২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আমিরকে খেলতেই পারেনি অস্ট্রেলিয়া

-

‘বড় মঞ্চ পেলেই জ্বলে ওঠেন’Ñ মোহাম্মদ আমিরের সম্পর্কে এই বাক্যটি ক্রিকেট বিশ্বে ব্যাপক প্রচলিত। গত এক বছরের অফফর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট যখন আমিরকে বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দেয় তখনো তার পক্ষে কথা বলেছেন সাবেকরা। ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আখতারের মতো সাবেক তারকারা বারবারই বলেছেন, বিশ্বকাপের মঞ্চে আমির জ্বলে উঠবেন। প্রতিভা আর অভিজ্ঞতা দুটো মিলিয়ে তিনিই হতে পারেন পাকিস্তানের বাজির ঘোড়া।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে সেটি আরো একবার প্রমাণ করলেন আমির। ঝড়োগতিতে রান তুলতে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে আটকে রাখায় মূল ভূমিকা পালন করেছেন। নিয়েছেন ৫ উইকেট। যার ফলে এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক তিনি। ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট। এই ম্যাচে তার বোলিং ফিগার ১০-২-৩৯-৫।
বুধবার টনটনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হাই স্কোরিং ম্যাচেও আমির ছিলেন স্বমহিমায় উজ্জ্বল। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা পুরো ইনিংসেই ওভারপ্রতি ছয়ের ওপর রান তুলেছেন; কিন্তু একমাত্র আমিরই রানের গতিতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পেরেছেন।
চার ওভারের প্রথম স্পেলে খরচ করেছেন মাত্র ১১ রান। পেয়েছেন দু’টি মেডেন ওভার। অসি ব্যাটসম্যানদের সামনে একের পর এক বিপজ্জনক ডেলিভারি দিয়েছেন এই বাঁ-হাতি পেসার; কিন্তু তাকে খুব সাবধানে খেলেছেন দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। যেন আমিরকে উইকেট দেবেন না এমন পণ করেছেন তারা! এটি বুঝতে পেরে আমিরকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ।
প্রথম ২০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১২২ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। ক্রমশই বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন দুই ওপেনার। তাদের সামলাতে ২৩তম ওভারে আবার আমিরকে বোলিংয়ে আনেন সরফরাজ। এবার বোলিংয়ে ফিরেই প্রথম বলে উইকেট নেন। ৮৪ বলে ৮২ রান করা অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে ফেরান মোহাম্মদ হাফিজের তালুবন্দী করে। এই স্পেলে ৩ ওভার বোলিং করে ৮ রান খরচ করে নেন এক উইকেট।
৪৩তম ওভারে আবার বল হাতে নেন তিনি। ততক্ষণে অস্ট্রেলিয়া রানের পাহাড় গড়ার পথে। ৪২ ওভার শেষে স্কোর ৪ উইকেটে ২৭৭। রানের গতিতে বাধা দিতে সেরা অস্ত্র আমিরকে আনেন সরফরাজ। এবারো বল হতে নিয়ে প্রথম বলেই ফেরান উসমান খাজাকে। পরের ওভারে ফিরিয়েছেন মিচেল মার্শকে। এই স্পেলে ২ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৬ রান। নিয়েছেন দু’টি উইকেট। স্লগ ওভারে যা নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত বোলিং।
আর ব্যক্তিগত কোটার শেষ ওভারটি করতে আসেন ইনিংসের ৫০তম ওভারে। তৃতীয় বলেই দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে পরাস্ত অ্যালেক্স ক্যারি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি এলবিডব্লিউ থেকে। আর শেষ বলে মিচেল স্টার্ককে আউট করেছেন লং অনে শোয়েব মালিকের ক্যাচ বানিয়ে।
মূলত আমিরের এই দুর্দান্ত বোলিংয়ের কাছেই অস্ট্রেলিয়ার রানের পাহাড় গড়ার স্বপ্ন পরাভূত হয়েছে। শুরুতে যে গতিতে তারা রান তুলেছে তাতে সাড়ে তিন শ’ বা তারও বেশি রান তোলার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। টিভি সম্প্রচারের স্কোর প্রেডিক্টরেও বলা হয়েছিল সাড়ে তিন শ’র বেশি রান ওঠার সম্ভাবনার কথা। কিন্তু সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়াকে ৩০৭ রানে আটকে রাখার কৃতিত্ব পুরোটাই আমিরের।

 


আরো সংবাদ



premium cement