২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অসহায় মোহামেডানের ব্যর্থতার চিত্র

-

খেলা শেষে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। জাপানি উরি নাগাতা তেড়ে যান মেজবাবুল হক মানিকের দিকে। গোলরক্ষক সারোয়ার জাহান তর্ক জুড়ে দেন সতীর্থের সাথে। তারও আগে গ্যালারি থেকে সমর্থকদের গালি ভেসে আসতে থাকে। কিছুক্ষণ পর কিছু সমর্থক মাঠে এসে সমালোচনা করতে থাকেন ফুটবলারদের। এ সবই কাল রহমতগঞ্জের কাছে সাদা কালো শিবিরের হারের পরের দৃশ্য। পরাজয়ে প্রচণ্ড হতাশা তাদের মধ্যে। যে পরাজয় তাদের পেশাদার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজেভাবে প্রথম পর্ব শেষ করতে বাধ্য করেছে। ১৩ দলের মধ্যে ১১ স্থান তাদের। পয়েন্ট মাত্র ৬। জয় মাত্র একটি। তার চেয়ে বড় বিষয় এবারই তারা প্রথম পর্বের ১২ ম্যাচে আটটিতে হেরেছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তাদের আট হারের রেকর্ড আগেও আছে। তা আরো তিনবার। ২০১০ সালে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ মওসুমে। তবে তা পুরো লিগ শেষে ২২ ম্যাচে।
দর্শক প্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী দলটির সব ট্রফিই জয়ের রেকর্ড আছে। নেই শুধু পেশাদার লিগে কোনো ট্রফি জয়ের কাহিনী। তবে তাদের একাধিকবার রানার্সআপ হওয়ার কৃতিত্ব আছে। অবশ্য তা এখন অতীত। এখন তাদের অবস্থা বেশ নাজুক। দুই মওসুম আগেও তারা কোনো মতে রেলিগেশন এড়িয়েছে। ১২ দলের মধ্যে হয়েছে দশম। এবার আরো বাজে অবস্থা। দলে কোচ পরিবর্তন হয়েছে চার দফা। পারিশ্রমিক নিয়মিত নয় তাদের। এবারতো অনেক ফুটবলার এই ক্লাবে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্লাব কর্মকর্তারা প্রতিশ্রুত অগ্রিম টাকা দিতে ব্যর্থ। ফলে তারা অন্য ক্লাবে চলে যায়। যে কারণে ভালো খেলোয়াড় জোটেনি মোহামেডানের। এর উপর কাজ করতে কোচদের স্বাধনীতার ঘাটতি, বারবার কোচ বদল সব মিলিয়ে আজ দর্শকপ্রিয় দলটি এত বাজে অবস্থায়। এই লিগে তাদের একটি মাত্র জয় বিজেএমসির বিপক্ষে।
এই দুরবস্থা কাটারে নতুন ব্রিটিশ/অস্ট্রেলিয়ান কোচ শন লেনকে আনা হলো। ১৫ দিনে তার পক্ষেও চমক দেখানো সম্ভব হয়নি। তিন ম্যাচে দুই হার এবং এক ড্র। এই ড্রটা মুক্তিযোদ্ধার সাথে।
অবশ্য নতুন কোচ আশা দেখছেন দলকে টিকিয়ে রাখার। কাল ম্যাচ শেষে শন লেন যখন মিডিয়ার সাথে কথা বলছিলেন তখন দলের ফুটবলাররা ঝগড়ায় লিপ্ত। এদের দিকে ইঙ্গিত করে কোচ জানান, দেখুন হারের পর তারা হতাশ। খুব হতাশ। এই পরাজয় হতো না, যদি দলের ফুটবলাররা গোল মিস না করতেন। তারা পেনাল্টি মিস করেছে। এ ছাড়া রেফারিও তিনটি পেনাল্টি দেননি।
হার এবং হতাশা সত্ত্বেও কোচ খুশি দলের পারফরম্যান্সে। বললেন, ‘দেখুন দল কিন্তু বেশ ভালো খেলেছে। চান্সও পেয়েছে বেশি। গোল মিসই তাদের জিততে দেয়নি।’ মোহামেডানের লিগের প্রথম পর্ব শেষ। এখন তাদের ফিরতি পর্বের জন্য প্রস্তুত হওয়ার মিশন। কোচ জানান, কিছু ফুটবলার আমাকে পরিবর্তন করতেই হবে। তা দেশী এবং বিদেশী। এটা নিয়ে আমি ক্লাব কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলব। তিনি যোগ করেন, যদি ক্লাব মনে করে তাদের রেলিগেশন থেকে রক্ষা পেতে চায় তাহলে টিমকে অবনমন থেকে বাঁচানো সম্ভব। তবে আমি আশবাদী ফিরতি পর্বে মোহামেডান ঘুরে দাঁড়াবে। এই ক্লাবের ঐতিহ্য আছে। তাদের অতীত রেকর্ড সম্পর্কে আমি অবগত।
মোহামেডানের আট হার
২০১০ সাল ২২ ম্যাচে ৮ পারজয়
২০১৫-১৬ সিজন ২২ ম্যাচে ৮ হার।
২০১৬-১৭ সিজন ২২ ম্যাচে ৮ হার
২০১৮-১৯ সিজন ১২ ম্যাচে ৮ হার


আরো সংবাদ



premium cement