২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাইফেলে বিদেশী কোচ নেবে না শুটিং

-

একটু পরপরই ফেডারেশন কার্যালয়ে ঢুকছিলেন পিস্তলের কোচ কিম। এই কোরিয়ান আবার বেরিয়েও যাচ্ছিলেন দ্রুত কাজ সেরে। তার কাজের প্রতি দরদ, দারুণ মুগ্ধ করেছে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের। শুটিং ফেডারেশন সেক্রেটারি ইন্তেখাব হামিদ অপুর মতে, ‘কাজের প্রতি খুব সিরিয়াস এই কোরিয়ান কোচ। রাত ৯টা পর্যন্ত ট্রেনিং করায় শুটারদের। শুটারদের ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখলেই তাদের বুঝিয়ে সুজিয়ে প্র্যাকটিসে নিয়ে যান। তাদের উদ্বুদ্ধ করেন পদক জয়ে।’ আপাতত শুটিং ফেডারেশনের বিদেশী কোচ বলতে এই পিস্তল ইভেন্টের কিমই। রাইফেলের ডেনমার্কের কোচ ক্লাভস চলে যাওয়ার পর আর কোনো বিদেশী কোচ আনা হয়নি এই ইভেন্টে। প্রথমে শোনা গিয়েছিল নতুন কোচ আনা হবে রাইফেল ইভেন্টে। তবে গতকাল এই সম্ভাবনা নাকচ করে দেন অপু। তার যুক্তি, নতুন কোচ আনা মানে ফের নতুনভাবে সব শুরু করবেন তিনি। এতে করে পারফরম্যান্সে অবনতি ঘটতে পারে শুটারদের।
২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিক গেমস ঘিরেই ক্লাভসকে নিয়ে পরিকল্পনা ছিল ফেডারেশনের। অবশ্য গত বছর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরিস যুব অলিম্পক গেমস শেষে ক্লাভস দেশে ফিরে যান। এরপর আর আসেননি। তার পারিবারিক ব্যস্ততা। ফলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের শুটাররা এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন স্থানীয় গোলাম শফিউদ্দিন খান শিপলুর অধীনে। ক্লাভসের অধীনে শিপলু দুই বছর সহকারী কোচের ভূমিকা পালন করেন। ফলে এখন ফেডারেশন তার ওপরই আস্থা রেখেছে। শিপুল ২০০০ সালে সাফ শুটিংয়ে তিনটি ¯¦র্ণ জয় করেন। ২০১৬ এর শিলং-গৌহাটি এস এ গেমসে দলগততে পান রৌপ্য। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল এবং ৫০ মিটার রাইফেলের শুটার ছিলেন তিনি।
এখন জাতীয় দলের সব শুটারদের লক্ষ্য দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ শুটিং। এতে কোটা প্লেস করতে পারলে সরাসরি টোকিও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাবেন। অলিম্পিকে বাংলাদেশের শুটাররা এখন পর্যন্ত ওয়াইল্ড কার্ড পেয়েই অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়ে আসছে। দিল্লিতে কোটা প্লেস না হলে এরপর জার্মানির মিউনিখ, সুল, চীনের বেইজিং এবং কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত আসর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মে ও জুন মাসে যথাক্রমে মিউনিখ এবং সুলে বিশ্বকাপ। বেইজিংয়ে বিশ্বকাপ হবে এপ্রিলে। দোহাতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ শুটিং হবে নভেম্বরে। দোহার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও কোটা প্লেসের সুযোগ আছে। ব্রাজিলের রিও ডি জানেইরোতে আরেকটি বিশ্বকাপ হবে। তবে মাত্রাতিরিক্ত খরচের কারণে ফেডারেশন সেখানে দল পাাঠাবে না। জানান অপু।
সাধারণ নিয়মে এক বিশ্বকাপে কোনো শুটার প্রথম তিন জনের মধ্যে থেকে কোটা প্লেস করলে পরের আসরে তিনি প্রথম তিনে থাকলে তাকে বাদ দিয়ে পরের শুটারকে কোটা প্লেস দেয়া হয়। বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশনের আশা দোহা আসরের আগ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী থাকা প্রায় সব নামী দামি শুটারে কোটা প্লেস হয়ে যাবে। ফলে দোহা চ্যাম্পিয়নশিপকেই কোটা প্লেসের জন্য টার্গেট করা হয়েছে। এমনটাই জানালেন অপু। মোট ৮০ জন শুটার কোটা প্লেস করতে পারবেন। এরপর ওয়াইল্ড কার্ডধারী শুটাররা সুযোগ পাবেন অলিম্পকে খেলার।
দিল্লি বিশ্বকাপ হবে ২০-২৮ ফেব্রুয়ারি। এ জন্য বাংলাদেশ দলও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল পুরুষ বিভাগে আবদুল্লাহ হেল বাকী, অর্নব শারার লাদিফ, রবিউল ইসলাম. মহিলা বিভাগে উম্মে জাকিয়া সুলতানা টুম্পা, আতকিয়া হাসান দিশা, ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের পুরুষ বিভাগে শাকিল আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক, নূর হোসেন আলিফ, মহিলা বিভাগে আরমিন আশা, আরদিনা ফেরদৌস আঁখি এবং নিলুফার ইয়াসমিন অংশ নেবেন। তাদের মধ্যে জাতীয় দলে এই প্রথম চান্স পেলেন সেনাবাহিনীর আবদুর রাজ্জাক এবং বিকেএসপির নিলুফার। কাল রবিউল ইসলাম এবং আতকিয়া হাসান দিশা জানান, দিল্লিতে আমাদের লক্ষ্য, ফাইনাল রাউন্ডে খেলা। তাহলে পদক তথা কোটা প্লেস হয়েও যেতে পারে।
ঢাকায় নিজেদের মধ্যে সর্বশেষ প্রতিযোগিতায় রবিউল ৬২৭ স্কোর করেন। আগে মারতেন ৬২২। আবদুল্লাহ হেল বাকী ৬২৫ স্কোর করেছেন। অর্নব মারছেন ৬২২। টুম্পার স্কোর ৬২১ /৬২২ এর মধ্যে আছে। পিস্তলে শাকিল ৫৮০, রাজ্জাক ৫৭৮, এবং আলিফ ৫৭৪ স্কোর করেছেন। শাকিল এবং রবিউলের পারফরম্যান্স আশাব্যাঞ্জক। জানান শিপলু। এর এই স্কোর করতে পারলে দিল্লিতে ফাইনাল রাউন্ডে খেলতে পারবে। বললেন নবীন এই কোচ।

 


আরো সংবাদ



premium cement