২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সৌম্যতে মিলবে কি সমাধান

-

হঠাৎ করেই বদলে গেলেন সৌম্য। কথা না শুনা উইলো আচমকাই যাদুর কাঠির মতো কাজ করছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স হাসি ফিরিয়েছিল সবার মুখে। তবে টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। ওপেনিং জুটিতে প্রত্যাশিত কিছু মেলেনি। এ কারণেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে বাদ পড়েছেন ওপেনার লিটন কুমার দাস, সাথে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান নাজুমল হোসাইন শান্ত। ওপেনিং সমস্যা সামাধানে এবার সৌম্য সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দলে ফেরা সৌম্যতে মিলবে কি সমাধান?
তিন ফরম্যাটেই দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা তামিম দলে না থাকায় একটা বিশ্বস্ত জায়গার খোঁজে ছিলেন নির্বাচকরা। কিন্তু কেউই আস্থার জায়গা তৈরি করতে পারেননি। উদ্বোধনী জুটি নিয়ে কতশত শঙ্কা ছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সেই শঙ্কা থেকে কিছুটা মুক্তি পেলেও টেস্টে গিয়ে সেটি পায়নি বাংলাদেশ। তার আগে উদ্বোধনী জুটির সমস্যা এশিয়া কাপে চরম ভুগিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। ইনজুরির কারণে প্রথম ম্যাচেই ছিটকে যান তামিম। এরপর ফাইনালের আগে পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে চিন্তার কারণ ছিল ওপেনিং জুটির সমস্যা।
এশিয়া কাপের ফাইনালে অধিনায়ক মাশরাফির এক ‘বাজিতে’ ওপেনিংয়ের সমস্যা মিটেছে। তবে সেটি আসলে চকম ছিল। স্থায়ী সমাধান নয়। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটি বাংলাদেশের টপ অর্ডাররা এমন পারফরম্যান্স করলেন, যে ওপেনিং চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলার সময় এসে গিয়েছিল। ইমরুল কায়েস দুই ম্যাচে করলেন সেঞ্চুরি। তিন ম্যাচের সিরিজটিতে মোট ৩৪৯ রান করেন তিনি। এশিয়া কাপের ফাইনালে সেঞ্চুরি করা লিটন দাসও এক ম্যাচে খেললেন ৮৩ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটিও হয়ে গেল ইমরুল-লিটনের। প্রথম ও তৃতীয় ওয়ানডে লিটন ব্যর্থ হলেও ইমরুলের ফর্মে উদ্বোধনী জুটিতে সব আশঙ্কা উড়ে যাচ্ছিল। তা ছাড়া, লিটন ওই দুই ওয়ানডেতে ব্যর্থ হলেও এশিয়া কাপের ফাইনালেই করেছেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ইনিংস। ইতোমধ্যে আবার তৃতীয় ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়েই সেঞ্চুরি করেন সৌম্য সরকার।
কিন্ত টেস্ট সিরিজ শুরু হতেই ওপেনিং সমস্যা দেখা গেল। চার ইনিংস মিলে ইমরুল কায়েস রান করলেন মাত্র ৫১। ওদিকে লিটন করলেন ৪৭। সিলেটে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংস শুধু ৫৬ রানের একটি জুটি পাওয়া গেল তাদের কাছ থেকে। সিলেট টেস্টে বড় বিপর্যয়ের পেছনে লুকিয়ে থাকা কারণগুলোয় ওপেনিং সমস্যাই প্রকট হয়ে থাকল। এ সময় জোর গুঞ্জনÑ তামিমকে লাগবেই। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরতে ব্যাকুল ছিলেন তামিম নিজেও। কিন্তু পুনর্বসান চলাকালে ফের চোটে পড়েন। ওদিকে কপাল খোলে সৌম্য সরকারের। জাতীয় লিগে দুর্দান্ত পারফর্ম করে থযিনি সুযোগ পেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে। সুযোগ পেয়েই ১১৭ রানের ইনিংস খেলার পর মোটামুটি নিশ্চিতই হয় টেস্ট দলে তার ডাক পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তবু সাদা পোশাকে সৌম্যকে একটু অপেক্ষায়ই রাখা হলো। সেই অপেক্ষার কারণ ছিল, কার জায়গায় খেলবেন তিনি। উদ্বোধনী জুটিতে ইমরুল-লিটনের জায়গা নিয়ে তেমন সঠিক মন লাগাতে পারছিলেন না কেউ। শেষ পর্যন্ত ডাক পড়ল সৌম্যের। এক সময় অফফর্মের কারণে যাকে দলে নিলেও নির্বাচকদের প্রশ্ন শুনতে হচ্ছিল। তাকেই হিসেব করতে হলো অবশেষে। তবে পুড়ে পুড়ে খাঁটি সোনা হয়েই ফিরতে যাচ্ছেন সৌম্য। সব ধরনের ক্রিকেট মিলে শেষ ১০ ইনিংসে তার তিনটি সেঞ্চুরি আর চারটি ফিফটিতো একটা বড় প্রমাণ। বল হাতেও আছে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স। শুধু সৌম্য নয়, ওপেনিং সমস্যা সমাধানে জ্বলে উঠতে হবে ইমরুলকেও। ক্যারিবীয় পেসাররা যে গতির ঝড় তুলবেন সেই ঝড়ের সামনে প্রথম প্রতিরোধটা গড়তে হবে এই দুই ক্রিকেটারকেই।
২২ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টের ১৩ সদস্যের মধ্যে সৌম্য সাম্প্রতিক সময়ে তিন নম্বরে খেলতে নেমে রান করেছেন। স্কোয়াডের আভাস অনুযায়ী ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে হয়তো তার ওপেনিংয়েই সুযোগ মিলতে যাচ্ছে। সৌম্য কি পারবেন নিজেকে লাল বলের ক্রিকেটে প্রমাণ করতে? না পারলে ওপেনিংয়ে সমস্যা থেকেই যাবে। ১০ টেস্টের ক্যারিয়ারে সৌম্যর রান ৫৫৮। চারটি ফিফটি পেলেও সেঞ্চুরির দেখা পাননি এখনো। নিজেকে প্রমাণ করে উইন্ডিজদের বিপক্ষে মাইলফলকে যেতে পারবেন কি সৌম্য? অপেক্ষা কয়েক দিনের।


আরো সংবাদ



premium cement