১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাফুফে ছাড়লেন পল স্মলি

-

নিশ্চিত বাফুফের একটি পক্ষ দারুণ খুশি। যাদের কাছে ফুটবল উন্নয়নের চেয়ে ব্যক্তিগত জেদাজেদি আর হীনমানসিকতাই অগ্রগণ্য। এই পক্ষের জন্য ভালো খবর বাফুফের টেকনিক্যাল এবং স্ট্র্যাটিজিক্যাল ডিরেক্টরর পদ ছেড়ে দিলেন পল স্মলি। বিপরীতে ব্যথিত এবং উদ্বিগ্ন আরেক পক্ষ। যাদের কাছে দেশের ফুটবল উন্নয়নটাই একমাত্র গুরুত্ববহ। গতকালই বাফুফের দায়িত্ব ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে পেলে ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত পল। তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেল। তার ছোঁয়াতেই মহিলা ফুটবলে আজ এত উন্নত বাংলাদেশ। সে সাথে যেভাবে তিনি কোচদের প্রস্তুত করছিলেন, তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধের জন্ম দিয়েছেন ফাঁকিবাজদের বিদায় করে যোগ্যদের মূল্যায়ন করেছেন, তাদের এখন কি হবে সেটাও প্রশ্ন। কাল পলকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনতো বলেই ফেললেন, আমি সত্যিই উদ্বিগ্ন মহিলা ফুটবল নিয়ে। পলের অনুপস্থিতিতে কিভাবে সাবলীল গতিতে চলবে তা।
৩০ আগস্টই পলের সাথে বাফুফের দুই বছরের চুক্তি শেষ হয়। এরপর তাকে বলতে গেলে অ্যাডহক ভিত্তিতে এত দিন কাজ করছিলেন এই উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ। তবে অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা সাফে অংশ নিতে ভুটান যাত্রার আগেই তিনি চলে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন। শেষ পর্যন্ত গতকাল বাফুফে ভবনে কাজী সালাউদ্দিনের সাথে দীর্ঘ আলোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপনীত হন দুই পক্ষ। দায়িত্ব ছাড়া সম্পর্কে পলের জবাব, ‘আমার ক্যারিয়ারের স্বার্থে এবং খানিকটা অনিশ্চয়তায় বাফুফের চাকরি ছাড়লাম।’
এই অনিশ্চয়তাও ব্যাখ্যা করলেন পল স্মলি। ‘এপ্রিলে বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের মেয়াদ শেষ। এরপর নির্বাচনে তিনি সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হতে পারবেন কি না প্রশ্ন থাকেছ। তাই সরে পড়া। তবে সালাউদ্দিন আবার নির্বাচিত হলে আমি ফিরে আসবো।’
বাংলাদেশের চাকরি ছেড়ে পল স্মলি এশিয়ারই যেকোনো দেশে কাজ নিচ্ছেন। তা নভেম্বরের শুরু থেকেই। তথ্য দেন সালাউদ্দিন। বাফুফে প্রেসিডেন্টের মতে, ‘পল সেই দেশের সাথে এভাবে চুক্তি করেছে, প্রয়োজনে যেকোনো মুহূর্তে সেই চাকরি ছেড়ে দিতে পারবেন।’ এটা বাফুফেতে আবার চাকরি করার জন্যই।
২০১৬ সালের জুনে বাংলাদেশে আসেন পল। তিনি টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজিক্যাল ডিরেক্টর হলেও মহিলা ফুটবলে সময় দিয়েছেন বেশি। অবশ্য মহিলা ফুটবলে লাল-সবুজদের টানা দুইবার এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে সেরা সাতে থাকা, একবার করে অনূর্ধ্ব-১৫ এবং অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সবই পল স্মলির কল্যাণে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল সাইডে তার দক্ষতার কারণে বয়সভিত্তিক দল এবং সিনিয়র দলের ফলাফল আজ এত ভালো হচ্ছে। উল্লেখ্য, তার আগমনের চার মাস পরেই ভুটানের কাছে জাতীয় দলের ১-৩ গোলে হারের সেই লজ্জা।
তার বিদায়ে বাফুফে এই পদে নতুন কাকে নেবে তা এখনও চূড়ান্ত করেনি বাফুফে। জানা গেছে পল স্মলি স্বল্পসময়ের জন্য নয়, চাচ্ছিলেন দীর্ঘ সময়ের চুক্তি। সাথে আরো বেশি বেতন। অবশ্য আর্থিক কোনো সমস্যা নেই বলে জানান বাফুফে সভাপতি। তবে তার মতে, ‘এই মুহূর্তে পলের বিদায় দেশের ফুটবলের জন্য বড় আঘাত।’
বাফুফের এর আগের সভায় পলকে এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ করার প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে পলের দাবি ছিল চার বছরের জন্য।

 


আরো সংবাদ



premium cement