১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নেপালের কাছে হেরে বাংলাদেশের ব্রোঞ্জ

নেপাল ১ : ০ বাংলাদেশ
-

নেপালের বিপক্ষে জিতলে ৪০ হাজার ডলার পুরস্কার। কাল ম্যাচের আগে এই ঘোষণা দিয়েছিল বাফুফে। এই উৎসাহজনক ঘোষণাও উদ্দীপ্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ দলকে। নেপালের মাঠে তাদের বিপক্ষে সেমিফাইনাল তুল্য ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের। ভুটানকে ফাইনালে পেতে কাল কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে জিততেই হতো জামাল ভূঁইয়াদের। অন্য দিকে নেপালের প্রয়োজন ছিল ড্র। কিন্তু জয়ের মতো খেলাই খেলতে পারেনি জেমি ডের শিষ্যরা। অন্য দিকে হোম গ্রাউন্ডে নিজস্ব গ্যালারি ভর্তি দর্শকের উপস্থিতিতে স্বাগতিকেরা ছিল জয়ের জন্য মরিয়া। ম্যাচ শেষে সেই জয়ই ধরা ছিল নেপালিদের হাতে। বাংলাদেশকে ১-০ গোলে হারিয়ে নেপাল এখন এসএ গেমস ফুটবলে স্বর্ণ ধরে রাখার শেষ লড়াইয়ে। অন্য দিকে বাংলাদেশ দলকে গতবারের মতো এবারো ব্রোঞ্জেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। আগামীকাল ফাইনালে স্বর্ণের লড়াইয়ে নেপাল ও ভুটান।
লিগ ম্যাচে ভুটানিদের ৪-০তে উড়িয়ে দিয়েছিল নেপাল। ওই ফলাফলই বলে দিচ্ছে এবারো স্বর্ণ পদক থাকতে পারে নেপালের দখলে। অন্য দিকে সাফ বা এসএ গেমস ফুটবলে ইতিহাসে এই প্রথম পদকের দেখা পাচ্ছে ভুটান। গত পরশু ভুটান ৩-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে। কাল বাংলাদেশকে হারিয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবে ফাইনালে গেল নেপাল। ভুটানের পয়েন্ট নয়। আর বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ জিতেছে চার পয়েন্ট পেয়ে। ম্যাচের ইনজুরি টাইমে লাল কার্ড পেয়ে মাঠ থেকে বহিষ্কৃত হন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে তার মাঠ ছাড়তে বাধ্য হওয়া।
জামাল-জীবনদের ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত হয়েছিল গত পরশুই। তা নেপাল ও ভুটানের বদান্যতায়। গত পরশু নেপাল ২-১ গোলে মালদ্বীপকে এবং ভুটান শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে। ফলে ব্রোঞ্জ পদকের লড়াইয়ে বাংলাদেশের এই দুই প্রতিপক্ষের বিদায় ঘটে। ভুটানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের বিপক্ষে মালদ্বীপ যদি জিতে যেত তাহলে বাংলাদেশ হয়তো ২০০৪ ও ২০০৬ এর মতো এবারো কোনো পদকের দেখা পেত না।
জিততেই হবে এই মিশনে কাল নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশে দু’টি পরিবর্তন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের নায়ক মাহাবুবুর রহমান সুফিলকে একাদশের বাইরে। এমনকি তার নাম ছিল না খেলোয়াড় তালিকাতেও। তাব বদলে অফ ফর্মের নাবিব নেওয়াজ জীবনইে স্ট্রাইকিং পজিশনে কোচের আস্থা। ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাতের বদলে খেলানো হয় আল আমিনকে। তবে কেউই বাংলাদেশ দলকে মহামূল্যবান জয় এনে দিতে পারেননি। বিরতির পর অবশ্য তুলে নেয়া হয় জীবনকে।
ম্যাচের ১১ মিনিট বয়সেই পিছিয়ে পড়ে ১৯৯৯-এর সাফ গেমস এবং ২০১০ সালের এসএ গেসমে স্বর্ণ জয়ী বাংলাদেশ দল। ডিফেন্স লাইনের অসতর্কতায় নেপালি ক্যাপ্টেন সুজল শ্রেষ্ঠার কাট ব্যাকে সুনিল বালের প্লেসিং শট বাংলাদেশের জালে। তার দুর্বল সেই শট বাম দিকে শরীর ফেলা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর হাতের বাধা ডিঙ্গিয়েই গোললাইন অতিক্রম করে। এরপর বাংলাদেশ দল চেষ্টা করেও সমতা আনতে পারেনি। তবে খেলায় ফিরতে যে ধরনের মরিয়া আক্রমণ দরকার ছিল তা আর করা সম্ভব হয়নি লাল-সবুজদের পক্ষে। ১৭ মিনিটে রবিউলের লম্বা থ্রোতে সাদ উদ্দিন পোস্টে শট নেন। তা বিপক্ষ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে প্রতিহত হওয়ায় গোলবঞ্চিত জামালরা।
ড্রতেই চলবে। এরপরও লিড নিয়ে রক্ষণাত্মক খেলেনি নেপাল। তাদের আক্রমণাত্মক ফুটবলে ৫৬ ও ৬৪ মিনিটে ব্যবধান বৃদ্ধির সুযোগ আসে। সুনীল বালের সেই দুই প্রচেষ্টা পোস্ট ঘেঁষে গেলে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। এরপর সবার প্রত্যাশা ছিল হয়তো বাংলাদেশ সমতা এনে জিতবে। ফিরে আসবে ১৯৯৯ সালে এই দশরখ স্টেডিয়ামে ফুটবলে স্বর্ণ জয়ের সুখ স্মৃতির উপলক্ষ। তা আর হয়নি। ফলে দারুণভাবে বছর শুরু করা বাংলাদেশের ফুটবল ২০১৯-এর আন্তর্জাতিক ফুটবলে সমাপ্তির রেখা টানল ব্যর্থতা দিয়েই।


আরো সংবাদ



premium cement