১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কেন এমন হলো ঢাকা সিটি এফসির?

-

ম্যানচেস্টার সিটি, কার্ডিফ সিটি এই আদলেই নাম করণ। নাম দেয়া হলো ঢাকা সিটি এফসি। সত্যিকার পেশাদারী আচরণ নিয়ে ফুটবল দল গঠনে মাঠে নামা তাদের। তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাফুফেকেও উৎসাহিত করেছে পেশাদার লিগে খেলার অনুমতি দিতে। সেই অনুমতি নিয়েই এবারের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে (বিসিএল) অভিষেক হয় ঢাকা সিটি এফসির। সত্যিকার ফুটবলপ্রেমীদের বড় একটা অংশের নীরব সমর্থন ছিল এই ক্লাবটির প্রতি। যাতে দলটি বিসিএল থেকে উন্নীত হয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল)। কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে দেশের ফুটবলে। সেভাবেই চলছিল সব। এবারের বিসিএলের ১৩ রাউন্ড পর্যন্ত শীর্ষে ছিল ঢাকা সিটি। কিন্তু এরপরই হঠাৎ ছন্দ পতন ক্লাবটি। পরের চার ম্যাচে টানা হেরে তারা এখন প্রিমিয়ারে প্রমোশনের রেস থেকে একেবারে ছিটকে গেছে। অবস্থা যা দেখা যাচ্ছে, তাতে তাদের অবশিষ্ট ম্যাচগুলোতেও হারের শঙ্কা। জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু কেন এমন হলো এই নবাগত ক্লাবটির। ঢাকা সিটি এফসির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জোহা দিলেন আসল তথ্য। ‘ আমাদের সব কিছুই চলছিল ছন্দ মাফিক। আমরা দলকে প্রিমিয়ারে তুলতে নৌবাহিনীর নয় ফুটবলার এবং তিন কোচকে নিয়েছিলাম চুক্তিতে। অথচ লিগে আমাদের ১৩ রাউন্ড শেষে নৌবাহিনী তাদের তাদের সব খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের ফেরত নেয়। অথচ এই ফুটবলাররাই ছিল আমাদের দলের মূল শক্তি। এরা চলে যাওয়ায় দলের এই দশা।
এই নয় ফুটবলার চাকরি করেন নৌবাহিনীতে। তাদের কাছে চাকরিটাই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে তারা ফিরে গেছে কর্মস্থলে। না গেলে চাকরি হারানোর ভয় ছিল। শামসুজ্জোহা জানালেন , ‘ক্লাবের এই বর্তমান অবস্থান জন্য আমাদের কোনো দোষ নেই। নৌবাহিনীর ফুটবলারদেরও কিছু করার নেই। তারা চাকরি বাঁচাতে ফিরে গেছে।’ এই নয় ফুটবলার ছাড়া যারা আছেন তাদের পক্ষে দলকে টেনে তোলা সম্ভব নয়। ক্লাব সেক্রেটারি তথ্য দেন, ‘যাদেরকে আমরা খেলোয়াড় তালিকাতেই স্থান দিতাম না আগে এখন তাদেরকেই খেলাতে বাধ্য হচ্ছি। আবার আমাদের হাতে সময়ও নেই নতুন ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন করানোর। বাফুফের অনুমতি দেবে না। ফলে করুণ দশা চেয়ে চেয়ে দেখতে হচ্ছে।’ আপনাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েও কেন তারা চলে গেল? শাসুজ্জোহার জবাব, এটা নৌবাহিনীর নির্দেশ।
বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের অন্য দলগুলোর মতো নয় ঢাকা সিটি। তারা ৪০-৪২ ফুটবলারকে দলে টেনে সেখান থেকে ৩৫ জনের সাথে চুক্তি করেছে। এরা মাসের শুরুতেই বেতন পান। এবারের লিগে সর্বোচ্চ বাজেটের দল গড়েছিল তারা। জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার ফেডারেশন কাপ এবং স্বাধীনতা কাপে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলা রোকনুজ্জামান কাঞ্চন ছিলেন দলের এবং পুরো বিসিএল এর সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক ধারী খেলোযাড়। তিনি যে টাকা পেয়েছেন তা বিসিএলের দুই এক ক্লাবের সব খেলোয়াড়ের পারিশ্রমিকও নয়। উল্লেখ্য, স্বাধীনতা কাপে দলকে চ্যাম্পিয়ন করিয়ে বসুন্ধরা কিংস ছেড়ে ঢাকা সিটিতে যোগ দেন কাঞ্চন।
অবশ্য এবার বিসিএল এ তারা চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হতে না পারলেও ক্যাম্প বন্ধ হচ্ছে না ঢাকা সিটির। সাধারণ সম্পাদকের দেয়া তথ্য, লিগ শেষে বিসিএল এল ১১ ক্লাবের ১০টি ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যাবে। তবে একটি ক্লাবের তা বন্ধ হবে না। তা হলো ঢাকা সিটি। ফুটবলারদের সাথে আমাদের ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি। ডিসেম্বর পর্যন্তই তাদের অনুশীলন চলবে।
একই সাথে অ্যাকাডেমিও গড়তে যাচ্ছে ঢাকা সিটি এফসি। এ জন্য ১০-১২ একর জমি খুঁজছে ক্লাব কর্র্র্র্তৃপক্ষ। পূর্বচলের আশপাশেই ৫০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামসহ হবে তাদের ফুটবল অ্যাকাডেমি। আর এবারের লিগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামীর জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষরা। শামসুজ্জোহা বললেন, আমরা সেই দল নই যে পয়েন্ট কেনা বেচা করে ম্যাচ জিতব। জিতলে জিতব, না জিতলে নাইÑ এটাই আমাদের নীতি। আর অ্যাকাডেমি করা হচ্ছে সারা দেশ থেকে ফুটবলার বাছাই করে দেশের ফুটবলকে সম্মৃদ্ধ করতে। লক্ষ্য ১০ বছর পর বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে নিয়ে যাওয়া।


আরো সংবাদ



premium cement