তিন ব্যাটসম্যান দুই বোলারের টেস্ট
- ক্রীড়া প্রতিবেদক
- ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
ক্রিকেট। যার পরতে পরতে থাকে শিহরণ। কখনো একজন নায়ক বনে যান। কিন্তু জয়ের জন্য প্রয়োজন দলীয় সমন্বয়। বেশির ভাগেই একের অধিক নায়ক হন কিন্তু বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে নায়ক হলেন পাঁচজন। বাংলাদেশ ঢাকা টেস্টে ২১৮ রানের যে জয়ে সমতায় ফিরলÑ সেটির নায়ক পাঁচজন। জয়ের পাঁচ নায়ক হলেন ব্যাট হাতে মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং বল হাতে তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
তবে একাদশে ঠাঁই পাওয়া ১১ জনেরই কম-বেশি অবদান রয়েছে। লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, মোস্তাফিজুর রহমান, অভিষিক্ত খালেদ আহমেদ, আরিফুল হকরা এ টেস্টে পারফর্ম করতে না পারলেও দলের জয়ে তাদের ভূমিকা ফেলে দেয়া উচিত হবে না। ওই পাঁচজনের বাইরে মোহাম্মদ মিঠুন দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন। দলের বিপর্যয়ের মুখে অধিনায়কের সাথে ১১৮ রানের জুটি গড়েন। এটাও দলের জন্য অবদান।
তিন ব্যাটসম্যান মুশফিক, মুমিনুল ও মাহমুদুল্লাহ : এই পাঁচ নায়কের মধ্যে মুশফিক সেরা। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। ২১৯ রানের সেই ইনিংসটি খেলেছিলেন ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে। সিলেটে প্রথম টেস্টে হারের পর ঢাকা টেস্টে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিনে সকালে মাত্র ২৬ রানেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকেরা। সাজঘরে ফেরেন ইমরুল কায়েস, লিটন দাস ও মোহাম্মদ মিঠুন। এরপর পাল্টা প্রতিরোধ গড়েন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর জুটি। ধীরে ধীরে বিপদ কাটিয়ে তারা দলকে নিয়ে যান হিমালয়ের চূড়ায়। চতুর্থ উইকেটে গড়েন ২৬৬ রানের জুটি। তাদের এ জুটিতেই আঁকা হয় জয়ের প্রাথমিক ধাপ। মুমিনুল খেলেন ১৬১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। পরে তাকে ছাপিয়ে মুশফিক খেলেন আরো বড় ইনিংস, দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংসটা তার শেষ হয় ২১৯ রানে। তাদের এই জুটি ইনিংসের সুবাদে ৭ উইকেটে ৫২২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৫২২ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয় ৩০৪ রানে। ২১৮ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন লজ্জা দেননি মাহমুদুল্লাহ। জয়ের কথা ভেবে নিজেরাই নেমে পড়েন ব্যাটিংয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই হতাশা। মাত্র ২৫ রানেই হারাতে হয় ৪ উইকেট। দলের এই চরম বিপদে মিঠুনকে নিয়ে হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। বিপদ কাটিয়ে দু’জন গড়েন ১১৮ রানের জুটি। মিঠুন ৬৭ রান করে আউট হলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি করেন মাহমুদুল্লাহ। যেটি টেস্টে তার দীর্ঘ আট বছর পর সেঞ্চুরি। এবং ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০১০ সালে, নিউজিল্যান্ডের বিপ।ে তার এই সেঞ্চুরির সুবাদেই ৫ উইকেটে ২২৪ রান করে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
দুই বোলার তাইজুল ও মিরাজ : টেস্টে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের বোলিংয়ের সবচেয়ে বড় ভরসা সাকিব আল হাসান। কিন্তু চোটের কারণে তিনি এ সিরিজে দলেই ছিলেন না। তার শূন্যতা ভালোভাবেই পূরণ করেছেন তাইজুল। সিলেটে প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৬টি, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫টিসহ মোট ১১টি। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন ঢাকা টেস্টেও। প্রথম ইনিংসে তিনি নিয়েছেন ৫ উইকেট। তার স্পিনে পুড়েই ৩০৪ রানে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। তাইজুল দ্বিতীয় ইনিংসেও নিয়েছেন ২ উইকেট। সেই ২টি উইকেট ছিল চারি ও সিকান্দার রাজার।
সতীর্থদের জয়ের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে দেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। খুলনার এই তরুণ বল হাতে শেষ দিনে জ্বলে উঠে দলকে এনে দিয়েছেন স্বস্তির এক জয়। শেষ দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত মাত্র ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তাদের হাতে ছিল আরো ৬ উইকেট। চাতারা চোটের কারণে ব্যাটিং করতে না পারলে মূলত উইকেট দাঁড়ায় ৫টিতে। সেশন বাকি মাত্র দু’টি। উইকেটেও তখন জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বড় দুই ভরসা, ব্রেন্ডন টেলর ও পিটার মুর। প্রথম ইনিংসেও এই দু’জন লম্বা ইনিংস খেলে কষ্ট দিয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরেই স্পিন জাদুতে মুহূর্তেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত চা বিরতিরও আধ ঘণ্টা আগেই ম্যাচ শেষ। ৪৪৩ রানের ল্েয ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ে অলআউট ২২৪ রানে। দলের জয়ে শেষ কাজটুকু সারতে মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্টে এ নিয়ে পাঁচবারের মতো ৫ উইকেট নিলেন তিনি। এর আগে প্রথম ইনিংসেও ৩ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। ম্যাচে মোট ৮ উইকেট নিলেন তিনি। পাশাপাশি ব্যাট হাতেও কার্যকর দু’টি ইনিংস খেলেন। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ৬৮ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ২৭।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা