২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নাইজেরিয়া কি পারবে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে?

নাইজেরিয়ার ফুটবলারেরা অনুশীলনের আগে ওয়ার্মআপ করে নিচ্ছেন : এএফপি -

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আফ্রিকার ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি সুপার ঈগল খ্যাত নাইজেরিয়া বেশ উপভোগ্য লড়াই উপহার দেবে মনে করেছিল ভক্ত-সমর্থকেরা। কিন্তু হতাশ করা ব্যাপার পূর্ব ইউরোপের দেশটির বিপক্ষে হতাশাজনক পরাজয় নিয়েই মাঠ ছেড়ে যায় গ্রানাট রোহর-র দল। কিন্তু নিজেদের প্রথম ম্যাচের বাজে ফলাফলকে রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবলে সামনে যাওয়ার পথে কোনো বাধা হতে দিতে চায় না ভিক্টর মোজেস ও জন ওবি মিকেলের নাইজেরিয়া। ২২ তারিখে গ্রুপ ডি’র নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে আসা আইসল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে নাইজেরিয়া। নাইজেরিয়ার জন্য এই ম্যাচ ‘কর অথবা মর’ এই ম্যাচে পরাজিত হলে আফ্রিকান সুপার ঈগলদেরকে এক ম্যাচ হাতে থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া বিশ্বকাপকে বিদায় বলে দিতে হবে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পরাজয়টি গ্রানাট রোহর দলের বিশ্বকাপে পরপর তৃতীয় পরাজয় চার বছর আগে গ্রুপ পর্বে তারা আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের কাছ পরাজিত হয়েছিল। বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বশেষ ১৩ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে আফ্রিকান ফুটবলের সুপার পাওয়ার নাইজেরিয়া। বিশ্বকাপে তাদের এই জয়টিও এসেছিল চার বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে বসনিয়া এবং হার্জেগোভেনিয়ার বিপক্ষে। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে নাইজেরিয়া সমান সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে তাদের এই বাজে ফর্ম থেকে বেরিয়ে আসতে। কোচ গ্রানাট রোহরকে এই লক্ষ্য নিয়ে বেশ ভালোভাবে কাজ করতে হবে এবং নিজের দলের রক্ষণভাগকে সতর্ক থাকতে বলতে হবে তারা যেন কোনো আত্মঘাতী গোল না খায়। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তাদের নিজেদের জালেই বল জড়িয়েছিল ইতেবু। একই আত্মঘাতী গোল তারা খেয়েছিল ব্রাজিল বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিপক্ষে। তাই বলা যায় পরপর দুই ম্যাচে আত্মঘাতী গোল খেয়েছে বিশ্বকাপে মোজেসের নাইজেরিয়া। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নাইজেরিয়াকে তেমন একটা আক্রমণাত্মক খেলা খেলতে দেখা যায়নি। অনেকটা হতাশাজনকই ছিল তাদের খেলা।
ভলগগ্রাদে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে নাইজেরিয়া তাই পুরোপুরিভাবে নিজেদের পাল্টে আক্রমণাত্মক খেলা খেলতে চাইবে। চেলসিতে খেলা ভিক্টর মোজেস এবং স্টামফোর্ড ব্রিজ ছেড়ে চায়নায় পাড়ি জমানো জন ওবি মিকেল তাদের সেরা দুই তারকা। একজন স্ট্রাইকার হিসেবে রোহর দলের মূল ভরসা এবং তাকে বেশ ভালোভাবেই প্রয়োজন কোচ রোহর আইসল্যান্ডের বিপক্ষে। মিকেল তাদের মাঝমাঠের সেরা অস্ত্র। খেলা গড়ে দিতে এবং স্ট্রাইকারদের কাছে বলের জোগান দিতে সুপার ঈগলদের ভরসাই মিকেল। তা ছাড়া আক্রমণভাগের এলেক্স আইয়ুবির দিকেই দৃষ্টি থাকবে নাইজেরিয়ার ভক্ত-সমর্থক ও ডাগ আউট থেকে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষের একাদশকেই আইসল্যান্ডের বিপক্ষে নামাতে পারেন কোচ রোহর। অপর দিকে স্বপ্নের মতো ফুটবলের বড় মঞ্চগুলোতে সময় কাটাচ্ছে গত দুই বছর ধরে আইসল্যান্ড। মাত্র তিন লাখ ৩৬ হাজার জনসংখ্যার এই দেশটি ইউরো ২০১৬তে সেমিফাইনালে খেলেছিল এবং রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে বেশ দাপটের সাথেই প্রতিপক্ষকে পেছনে ফেলে চূড়ান্ত পর্বে এসেছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র তাদের সেই ধারাকে অব্যাহত রেখেছে। লাতিন আমেরিকার জায়ান্টদের বিপক্ষে তাদের এই ফলাফল নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জয় পেতেই উৎসাহিত করছে শুক্রবারের ম্যাচে। হ্যানস হলডারসন লায়নেল মেসিদের বিপক্ষে ম্যাচের নায়ক ছিল। এই আইসল্যান্ডের গোলরক্ষক বেশ কয়েকটি চমৎকার সেভ করে জর্জি সাম্পাওলির দলকে জয় বঞ্চিত করেছিল। মেসির পেনাল্টিও সে দক্ষতার সাথে রুখে দিয়েছিল। আলফ্রেড বগারসন গোল করে তাদের আলবেসেলেস্তেদের বিপক্ষে ড্র করতে সাহায্য করেছিল। কোচ হেলমির হেলগ্রিমসন তার দলের রক্ষণভাগ নিয়ে খুশি হতেই পারে। কিন্তু নাইজেরিয়ার বিপক্ষে তার আক্রমণভাগকেও সমান দায়িত্ব নিতে হবে। ২০১০ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার কোচ লার্স ল্যাগারবাক এর সহকারী ছিল আইসল্যান্ডের বর্তমান কোচ হেলগ্রিমসন। ফিনবগারসন এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা সিগারডসন ও সেভারসন তাদের সেরা তারকা। এই দুই দেশ কেবল একবার প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৮১ সালে এবং সেই ম্যাচে আইসল্যান্ড জয় পেয়েছিল ৩-০ গোলে।


আরো সংবাদ



premium cement