সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের কাঠমান্ডুর এপিএফ স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ভারতের সাথে গোলশূন্য ড্র করে বাংলাদেশের যুব ফুটবলাররা। এ নিয়ে তিনবার খেলছে বাংলাদেশ। আগের দুইবার অংশ নিয়ে একবার ফাইনাল খেলেছে। সেই ফাইনালে হেরে রানার্সআপ। এখন পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ পাওয়া। গতকাল তৃতীয় আসরে তৃতীয় দল হিসেবে এবং এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সেমিতে নাম লিখিয়েছে লাল-সবুজ বাহিনী।
এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে ঘরের মাটিতে প্রায় তিন সপ্তাহ অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। দলে ডাক পাওয়া বেশির ভাগ খেলোয়াড় প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। ভারতের সাথে এই আসরে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ। ২০১৫ আসরে সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ৪-৩ (০-০) গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০১৭ আসরে লিগ ম্যাচে তিন গোলে পিছিয়ে থেকেও ভারতকে অবিশ্বাস্যভাবে ৪-৩ গোলে হারিয়ে প্রতিশোধটা কড়ায়-গণ্ডায় আদায় করে নিয়েছিল লাল-সবুজ বাহিনী। তৃতীয় সাক্ষাতে অবশ্য কেউই জেতেনি বা হারেনি।
গতকালের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল বাংলাদেশ। খেলায় দুই দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করে খেলে এবং একাধিক গোলের সৃষ্টি করে। কিন্তু দুই দলেরই রক্ষণভাগ সুদৃঢ় থাকায় আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা কোনো সুবিধা করতে পারেননি। পাশাপাশি ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতাও ছিল লক্ষণীয়। দুই দলই সমানতালে খেলায় ম্যাচটি হয়ে উঠেছে উপভোগ্য এবং হাড্ডাহাড্ডি।
দুই ম্যাচে ১ জয় ও ১ ড্রতে বাংলাদেশ চার পয়েন্ট নিয়ে আপাতত বি গ্রুপের শীর্ষে। এক ম্যাচে ১ ড্রতে ১ পয়েন্ট নিয়ে ভারত আছে দুইয়ে। আর ১ ম্যাচের ১টিতেই হেরে তিনে থাকা শ্রীলঙ্কা এখনো পয়েন্টশূন্য। তবে ভারত-শ্রীলঙ্কা উভয় দলেরই সেমিতে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে ভারত। শ্রীলঙ্কার সাথে ড্র করলেই চলবে তাদের। তা ছাড়া চার গোলে জিতলে গ্রুপসেরাও হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশকে গ্রুপ রানার্সআপ বানিয়ে। পক্ষান্তরে শেষ চারে নাম লেখাতে হলে ভারতকে হারানোর কোনো বিকল্প নেই লঙ্কাবাহিনীর। বাংলাদেশ তাদের প্রথম গ্রুপ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারায় ৩-০ গোলে।
ওই দিকে ‘এ’ গ্রুপে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেছে ভুটান এবং মালদ্বীপ। এক ম্যাচে ১ জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ভুটান আছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। সমান ম্যাচে ১ ড্রতে ১ পয়েন্ট নিয়ে মালদ্বীপের অবস্থান দ্বিতীয়। আর ২ ম্যাচে ১ ড্র ও ১ হারে ১ পয়েন্ট নিয়ে স্বাগতিক নেপাল আছে তিনে। ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে দুবারের চ্যাম্পিয়ন নেপাল। ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে তারা ফাইনালে হারিয়েছিল যথাক্রমে ভারত এবং বাংলাদেশকে। এখন মালদ্বীপ-ভুটানের মধ্যে লড়াইটা ¯্রফে আনুষ্ঠানিকতার হলেও মুজেজা রয়েছে গ্রুপসেরা হওয়ার।
২০১৫ সাল থেকে সাফের এই আসরটি হয়ে আসছে অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্ট নামে। প্রথম আসরে অংশ নিয়ে তৃতীয় হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১৭ সালে রানার্সআপ হয় তারা। এ বছর থেকে টুর্নামেন্টটি হচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ নামে।
বাংলাদেশ দল : শান্ত কুমার রায়, ইয়াসিন আরাফাত (অধিনায়ক), কাজী রাহাদ মিয়া, আমির হাকিম বাপ্পি, জমির উদ্দিন, ফাহিম মোরশেদ, দীপক রায়, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, রাকিবুল ইসলাম, নাঈম হোসেন, স¤্রাট আহমেদ (মিতুল মারমা)।