১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হামিদুলের পর জিয়ারুল

-

পুরুষদের ভারোত্তোলনে এসএ গেমসে দীর্ঘ ৯ বছর পর আবারো স্বর্ণের দেখা পেল বাংলাদেশ। ২০১০ সালে ঢাকা এসএ গেমসে পুরুষ ভারোত্তোলনে বাংলাদেশের হামিদুল ইসলাম ৭৭ কেজিতে স্বর্ণজয় করেছিলেন। এবার ৯৬ কেজি ওজন শ্রেণীতে বিজয়মঞ্চে উঠলেন জিয়ারুল।
প্রাপ্তিতে উচ্ছল ছিলেন তিনি। কথাবার্তায় মুখ জড়িয়ে যাচ্ছিল। কি বলবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। খুশির আতিশয্যে জানালেন, ‘আমার জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নিয়েই স্বর্ণপদক জিতেছি। এ জন্য আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া। তিনি যাকে ইচ্ছে যখন খুশি সম্মানিত করতে পারেন। স্টেজে উঠার সময় এবং নামার সময় প্রতিবারই আল্লাহর নাম নিয়েছি। আর কোনো কিছু মাথায় ছিল না। বলেছি আল্লাহ তুমি আমাকে দেশের সম্মান রক্ষার জন্য সুযোগ দাও। আমি যেন লাল-সবুজের পতাকা উড়াতে পারি। সাফল্যের জন্য অনেক পরিশ্রম, কষ্ট, ধৈর্য ধরতে হয়, সেগুলো করেই এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে।’
ছেলেদের ৯৬ কেজি ওজন শ্রেণীতে স্বর্ণপদক জিতেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই ভারোত্তোলক। স্ন্যাচে তিন লিফটে জিয়ারুল তোলেন ১৩৫ কেজি। এরপর ক্লিন অ্যান্ড জার্কে তিন লিফটে তোলেন ২৬২ কেজি। এই ইভেন্টে রুপা জেতেন স্বাগতিক নেপালের বিশাল সিং বিস্ট। তিনি মোট তোলেন ২৪৭ কেজি ভার। ব্রোঞ্জজয়ী ভুটানের কেনলি গায়েলশেন তোলেন ১৭০ কেজি ভার। স্ন্যাচে জিয়ারুলের প্রতিদ্বন্দ্ব ১৩ কেজি পিছিয়ে থাকার পরই বুঝা গিয়েছে স্বর্ণ জিততে যাচ্ছেন তিনি।
ভারোত্তোলনে আসার গল্পে তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বড় ভাই ফরহাদ, মনোরঞ্জন রায়, বিদ্যুৎ দা, কোচ আনোয়ার হোসেনকে দেখেই ২০১০ সালে ভারোত্তোলনে আসি। এসএসসি পরীক্ষার কারণে কয়েক মাস ভারোত্তোলন থেকে দূরে থাকি। পরীক্ষার পর ফের অনুশীলনে ফিরি। সেনাবাহিনীর নজরে পড়ার পর চাকরি হয় সেখানে। সেখানে দেড়বছর ট্রেনিং করার পর আর্মি টিমে সুযোগ হয়। ২০১৮ সালে আন্তঃসস্থায় গোল্ড পাই। ২০১৯ সালে ময়মনসিংহে গোল্ড পাই। আর সাফে জীবনে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েই গোল্ড। পদক মঞ্চে সবার আগে মনে পড়েছে মহান রাব্বুল আলামিনকে। বাবার প্রেরণাতেই ভারোত্তোলনে আসা।’
দেশে ভারোত্তোলনে অবকাঠামো নিয়ে জিয়ারুল বলেন, ‘আমাদের প্রশিক্ষণের পরিবেশটা বাংলাদেশের তুলনায় ঠিক আছে। কিন্তু বিদেশের তুলনায় বাজে। এ দিকটায় নজর দিতে হবে ঊর্ধ্বতনদের। সরকারের কাছে চাওয়া আমাদের দীর্ঘমেয়াতে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়া হোক।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাফল্যের পেছনে হাত রয়েছে ফেডারেশনের সহসভাপতি মহিউদ্দিন স্যারের। এরপর নজরুল স্যার, ক্যাম্পেন সাফোয়ান আলমগীর, বুলু ভাই এবং আনোয়ার স্যারকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’


আরো সংবাদ



premium cement