২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তিন ফরম্যাটেই সংস্কার চান সাকিব

আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ হারের পর উপলব্ধি
বাংলাদেশকে একমাত্র টেস্টে হারিয়ে দেয়ার পর ট্রফি নিয়ে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল : বিসিবি -

আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশ কতটা চাপ ছিল, তার একটা ছোট্ট নমুনা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দিয়েছেন। এ ম্যাচে মোট চার দিন সাংবাদিকদের সামনে এসেছেন। দলের খেলোয়াড়দের সেভ সাইডে রাখার জন্য হয়তো নিজেই সব সমালোচনার জবাব দিতে এ কাজটি করেছেন। গতকালও তিনি ম্যাচ শেষে এসেছিলেন। এবং আফগানিস্তানের সাথে পরাজয়টাকে তিনি লজ্জাজনক মনে করেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি কষ্টদায়ক, কিন্তু লজ্জাজনক না।’ সাকিব বলেন, ‘আমরা তো ভালো খেলতেই পারিনি, কোনো সেশনে। আফগানদের চাপেই ফেলতে পারিনি। তা হলে আমরা এ ম্যাচ জেতার কথা চিন্তা করি কিভাবে? তবে শেষ দিনে আমি যদি ওইভাবে প্রথম বলেই কাটশট খেলে আউট না হতাম, আরো কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকলে অন্যরা হয়তো আরেকটু সাহস পেত। এতে ম্যাচটা ড্রও হয়ে যেতে পারত। ওই সময় আমি একটু নার্ভাসও ছিলাম।’ তবে খেলোয়াড়দের সমালোচনাও করেছেন অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘মেহেদি হাসান মিরাজ যখন দেখলেন নির্ঘাত তিনি আউট। এরপর শেষ রিভিউটা নেয়ার কী দরকার ছিল। তাইজুল অনেক ভালো খেলেন। ওর বিপক্ষে ব্যাট, প্যাডের যে ভুল সিদ্ধান্ত আম্পায়ার দিয়েছেন, রিভিউ থাকলে ওই ওটা নিয়ে বেচে যেতেন। ম্যাচ অন্য রকম হতে পারত। আবার নাইম শেষ ব্যাটসম্যান। দীর্ঘক্ষণ টিকে থাকা সৌম্য ১ রান নিয়ে অন্য প্রান্তে চলে গিয়ে মাথায় হাত দিয়েছেন। যে সে ভুল করেছে। চাপটা নাইমের ওপর তিনি কেন দিলেন? কেন ১ রান নেয়ার প্রয়োজন ছিল? এসব ভুল এখনো যদি হয় তা হলে কিভাবে ভালো করা সম্ভব? তিনি এ জন্য ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে সংস্কার চান। কারণটাও তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি তিন ফরম্যাটে আলাদা আলাদা দল প্রয়োজন। এ কথা এখনো বলছি। কারণ কারা কোন ফরম্যাটের জন্য পারফেক্ট এটি বুঝতে হবে। তাকে সেখানেই খেলাতে হবে। নতুবা এভাবেই রেজাল্ট হতে থাকবে। একদিন বড় দলের বিপক্ষে জয় পাওয়া, আবার ছোট দলের কাছে হেরে যাওয়া হতে থাকবে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি মূলত অধিনায়কত্ব সেভাবে করতে আগ্রহী না। আর যদি করতেই হয় তা হলে এসব বিষয়ের সমাধান প্রয়োজন। এগুলো নিয়ে ম্যানেজম্যান্টের ভাবা উচিত। এবং প্রয়োজনে আমিও কথা বলব।’
সাকিব দলের পারফরম্যান্সের অবনতিটা যে কন্টিনিউ হচ্ছে এতে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘দেখেন বিশ^কাপে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। এরপর শ্রীলঙ্কা সফরেও বাজে রেজাল্ট। এরপর আফগানদের বিপক্ষে পরাস্ত হওয়া। আমি মনে করি যার যার কাজগুলো তার তার সঠিকভাবে করা উচিত। সব কাজ যদি আমার একারই করতে হয়, তা হলে সব ম্যাচ ফি তো আমাকেই দেয়া উচিত।’ বিশ^কাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট হওয়ার যোগ্যতা অর্জনকারী সাকিব ঠিক নিজস্ব পরের (শ্রীলঙ্কা সফরে তিনি বিশ্রাম নেন) এ ম্যাচে এভাবে বাজে রেজাল্ট এবং নিজের পারফরম্যান্সটাও ঠিকমতো হয়নিÑ এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ওই কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আসলে এমন রেজাল্ট মেনে নেয়া কষ্টদায়ক। ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট আমরা বাকি ৩ উইকেট নিয়েও টিকে থাকতে পারিনি। এটি কষ্টের। এ দায়টা আমি আমার ওপরই নিচ্ছি। বিশেষ করে নিজের পারফরম্যান্সের কথা বিশ্লেষণ করে এটি বলেছেন তিনি। কিন্তু অন্য যারা ছিল তাদেরও দায়িত্বগুলো ঠিকমতো পালন করা উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেছেন। তিনি প্রতিটি ম্যাচে ভালো খেলতে হলে কী করতে হবে, সেটিও জানান দিলেন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সব খেলোয়াড়ের খেলার মান আরো বাড়াতে হবে নতুবা এমন ঘটতেই থাকবে।’ তিনি রশিদ খানের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘সে টি-২০ ক্রিকেটে বিশ^মানের বোলার এটি সবারই জানা। টেস্টেও সেটি তিনি ধরে রাখতে পারলে খুবই ভালো করবেন।’
বাংলাদেশের ওপর এ পরাজয়ের যে চাপ সেটা রিলিজের জন্য আসন্ন টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচেই জিততে চান। তিনি বলেন, ‘হাতে খুব সময় নেই। আমাদেরকে প্রস্তুতি ওভাবে নিয়ে জিততে পারলে সবার মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে। এ জন্য আমাদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ টি-২০ ক্রিকেটেও আমরা ওদের চেয়ে পেছনে।’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে হবে তিন জাতি টি-২০ টুর্নামেন্ট।


আরো সংবাদ



premium cement