২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাভাসকারের ড্রাইভে আকরামের সুইং

-

ক্লাউড নাইন। চমৎকার নাম হিল্টন হোটেলের ২৪ তলার বিশাল লাউঞ্জের। ফ্যানাটিক আয়োজন করেছিল মিট অ্যান্ড গ্রিট।
হলভর্তি দর্শকদের সামনে সঞ্চালক বোরিয়া মজুমদার প্রথমেই দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। এক, সুনীল গাভাসকারের টেস্টে সর্বাধিক রানের ইনিংস কোনটা? নিজেই উত্তর দিলেন, ২৩৬। আর ওয়াসিম আকরামের? এবার উত্তর এলো, ২৫৮। বোঝাতে চাইলেন, ব্যাটসম্যান হিসেবে গাভাসকার কয়েক যোজন এগিয়ে থাকলেও আকরামের রান বেশি।
এবার মাইক্রোফোন হাতে সুনীল গাভাসকার, ‘যতদূর মনে হয়, ওয়াসিম ও আমি একসাথে ৬টা টেস্ট ম্যাচ খেলেছি। ওই ৬ টেস্টে ওয়াসিম কিন্তু আমাকে আউট করতে পারেনি। তবু বলব, ওয়াসিমই হলো আমার দেখা সেরা বাঁহাতি ফাস্ট বোলার। সেরা বাঁহাতি স্পিনার বিষাণ বেদি।’ শুরু হলো গাভাসকার বনাম আকরাম খুনসুটি। যেখানে একে অপরের প্রতি ছিল শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা।
গাভাসকারের কাছ থেকে প্রশংসা শোনার পর আকরাম বললেন, ‘বোলার হিসেবে সবসময় লক্ষ্য থাকত বিপক্ষের সব বড় ব্যাটসম্যানের উইকেট নেয়া। কিন্তু আমি সুনীল গাভাসকারকে কখনো আউট করতে পারিনি টেস্টে। এটা আমার একটা বিশাল মাইনাস পয়েন্ট।’ সঞ্চালকের প্রশ্ন আকরামকে, ‘আপনি মাঠে সেøজিং করতেন? উত্তর এলো, করতাম। ভারতের এখনকার কোচ রবি শাস্ত্রীকে সবচেয়ে বেশি সেøজিং করেছি। শাস্ত্রী তখন প্রায়ই বলত, এত ক্রিকেটার থাকতে আমার পেছনে কেন? আমি বলতাম, তোমার পেছনে লাগার মজাই আলাদা। তবে শাস্ত্রী কিন্তু ফাস্ট বোলিং খেলতে ভয় পেত না। হুক-কাটে না গিয়ে সাহস করে দাঁড়িয়ে থাকত।’ (গাভাসকার মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন।)
আকরাম মনে করেন, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সব ম্যাচ জিততে হবে এমন কোনো কথা নেই। দু’একটা ম্যাচ হেরে থাকলে ফোকাসটা ভালো হয়, যা শেষপর্যন্ত তাতিয়ে রাখে দলটাকে। কিন্তু গাভাসকার, ‘আমার মতো অন্য। সব ম্যাচ জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্মান আলাদা। ’৮৩তে আমরা যখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, সেবার কিন্তু একটা দল বলেছিল, ভারত চ্যাম্পিয়ন হলেও আমাদের হারাতে পারেনি। একদম ঠিক। আমরা সেবার হেরেছিলাম গা-ঘামানো ম্যাচে মাইনর কাউন্টির কাছে। আমার মনে হয়, সব ম্যাচ জিতে যারা চ্যাম্পিয়ন হয়, তাদেরই সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন বলা উচিত।’
