২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বয়স চুরি রোধে কঠোর হচ্ছে সাফ

-

২০১১ সাল থেকে শুরু সাফের বয়সভিত্তিক আসর। শুরু থেকেই এই টুর্নামেন্টের পিছু নিয়েছে বয়স চুরির বিতর্ক। প্রথমে সাফের এই জুনিয়র লেভেলের টুর্নামেন্ট ছিল অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলারদের নিয়ে। গত বছর থেকে তা অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল। ২০১৭ সাল থেকে কর্মপরিধি বাড়ে সাফের। নুতন করে অন্তর্ভুক্ত হয় মহিলাদের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ এবং পুরুষ ও মহিলাদের অনূর্ধ্ব-১৮ আসর। বয়স চুরির যত অভিযোগ এই অনূর্ধ্ব-১৬ এবং পরে অনূর্ধ্ব-১৫ প্রতিযোগিতায়। তা প্রতি আসরেই। সাফের দলগুলো তাৎক্ষণিক সাফল্যের জন্য বেশি বয়স্কদের খেলাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৫-১৬ টুর্নামেন্ট। এই বয়সসীমার বাইরে তারা খেলাচ্ছে ১৯-২০ বছর বয়স্ক ফুটবলারদের। খালি চোখেই তা ধরা পড়ছে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে কিছুই করতে পারছে না সাফ। দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। তবে আগামী বছর থেকে আর এই বয়স চুরির অনৈতিক কাজের সুযোগ থাকছে না। এই অন্যায় রোধে কঠোর হচ্ছে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)। এমআরআই করানো হবে প্রত্যেক ফুটবলারদের। তা অনূর্ধ্ব-১৫ পুরুষ-মহিলা দুই বিভাগেই। জানান সাফ সেক্রেটারি আনোয়ারুল হক হেলাল।
দলগুলো এই বয়স চুরির অভিযোগ করেছে সাফ সেক্রেটারির কাছে। ম্যাচ কমিশনাররাও অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলে বেশি বয়স্ক ফুটবলারের খেলানোর অভিযোগ করেছে। যে কারণে আগামীতে সব খেলোয়াড়ের এমআরআই করানোর সিদ্ধান্ত। হেলাল জানান, ‘আমি বয়স চুরি রোধের বিষয়ে কথা বলেছি এএফসির সাথে। তারা সম্মতি দিয়েছে। তাই আগামী বছর থেকে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফের বাইলজে প্রত্যেক দলের খেলোয়াড়দের এমআরআই করানো বাধ্যবাধকতা থাকছে।’ হেলাল জানান, ‘আমরা এখন বয়স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে পাসপোর্টকেই অনুসরণ করি। এ ছাড়া আর কী করতে পারি? তবে আগামীতে ডাক্তারও থাকবে বয়স নির্ধারণে।’ এমআরআই করতে গেলে অবশ্য খরচ বেড়ে যাবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ফেডারেশনের। হেলালের মতে, এই খরচ তাদের করতেই হবে।
ক্ষোভের সাথেই সাফ সেক্রেটারি বললেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৫ আসর হলো ফুটবল উন্নয়নের জন্য। কিন্তু এখানে বয়স চুরি হলে প্রকৃতই কোনো উন্নয়ন হবে না। সাময়িক রেজাল্ট পাওয়া যায় মাত্র। তাই ফুটবলের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য সবারই এই বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার।’
সাফের এই বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট মূলত এএফসির আসরের প্রস্তুতির জন্য। প্রতি দুই বছর পরপর এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল হলেও এএফসির নির্দেশে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ হচ্ছে প্রতি বছর। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এএফসির আসরের বছরে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে অংশ নেয়া দলগুলোর বেশ কয়েক ফুটবলারকে বাদ দিতে হয় এক মাস পরেই শুরু হওয়া এএফসির প্রতিযোগিতায়। তা বেশি বয়সের কারণে। এতে সাফ চ্যাম্পিয়ন দলগুলোরও ভরাডুবি হয় এএফসির আসরে।
এমআরআইয়ের বাধ্যবাধকতা থাকবে শুধু অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলে। অনূর্ধ্ব-১৮তে নয়। কারণ হাতের যে হাঁড় এক্স-রে করার মাধ্যমে বয়স পরীক্ষা করা হয় তা প্রযোজ্য অনূর্ধ্ব-১৫-১৬ ফুটবলারদের জন্যই। অনূর্ধ্ব ১৮-১৯ বয়সীদের হাঁড় পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে না।
এএফসি অধীনস্থ যে পাঁচটি আঞ্চলিক ফুটবল ফেডারেশন আছে এর মধ্যে সবচেয়ে সক্রিয় সাফই। তারাই বছরে চার-পাঁচটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। এএফসিই সাফকে জানিয়েছে তা। কিন্তু বয়স চুরি নষ্ট করে দিচ্ছে আসল উদ্দেশ্য। অভিযোগ আছে কলেজে পড়–য়া ফুটবলারও অংশ নিয়েছে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে। তা পুরুষ-মহিলা দুই বিভাগেই। ২০১১ সালের অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে তো পরস্পরের বিপক্ষে বয়স চুরির অভিযোগ তুলেছিল ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান।
এই শতাব্দীর শুরু পর্যন্ত এএফসির বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে বয়স চুরির হিড়িক লাগে। এরপর কঠোর হয় এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশের তিন ফুটবলারও সাসপেন্ড হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে বেশি বয়সী হওয়ায়। সাথে দলের ম্যানেজারকেও। জরিমানাও গুনতে হয় বাফুফেকে।


আরো সংবাদ



premium cement