উপহার
- কাজী সুলতানুল আরেফিন
- ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ভালোবেসে বিয়ে করেছি আজ দশ বছর গত হয়েছে। এই দেশ এই সমাজ ভালোবাসা মানতে নারাজ। আমাদের কারো আপজনই ছাড় দিলো না। আমরা নিজেদের ভালোবাসা জিতেছিলাম। কিন্তু আপনজনদের ভালোবাসা হারিয়েছিলাম। যেদিন দু’জন বাড়ি ছেড়েছিলাম সেদিনের কথা এখনো বুকে তীর হয়ে বিঁধে আছে। এরপর ভাঙা টঙে ঘর বেঁধেছিলাম দু’জন। রাতদিন খাটনি খেটে সংসারটা দাঁড় করিয়েছি। আল্লাহ্র রহমতে এরই মাঝে সংসারে ছেলেমেয়েও দু’জন এসেছে। সব কিছু সামলাতে কখনো নিলাকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারিনি! সংসার চালাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে।
অনেক দিনে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে তাকে সেদিন মোবাইল কিনে দিয়েছি। যেদিন ছিল আমাদের দশম বিবাহবার্ষিকী। এর আগে কোনো বিবাহবার্ষিকীতে আমি তাকে কোনো উপহার দিতে পারিনি। আর আমাদের বিবাহবার্ষিকীগুলো আনন্দের সাথে পালন করার মতো আমাদের কাছে তেমন সামর্থ্যও ছিল না।
আমি খেয়াল করেছিলাম আশপাশের প্রতিবেশীদের মোবাইলে কথা বলতে দেখলে নিলা দীর্ঘশ্বাস ফেলত। অবশ্যই তার ফোনে কথা বলার মতো কেউ ছিল না। এজন্যই মনে হয় দীর্ঘশ্বাস ফেলত। সবাই আমাদের দূর দূর করে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমাদের শিশুরাও কারো অন্তর ভিজাতে পারেনি। আমরা আমাদের সন্তানদের প্রাণের চাইতেও বেশি ভালোবাসি। কারণ আমাদের সব কষ্টের অংশীদার তারা। মাঝে মাঝে মনে হয় তাদের না দেখে এক সেকেন্ডও থাকা সম্ভব নয়। অথচ আমাদের আপনজনেরা আমাদের ছাড়া দিব্যি ভালো আছেন! এসব ভাবতে ভাবতে এমন সুখের দিনে আমার নিজের চোখের কোনেও অশ্রু জমা হতে লাগল। নিলা আমাকে প্রশ্ন করল, ‘আমাকে উপহার দিলে তবুও এমন খুশির দিনে চোখে পানি কেন’?
তার পাল্টা প্রশ্ন শোনে আমি বিড়বিড় করে বললাম, ‘আমি এতদিনে তোমাকে একখানা উপহার দিতে পেরেছি তাই! এ অশ্রু দুঃখের নয় সুখের’।
‘কিন্তু আমার তো মোবাইলে কথা বলার মতো কেউ নেই!’ বলেই সে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিলো।
আমি তাকে বললাম, ‘কে বলল তোমার কেউ নেই? আমি যখন বাইরে থাকব তখন তুমি আমাকে ফোন করবে!’
‘আমি তো সব সময় ব্যস্ত থাকি। ফোন করব কখন?’
আমি তার কথা শোনে হেসে বললাম, ‘আচ্ছা বাইরে থাকলে আমি তোমার কাছে ফোন করব’!
শুনে সে মুচকি হেসে নিজের কাজে মন দিলো।
প্রিয়জন- ১৬২৪
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা