২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাদল দিনের কদমফুল

-

জ্যৈষ্ঠ শেষে এক পশলা বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিতে গ্রীষ্মের রুক্ষতা কাটিয়ে সতেজ হয় প্রকৃতি। ফিরে আসে প্রকৃতির আপন প্রাণ। নতুন বারিধারার স্নিগ্ধ পরশে গাছে ফোটে কদম ফুল। এই কদম ফুল আর বৃষ্টি জানান দেয় বর্ষার আগমন। টিনের চালে বৃষ্টির ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ যেন বর্ষার আগমনী গান। তাই তো বর্ষাকে কেউ কেউ বলেন ঋতু রাণী।
প্রকৃতিতে এখন ঝরা হিজল আর বকুল ফুলের মন মাতানো গন্ধ। সেই সাথে বর্ষার কদম কেয়া তো আছেই। প্রেমিকার মন পেতে কদম ফুলের জুড়ি নেই। প্রেয়সীর খোঁপায় থাকুক বর্ষার কদম ফুল । সে বসে থাকুক অপেক্ষার স্টেশনে। যেখানে শুধু টুপটুপ বৃষ্টির শব্দ। এমন কত শত রোমাঞ্চকর ভাবনাই তো বর্ষা নিয়ে আসে।
এই বর্ষা আামাদের সাহিত্যে যোগ করেছে কত শত রসদ। তার স্নিগ্ধতায় ব্যাকুল হয়েছিলেন রবীন্দ্র-নজরুল, জসীমউদদীন,আল মাহমুদ। বর্ষার উপহার সোনা রঙের কদম ফুল নিয়ে রচিত হয়েছে নানা গল্প, উপন্যাস, কবিতা ও গান। রবি ঠাকুর তার শিহরণ জাগানিয়া বর্ষার গানে লিখেছেন, ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ কদম-প্রেমে মজে রচনা করেছেন পাঠকনন্দিত উপন্যাস ‘বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল’। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মনেও কোমলতা এনেছে স্বর্ণরঙিন কদম ফুল। তিনি লিখেছেনÑ
‘দোলে শিহরে কদম,
বিদরে কেয়া/ নামিল দেয়া।
বর্ষার বিশেষ অনুষঙ্গ কদম একটি নিবিড় পত্রবিন্যাসের ছায়াঘন বৃক্ষ। শীতে কদমের পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তে কচি পাতা গজায়। কদমের পূর্ণ মঞ্জরিকে সাধারণত একটি ফুল বলে মনে হলেও তা মূলত বর্তুলাকার মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিন্যাস। কদম কাঠ খুব দামি কাঠ না। এটি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কদম মাংসল ও টক ফল । বাদুড় ও কাঠবিড়ালির প্রিয় খাদ্য এটি। ওরাই বীজ ছড়ানোর বাহক।
কদম মূলত বর্ষার ফুল হলেও জলবায়ুর পরিবর্তনে আগাম বৃষ্টির কারণে জ্যৈষ্ঠ মাসে এবং ভাদ্র আশ্বিনেও চোখে পড়ে। বৃষ্টি হলেই কদমফুল ফোটে।
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর


আরো সংবাদ



premium cement