২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যুদ্ধবাজ পাখি

-

আজ তোমরা ছোট এক প্রজাতির যুদ্ধবাজ পাখির গল্প শুনবে। এরা যুদ্ধবাজ হলেও আকারে খুব বেশি বড় নয়। এরা কবুতরের সমান প্রায়। এ পাখির নাম অবশ্য বেশ বড়, ‘ইচথিয়োরনিস ডিসপার’। এ পাখির দেখা মিলত আজ থেকে প্রায় আট কোটি ৬০ লাখ বছর আগে। বসবাস ছিল উত্তর আমেরিকায়।
তোমরা শুনলে অবাক হবে, কোটি কোটি বছর আগের পাখিদের কোনো ঠোঁট ছিল না। এমনকি ডানা ও পালকও ছিল না। তাহলে বোঝো, পাখি বলা হলেও প্রাচীন এসব পাখিকে দেখতে কেমন লাগত। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যেসব প্রাণীকে আমরা পাখি হিসেবে জানি, সেগুলো আজকের বা বর্তমানের রূপ নিয়েছে ডাইনোসর-জাতীয় পাখির বিবর্তনের মাধ্যমে। ক্রমেই ঠোঁট, ডানা, পালক ইত্যাদির অধিকারী হতে থাকে পাখিগুলো। তবে তা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনসহ আরো অনেক কারণে। তাদেরই এক প্রজাতির পাখি হচ্ছে এ ইচথিয়োরনিস ডিসপার। এমনও বলা হচ্ছে, পৃথিবীর প্রথম ঠোঁটওয়ালা পাখি এটি। আরো বলা হয়, সামুদ্রিক চিল, শামুখভাঙা ইত্যাদি পাখির মতো এরাও ছিল পরিবেশবান্ধব। খুবই শক্তিশালী বা শক্ত ছিল মাথার খুলি। তবে ডাইনোসরের মতো দেখাত দাঁত ও চোয়াল।
এ পাখির প্রধান খাবার ছিল মাছ। মাছ এতটাই পছন্দ করত, যে কারণে এদের বলা হতো ‘মাছের পাখি’ বা ফিশ বার্ড। আরেক ধরনের পাখি আছে, যার নাম অরনিথুবান। এদের মতো নাকি দেখাত ইচথিয়োরনিস ডিসপারদের। ডিসপারদের অনেকটাই ক্রাটেসাস যুগের শেষের দিকে দাঁতওয়ালা পাখির মতো দেখা যেত। এরা তুরহানিয়ান যুগের। প্রাণিজগতের একটি বিশেষ উপাদান ছিল বলা যায়। এদের নানা দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনেকে বলেছেন, ডিসপারেরা দেখতে কিছুটা ভয়ঙ্করও ছিল।
লম্বা দাঁতযুক্ত এরা এক ধরনের প্রাগৈতিহাসিক পাখি। মেসোজয়িক যুগে অন্যান্য পাখির চেয়ে এ পাখির গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি। ২৪ সেন্টিমিটার (৯.৪ ইঞ্চি) লম্বা কঙ্কালের মতো দু’টি ডানা আছে। ডানা আর পালক বাদ দিলে প্রায় ৪৩ সেন্টিমিটার (১৭ ইঞ্চি) লম্বা হবে। যদিও বর্তমান যুগের পাখির সাথে এদের আকার-আকৃতিতে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এরা সবচেয়ে বেশি পরিচিত দাঁতের জন্য। ওপর ও নিচের চোয়ালের মাঝখানে ছিল দাঁতের সারি। চোয়ালের আগায় কোনো দাঁত ছিল না। ছিল কেবল একটি ঠোঁট। এদের ঠোঁট ছিল আধুনিক যুগের বেশির ভাগ পাখির মতোই, যা দেখলে বোঝার উপায় নেই ভেতরের দাঁতের অবস্থান। দাঁতগুলো ছিল চ্যাপ্টা, যা অনেকটা কুমিরের দাঁতের মতো। পেছনের দিকে বাঁকানো ছিল ঠোঁটগুলো। ডানা ও বুকের হাড় দেখতে বর্তমানকালের পাখির মতো। দাঁতগুলো ছিল ক্ষুদ্রাকৃতির ধারালো। ফলে শিকারের ক্ষেত্রে এরা একেবারেই ব্যর্থ হতো না বলা যায়। ডিসপারেরা যৌবনপ্রাপ্ত হতো অতি অল্প সময়ের মধ্যে।

 


আরো সংবাদ



premium cement