২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নামেই লাইসেন্সধারী হেড কোচ!

-

জাতীয় দলের কোচ জেমি ডের প্রো লাইসেন্স নেই। তার আছে উয়েফা ‘এ’। এএফসির নতুন নিয়ম জাতীয় দলের হেড কোচকে ডাগ আউটে দাঁড়াতে হলে অবশ্যই তাকে এই প্রো লাইসেন্সধারী হতে হবে। ফলে এই ইংলিশ এখন প্রো লাইসেন্স করার চেষ্টা করছেন। এএফসি নিয়মের ব্যাপারে কড়া। তাই বাফুফেও জেমি ডে বিষয়ে তৎপর। কিন্তু স্থানীয় লিগের ক্ষেত্রে বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটির কঠোর অবস্থানেও কাজ হচ্ছে না। তাদের করে দেয়া নিয়ম এবারের পেশাদার লিগে প্রতিটি দলের হেড কোচদের ন্যূনতম ‘এ’ লাইসেন্স থাকতে হবে; অন্যথায় তিনি খেলা চলাকলে ডাগ আউটে দাঁড়াতে পারবেন না। অথচ তাদের এ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে ক্লাবগুলো। এক ক্লাবের কোনো হেড কোচ ছিল না। দুই ক্লাব কাগজে কলমে হেড কোচ হিসেবে একজনকে রেখেছে। তারা মাঠে আসেননি। অন্যজন কোচের দায়িত্ব পালন করেন।
চলমান ফেডারেশন কাপে তো এই লাইসেন্সবিহীন কোচ দিয়ে খেলা শুরু করেছিল বিজেএমসি। ফলে তাদের খেলোয়াড় তালিকায় প্রথম দুই ম্যাচে হেড কোচের জায়গা খালি ছিল। পরে অবশ্য কোয়ার্টার ফাইনালে জাহিদুর রহমান মিলনকে হেড কোচের দায়িত্ব দেয়। মিলনের ‘এ’ লাইসেন্স আছে। তিনি ম্যাচের পুরো সময় ডাগআউটে ছিলেন। অবশ্য সে ম্যাচে হেরে বিদায় বিজেএমসির।
বিজেএমসি বিলম্বে লাইসেন্সধারী কোচকে দায়িত্ব দিলেও অন্য দুই দল নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব ও চট্টগ্রাম আবাহনী নামেই ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচকে হেড কোচের দায়িত্ব দিয়েছে। ফেডারেশন কাপের তিন ম্যাচেই নোফেলের ডাগ আউটে ছিলেন কামাল বাবু। ‘এ’ লাইসেন্স কোর্স শেষ করতে পারেননি কামাল বাবু। ফলে তিনি নিয়মানুযায়ী ডাগ আউটে দাঁড়ানো অযোগ্য। তবুও ছিলেন প্রতি খেলাতেই। অথচ কাগজে কলমে দলের হেড কোচ পরিতোষ দেওয়ান। চট্টগ্রাম আবাহনীর হেড কোচ হিসেবে রাখা হয়েছে উজ্জ্বল চক্রবর্তী শিবুকে। পরিতোষের মতো শিবুও বিকেএসপির কোচ। দু’জনেরই আছে ‘এ’ লাইসেন্স। ফেডারেশন কাপে এদের কাউকেই দেখা যায়নি ডাগ আউটে। এখনো ‘এ’ লাইসেন্স না পাওয়া জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুই কাজ চালিয়ে গেছেন।
নোফেল ক্লাব সূত্রে জানা গেছে, পরিতোষ দেওয়ান বিকেএসপি দলের সাথে ভারতের সুব্রত কাপে ব্যস্ত ছিলেন। তাই তিনি ফেডারেশন কাপের সময় মাঠে আসতে পারেননি। তবে আজ থেকে ক্লাবটির লিগ প্রস্তুতি শুরু হবে। সেখানে পরিতোষ দেওয়ানের উপস্থিত থাকার কথা। চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যানেজার আরমান আজিজ জানালেন, তাদের প্রি-সিজন ট্রেনিংয়ের পুরো সময়ই দলের সাথে ছিলেন উজ্জ্বল চক্রবর্তী শিবু। কিন্তু অসুস্থতার জন্য ফেডারেশন কাপের সময় মাঠে আসতে পারেননি তিনি। লিগে ঠিকই মাঠে থাকবেন।
পেশাদার লিগ কমিটি ধীরে ধীরে কঠোর হচ্ছে এসব বিষয়ে। তা স্রেফ সতর্ক করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আগে শুধু কাগজে কলমেই একজনকে লাইসেন্সধারী হিসেবে দেখানো হতো। তিনি অনুশীলনেও আসতেন না। খেলার সময়ে মাঠে উপস্থিতির তো প্রশ্নই ওঠে না। পরে কড়াকড়িতে তাদের মাঠে আসা শুরু হয়। তবে এদের অনেকের ডাগ আউটে দাঁড়ানোর ব্যক্তিত্বই ছিল না। এবার নিয়ম হলো ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচই ম্যাচের সময় সারাক্ষণ ডাগ আউটে দাঁড়াতে পারবেন। অন্য যেসব কোচের ‘বি’ বা ‘সি’ লাইসেন্স আছে তারা কিছুক্ষণের জন্য ডাগ আউটে যেতে পারবেন। চলে আসতে হবে পরোক্ষণেই। তা অবশ্য অনুসরণ করতে দেখা যায়নি এবারের ফেডারেশন কাপে।
আর বিজেএমসির তো প্রথম দুই ম্যাচে কেউই ডাগ আউটে যায়নি। তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোচ সাইদুল ইসলামের কোনো লাইসেন্স নেই। তাই তাকে ডাগ আউটে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। দেয়া হয়নি কোচের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডও। ফলে পরে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ‘এ’ লাইসেন্সধারী জাহিদুর রহমান মিলনকে নিয়োগ দেয়। দলের ম্যানেজার আরিফুল হক চৌধুরী লিওনের বক্তব্য, আমরা নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে কোচ আনার চেষ্টা করছিলাম। বাল গোপাল মহাজন ও পাকির আলীর সাথে শেষ পর্যন্ত কথা চূড়ান্ত করতে পারিনি। তাই ফেডারেশন কাপের প্রথম দুই ম্যাচে আমাদের কোনো হেড কোচ ছিল না। পরে বাধ্য হয়ে মিলন ভাইকে দায়িত্ব দেই। এখন তিনিই আমাদের হেড কোচ। মোটেই নামকাওয়াস্তে নয়। পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েই কাজ করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement