২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জীবন ফামোসা ও জুনাপিওর লড়াই

বাল্লো ফামোসা -

এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে প্রতি দলে খেলছেন চার বিদেশী। এতে প্রত্যেক দলে প্রায় দুইজন বিদেশী স্ট্রাইকার থাকায় সমান সংখ্যক দেশী ফরোয়ার্ডকে সাইড লাইনে বসে থাকতে হচ্ছে। একাদশে খেললেও পজিশন বদল করে মিডফিল্ডে। এই প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও গোল করছেন স্থানীয় আক্রমণভাগের ফুটবলাররা। অবশ্য গোল করার ক্ষেত্রে এগিয়ে বিদেশীরাই। লিগের সপ্তম রাউন্ড শেষে ৮৪ গোল হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ গোল ভিনদেশীদের। ২৯ গোলের মালিক দেশীরা। বিদেশীদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার বাল্লো ফামোসা আছেন গোলদাতার শীর্ষে। আইভোরিকোস্টের ফরোয়ার্ডের করা গোলের সংখ্যা ৭। এর পরেই আছেন ঢাকা আবাহনীর নাবিব নেওয়াজ জীবন ও রহমতগঞ্জের কঙ্গোর স্ট্রাইকার সিও জুনাপিও। তাদের গোল পাঁচটি করে। আপাতত এই তিনজনের মধ্যেই চলছে টপ স্কোরার হওয়ার লড়াই। অবশ্য হ্যাটট্রিককারীর সংখ্যায় এগিয়ে স্থানীয়রা। আরামবাগের জাহিদ হোসেন এবং আবাহনীর নাবিব নেওয়াজ জীবনের বিপরীতে বিদেশীদের মধ্যে একমাত্র হ্যাটট্রিককারী ফামোসা।
অন্য বিদেশীরা এবং বাল্লো ফামোসা যেভাবে এগিয়ে আসছেন সেখানে জীবনের পক্ষে কতদিন এ লড়াইয়ে থাকা সম্ভব তা সময়ই বলে দেবে। আজ অষ্টম রাউন্ড শুরু হওয়ার আগে ৪ গোল জীবনে তথা ফামোসা এবং জুনাপিওর ঘাড়ে গরম নিঃশ্বাস ফেলছেন ঢাকা আবাহনীর সানডে চিজোবা। এই নাইজেরিয়ানের গোল সংখ্যা ৪টি। ৩টি গোল করেই পেছন পেছন ছুটছেন শেখ জামালের আর্জেন্টিনার লুসিয়ানো পেরেজ, সাইফ স্পোর্টিংয়ের রাশিয়ান ড্যানিশ, শেখ রাসেলের নাইজেরিয়ান রাফায়েল, উজবেকিস্তানের আজিজভ আলী শের, ব্রাদার্সের ব্রাজিলিয়ান লিমা লিওনার্দো, স্থানীয় বসুন্ধরা কিংসের মতিন মিয়া এবং আরামবাগের জাহিদ। ২টি করে গোল ঢাকা আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড বেলফোর্ড, শেখ জামালের গাম্বিয়ান সলোমন কিং, চট্টগ্রাম আবাহনীর মমদু বা, সাইফের কলম্বিয়ান আন্দ্রেস দেইনার, মোহামেডানের নাইজেরিয়ান এনকৌচা কিংসলে, আরামবাগের নাইজেরিয়ার পল এমিলি, ম্যাথু মেন্ডী, দেশী আরিফ এবং বসুন্ধরা কিংসের বিশ্বকাপের ফুটবলার ড্যানিয়েল কলিনড্রেস।
বাফুফের পেশাদারী লিগের ইতিহাসে একবারই স্থানীয় ফুটবলার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন। এই কৃতিত্ব ঢাকা আবাহনীর স্ট্রাইকার এনামুল হকের। ২০০৯-১০ সিজনে তিনি ২১ গোল করেন। বাকিরা রেসেই থাকতে পারেননি। ২০০৮-৯ মওসুমে শেখ রাসেলের আলফাজ আহমেদ ১৭ গোল দিয়ে হন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার। তার দলের বিদেশীরে নেতিবাচক আচরণ তাকে সেবার সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে দেয়নি। সে বছর মোহামেডানের নাইজেরিয়ান আলামু বুকোলা ওলালেকান ১৮ গোল দিয়ে সর্বোচ্চ গোলতাদার খেতাব পান। স্থানীয়দের মধ্যে গোল সংখ্যায় দুই অংকের কোটা ছুঁতে পেরেছেন জাহিদ হাসান এমিলি, ওয়াহেদ আহমেদ ও এনামুল হক। ২০০৭ সালে ঢাকা আবাহনীর হয়ে এমিলি ১২ গোল, ওয়াহেদ ২০১৩-১৪ মওসুমে মোহামেডানের জার্সি গায়ে ১৫ গোল এবং এনামুল মুক্তিযোদ্ধার হয়ে ২০১৫ সালে ১৩ গোল করেন।
বাল্লো ফামোসার সুবিধা, তিনি একাই টেনে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধাকে। জুনাপিও ও রহমতগঞ্জের ওয়ান ম্যান শো। কিন্তু জীবন আবাহনীর মূল স্ট্রাইকার নন। একই ম্যাচে তাকে ৩-৪ বার পজিশন বদল করতে হয়। রহমতগঞ্জের বিপক্ষে এভাবেই অবশ্য হ্যাটট্রিক করেন তিনি। সেদিনই তিনি দাবি করেন তাকে যেন, তার প্রিয় ৯ নম্বর পজিশনে খেলানো হয়। বসুন্ধরা কিংসের মতিন মিয়াকে কখনো বদলি হিসেবে নামনো হয়। এখনো একাদশে সুযোগ দিয়ে পরে তুলে নেয়া হয়। এরপরও তিনি তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন। আরামবাগের জাহিদ তো মিডফিল্ডার।
বিদেশীদের ভিড়ে স্থানীয়দের এই লড়াই দলকে যেমন পয়েন্ট এনে দিচ্ছে তেমনি তাদেরও সুযোগ তৈরি হচ্ছে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার। তা মূল জাতীয় দল এবং অনূর্ধ্ব-২৩ দলে। কোচ জেমি ডে এমন ফুটবলারই খুঁজছেন।


আরো সংবাদ



premium cement