সেøজিং প্রসঙ্গে গাভাসকারের স্মৃতিচারণ, ‘১৯৮৭ সালে আমার শেষ টেস্টে হেরে গিয়েছিলাম পাকিস্তানের কাছে। খেলার শেষে সবাই মিলে যখন বিমর্ষ হয়ে ড্রেসিংরুমে বসে, তখন কপিলদেব বলেছিল, চলো আমরা পাকিস্তান শিবিরে গিয়ে ওদের অভিনন্দন জানিয়ে আসি। গিয়েছিলাম। দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিল জাভেদ মিয়াঁদাদ। আমাকে দেখেই বলেছিল, সরি সানি ভাই, সিলি পয়েন্টে দাঁড়িয়ে তোমাকে অকথ্য গালিগালাজ করার জন্য। আমি বলেছিলাম, গালাগাল দিয়েছো? আমার কানে যায়নি। তুমি বকবক করছিলে ঠিকই। আমার ধারণা, তুমি কথা বলছিলে তোমাদের উইকেটকিপার বা সিøপ ফিল্ডারদের সাথে। জাভেদ প্রশ্ন করেছিল, তুমি সত্যি শোনোনি? আমি বললাম, না। অবাক হয়ে বলল, কী বলছ! এত গালাগাল দিলাম। কিচ্ছু শুনতে পেলে না? আমার গালাগালি করার এনার্জিটা নষ্ট হয়ে গেল। তোমাকে তাহলে সরিই বা বললাম কেন?’
দর্শকরা হাসিতে ফেটে পড়লেন। একই সাথে গাভাসকার বলে গেলেন, ‘মিয়াঁদাদ যতক্ষণ ক্রিজে থাকত, আমরা জানতাম ততক্ষণ পাকিস্তানকে হারানো কঠিন। শারজায় শেষ বলে যখন ও ছক্কাটা মেরেছিল, তখন কিন্তু ওর সাথে ব্যাট করছিল ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান। জাভেদ ক্রিজে আসার পর খেলার উচ্চতা বেড়ে যেতে।’
এবার মজার ঘটনার কথা শোনালেন আকরাম, ‘১৯৮৭ সাল। বেঙ্গালুরু টেস্ট। তখন টেস্টের মাঝখানে বিরতি থাকত। সেদিন ছিল হোলি। আমরা খুঁজছিলাম কোন কোন ভারতীয় ক্রিকেটারকে রঙ মাখানো যায়। খুঁজতে খুঁজতে দেখি, সুইমিং পুলের ধারে একা একা রোদ পোয়াচ্ছে শাস্ত্রী। আমরা সবাই মিলে ওকে চ্যাংদোলা করে সুইমিং পুলের পানিতে ফেলে দিয়েছিলাম।’
সবশেষে এলো ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ প্রসঙ্গ। নানা কাহিনী উঠে আসছিল দুটি দেশের মহাকাব্যিক দ্বৈরথ ঘিরে। আকরাম বললেন, ‘এই ম্যাচে ভয় পেতে নেই। আমাদের আমলে ভয় শব্দটা পাকিস্তান শিবিরে থাকত না। শরীরী ভাষায় যে আক্রমণাত্মক থাকতে হবে, সেটা ক’দিন আগে পাক শিবিরে গিয়ে জানিয়েও এসেছি। বলেছি, বিরাট কোহলির খেলার সংস্কৃতিটা অনুসরণ করো। দেখবে, অনেক দাপট নিয়ে খেলতে পারছ।’
যা শোনে গাভাসকার বললেন, ‘বিরাট জানে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতলে ও আরো উঁচুতে উঠে যাবে। দল সেমিফাইনালের টিকিট পেয়ে যাবে। সুতরাং ও পাকিস্তানকে যে বিরাট গুরুত্ব দিতে চায়নি, এটা ওর স্ট্র্যাটেজিরই অংশ। এই বার্তাটাই ও পৌঁছে দিতে পেরেছিল ড্রেসিংরুমের প্রতিটি ক্রিকেটারের মধ্যে।’


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার অন্যতম দায়ী : মির্জা আব্বাস সৈয়দপুরে জামায়াতের উদ্যোগে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে না থাকার কারণ জানালেন সাকিব ঝালকাঠিতে গ্রাম আদালত কার্যক্রম পরিদর্শনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল চুয়াডাঙ্গায় বাতাসে আগুনের হল্কা : গলে যাচ্ছে সড়কের পিচ বৃষ্টির নামাজ আদায়ের নিয়ম আজও স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৮ এপ্রিল খুলে দেয়ার প্রস্তুতি, ক্লাস চলবে শনিবারও মিরসরাইয়ে জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে লুট, মূল হোতা গ্রেফতার বৃষ্টি কামনায় ঈশ্বরগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর ইসতিসকার নামাজ আদায় কুবিতে আল্টিমেটামের পর ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলাল শিক্ষক সমিতি

সকল