২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাখির বন্ধু লাবু

-

লাবুর পাখি খুব ভালোলাগে। কোথাও পাখি পেলে তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। আর আদরযতেœর তো শেষ নেই। পাখিদের কোনো দুঃখকষ্ট লাবু সহ্য করতে পারে না।
পাখিরা তার কাছে এসে কিচিরমিচির শব্দ করতে শুরু করে। তাতে একটুও বিরক্ত হয় না লাবু। এবার লাবু তৃতীয় শ্রেণীতে উঠেছে। ক্লাসের বন্ধুরা তাকে খুব ভালোবাসে। এমনকি ক্লাসের স্যার এবং মেমও খুব আদর করেন।
একদিন স্কুল থেকে বন্ধুদের সাথে বাড়ি আসার পথে রাস্তার পাশের একটি গাছের ডালের দিকে নজর গেল লাবুর। সে দেখল, একটা দোয়েল পাখি গাছের ডালে বসে কাঁপছে। লাবু তার বন্ধুদের বলল, তোরা একটু দাঁড়া, আমি আসছি। এই বলে লাবু গাছটির কাছে গিয়ে দেখল দোয়েল পাখিটির একটা পায়ে ক্ষতচিহ্ন।
পাখিটা লাবুকে দেখেও উড়াল দিলো না, উড়ে যাওয়ার শক্তিটুকুও যেন নেই। লাবু অসুস্থ দোয়েল পাখিটিকে সুস্থ করার জন্য নীড় থেকে তার বাড়িতে নিয়ে এলো।
বাড়িতে এসে লাবু স্কুল ড্রেস খুলে পাখিটিকে নিয়ে সেবাযতœ শুরু করল। মা বললেন, লাবু, আব্বু ভাত খাবে না? লাবু বলল, মা এদিকে একটু আসো তো। মা তাড়াতাড়ি লাবুর কাছে এসে দেখেন তার হাতে একটা দোয়েল পাখি। মা জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি পাখিটিকে ধরেছ কেন?
লাবু বলল, পাখিটি খুব অসুস্থ। তার সেবা প্রয়োজন। আমি স্কুল থেকে আসার সময় একে অসুস্থ অবস্থায় দেখে বাড়িতে নিয়ে এলাম। মা বললেন, খুব ভালো করেছ বাবা।
লাবু বলল, আমি সেবাযতœ করে এই পাখিটিকে আবার তার বাসায় দিয়ে আসব। তারপর সে পাখিটিকে সাথে নিয়ে ভাত খেল। বিকালে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার আঙ্কেল পাখিটিকে ভালোভাবে চিকিৎসা করে দিলেন।
পায়ে একটা ব্যান্ডেজ করে দিলেন। কিছু ওষুধ ও ক্ষতস্থানে লাগানোর জন্য ক্রিম দিলেন। লাবু পাখিটিকে বাড়িতে নিয়ে ডাক্তার আঙ্কেলের পরামর্শ মতো সেবা করতে লাগল। দিনের বেলা যখন লাবু স্কুলে যায় সে পাখিটিকে তার মায়ের কাছে রেখে দিত।
রাতের বেলা তাকে খাবার খাইয়ে নিজের কাছে রেখে দিত। লাবু পাখিটিকে খাঁচায় বন্দী না করে মুক্ত অবস্থায় রাখল। কয়েক দিন এভাবে চলে গেল। অল্প কয়েক দিনে পাখিটির জন্য তার অনেক মায়া লেগে গেল। পাখিটি একবারের জন্যও উড়াল দিলো না।
দোয়েল পাখিটা পুরো সুস্থ হয়ে গেলে লাবু ভাবল তাকে তার বাসায় দিয়ে আসবে। লাবু সেখানে গিয়ে দেখে দোয়েলের বাসাটা বাতাসে ভেঙে গেছে। লাবু পাখিটিকে সেখানে না রেখে তার বাড়িতে নিয়ে এলো। এবার বাড়িতে আসার পর সে পাখিটির জন্য একটা সুন্দর খাঁচা বানাল। কিন্তু লাবু পাখিটিকে সারাক্ষণ নিজের কাছে রাখে।
যখন সে স্কুলে যায় তখন সে পাখিটিকে খাঁচার মধ্যে রাখত। লাবু গোসল করার সময় পাখিটিকেও গোসল করিয়ে দেয়। খাবার খাওয়ার সময়ও পাখিটিকে পাখির খাবার খাইয়ে দেয়। মাঝে মাঝে অবসর সময়ে লাবু তার প্রিয় শখের দোয়েল পাখিটির সাথে খেলা করে। দিনের পর দিন তাদের মধ্যে ভাব, ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব বেড়েই চলছে। একদিন লাবু তার স্কুল থেকে বাড়িতে দেরি করে এসেছিল। পাখিটি সারা দিন মুখে কিছু দেয়নি। খাঁচার মধ্যে সারাক্ষণ ছটফট করতে লাগল। লাবু যখন বাড়িতে এলো দোয়েল পাখিটি খুশিতে ডাকাডাকি করতে লাগল। যেন পাখিটি বলতে চায় তাড়াতাড়ি আমাকে খাঁচাটার দরজা খুলে দাও। লাবু স্কুল ব্যাগটা রুমে রেখেই সরাসরি পাখিটির কাছে চলে এলো। পাখির প্রতি তার মমতা আরো বাড়তে লাগল।
পাখিটার ভেতর লাবুর জন্যও অনেক মায়া, বন্ধুত্ব তৈরি হলো। একদিন লাবু তার মামার বাড়িতে বেড়াতে গেল। সাথে তার পাখিটিকে নিয়ে গেল। লাবুর মামা-মামী পাখিটির আচরণ দেখে তো হতবাক হয়ে গেল।
লাবুকে জিজ্ঞেস করায় সে বলল, শুধু পাখি নয় যেকোনো সৃষ্টির সাথে ভালো ব্যবহার করলে সে আপনার বন্ধু হয়ে যাবে। পাখি তো ক্ষুদ্র প্রাণী। এর থেকে অনেক বড় প্রাণীদের সাথে আমার বন্ধুত্ব আছে। লাবুর কথা শুনে মামা-মামী খুব খুশি হলো। লাবু পরের দিন তার পাখি নিয়ে বাড়িতে চলে এলো। তাদের বন্ধুত্ব আগের মতো অটল থাকল।


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল