাদেশ। আসর শেষে ১৯ স্বর্ণ, ৩২ রৌপ্য আর ৮৭ ব্রোঞ্জপদক বাংলাদেশী ক্রীড়াবিদদের গলায়। স্বর্ণ জয়ে এবার রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালে তা ছিল ১৮টি। এবার ছাড়িয়ে গেছে। আপাতত এই সুখস্মৃতিই আগামীতে চলার উপলক্ষ। তবে এবারের গেমসে বাংলাদেশের ব্যর্থতা টিম ইভেন্টেই। একমাত্র ক্রিকেটের দুই ইভেন্ট ছাড়া বাদ বাকি টিম ইভেন্টে পুরুষ খো খো দল ছাড়া অন্যরা কাক্সিক্ষত সাফল্য পায়নি। বাংলাদেশ পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেট দল স্বর্ণ জিতলেও অন্যদের পক্ষে এই কৃতিত্ব অর্জন করা সম্ভব হয়নি। টিম ইভেন্টে ক্রিকেটের পর পুরুষ ফুটবলে স্বর্ণের টার্গেট করা হয়েছিল। তবে তাদের পক্ষে ২০১৬ সালের গেমসের ব্রোঞ্জপদকেই আটকা।
ক্রিকেট ও পুরুষ ফুটবল দল ছাড়া এবারের এসএ গেমসে বাংলাদেশ ভলিবল, কাবাডি, বাস্কেটবল এবং খো খোতে টিম ইভেন্টে অংশ নেয়। তা পুরুষ ও মহিলা সব বিভাগেই। এদের মধ্যে কোনো পদকের দেখা পায়নি ভলিবল ও বাস্কেটবল। এই দুই ডিসিপ্লিনে তিন বিভাগে দল পাঠানো হলেও কেউই পুরস্কার প্রদান মঞ্চে উঠতে পারেনি। মহিলা ভলিবল এবং মহিলা বাস্কেটবল অবশ্য একেবারে নতুন দল। সবার আগে এবারের গেমস থেকে খালি হাতে ফেরে ভলিবল দল। তারা পুরুষ, মহিলা এবং বিচ ভলিবলে অংশ নেয়। বাস্কেটবলে পুরুষ, মহিলা এবং থ্রি-অন থ্রি বিভাগে প্রতিনিধিত্ব করেও পদকশূন্য।
কাবাডিতে দুই বিভাগেই রৌপ্য ছিল ন্যূনতম টার্গেট। তবে তাদের ফিরতে হয়েছে ব্রোঞ্জপদক জিতে। পুরুষ দল তাদের ২০১৬ সালের ব্রোঞ্জপদক ধরে রাখলেও মহিলা দল গতবারের ব্যর্থতা কাটিয়ে ব্রোঞ্জের সন্ধান পেয়েছে। শিলং-গৌহাটিতে মহিলা দল ছিল পদকশূন্য। এবারের পুরুষ ও মহিলা খো- খোতে রৌপ্যপদক ধরে রাখার টার্গেট ছিল। পুরুষ দল তাদের রৌপ্য ধরে রাখলেও মহিলা দল তা হারিয়েছে। নেপালের কাছে হেরে এই সুযোগ নষ্ট। তবে শেষ পর্যন্ত ব্রোঞ্জ জিতে সান্ত¡না।
গতবারের চেয়ে বাজে রেজাল্ট হ্যান্ডবলে। শিলং- গৌহাটিতে পুরুষ হ্যান্ডবল দল ব্রোঞ্জ এবং মহিলা দল রৌপ্য জয় করেছিল। কিন্তু এবার মহিলা দল রৌপ্য হারিয়ে ব্রোঞ্জ গেলেও পুরুষ দল ব্রোঞ্জ পদকও পায়নি।
ফুটবলে পুরুষ দল স্বর্ণের মিশন নিয়েও নেপাল ও ভুটানের কাছে হেরে এবং মালদ্বীপের সাথে ড্র করে সেই স্বপ্ন বিসর্জন দেয়। শেষ পর্যন্ত ব্রোঞ্জে সান্ত¡না। মহিলা ফুটবলে ব্রোঞ্জপদক এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। কিন্তু তারা বাজে ফলাফলের আশঙ্কায় দলই পাঠায়নি। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ফুটবলে এই দুই বিভাগেই ব্রোঞ্জ আসে।
পদক না জিতলেও এই সব ডিসিপ্লিনে দল না পাঠানোটা কোনা ভালো সিদ্ধান্ত নয়। অবশ্যই এই সব ইভেন্টে দল পাঠাতেই হবে। এস এ গেমসইতো বেশী করে দল পাঠানোর ভালো মঞ্চ। তবে এরা যেন ভবিষ্যতে আরো ভালো প্রস্তুতি নিয়ে যেতে পারে লক্ষ্য রাখতে হবে সে দিকে। মহিলা খো-খো তে রৌপ্যপদক হারানোর কারণ ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ খো খো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাবুল বলেন, আমাদের চেয়ে নেপালের প্রস্তুতি ছিল বেশি। তাদের এক বছরের প্রশিক্ষণ। আমাদের ছয় মাসের। তা ছাড়া খেলা হয়েছে ম্যাটে।
তবে টিম ইভেন্টে দল পাঠানোর আধিক্যের কারণে ব্যক্তিগত ইভেন্টে ক্রীড়াবিদ পাঠানোর ক্ষেত্রে কাটছাঁট করা হয়। এবার ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ জেতা এক ফেডারেশনের কর্মকর্তা ক্ষোভের সাথে জানান, আমরা এসএ গেমসে দেশকে এই পর্যন্ত কতটা স্বর্ণ এনে দিয়েছি দেখুন। এরপরও যত প্রতিবন্ধকতা আমাদের জন্যই। যত সুযোগ সুবিধা টিম ইভেন্টে। তাদের জন্য ক্রীড়া পরিষদের বাজেটও বেশি বরাদ্দ। কিন্তু তারা কী দিতে পেরেছে। এরপরও তাদের সুবিধা বেশি কারণ, সেই সব ফেডারেশনের কর্মকর্তারই বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে।


আরো সংবাদ



premium cement