২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহিলা ফুটবল লিগ কবে হবে

-

বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলের যাত্রা শুরু ২০০৩ সালে। ১৫ বছর পর লাল-সবুজের মহিলা ফুটবল এখন এশিয়ার অন্যতম সেরা দল। গত বছর তাদের অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা দল ছিল এশিয়ার সাত নাম্বারে। এবার এখন পর্যন্ত তারা সেরা দশে আছে। বাংলাদেশের সিনিয়র মহিলা দল সাফের দ্বিতীয়। দেশের ফুটবলে মুখ উজ্জ্বল করা মহিলা দল এরই মধ্যে জয় করেছে চারটি ট্রফি। এএফসির দুই আসরে তারা টানা দুইবারের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। যার সর্বশেষটি গত পরশু তাদের নামের পাশে যোগ হয়েছে ভিয়েতনামকে হারানোর ফলে। আপাতত সবার বন্দনা মারিয়া, তহুরা, আঁখি, শামসুন্নাহারদের নিয়ে। এখন তাদের প্রস্তুতি ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ভুটানে শুরু হতে যাওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ আসর নিয়ে। কপাল একেবারে খারাপ না হলে এবার থিম্পু থেকে শিরোপা নিয়ে আসার কথা মহিলা দলের। বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দলের ব্যর্থতার মাঝে মহিলা দলের এই ধারাবাহিক সাফল্যের নেপথ্য টানা অনুশীলন। প্রায় দুই বছর ধরে ক্যাম্পে তারা। তবে এই ফুটবলারদের আরো উন্নতি করতে, ম্যাচ টেম্পারমেন্ট বাড়াতে হলে ঘরোয়া লিগের কোনো বিকল্প নেই। অথচ সেই মহিলা লিগই ছয় বছর ধরে বন্ধ। ২০১৩ সালে সর্বশেষ এই লিগ মাঠে গড়িয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে ফের মহিলা লিগ চালুর জোর দাবি উঠলেও তা কবে শুরু হবে তা বলতে পারলেন না খোদ বাফুফে সভাপতিও।
বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল যখন প্রতিপক্ষের হালি হালি গোলের ক্ষেত্রতে পরিণত হয়েছিল তখনই মাঠে ছিল লিগ। দুইবার লিগে অংশগ্রহণ করেন মহিলা ফুটবলারররা। এরপর সেই যে বন্ধ তা আর আলোর মুখ দেখেনি। ফুটবল সংশ্লিষ্টদের মতে, লিগ হাওয়া মানে ফুটবলারদের প্রতিযোগিতা মূলক ম্যাচে বেশি বেশি করে অংশ নেয়ার সুযোগ। একই সাথে কিছু টাকাও পাবেন তারা। তা ছাড়া এখন শুধু ক্যাম্পেই কিছু ফুটবলার আছেন। এর বাইরে যাদের অবস্থান তাদের না হচ্ছে খেলার সুযোগ না হচ্ছে অনুশীলনের সুযোগ। অনেক প্রতিভারই ইতি ঘটছে এতে।
গতকাল এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবলে এফ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল এবং ক্যাম্পে থাকা সিনিয়র জুনিয়র মিলে ৩৯ ফুটবলারকে আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। জানা গেছে প্রত্যেক খেলোয়াড় পাচ্ছেন ১০ হাজার টাকা করে। এই অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতিকে লিগ শুরু করা এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তার জবাব, ‘আমিও ভালো করে বুঝি লিগ শুরুর গুরুত্ব। অবশ্যই লিগ হতে হবে। আমি যোগাযোগ করেছি বিভিন্ন ক্লাবের সাথে। কিন্তু ক্লাবগুলো থেকে তেমন সাড়া পাচ্ছি না। কোনো ক্লাব বা করপোরেট হাউজ তেমন সাড়া দেয়নি।’ এরপর তিনি যোগ করেন, ‘লিগ হতে হবে মানসম্পন্নভাবে। দায় সারা গোছের লিগ হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভালো।’
তার যুক্তি, ‘যদি ক্লাবগুলো এই ফুটবলারদের ভালো ভাবে নার্সিং না করে তাহলে মহিলা ফুটবল যে সিস্টেমে আছে তা নষ্ট হয়ে যাবে। জাতীয় দলও রেজাল্ট পাবে না। এখন তারা জাতীয় দলের ক্যাম্পে একটি সিস্টেমের মধ্যে আছে।’ তিনি পুরুষ ফুটবল দলের সাম্প্রতিক সাফল্যের কারণ হিসেবে তিন মাসের ক্যাম্পের কথা উল্লেখ করলেন। সালাউদ্দিন জানালেন, আমি খুব শীগ্রই ক্লাবগুলোকে ডেকে লিগ নিয়ে কথা বলব।
বাফুফে সদস্য , ফিফা কাউন্সিল মেম্বার এবং বাফুফের মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের জবাব, এই বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ে আমাদের টাইট সিডিউল। তবে ডিসেম্বরে সিনিয়র মহিলা সাফ ফুটবল শেষে করপোরেট লিগ করা হবে।
কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনও বললেন লিগ অবশ্যই শুরু করতে হবে। তবে তা হতে হবে যথাযথভাবে। লোকদেখানো নয়। একই সুরে কথা বললেন ডিফেন্ডার আঁখিও।
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে বাংলাদেশ দলের খেলা দেখে অভিভূত সালাউদ্দিন বলেন, মেয়েরা পারফেক্ট ফুটবল খেলেছে। তাদের পার্সিং, বল কন্ট্রোরিং, সেন্স , ফিটনেস সবই অসাধারণ। এদের মতো টেকনিক্যালি উন্নত নয় পুরুষ ফুটবল দলও। আর এটা সম্ভব হয়েছে মহিলা দলের কোর্চিং স্টাফ এবং মহিলাদের কঠোর পরিশ্রমে। ডিফেন্ডার আঁখিতে তিনি বার্সেলোনার জেরার্ড পিকুর সাথে তুলনা করলেন। প্রশংসা স্ট্রাইকার তহুরারও।
এখন ক্যাম্পে আরো ২০-২৫ ফুটবলারকে উঠানো হবে বলে জানান বাফুফে সভাপতি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement