২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ব্যাটিং কী হবে!

-

তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে ওপেনিংয়ের দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না। প্রত্যাশা ছিল, অপেক্ষাকৃত দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলে লিটন, শান্তরা নিজেদের প্রমাণে সক্ষম হবেন; কিন্তু কোথায় কী। বাজে পারফরম্যান্সে দল থেকেই বাদ। এতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে সৌম্য সরকারকে। ইমরুল কায়েস আছেন। পরীক্ষার সম্মুখীন অভিষেকের অপেক্ষায় সাদমানও। কিন্তু আসল চিত্রটা কী। কে খেলবেন ওপেনিংয়ে। ইমরুলের সাথে সৌম্য না সাদমান। এ নিয়েই এখন টিমে আলোচনা। তবে সাকিব ফেরাতে ভারসাম্য ফিরেছে দলে। ওয়ান ডাউনে মুমিনুল। এরপর মুশফিক, সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ। হোম কন্ডিশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাজে ব্যাটিং আবারো না হয় সে দুশ্চিন্তা ভর করেছে। তামিম ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সাকিব তো অধিনায়কই ছিলেন। এরপরও ৪৩ রানে অলআউট হওয়ার সে-ঘটনা। প্রথম টেস্টে যে লিটন দাস করেছিলেন সর্বোচ্চ ২৫ তিনিই নেই এ ম্যাচে। আর সবার নামের পাশে ছিল টেলিফোন নম্বর। দ্বিতীয় ইনিংসে একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি করা নুরুল হাসানও বাদ পড়েছেন জিম্বাবুয়ে এবং এ সিরিজেও। দ্বিতীয় টেস্টেও লিটন কিছুটা ভালো করেছিলেন তুলনামূলকভাবে। তবে লিটন বাদ পড়েছেন মূলত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে কিছু করতে না পারার দরুন। নুরুলকে ওই সিরিজের পর আর মনেই রাখা হয়নি। এবার সৌম্য, ইমরুল বা সাদমানরা কতটুকু ভালো করবেন সেটাই দেখার বিষয়।
সাকিব ফেরাতে দলের মনবলও বেড়েছে। বিশেষ করে সিলেট টেস্টে যে বাজে অবস্থা ছিল সেটা এখন আর হচ্ছে না। যদিও ঢাকা টেস্টে ভালো রেজাল্টের পেছনে তিনজনের অবদান। ধারাবাহিক বল হাতে ভালো করে যাওয়া তাইজুলের সাথে মুশফিক ও মুমিনুল অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছেন প্রথম ইনিংসে। দ্বিতীয় ইনিংসে আবার এ দু’জনই ছিলেন ব্যর্থ। ফলে চট্টগ্রাম টেস্টে কী হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অবশ্য জহুর আহমেদের উইকেট সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক হয়ে আসছে। এতে করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলাররা ততটা সুবিধা পাবেন না বলেই ধারণা। তবু ক্যারিবিয়ানদের ফাস্ট বোলিং চিন্তার কারণ বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনের। এ নিয়ে অনুশীলনও করে যাচ্ছেন। কিন্তু দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না ব্যাটসম্যানরা পেছনের দুই ম্যাচের সে সিরিজের কথা মনে রেখেই। শুধুই কি ওয়েস্ট ইন্ডিজ কন্ডিশন?
মিরপুর শেরেবাংলায় এক ওয়ানডে ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ডও আছে টিম বাংলাদেশের। ফলে ‘ভয়মুক্ত’ ব্যাটিং বেশি জরুরি। সেটা না পারলে দুশ্চিন্তার আর অন্ত থাকবে না। ঘরের মাঠে বরাবর তামিম বড় একটা সাপোর্ট দিয়ে আসছেন। তামিম নেই। এরপরও সেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপরই ভরসা। মুশফিক, মুমিনুল, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা যদি ভালো না করতে পারেন তাহলে ব্যাটিংয়ে আর রান সংগ্রহের দায়িত্ব নিতে পারেন না কেউ। আর ব্যাটসম্যানরাই যদি ব্যর্থ হন, তাহলে আর কোনো কিছুই কাজে আসে না। স্পিনে ভয় আছে ক্যারিবিয়ানদের। ঘরের মাঠে স্পিন-নির্ভর উইকেটও হয় বাংলাদেশের এটাও তাদের জানা। তাদের মূল টার্গেট বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নিয়েই। ফাস্ট বোলাররা বিভিন্নভাবেই চেষ্টা করবেন ভীতি তৈরি করতে। এ জন্যই সূচনাটা ভালো হওয়া জরুরি। সূচনা ভালো হলে পরের ব্যাটসম্যানরা সে ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যেতে পারেন; কিন্তু আগের দুই ম্যাচের মতো সূচনাতেই যদি ৩-৪ উইকেট দ্রুত পড়ে যায় সেখান থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে। দলে যত অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানই থাকুক না কেন। সাদমানকে দলভুক্ত করা হয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচে তার সাহসী ব্যাটিংয়ের জন্য। যদি সুযোগ পান তাহলে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করবেন এটাই স্বাভাবিক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ভালো খেললেও টেস্ট ভার্সনে সুবিধা করতে পারছে না বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে সেই দুই ম্যাচে জয়ের পর আর জয় নেই। আছে টানা সাত ম্যাচে হারের রেকর্ড। তা ছাড়া সর্বশেষ দুই টেস্টের চার ইনিংসের একটিতেও করতে পারেনি বাংলাদেশ ২০০ রানও। এর নিচেই অলআউট। এবার সুযোগ সে অবস্থার উন্নতির। সাকিবরা পারবেন তো!
উল্লেখ্য, কাল থেকে জহুর আহমেদে শুরু দুই দলের মধ্যে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ।

 


আরো সংবাদ



premium cement