২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টি-২০ স্কোয়াডে নতুন চমক

টার্গেট পরবর্তী টি-২০ বিশ^কাপ, আফগানদের বিপক্ষে হারের পর উপলব্ধি
-

সমালোচনার তীরে ক্ষতবিক্ষত জাতীয় দল। বিসিবিকেও ছাড় দেয়া হচ্ছে না এর সাথে। এরপর নতুন কোচিং স্টাফের চ্যালেঞ্জ। পেছনের তাকানোর সময় নেই মোটেও। আগামী বছর টি-২০ বিশ^কাপ। মূলত টার্গেট সেটাই। ওই আসরে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না হলে স্টিভ রোডসের মতো বিদায় নিতে হবে সেটাও তারা জানেন। সব মিলিয়ে ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যেখানে ব্যর্থতার ঘানি টেনে যাচ্ছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারেরা অনবরত। বড় দলের সাথে হার সেটাও এখন আর সহ্য হচ্ছে না। সেখানে আফগানিস্তানের সাথে হেড ডাউন, শ্রীলঙ্কার সাথে বিধ্বস্ত। এগুলো সহ্য করার মতো না। তাইতো টিম ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ। আপাতত এ উদ্যোগে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত দুই টি-২০ স্কোয়াডে পরিবর্তন এসেছে। ওই দুই ম্যাচের জন্য ঘোষণা দেয়া স্কোয়াডে রাখা হয়েছে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও নাজমুল হোসেন শান্তকে। এ ছাড়াও দলে ফেরানো হয়েছে দুই পেসার রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলামকে। নতুন দুইজনকে যে হুট করে কোনো স্থান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে এমনটা ঠিক না। তারা অনূর্ধ্ব-১৯,‘এ’ দল হয়েই জাতীয় দলে স্থান করে নিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স তো আছেই।
বাঁহাতি ওপেনার নাঈম ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে এর মধ্যেই খেলেছেন বাংলাদেশে ‘এ’, ইমার্জিং দল ও বিসিবি একাদশে। তবে বড় চমক বলা যায় অলরাউন্ডার আমিনুলকে। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়েও আমিনুল মূলত ছিলেন ব্যাটসম্যান। এটাই তার বড় পরিচয়। তবে তাকে বিবেচনার আরেকটি কারণ তিনি লেগ স্পিনটাও করতে পারেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ আসরে বিকেএসপির হয়ে নজর কেড়েছিলেন মূলত ব্যাটিং দিয়েই। ৪৪০ রান করেছিলেন ৪০ গড়ে। সম্প্রতি হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াডে তার লেগ স্পিনে মুগ্ধ কোচ সাইমন হেলমট। জাতীয় নির্বাচকদেরও নজর ছিল তার ওপর। কিছুদিন আগে খেলেছেন ‘এ’ দল ও ইমার্জিং দলে। তাকে দলভুক্ত করা হয়েছে ভবিষ্যতে ভালো কিছু পাওয়ার আশাতেই। এবং চট্টগ্রামের দুই ম্যাচে ভালো করতে পারলে দলের সাথে নিয়মিত হওয়ারই সুযোগ বেশি অভিজ্ঞদের পেছনে ফেলে। অধিনায়ক সাকিব চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে বলেছিলেন, তিন ফরম্যাটে আলাদা দল থাকা প্রয়োজন। কোচ ও নির্বাচকেরা দৃশ্যত সে দিকেই যাচ্ছে। কারণ অভিজ্ঞদের কিছু কিছু স্থানে যে সীমাবদ্ধতা সেটা দুই টি-২০ তে স্পষ্ট। আফগানদের সাথে শুধু হার নয়। তরুণ আফিফ যদি দলকে সেভ না করতেন, তাহলে পরাজয় অবধারিত ছিল জিম্বাবুয়ের সাথেও। ফলে বেশি সময় আর নিতে চান না নীতিনির্ধারকেরা। অভিজ্ঞদের টি-২০ তে ধারাবাহিক ব্যর্থতা দেখতে রাজি নন তারা। এ উদ্যোগ সফল হলে আরো নতুন ক্রিকেটার দলে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন সে ইঙ্গিতও আছে।
বাদ পড়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সৌম্য সরকার। এ ছাড়া না খেলেই বাদ পড়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান ও প্রথম ঘোষিত দলের চমক ইয়াসিন আরাফাত। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ফরমান জারি করে নেয়া আবু হায়দারও রনিকেও রাখা হয়নি। মূলত সৌম্যর স্থানে ২০ বছর বয়সী নাঈমকে বিবেচনা করা হচ্ছে। ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি টি-২০ বিসিবি একাদশের হয়ে ১৪ বলে ২৩ রান করেছিলেন তিনি। জুলাইয়ে আফগান ‘এ’ দলের বিপক্ষে এক দিনের ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচে করেছিলেন ১২৬।
আফগান ‘এ’ দলের হয়ে বিপক্ষে এক দিনের ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচে সুযোগ দেয়া হয়েছিল তরুণ আমিনুলকে। ২২ রান করার পাশাপাশি নিয়েছিলেন ২ উইকেট। এরপর শ্রীলঙ্কা ইমার্জিং দলের বিপক্ষে সিরিজে মূলত তাকে লেগ স্পিনার হিসেবেই খেলানো হয়। তিনটি একদিনের ম্যাচে নিয়েছিলেন তিন উইকেট। অন্যদের মধ্যে নাজমুল হোসেন শান্তর এ ফরম্যাটে দলে ডাক পাওয়া মূলত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই। বাংলাদেশের হয়ে দু’টি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেলে ভালো করতে না পারায় বাদ পড়েছিলেন। মূলত এই দুই সংস্করণের জন্যই এতদিন উপযুক্ত মনে করা হয়েছে তাকে। টি-২০ ক্রিকেটের রেকর্ড খুব একটা ভালো না হলেও তাকে সুযোগ দেয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এ দিকে দলে অভিজ্ঞ বোলারেরও প্রয়োজন তা অনুভূত হয়েছে। এ জন্যই রুবেল হোসেনের শরণাপন্ন। মূলত চট্টগ্রামের উইকেটের কথা চিন্তা করেই রুবেল ও শফিউলকে ফিরিয়ে আনা। রুবেল সর্বশেষ টি-২০ খেলেছেন গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে। শফিউল টি-২০ শেষবার খেলেছেন ২০১৭ সালের দক্ষিণ আফ্রিকায়।
চট্টগ্রামের দুই ম্যাচের জন্য দেয়া বাংলাদেশ স্কোয়াড : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, তাইজুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

 


আরো সংবাদ



premium cement