১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নীল দোয়েল

-

তোমরা হয়তো দোয়েল পাখি দেখেছ। কিন্তু এমন একধরনের দোয়েল আছে, যা এখনো অনেকেই দেখনি। আমাদের দেশের দোয়েল পাখির শরীরের বেশির ভাগই কালো বা কিছুটা ছাই রঙের। কিন্তু যে দোয়েলের বিষয়ে তোমরা আজ জানবে তার শরীরের বেশির ভাগই নীল। এই পাখির নাম হোয়াইট টেইলড রবিন। এর আরো নাম আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছেÑ হোয়াইট টেইলড ব্লু রবিন। হয়তো ওদের শরীরের রঙের কারণেই এমন নাম হয়েছে।
স্ত্রী ও পুরুষ দোয়েলের শরীরের রঙ ভিন্ন প্রকৃতির। তবে উভয়ের মধ্যে যে মিল রয়েছে তা হলো, উভয়েরই লেজে দু’টি সাদা দাগ আছে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ দোয়েলের প্রায় পুরো শরীর কালচে নীলাভ। আর হালকা নীল হচ্ছে এদের কপাল ও ভ্রƒ। সামান্য দূর থেকে এসব রঙ দেখলে মনে হবে তা থেকে আলো ছড়াচ্ছে। আলোর ঝলকানির কারণেই অনেকেরই এ পাখির প্রতি আগ্রহ একটু বেশি। স্ত্রী দোয়েলের দেহের নিচের অংশে লালচে বাদামি ও ধূসর বাদামির মিশ্রণ রয়েছে। আর জলপাই বাদামি মিশ্রণ শরীরের ওপরের অংশে। লেজ মোটামুটি কালো। তবে এখানে রয়েছে কিছুটা চওড়া সাদা দাগও। কানের পাশে সাদা ডোরা দাগের মতো আছে। তবে স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের চোখ বাদামি। মিশমিশে কালো ঠোঁট, পা ও নখ। অপ্রাপ্তবয়স্ক নীল দোয়েলের শরীরের রঙ বাদামি হলেও এর মধ্যে কিছুটা কালচে ভাবও আছে। সেখানে শোভা পায় কমলা-কালো তিল।
এ পাখির লেজের দিকে কিছুটা সাদা দাগ আছে বলে এদের শ্বেতলেজি নীল দোয়েলও বলা হয়ে থাকে। এ পাখির দৈর্ঘ্য ১৬ থেকে ২০ সেন্টিমিটার হবে। আর ওজন ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম। নীল দোয়েল কমবেশি দেখা যায় নেপাল, ভুটান, ভারত, তাইওয়ান, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, লাওস, ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরো অনেক দেশে। এমনকি এ পাখি মাঝে মধ্যে চোখে পড়ে বাংলাদেশেও। বেশি দেখা যায়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের গহিন বনে। ঢাকা বিভাগ, এমনকি সুন্দরবনেও মাঝে মধ্যে দেখা মেলে। তবে এরা বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখি কি না তা নিয়ে রয়েছে মতভেদ।
এরা খাবার খোঁজে গভীর বনে। বেশি পছন্দ করে কীটপতঙ্গ ও রসালো ফল। এ পাখি তিন থেকে চারটি করে ডিম দেয়। ডিম বেগুনি। নীল দোয়েলরা বাঁচে তিন থেকে চার বছর। তবে ক্রমেই কমে আসছে এদের সংখ্যা। এর কারণ বৈরী আবহাওয়া ও শিকারিদের লোভাতুর দৃষ্টি।


আরো সংবাদ



premium cement