২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উড়ে গেল লেবাননও

বাংলাদেশ ৮ : ০ লেবানন (তহুরা ২, সাজেদা ২, ছোট শামসুন্নাহার ২, আনাই, রোজিনা)
লেবাননের বিপক্ষে প্রথম গোলের পর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা দলের উল্লাস : শফিউদ্দিন বিটু -

প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে লেবাননের ১৪ গোল। দুই খেলায় হ্যাটট্রিক তাদের দুই ফরোয়ার্ডের। এবারই প্রথম এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাই পর্বে অভিষেক হওয়া মধ্যপ্রাচ্যের দলটির এই পারফরম্যান্স ভয়ের কারণ ছিল বাংলাদেশের জন্যও। তাই বাড়তি সতর্কতা ছিল কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনেরও। অথচ শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানের দল হিসেবেই বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রকাশ হলো লেবানন। তাদেরকে ৮-০তে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হওয়ার পথে আরেকটু এগিয়ে গেল মারিয়া, আঁখি খাতুনরা। তাদের সামনে এখন আগমীকাল সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ২৩ সেপ্টেম্বর শক্তিশালী ভিয়েতনাম। এই দুই খেলায় ৬ পয়েন্ট হলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড বা সুপার এইটে যাবে বাংলাদেশ।
বেলা সাড়ে এগারোটায় কমলাপুর স্টেডিয়ামের এই ম্যাচে প্রচণ্ড রোদ সমস্যা করছিল দুই দলের জন্যই। অবশ্য তা সাফের দুই আসরের বর্তমান রানার্স আপদের তেমন বাধা হতে পারেনি। ভুটানে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ শেষ করেই তারা ১৭ দিন অনুশীলন করেছে দুপুর বারোটার গরমে। তাই তারা বেশ সাবলীলই ছিল কালকের এই আবহাওয়ায়। বরং ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা লেবানিজ মেয়েদের। একে তো গরম, তার ওপর বাংলাদেশ দলের ফিটনেস রানিং এবং দম এসব আরো বেকায়দায় ফেলে দেয় তাদের। এসবেরই যোগফল দুই হালি গোলের হার। ‘এফ’ গ্রুপে প্রথম ম্যাচে মারিয়া মান্ডার নেতৃত্বাধীন দল ১০ গোলে হারিয়ে ছিল বাহরাইনকে। কাল ৮ গোলের জয়। দুই ম্যাচে তাদের গোল সংখ্যা ১৮।
ম্যাচের প্রথম দুই মিনিটে ৫টি ভুল পাস। এভাবে স্বাগতিকদের খেলা শুরু হলেও ধীরে ধীরে তারা গুছিয়ে নেয়। ১১ মিনিটের মধ্যে আনু চিং মগিনির বদলে খেলতে নামা সাজেদা দু’টি এবং ছোট শামসুন্নাহার ও তহুরা একটি করে গোল মিস করলেও ১৪ মিনিটে গোলের উল্লাস। মনিকার পাস থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে গোল করেন সাজেদা। ১৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ তহুরা খাতুনের কল্যাণে। তার শট কিয়ার করতে গিয়ে নিজেই জালে বল ঢুকিয়ে দেন লেবাননের ডিফেন্ডার মারিয়া স্লিম।
কোচ ছোটনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন। প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে যেমন দক্ষ তিনি তেমনি হেডে বা দূরপাল্লার শটেও গোল করতে পারেন। অবশ্য এবার দুই ম্যাচে তাকে দিয়ে নিখুঁত লব করাচ্ছেন কোচ। বিপক্ষ দলের অফসাইড ট্র্যাপ ভেঙে এই লবগুলোই হয়ে যাচ্ছে লাল-সবুজদের গোলের উৎস। কালও কমলাপুর স্টেডিয়ামে আঁখির লব থেকে হয়েছে তিন গোল। ২৩ মিনিটে তহুরা, ২৭ মিনিটে আনাই মগিনি এবং ৪০ মিনিটে সাজেদা এভাবেই বল ঠেলেছেন লেবাননের জালে। বাহরাইনের বিপক্ষেও আঁখির লবে দুই গোল হয়েছিল।
৫-০তে প্রথমার্ধ শেষ করা বাংলাদেশ দল ৪৮ মিনিটে ষষ্ঠ গোল পায় ছোট শামসুন্নাহানের প্লেসিং শটে। ৬৩ মিনিটে তিনি নিজের দ্বিতীয় গোল করেন বদলি সুলতানার ক্রস থেকে বল পেয়ে। ৭৫ মিনিটে গত বছর এই আসরের চূড়ান্ত পর্বে খেলা দলটি ম্যাচে তাদের শেষ গোল পায় দুই বদলি ফুটবলারের কম্বিনেশনে। ইলা মনির পাসে রোজিনার টোকা জালে।
ম্যাচে বাংলাদেশের তিন ফুটবলার তহুরা খাতুন, ছোট শামসুন্নাহার এবং সাজেদার সামনে হ্যাটট্রিক করার সুযোগ সৃষ্টি হলেও সবাই ব্যর্থ। ৬৮ মিনিটে কোচ তুলে নেন তহুরা ও শামসুন্নাহারকে। তবে সাজেদা ৯০ মিনিট মাঠে থেকেও পারেননি তৃতীয় গোলটি করতে। ফলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে এখনো হ্যাটট্রিক শূন্য এই ফরোয়ার্ড। প্রথম ম্যাচেও হ্যাটট্রিক পাননি কেউ।
কাল বাংলাদেশ দল ২০ গোলে জিতলেও বিস্মিত হওয়ার কিছু ছিল না। সাজেদা, ছোট শামসুন্নাহার, তহুরা, সুলতানা, ইলা মনিরা মিস করায় ৮ গোলেই সন্তুষ্টি। লেবাননের কিপার সিনাল বেরিচির দৃঢ়তাও ছিল। তবে ৮৬ মিনিটে অদ্ভূত এক কাণ্ড করেন ইলা মনি। সুলতানার শট গোললাইন অতিক্রম করার সময় সে বল গোল করতে গিয়ে ডিফেন্ডারের কাজ করেন ইলা মনি। বল তার পায়ে লেগে বিস্ময়করভাবে কিয়ার হয়ে যায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement